নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগ-বাড়ির সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ছাড়া এই ব্লগ-বাড়ির কোনো লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।
শহর থেকে বেশ দূরের একটা কটেজ। ধরতে গেলে আশেপাশে প্রায় কিছুই নেই। নিরিবিলি এই জায়গাটা সাদেক সাহেবের খুবই পছন্দ। মাসে এক বা দুইবার এখানে আসার সময়ে সাথে করে নতুন কাউকে নিয়ে আসেন। আজকেও ডেকেছেন। গত পরশুদিন একটা পার্টিতে এই মেয়েটাকে দেখার সাথে সাথেই সাদেক সাহেবের বুকের ভিতর এক নিদারূণ শূণ্যতা হাহাকার করে উঠলো। ইচ্ছে থাকলেও সেই শূণ্যতা পূরণের জন্য মেয়েটার সাথে বেশি কথা বলতে পারেননি। পার্টির আলো আঁধারীর মাঝে মেয়েটাকে অসম্ভব কামনা মদির লাগছিল। সাদা শিফনের স্লিভলেস খোলামেলা ব্লাউজ; সামনে বড় গোল গলা, পিছে চারকোণা। সেমি ট্রান্সপারেন্ট শাড়িতে মেয়ের বক্ষ বিভাজিকা দূর থেকেও স্পষ্টভাবেই বুঝা যাচ্ছিল। লোমবিহীন ফর্সা দুইটা হাত দেখে আর সহ্য করতে পারলেন না। যেচে যেয়েই কথা বললেন। এইসব মেয়েরা কখনই কারো একক সম্পত্তি হয় না। আজকে আরেকজন ক্লায়েন্টের সাথে এসেছে। সাদেক সাহেবের চোখে মাদকতার আগুন বহুগূন বাড়িয়ে দিয়ে মেয়েটা হুট করেই চলে গেল। পাক্কা একদিন লেগেছে এই মেয়ে’কে খুঁজে বের করে যোগাযোগ করতে। ভিতরে ভিতরে অস্থির হয়ে উঠেছিলেন উনি এই মেয়ের জন্য। একে উনার পেতেই হবে, যে করেই হোক।
.
অল্পবয়সী কিংবা এ্যামেচার মেয়ে না হলে উনি এই কটেজে ডাকেন না সাধারণত। তবে আজকে অবশ্যই এর ব্যতিক্রম ঘটেছে। সারাবছর পোলাও কোর্মা খাওয়া মানুষও পহেলা বৈশাখে মাটির সানকিতে সাদাভাত আলুভর্তা দিয়ে চটকে খায়। দুইদিন ধরেই উনার পুরনো আলুর ভর্তা ঝাল মরিচ দিয়ে কষে ডলে ডলে খেতে ইচ্ছে করছে!
.
কটেজের ভিতরের এই ঘরটা বেশ বড়, আসবাবপত্র সহ ঘরের প্রায় সবকিছুই বিদেশ থেকে আমদানী করা। বিত্তশালী এবং সৌখিন সাদেক সাহেব এইসব ব্যাপারে খুব খুঁতখুঁতে। কটেজ উনার এক বন্ধুর হলেও এই ঘরটা উনি নিজের মতো করেই সাজিয়ে নিয়েছেন উনি। ঘরের প্রতিটা কোণায় রাখা চারটা অদ্ভুত সুন্দর ল্যাম্পপোস্ট, সেখানে থেকে চার-রংয়ের মৃদু আলোর ঝাপটা এসে ঘরে আলো-আঁধারির অদ্ভুত এক মায়াবী পরিবেশ তৈরি করেছে। শীতাতপ যন্ত্রের তাপমাত্রা ইচ্ছে করেই বেশ কমিয়ে দিলেন সাদেক সাহেব। মেয়েটা ঘরে ঢুকার সাথে সাথেই উনি বেশ উষ্ণতা বোধ করছেন। হালকা লয়ে ঘরের ভিতরের বিদেশী উত্তেজক সঙ্গীত বেজে চলছে। মাতাল করা একটা বিদেশী সুগন্ধি ছড়িয়ে আছে সবখানেই। চেয়ারে বসে সামনে মৃদু লয়ে নাচতে থাকা মেয়েটার দিকে উনি তাকিয়ে আছেন। মেয়েটার দেহে পোষাক প্রায় নেই বললেই চলে। চাররঙা আলো আঁধারির খেলার মাঝে মেয়েটাকে দেখে উনার শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুতই বেড়ে যাচ্ছে।
.
