নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বজোড়া পাঠশালাতে সবাই ছাত্র-ছাত্রী, নিত্য নতুন শিখছি মোরা সদাই দিবা-রাত্রী!

নীল আকাশ

এই ব্লগের সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না।এই ব্লগের সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।

নীল আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

নষ্ট সমাজ ব্যবস্থা - আর কত মৃত্যু হলে আমাদের টনক নড়বে?

১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩১



গত বৃহস্পতিবার বিকেলে রূপগঞ্জের হাসেম ফুডস লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারনে এই পর্যন্ত প্রায় ৭০ জনেরও বেশি মৃত সংবাদ পাওয়া গেছে। সজীব গ্রুপের বদলে অনেকগুলি মিডিয়ায় হাশেম ফুডস নামেও উল্লেখ করা হয়েছে। যেই ভবনে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে সেটি হাশেম ফুডসের কারখানা। তবে এটার সাথে অনেকেই ভুল করে পারটেক্স গ্রুপকে মিলিয়ে ফেলছেন। এই দুইটা প্রতিষ্ঠান সর্ম্পূণ ভিন্ন। না জেনে কিংবা আন্দাজে এদের মিলিয়ে ফেলবেন না।

দীর্ঘ ২৬ ঘন্টা ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিট টানা কাজ করার পরেও এখন পর্যন্ত আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। লাশের গন্ধে ভারী হচ্ছে নারায়ণগঞ্জের আকাশ বাতাস। স্বজনদের আহাজারিতে প্রকম্পিত হচ্ছে চারপাশের পরিবেশ। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন অর্ধশতাধিকেরও বেশি কারখানার শ্রমিক। ভবনের ৬ষ্ঠ তলায় লাশের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ক্ষতিগ্রস্ত কারখানার সামনে অপেক্ষা করছেন নিখোঁজ শ্রমিকদের স্বজনরা। এই ঘটনায় যে ৫২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয় তার মাঝে ৪৯টি লাশ পুড়ে কয়লা হয়ে যায়। তাদের শেষ পরিচয় শনাক্ত করার জন্য ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে।

কারখানার একটি সিঁড়ি বন্ধ থাকায় প্রাণহানির সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা। ওই সিড়ি খোলা থাকলে অনেক প্রাণ বাঁচানো যেত বলে অভিমত তাদের। ফায়ার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের লোকজন স্পষ্টভাষায় দাবী করছে ভবনের চারতলায় তালাবদ্ধ থাকায় এবং অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র না থাকার কারণে এত প্রাণহানির ঘটনা হয়েছে। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে কারখানার মালিক পক্ষ। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসের লোকজন বলছে আগুন নেভানোর পর তারা চারতলায় তালাবদ্ধ একটি জায়গায় ৪৯ জনের মৃতদেহ একসাথে পেয়েছে। তাহলে তাদের দাবী কীভাবে মিথ্যা হয়? তাহলে এত মানুষের মৃত্যুর দায়িত্বটা কে নেবে এই প্রশ্নের জবাবে সজীব গ্রুপের পক্ষ থেকে বলা হয়েছেঃ
- ডিসি ও ডিআইজির সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। এটা আমাদের মালিক পক্ষ দেখবে। হতাহতদের ক্ষতিপূরণ সম্পূর্ণ ম্যানেজমেন্ট দেবে।

ফুল স্টপ! কাহিনী এখানেই শেষ! এইসব কথা বলার পর কী হতে পারে সেটা আমি আপ্নি এবং দেশের সবাই জানে। তাই বিষয়টা নিয়ে লেখার কোন ইচ্ছেই ছিল না। কিন্তু হাশেম গ্রুপের মালিক পক্ষের এতটা উদ্ধত ভঙ্গিতে কথা বলতে দেখে মনে হলো দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে কিছু কথা তবুও বলা উচিৎ। সর্ম্পূণ স্বেচ্ছায় ফ্যাক্টরী কিছু দরজায় এরা তালা দিয়ে রেখেছিল। দমকল বাহিনীর যা যা মিডিয়াতে বলেছে তার সারমর্ম হচ্ছে, ফ্যাক্টরী বানানোর যে বিধিবদ্ধ কোড আছে, অর্থাৎ বিল্ডিংয়ের ভিতরে কোথায় কোন জায়গায় কী রাখা যাবে, সেটা একেবারেই মানা হয়নি। দাহ্য পদার্থ অনিরাপদ জায়গায় রেখে দেয়ার কারনে আগুন দ্রুতই বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পরেছে। কিন্তু এই মালিক পক্ষের একজন প্রকাশ্য মিডিয়ায় বিগত চল্লিশ বছর ধরে এই ফ্যাক্টরী নিয়মিত ব্যবহারের দাবী করে উচ্চকন্ঠে ঘোষনা করলেন যে ফ্যাক্টরীর ভিতরের সবকিছু ঠিক ছিল। তাদের বিল্ডিংয়ের কোন সমস্যাই নেই।