একটু পরেই লাস্যময়ী মেয়েটা হাসিমুখে সাদেক সাহেবের দিকে নৃত্যরত ভঙ্গিতে এগিয়ে এলো। হাতের নাগালে আসতে মুহূর্তেই মেয়েটাকে দুইহাতে জড়িয়ে ধরতে চাইলেও মেয়েটা হালকা করে বাধা দিলো। এগিয়ে এসে উনার কানের কাছে ফিসফিস করে কিছু বলতেই উনি নিজের দেহ রিলাক্স মোডে মেয়েটার হাতেই তুলে দিলেন। অবিরত চুমু চুমুতে সারা পুরুষদেহ ভরিয়ে তুলছে মেয়েটা। আবেশের উষ্ণ অনুভূতির আমেজে নিমিষেই চোখ বুঁজে আসলো সাদেক সাহেবের। লাস্যময়ী আলগোছে সাদেক সাহেবের দুইহাত চেয়ারের পিছনে নিয়ে নিজের অন্তর্বাস খুলে সেটা দিয়ে বেঁধে ফেললো। উমম, বন্ডেজ………। খুশিতে মন আন্দোলিত হয়ে উঠলো সাদেক সাহেবের। জৈবিক আনন্দের অনাস্বাদিত স্রোতে দ্বিগবিদিক হারিয়ে ভেসে যাচ্ছেন উনি, খুব দ্রুতই।
.
একটু পরে উনার পা দুইটাও বেঁধে ফেললো। কী আশ্চর্য্য, পা বাঁধার দরকার কী? বিরক্ত হয়ে চোখ খুলে তাকাতেই দেখলেন লাস্যময়ী ক্ষিপ্র গতিতে উনার বাম বুকের ঠিক মাঝখানে একটা চকচকে ছুরি ঢুকিয়ে দিচ্ছে। সুতীব্র আতংকে চিৎকার করতে যেয়ে দেখেন উনার মুখ বড় এক কাপড়ের দলা দিয়ে আগেই বেঁধে ফেলা হয়েছে। লাস্যময়ী দুইচোখে এখন যেন নগ্ন আহবানের পরিবর্তে আগুনের হলকা নিয়ে ক্রমাগত সাদেক সাহেবের বুকের দুইপাশে ক্রমাগত ছুরি চালিয়ে যাচ্ছে। নগ্ন বুকের বিভিন্ন জায়গা থেকে গলগলিয়ে লালরক্ত গড়িয়ে পরছে। চেয়ারে বসা সাদেক সাহেব আপ্রাণ চেষ্টা করছেন নিজেকে মুক্ত করার। গোঁ গোঁ করে গোংরানির শব্দ ছাড়া উনি আর কিছুই করতে পারছেন না। দ্রুতই নিস্তেজ হয়ে আসা সাদেক সাহেব বুঝার চেষ্টা করছে কেন এমন হলো?
কে এই মেয়ে?
চোখে চরম বিষ্ময় নিয়ে মেয়ের দিকে তাকিয়ে রইলেন উনি।
.
কিছুক্ষণ পরে ছুরি ফেলে দিয়ে মেয়েটা হাতের তাজা লালরক্ত সামনে বসা পুরুষের অনাবৃত দেহে মুছে ফেলে শান্ত ভঙ্গীতে একটা সিগারেট ধরালো। দেহে এ্যাড্রোনিল হরমোনের তোড়জোড় কিছুটা কমে এসেছে। সামনে বসা পুরুষদেহটা ক্রমশই নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে। সাদেক সাহেবের ডানকানে আস্তে করে মেয়েটা বললোঃ
-আমি মিরু, বীরগাঁও থেকে নিয়ে এসেছিলেন। মনে আছে?
সাদেক সাহেব প্রায় শেষ সময় চলে এসেছে। এইসময়ে চোখে পুরাতন স্মৃতিগুলি এক এক করে চোখে সামনে এমনিতেই ভাসতে থাকে। মিরু নামটা শোনার সাথে সাথেই অনেক পুরাতন একটা স্মৃতি ঝট করেই ফিরে এলো...............
.
-প্লীজ আপনার পায়ে পড়ি এইকাজ করবেন না। দোহাই লাগে আপনার।
সত্য সত্যই মিরু উনার পায়ের দিকে এগিয়ে এলে সে সুযোগ না দিয়েই উনি ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। পকেট পাঁচশ টাকা একটা বান্ডিল। মীরু’কে দেখা মাত্রই সাদেক সাহেবের বসের মারাত্মক পছন্দ হয়ে গিয়েছিল। এত দারুন অফার দিয়েছিল যে, মীরুকে ভালোবাসার যে স্বপ্ন দেখিয়ে বাসা থেকে পালিয়ে নিয়ে এসেছিলেন সেটা নিজেই ভুলে গেলেন। দরজা খুলে বের হবার সময় চোখের কোণে দেখলেন উনার বস জোর করে সেই মেয়েকে বিছানায় নিয়ে শোয়ালো যাকে উনি বিয়ে করবেন বলে নিয়ে পালিয়ে নিয়ে এসেছিলেন গ্রামের বাড়ি থেকে। বস অনেক বড় স্বপ্ন দেখিয়েছেন উনাকে। মিরুর মতো এইসব ছোটখাট স্যাক্রিফাইস করাই যায়। সেই সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল বলেই আজকে উনি এত বড় বিত্তশালী ব্যবসায়ী হয়েছেন।
.
-এতটা বছর ধরে আমি অপেক্ষা করছিলাম শুধুই এই মুহূর্তের জন্য। দেনা অনেক বেশি। আমাকে যে শোধ দিতেই হবে।
হাতে ছুরিটা নিয়ে শান্ত ভঙ্গীতে মিরু সাদেক সাহেবের গলায় একের পর এক ক্রমাগত পোঁচ দিতে লাগলো। সাদেক সাহেবের মনে পড়ে গেল উনি যে এখানে এসেছেন সেটা আর কেউই জানে না, ঠিক যেভাবে মিরুকে উনি বাসা থেকে বের করে নিয়ে এসেছিলেন সেটা কেউই জানতো না।
.
মিরু বড় দুই লিটারের বোতল এনে চেয়ারে বসা রক্তাক্ত পুরুষদেহে বিশেষ এক তরল পদার্থ ঢেলে দিল। তরলের ঘ্রাণ সাদেক সাহেবের খুব পরিচিত। আজকেও নিজের গাড়িতে ভরে নিয়ে এসেছেন। প্রায় নিস্তেজ দেহটার উপর মুখের জ্বলন্ত সিগারেট ছুড়ে দিয়ে মিরু বাথরুমে যেয়ে ঢুকলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হবার জন্য।
.
গত দশবছর ধরে মিরুর বুকে দহনের যে তান্ডব চলছিল সেটা আজ অস্তমিত হয়ে আসছে। কটেজের সেই ঘর থেকে বের হবার আগে একদলা ঘৃণার থু থু পোড়া কাঠ কয়লার মতো দেহটার দিকে ছুড়ে দিল মিরু। এতটা বছর ধরে সব প্রস্তুতি নেয়া ওর প্রতিক্ষার প্রহর আজ শেষ হয়েছে।
সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, এপ্রিল ২০২১
২১ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:২১
নীল আকাশ বলেছেন: প্রথম মন্তব্যের জন্য আলাদা করে ধন্যবাদ নিবেন ভাই। বাস্তবে অনেক মেয়ের কাহিনীই এইরকমভাবে পত্রিকাতে এসেছে।
রিয়েল লাইফে এইভাবে সব মিরুরাই যদি প্রতিশোধ নিতে পারতো!।
আপনার জন্যও শুভেচ্ছা নিরন্তর, শুভ রাত্রী।
২| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৫৬
মোহামমদ কামরুজজামান বলেছেন: " পাপের ধন প্রায়শ্চিত্তে যায় " তা চিরন্তন সত্য।
গল্প চমতকার হয়েছে ,তার জন্য +++ আর তা যদিও গল্প তবে তা আমাদের সমাজের একটা শ্রেণীর জীবনে চরম সত্য।" দেয়া এবং নেয়ার " এক অলিখিত নিয়মের মাঝে কত যে অনিয়ম হয় তার কিছুটা হলেও ফুটে উঠেছে গল্পে।
২১ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:২৩
নীল আকাশ বলেছেন: সুন্দর মন্তব্য । এভাবে দেয়া নেয়ার মাঝে একবারের জন্যও মেয়েটাকে জিজ্ঞেস করা হয় না তার কী পছন্দ?