এখন আসা যাক মূল বিষয়ে। এখানে যেকোন দুইটা ঘটনা হতে পারেঃ

১) যদি এই মালিক পক্ষের লোকজনের দাবী সঠিক হয়, তাহলে এইসব ফ্যাক্টরী দেখভাল করার দায়িত্বে যেই সরকারী লোকজন আছেন, তারা বিগত চল্লিশ বছর ধরে নাকে খাঁটি সরিষার তেল দিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। তারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতেন, তাহলে এই বিল্ডিং অবশ্যই ব্যবহারের অনুমতি পেতো না। এতগুলি মানুষ মারা যাবার জন্য এইসব সরকারী লোকজন নিজেদের দায়িত্ব অবহেলার জন্য সরাসরি দায়ী।
> কিন্তু আজ পর্যন্ত এইসব সরকারী লোকজনের কোনদিন বিচার হতে দেখেছেন? ভালো করে ভেবে বলুন। পলিটিক্যাল রোষ না থাকলে এইসব সরকারী লোকজনের বিরুদ্ধে কোনকিছুই হয় না।

২) মালিক পক্ষ মিথ্যা কথা বলছে। কিন্তু তাদের এতবড় সাহস কীভাবে হলো যে প্রকাশ্যে মিডিয়ায় এসে এতটা ধৃষ্টতা সহকারে এই দাবী করার?
> তার মানে তারা জানে যে তাদের কিছুই হবে না। কেউ তাদের ফুলের টোকায় দিতে পারবে না। সহজেই তারা এতগুলি অসহায় মানুষের মৃত্যুর শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে যাবে। আশ্চর্য্যের বিষয় হলো এখন মিডিয়া এসেছে যে এর আগে এখানেই আরো চারবার আগুন লেগেছিল কিন্তু এরা কোন পূর্ব প্রস্তুতিই নেয়নি এইসব অগ্নিকণ্ডের জন্য। অথচ অগ্নিকাণ্ড নির্বাপণে যথোপযুক্ত ব্যবস্থার অভাবেই এত মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। মালিক পক্ষ কোটি কোটি টাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে লাভ পেলেও সাধারণ শ্রমিকদের কাজের পরিবেশ উন্নয়নের জন্য কোন টাকা খরচই করেনি।



শুধুমাত্র ২০২০ সালেই অগ্নিদুর্ঘটনায় মারা গেছেন ১৫৪ জন। আহত হয়েছেন ৩৮৬ জন। তার আগের বছর ২০১৯ সালে নিহত হয়েছেন ১৮৫ জন এবং আহত হয়েছেন ৫৭১ জন। ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর দেশের ইতিহাসে কারখানায় সবচেয়ে মারাত্মক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। আশুলিয়ার তাজরীন ফ্যাশনস লিমিটেডের ওই অগ্নিকাণ্ডে ১১৭ জন পোশাক শ্রমিক নিহত ও ২০০ জনের অধিক আহত হন। সরাসরি আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান ১০১ জন শ্রমিক ও আগুন থেকে রেহাই পেতে উপর থেকে লাফিয়ে পড়ে মৃত্যু হয় আরও ১০ জনের।

আমরা দেশের সাধারণ মানুষজন এইসব ঘটনা ক্রমাগত দেখতে এবং শুনতে অভ্যস্ত হয়ে গেছি। গায়ের চামড়া আমাদের মোটা হয়ে গেছে। এইসব কিছুই এখন আমাদের গায়ে লাগে না। প্রায় নিয়মিত ফ্যাক্টরী কিংবা গোডাউনে আগুন লাগছে, লাগার পর ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়ে যাওয়া কিছু মিডিয়া পেটের খোরাক যোগাড় করার মাল মসল্লা পেয়ে যাচ্ছে। কারণ এইদেশে সবচেয়ে সস্তা হচ্ছে মানুষের জীবন। মুড়ি মুরকির মতো আগুনে পোড়া লাশ পরে থাকলেও কারো কিছু যায় আসে না। ২৪ এপ্রিল ২০১৩ সালে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামের একটি বহুতল ভবন ধসে পড়ে এভাবেই হাজার হাজার শ্রমিক মারা গিয়েছিল, পঙ্গু হয়ে গিয়েছে আরো অনেকেই। কে তাদের খোঁজ রাখতে গিয়েছে? সরকার বা মিডিয়ার এত সময় আছে নাকি?

আগের দূর্ঘটনাগুলি কিন্তু আমাদের চোখের সামনেই ঘটেছে। অথচ দেশের বেশিরভাগ শিল্প কলকারখানার এর জন্য পূর্ব প্রস্তুতি নেই। এবং এদের দেখভাল করার দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারী কর্মকর্তারা অসাধু উপায়ে অবৈধ পথে টাকা নিয়ে এইসব শিল্প প্রতিষ্ঠানদের বিল্ডিং কোড না মানার পরেও বছর পর বছর ধরে অন্যায়ভাবে ছাড়পত্র দিয়ে যাচ্ছে। চাকরির সূত্রে আমি দেশের একটা অন্যতম সেরা এবং বৃহত্তম শিল্প কারখানায় অনেকদিন ধরেই চাকরি করছি। শ্রমিকদের নিরাপত্তা, অগ্নিনির্বাপণ নিরাপত্তা এবং সার্বিকভাবে একটা কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো কীভাবে সুন্দরভাবে নিরাপদ রাখা যায়, সেটা খুব ভালোভাবে কাছ থেকে দেখার অভিজ্ঞতা অনেক বছর ধরেই আমার আছে। শিল্প কারখানাগুলোতে সরকারি নজরদারির জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যক্তি থাকেন এবং এই ব্যক্তি নিয়মিতই প্রতিবছর সেই শিল্প-কারখানায় প্রবেশ করে শিল্প কারখানা পরিদর্শন করেন এবং একটি সার্টিফিকেট প্রদান করেন। এই যে বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিতে আগুনে পুড়ে এত এত মানুষ মারা যাচ্ছে, এইসব বাণিজ্যিক কলকারখানায় জন্যও ক্লীয়ারেন্স সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছিল। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই সার্টিফিকেট তাদের কে দিয়েছিল? কোন ব্যক্তি? তাকে খুঁজে বের করা হোক, তাকে প্রকাশ্যে আনা হোক, সেই লোক এখানে ছাড়াও আরো যেসব কলকারখানায় সার্টিফিকেট দিয়েছে সেগুলো খুঁজে বের করা হোক। নতুন করে তাদের মূল্যায়ন করা হোক। বছরের পর বছর ধরে দেশের শ্রমিকরা এভাবে পূড়ে মারা যেতে থাকবে কিন্তু নিরাপত্তার দায়িত্বে কর্মকর্তাদের কোন জবাব দিতে হবে না এটা তো হতে পারে না।



শিল্প কারখানার মালিকদের তথা শিল্পপতিদের সামাজিক দায়বদ্ধতা অবশ্যই আছে। তারা সেই দায়বদ্ধতা কোনভাবে অস্বীকার করতে পারেন না। এবং এ দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করার দায়িত্ব হচ্ছে সরকার। সরকারও এটা অস্বীকার করতে পারে না। দেশের ভিতরে বিভিন্ন শিল্প কারখানার আগুন লেগে শত শত হাজার হাজার শ্রমিক নিয়মিত মারা যেতে থাকবে এবং সরকার সেটা দেখেও দেখবে না, শিল্পপতিরা ফাঁকতালে বিচারের আওতা থেকে মুক্ত থাকবে কিংবা কোন বিচারই হবে না, দিনের পর দিন এটা তো হতে পারে না।