অসহায়ের মতো শুধুই হাত বদল হতে থাকে জীবনভর।
শুভ কামনা আপনার জন্য।
৩| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:০৩
শোভন শামস বলেছেন: জীবন থেকে নেয়া, সুন্দর +++
২১ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:২৪
নীল আকাশ বলেছেন: জী, বাস্তব জীবনের কাছ থেকেই প্রথমাংশ ধার করে লিখেছি।
আমার ব্লগ বাড়িতে সুস্বাগতম।
৪| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:১৪
আমি রানা বলেছেন: লিখার ধরন অসাধারণ। গল্পও চমৎকার।
২১ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:২৪
নীল আকাশ বলেছেন: কৃতজ্ঞতা রইলো।
আমার ব্লগ বাড়িতে সুস্বাগতম।
৫| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:১৯
রাজীব নুর বলেছেন: এরকম একটা মুভি দেখেছি।
২১ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:২৫
নীল আকাশ বলেছেন: অনেক মুভি বাস্তব জীবনের কাছ থেকে প্লট নেয়।
৬| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৪:৪৪
মা.হাসান বলেছেন: ভয় ধরিয়ে দিলেন। এখন থেকে রিসোর্টে যাবার আগে বাসায় একটা খাতায় লিখে রেখে যাবো- কার সাথে গেলাম, তার ফোন নম্বর কত, , কবে গেলাম, ইত্যাদি।
--------------------------------
আজ থেকে চল্লিশ-পঞ্চাশ বছর আগে যে বাংলাদেশ ছিলো এখন আর সে বাংলাদেশ নাই। গল্পে যা লিখেছেন তা অত্যন্ত বাস্তব। বাস্তবের সাদেক সাহেবরা অনেক ক্ষমতাধর। এক পাপিয়ার কথা পত্রিকাতে এসেছে। কুঞ্জবনে কারা যেতো সেকথা ফাস করার সাংবাদিক গুম হতে হতে বেছে গেছেন।
গল্পে অনেক ভালো লাগা।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪০
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। ইদানিং খুব ব্যস্ত হয়ে পড়েছি বিভিন্ন কাজ। ব্লগে আসার কোন সময়ই পাইনা।
দেশের অবস্থা খুব খারাপ। মুখ খুললেই গুমের চান্স বেড়ে যায়। যতটুকু পারেন রাজনৈতিক বিষয় এখন এড়িয়ে যাবেন।
এই গল্পের অর্ধেরকের বেশি অংশ সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা। গল্প ভালো লাগার কারণে কৃতজ্ঞতা।
৭| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৫:৫৯
জুন বলেছেন: এমন এক পৃথিবীতে আছি যে অপরিচিত কারো সাথে সে ছেলেই হোক বা মেয়ে কথা বলতেই ভয় হয় । তাদের কোন কথা মন খুলে বিশ্বাস করতে পারি না । ভালোলাগলো নীল আকাশ আপনার বাস্তব জীবনকে নিয়ে লেখা গল্পটি।
+
২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৩২
নীল আকাশ বলেছেন: সারা পৃথিবী এখন অনেক বদলে গেছে। মানুষের জীবন চাল চলন দ্রুতই বদলে যাচ্ছে।
গল্পটা শুরু করেছিলাম বাস্তব একটা ঘটনা নিয়ে, তবে শেষ ক রেছি আমার নিজের মতো করে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপু।
৮| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:২৭
সৈয়দ তাজুল ইসলাম বলেছেন: নীল আকাশ ভাই, ভয়ে ভয়ে শেষ করে ফেললাম। অথচ এমন ঘটনা হরদম ঘটে চলে আমাদের জীবনের ফাঁকে ফাঁকে । বাস্তবতা এর থেকে বেরিয়ে আসুক। মানুষ একটু নিরাপত্তা পাক।
মিরু কেবল একজন নয়। এরকম শিক্ষিত নামধারী ক্ষমতালোভী মানুষগুলো নিজেদের স্বার্থে সেটা হোক নিজের কামনা কিংবা অন্যের চামচামির কারণে মোট কথা নিজের স্বার্থান্ধতায় এরকম হাজার হাজার মিরুর স্বপ্নীল জীবনকে ধ্বংস করে দেয় কোন ভাবনা ছাড়াই। আমরা সেসব নিয়ে খুব বেশি মাথা ঘামাই না। সাধ্যমতো চেষ্টা করি লুকিয়ে রাখতে। যেন এসব ঘটনার প্রকাশ পাপ। বিচার তো ভাবাই যাবে না। অথচ এই হাজার হাজার মিরুরা যে একজন পিতার কন্যা, একজন সচেতনতায় চেষ্টারত ভাইয়ের আদরের বোন, কোন তরুনের অকৃত্রিম ভালবাসার গোলাপ। সেসব নিয়ে ক'জন ভাবে?