বাংলাদেশে শিল্পকারখানার শ্রমিকরা কর্মক্ষেত্রে কোনো দুর্ঘটনায় মারা গেলে তার ক্ষতিপূরণের বিধান আছে পাঁচ লাখ টাকা। তবে তারা বাস্তবে পান মাত্র দুই লাখ টাকা। বাকি টাকা তাদের পরিবার পান না বলে অভিযোগ আছে। বাংলাদেশ জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম রনি জানান, শ্রম আইনে যে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের বিধান আছে তার মধ্যে দুই লাখ টাকা ইন্সুরেন্স কোম্পানি, দুই লাখ টাকা সরকার ও এক লাখ টাকা মালিকের দেয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে সরকারের দুই লাখ টাকা ছাড়া মালিক ও ইন্সুরেন্স কোম্পানির টাকা শ্রমিকরা পান না। বাধ্যতামূলক হলেও অনেক কারখানা ইন্সুরেন্স করেও না। এসব ঘটনার বেশিরভাগই ‘হত্যাকাণ্ড, ফৌজদারি অপরাধ’। কারণ শ্রমিকরা যে পরিবেশে কাজ করেন ও আগুন বা অন্য কোনো ঘটনায় যেভাবে মূল ফটকে তালা মারা থাকে তা শ্রম আইন বিরোধী। এক্ষেত্রে শ্রমিকদের আসলে হত্যা করা হয়। এই অবহেলাজনিত হত্যার ঘটনা প্রমাণ করতে পারলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ আরো বেশি। কিন্তু এখন পর্যন্ত এইসব ঘটনায় কোনো মালিককে শাস্তি পেতে দেখা যায়নি।

বাংলাদেশের শ্রম আইনে যেসব কারখানায় কমপক্ষে ১০০ শ্রমিক আছেন সেখানে গ্রুপ বীমা থাকা বাধ্যতামূলক। তবে এইসব শিল্প প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের বীমার আওতায় আনে না। একজন শ্রমিক এখান থেকে সর্বোচ্চ দুই লাখ টাকা সুবিধা পান। কিন্তু ২০১৫ সালের পর বেশিরভাগ শিল্পকারখানাই আর এই গ্রুপ বীমা করেনি বলে বীমা ও ব্যাংক খাত সূত্র থেকে জানা যায়। দুর্ঘটনার জন্য শ্রম আইনে যে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা আছে তাও শ্রমিক বা তার পরিবার পান না। আর অবহেলাজনিত হত্যা প্রমাণ না হলে ক্ষতিপূরণ পাওয়া যায় না। এখন পর্যন্ত এই আইনে কোনো মালিক বা দায়ীরা শাস্তি পেয়েছেন এমন নজির নেই। তবে নানা দুর্ঘটনায় উচ্চ আদালত ক্ষতিপূরণের বেশ কিছু আদেশ দিয়েছেন।

এই দেশে অপ্রকাশ্যে এখন বলা হয়, সবই সম্ভব যদি আপনার টাকা পয়সা, রাজনৈতিক প্রতিপত্তি, কিংবা সরকারী উচ্চপর্যায়ে লিংক থাকে। সবকিছুই ম্যানেজ করে ফেলেন এই শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শিল্পপতিরা। এইজন্যই কখনোই কোন কিছুতে ভয় পায়না এরা, সেটা যত বড় দুর্ঘটনাই হোক। কারণ তারা জানে সুনির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তিবর্গ এবং রাজনৈতিক কোন প্রতিষ্ঠান কিংবা সরকার ইত্যাদি কারো না কারো মাধ্যমে ঠিকই ম্যানেজ করে ফেলবে তারা। ঠিক সেজন্যই এরা শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য কোন খরচ করতে চায় না।

দেশের ভিতরে ক্রমাগত এইসব ঘটনাই প্রমান করে যে, দেশে এখন বিচারহীনতা, জনগনের কাছে জবাবদিহীতা না করার প্রবনতা মারাত্মক বেড়ে গেছে। মানুষ মেরে ফেলে বিদেশ পালিয়ে যাওয়া, আরেক ব্যাংকের এমডিকে প্রকাশ্যে গুলি করা, এমন কী সম্মানিত প্রধানমন্ত্রীর নামের প্রকল্পের টাকা হরিলুট করতেও কেউ এখন আর ভয় পাচ্ছে না। দেশের আইনের শাষনব্যবস্থার প্রতি বৃদ্ধাংগুলি দেখানো লোকজনের কোন অভাব নেই এখন দেশে। বিশ্বজিতের রক্তাক্ত জামা, আবরার ফাহাদের নিথর দেহ, মেজর সিনহার মৃত্যুর কারণ ভেবে দেখুন? কেউ আর দেশের বিচার ব্যবস্থাকে পাত্তাও দিচ্ছে না। কারণ তারা জানে এই ধরণের যে কোন দূর্ঘটনা ঘটলে সাধারণ মানুষকে ধোঁকা দেয়ার জন্য প্রকাশ্যে কিছু চমকপ্রদ কাহিনীর নাটক মঞ্চস্থ হবে। দিন শেষে যেই লাউ সেই কদু হবে।