আবার হঠাৎ যখন মিরুরা বিপ্লবী হয়ে উঠে বা উঠার চেষ্টা করে তখন আমাদের পুরুষত্বে লাগে যেন। যেন আমাদের শিশ্ন রোলারে পিষ্ট করা হবে এমন ভয়ে যতদ্রুত সম্ভব এগুলোকে ইগনোর করি। সমাজের চোখে সেই মিরুকে সর্বোচ্চ খারাপ মেয়ে বলে ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা করি। যেন নিজেদের রক্ষার অধিকার মেয়েদের থাকতে নেই।
এরকম দু-একটা পাপ আমাদের সামনে প্রকাশ পায়। কিন্তু এই গল্পের মত হাজার হাজার মিরুদের সম্পর্কে আমরা জানিই না। আর জানলে তো যত পারি এড়িয়ে যাই। যদি কখনো সামনে এসে যায় এরকম কোন গল্প তখন নিজেদের বিদ্রোহী কবি নজরুল ভেবে বিশাল একটা কমেন্ট বা বক্তব্য প্যাকপ্যাক করে বলে দেই; আমার মত।
আমাদের নিরবতা আমাদেরকে এক-একজন সাদেক রূপী কুকুরে সঙ্গি কুকুরে তৈরি করছে তা কি আমরা কখনো ভেবেছি?
একটা মজার ব্যাপার কি জানেন, এখানে সাদেকের দোষের কিছু অংশ বসকে দেওয়ার যদিও চেষ্টা করবেন বলে কাউকে মনে হয় না। কিন্তু এই সাদেক কিন্তু আমাদের বন্ধু। আমাদের বোজম ফ্রেন্ড। কেউ অস্বীকার করলে খোঁজে দেখতে পারেন। হ্যা, মিরুদের শত্রু আমাদের বন্ধু, হয়তো বা আমি নিজে!
০৯ ই মে, ২০২১ সকাল ১০:১২
নীল আকাশ বলেছেন: শুভ সকাল ভাই।
আপনার এই মন্তব্য আমি বেশ কয়েকবার পড়ে গেছি আগেই। কিন্তু এত সুন্দর একটা মন্তব্যের প্রতি উত্তর কী দেবো সেটা ভাবতে দিনগুলি কেটে গেছে।
এই গল্পের প্রথম অর্ধকে কাহিনী আমাদের অতি চেনা। হরহামেশাই সারা দেশে মেয়েরা এভাবেই ব্যবহৃত হচ্ছে, নির্যাতিত হচ্ছে। ক্ষমতালোভী মানুষগুলো নিজেদের স্বার্থে উদ্ধারের জন্য দিনে পর দিন এভাবেই অসহায় মেয়েদের ব্যবহার করে যাচ্ছে। কেউ কোথাও নেই দেখার।
এইসব পাপের কাহিনী কেউ ফাঁস করে না, ফাঁস হলেও দ্রুতই ধামাচাপা দেয়া হয়।
এটা আমাদের সমাজের নিদারুণ ব্যর্থতা। আমরা দেখেও দেখিনা, বুঝেও বুঝি না। এইসবা পাপের দায়ভার শুধু সাদেকের রূপী মানুষজন না, পুরো সমাজের সবাই দায়ী।
ভালো থাকুন ভাই, এবং নিরাপদে। শুভ কামনা।
৯| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:২১
নেওয়াজ আলি বলেছেন: বাস্তবতা সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন
২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৩৫
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার এবং মন্তব্য করার জন্য।
১০| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৪১
সোহানী বলেছেন: চমৎকার। কিন্তু বাস্তবের মিরুরা পারে না এমন প্রতিশোধ নিতে।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৫৩
নীল আকাশ বলেছেন: সেটাই হচ্ছে আমাদের সমাজের ব্যর্থতা। তাই আজও মিরুর মতো মেয়ে অত্যাচারিত হয়ে যাচ্ছে।