মিথ আছে, প্রাচীন রোম নগরী যখন পুড়ে যাচ্ছিল সম্রাট নিরো তখন মনের আনন্দে বাঁশি বাজাচ্ছিল। বর্তমানে আমাদের দেশের যা অবস্থা তাতে সুনিশ্চিত ভাবে বলা যায় দেশের সমাজ ব্যবস্থা, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা, সামাজিক নিরাপত্তা ও বিচারব্যবস্থা ইত্যাদিও এখন আস্তে আস্তে ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে পুড়ে যাওয়ার শেষ দ্বারপ্রান্তে আছে। এবং আমিও অপেক্ষায় আছি কে সম্রাট নিরোর মতন শেষ বাঁশি বাজায় সেটা দেখার জন্য।


লেখার তথ্য সূত্রঃ বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকা এবং সোশাল মিডিয়া
ছবিঃ সোশাল মিডিয়া


সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইলো
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, জুলাই ২০২১

মন্তব্য ৩০ টি রেটিং +১৩/-০

মন্তব্য (৩০) মন্তব্য লিখুন

১| ১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩৪

নীল আকাশ বলেছেন: আপডেটঃ
রূপগঞ্জের হাসেম ফুড এন্ড বেভারেজ কারখানায় আগুনে পুড়ে ৫২ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় ফায়ার সার্ভিস ওই প্রতিষ্ঠানে অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে৷ ভবনটি তালাবদ্ধ ছিল৷ আগুন লাগার পরও তালা খোলা হয়নি৷ তারা ভবনে প্রয়োজনীয় অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও খুঁজে পাননি৷ ছিলো না আগুনের জন্য বিকল্প সিঁড়ি৷ তাই এই ঘটনায় পুলিশ বাদি হয়ে অবহেলাজনিত হত্যা মামলা দায়ের করেছে৷ মামলায় প্রতিষ্ঠানের চেয়াম্যানসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন৷ তাদের চার দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে৷ অবহেলাজনিত হত্যার জন্য দণ্ডবিধির ৩০৪ ও ৩০৭ ধারায় সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছর৷ যেখানে ৩০২ ধারায় হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড৷ এদিকে রূপগঞ্জের ঘটনায় নিহতদের পরিবারের জন্য দুই লাখ এবং আহতদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়ার কথা বলেছে শ্রম মন্ত্রণালয়৷

মালিক পক্ষ কোনো অর্থ সাহায্যের এখনও দেয়নি৷ সম্ভবত না দেয়ায় সুযোগ খুঁজছে।

২| ১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৩৭

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: এসব ঘটনা ঘটতেই থাকে। বিচার নাই, গরীবরে দেখার কেউ নাই। কান্নাকাটি পত্র পত্রিকা স্ট্যাটাস ব্যস সব শেষ

:(

১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:০৮

নীল আকাশ বলেছেন: দেশের যারা যারা এইসব অন্যায়কাজের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারে, তারা টাকার কাছে অনেক আগেই বিক্রি হয়ে গেছে।
মানুষ যা যা দেখে সবকিছু আসলে শুধুই লোক দেখানো।
প্রথম ম ন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৪৫

শায়মা বলেছেন: এই কথাগুলো কি করে সহ্য করে মানুষ আমি জানিনা।

শিরোনাম পড়েই কষ্টে বুক ভেঙ্গে যায়। যেই সব স্যারেরা যারা এতগুলো মানুষকে খোঁয়াড়ে ঢুকিয়ে কাজ করাচ্ছিলো তারা কেনো ভাবে না আগুন লাগলে কি হতে পারে?