যেদিন থেকে মিরুরা প্রতিশোধ নিতে শিখে যাবে, এইসব নির্যাতনও কমে যাবে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
১১| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ৮:৫৪
ইসিয়াক বলেছেন: লম্পটদের এমন শাস্তি হওয়াই উচিত।
গল্পটি ভালো লাগলো।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪০
নীল আকাশ বলেছেন: আমিও সেটাই চাই। বাস্তবে না হোক, গল্পে অন্ততঃ তাই হোক।
১২| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১১:৩৫
আখেনাটেন বলেছেন: অনেকদিন পর মনে হয় আপনার লেখা কোনো গল্প পড়লাম।
গল্পে প্লটে তেমন বৈচিত্র না থাকলেও লেখার প্রশংসা করতেই হয়। বিশেষ করে, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও অন্যান্য বিষয়গুলো। আপনার আগের লেখা থেকে এখনকার এই গল্পের চরিত্র চিত্রণ ভালোভাবেই করেছেন। আগের লেখাগুলোয় মেদ থাকত অধিক। এই লেখায় মেদও ঝড়িয়ে ফেলেছেন। বেশ। ভালো লাগল।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪১
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।
ইদানিং এই নতুনরূপ সাহিত্য জড়িয়ে পড়েছি। ১০০০ থেকে ১২০০ শব্দ হচ্ছে লিমিট। আমি এখন এই নতুন ফরম্যাটে অভ্যস্ত হচ্ছি। লেখার সব অতিরিক্ত কিংবা বাড়তি মেদ ছেটে বাদ দিয়ে দিচ্ছি। অনেকটা অণুগল্প স্ট্যাইলও বলতে পারেন।
শুভ রাত্রী।
১৩| ২১ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:০২
করুণাধারা বলেছেন: গল্প বলার স্টাইল ভালো, থিম ভালো, কিন্তু বাস্তবে এমন ঘটে না। বাস্তবের মিরুরা প্রতারিত হয়, কিন্তু প্রতিশোধ নেবার শক্তি অর্জন করার আগেই শেষ হয়ে যায়।
২১ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৪৮
নীল আকাশ বলেছেন: জানি আপু।
বাস্তবে অনেক মেয়ের কাহিনীই এইরকমভাবে ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যায়। রিয়েল লাইফে এইভাবে সব মিরুরাই যদি প্রতিশোধ নিতে পারতো!। অন্তত মাঝে মাঝে দুই একজন। পত্রিকাতে আসতো। সবাই সাবধান হয়ে যেতো।
শুভ রাত্রী।
১৪| ২১ শে এপ্রিল, ২০২১ রাত ১২:৫৪
ওমেরা বলেছেন: গল্পে অনেক কিছুই করা যায়, বাস্তবে যা সম্ভব না ।
এই গল্প কারো জীবনের রং বদলে দিতেও পারে ।
ভালো লাগা গল্পে।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫৫
নীল আকাশ বলেছেন: গল্প বাস্তব জীবন থেকেই উঠে আসে তবে সেটা বদলে যায় বাস্তবতার এবং প্রয়োজনের পরিপ্রক্ষিতে।
মিরুর মতো শত শত মেয়েরা এভাবে দিনের পর দিন নির্যাতিত হয়ে আসছে।
আমি চেয়েছি কোন একজন মিরু এই শৃংখল ভেঙ্গে বের হইয়ে আসুক। মুক্ত করুক নিজেকে।
শুভ কামনা আপনার জন্য।
১৫| ২১ শে এপ্রিল, ২০২১ ভোর ৬:৫৮
জুল ভার্ন বলেছেন: জীবন থেকে নেয়া অসাধারন সুন্দর গল্প। চমৎকার উপস্থাপন!
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৪২
নীল আকাশ বলেছেন: কৃতজ্ঞতা পড়ার এবং সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য।
১৬| ২১ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১১:৫৮
রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: অনেক মুভি বাস্তব জীবনের কাছ থেকে প্লট নেয়।
একদম ঠিক বলেছেন। এবং এই ধরনের মুভি আমি দেখি। দেখতে ভালো লাগে।
২২ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১২:৩৭
নীল আকাশ বলেছেন: ধন্যবাদ। এইধরনের মুভিগুলি দেখতে ভালো লাগে।
১৭| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ সকাল ১০:৩২
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: 10 বছরের ব্যবধানটা একটু বেশি বলে মনে হয়েছে। সাদেক সাহেব যখন গ্রাম থেকে মিরুকে তুলে নিয়ে আসে তখন নিশ্চয়ই উভয়েরই কম বয়স থাকলেও বয়সের ব্যবধান ছিল যথেষ্ট। দশবছরে মিরু গ্রাম্য জীবন ছেড়ে শহুরে নষ্ট জীবনে প্রবেশ করতে বাধ্য হয়েছে।সে হয়েছে পরিনত বুদ্ধি সম্পন্ন। কিন্তু এই মধ্যবর্তী কালীন সময়ে সাদেক সাহেব লেডি কিলার স্বভাবের কিছুটা পরিবর্তন হলে ভালো হতো।অন্যথায় ব্যবধান কম হলে আমার যুক্তিতে বেশি ভালো হতো বলে মনে হয়েছে। যাইহোক শুধু ঐ অংশটা ছাড়া বাকি অংশ ভালো হয়েছে।বাস্তবধর্মীী গল্পে ভালোলাগা।
শুভেচ্ছা প্রিয় নীল আকাশ ভাইকে।
০৪ ঠা মে, ২০২১ দুপুর ১:১৯
নীল আকাশ বলেছেন: দেরি করে ফিরলাম, লজ্জিত।
আপ্নার দশ বছরের লজিক কিছু দিক থেকে ঠিক আছে। আবার গল্পের আবর্তন চিন্তা করলে নূন্যতম দশ বছর লাগেই একটা মানুষ প্রায় ভুলে যেতে। মিরুকে সাদেক সাহেব ভুলেই গিয়েছিল। চিনতেই পারেনি। এই না চেনার দৃশ্যের জন্যই আমি দশ বছর নূন্যতম ধরে নিয়েছিলাম। চিনলে তো আর মিরুর গোপণ উদেশ্য সফল হতো না। আর সময় কাল নিয়ে এত বেশি চিনতা করে লিখিনি। এটা এত জরুরীও ছিল না।
গল্পভালো লাগার জন্য অসংখ্য ধণ্যবাদ আপনাকে।
শুভ কামনা নিরন্তর।
১৮| ২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ১:৪৫
পদ্মপুকুর বলেছেন: মা.হাসান বলেছেন: ভয় ধরিয়ে দিলেন। এখন থেকে রিসোর্টে যাবার আগে বাসায় একটা খাতায় লিখে রেখে যাবো- কার সাথে গেলাম, তার ফোন নম্বর কত, , কবে গেলাম, ইত্যাদি।
২৬ শে এপ্রিল, ২০২১ দুপুর ২:৫২
নীল আকাশ বলেছেন: চোরের মনেই পুলিশ পুলিশ ডর থাকে
গল্প পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
১৯| ০৯ ই মে, ২০২১ রাত ৮:৩৮
মিরোরডডল বলেছেন:
ঠিক আছে, এরকম শিক্ষাই দেয়া উচিৎ ।
বর্তমান সমাজের একটা বাস্তব চিত্র নিয়ে লেখা ভালো হয়েছে নীল ।
১৩ ই মে, ২০২১ বিকাল ৩:৩৩
নীল আকাশ বলেছেন: খুব করে ধন্যবাদ নিবেন আপু।
সমাজের এই নোংরামীগুলি বন্ধ করার জন্য মেয়েদের সচেতন করার কোন বিকল্প নেই।
শুভ মাহে রামাদানের শুভেচ্ছা এবং ঈদ উল ফিতর এর মুবারকবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে এপ্রিল, ২০২১ বিকাল ৩:৪০
সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: ১০ বছর প্রতীক্ষার পর মীরুর অপূর্ব প্রতিশোধ। ভালো লেগেছে গল্প। প্রথম অর্ধেকে তো রচনাশৈলী খুবই মনকাড়া ছিল।
আমাদের কর্পোরেট কালচারের একটা ঘৃণ্য দিকও গল্পে উঠে এসেছে।
শুভেচ্ছা নিয়েন যুনাইদ ভাই।