আগুন লাগা বন্ধ গেইট এসব তো নতুন না। :(

১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১০

নীল আকাশ বলেছেন: এরা এখন আর মানুষের পর্যায়ে পরে না। টাকাপয়সার জন্য এরা এখন অমানুষের পর্যায়ে চলে গেছে।
না হলে জেনেশুনে কীভাবে আগুন লাগার পর তালাবদ্ধ করে রাখে?

৪| ১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৪৬

জটিল ভাই বলেছেন:
মরে গেছে সারা গেছে। আল্লাহ্'র মাল আল্লায় নিয়া গেছে। নয়তো করোনায় মরতো। নয়তো না খেয়ে মরতো। মরতেতো হতোই। দুইদিন আগে আর পরে।
এছাড়া আর কিছু বলার ভাষা নেই :(

১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১২

নীল আকাশ বলেছেন: কোন কিছু বলে আসলে কোন লাভ নেই। সব শো অফ। বিচার এদের আজ পর্যন্ত হয়নি। ভবিষ্যতেও হবে কিনা জানিনা।
টাকার কাছে সব কিছুই অনেক আগেই বিক্রি হয়ে গেছে।

৫| ১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৩:৫৭

হাবিব বলেছেন: শেষ হবে না ........ চলতেই থাকবে। এ যেন দূর্ঘটনার মালা। সব পরে গরীবের পায়

১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১৩

নীল আকাশ বলেছেন: কারন যারা যারা এইব বন্ধ করতে পারতো তারা শ্রমিকদের জীবনের কোন মূল্যই দেয় না।
এই দেশে শ্রমিকদের জীবনের কোন দাম নেই। মরলেই কী আর বাঁচলেই বা কী?

৬| ১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৪:৪০

nasirfatema22g বলেছেন: খুবই কষ্টের বিষয় একটি অসাধারন লিখা ।

১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১৫

নীল আকাশ বলেছেন: আমার ব্লগ বাড়িতে আপনাকে প্রথম আসার জন্য ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।
বিষয়টা আসলে খুব করুণ। এইসব নিরীহ শ্রমিকদের দেখার কেউ নেই এই দেশে।

৭| ১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫৫

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:




আমাদের দেশে শ্রমিক অর্থই হচ্ছে অসহায় অবহেলিত দুঃখী জনগণ। যারা কারো না কারো প্রতিষ্ঠানে রক্ত পানি করে নিজ ও পরিবার পরিজনের জন্য অন্ন সংস্থান করেন। দুর্ঘটনায় নিহত সকলের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।

১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:১৯

নীল আকাশ বলেছেন: দেশের সাধারণ মানুষের জীবনেরই কোন দাম নেই আর এইসব দুই পয়সার শ্রমিক?
এদের রক্ত পানি করা শ্রমের বিনিময়ে এইসব শিল্পপতিরা আজ কোটি কোটি টাকার মালিক। কিন্তু এরা রক্ত পিপাসু। সামান্য কয়টা টাকাও শ্রমিকদের জন্য এরা খরচ করবে না।
দূঃখের বিষয় হচ্ছে খুব শিঘ্রই নতুন কোন অঘটনের খবর আসার পর মিডিয়া এবং আম পাবলিক এদের কথা ভুলে যাবে। এভাবেই এই দেশে সব কিছু চলছে এবং চলবে।

৮| ১২ ই জুলাই, ২০২১ বিকাল ৫:৫৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: আপনি শিরোনাম দিয়েছেন, নষ্ট সমাজ ব্যবস্থা - আর কত মৃত্যু হলে আমাদের টনক নড়বে?। এখানে আমাদের বলতে কাদের বোঝাচ্ছেন? সাধারন জনগন হলে বলতে হয়........জনগনের এখানে কিছুই করার নাই।

আর কর্তাব্যাক্তিদের কথা বললে বলবো.....উনাদের তো ''টনক'' জিনিসটাই নাই। নড়বে কিভাবে? =p~

উনাদের নিজেদের কেউ যদি কখনও এভাবে মারা যায়, তাহলে হয়তো টনক গজাবে। তারপরে নড়বে। সে'রকমের কিছু না হলে কোন চান্স দেখি না। সারাদিন সুইস ব্যাঙ্কে কতো টাকা জমলো সেই হিসাব যারা করে, তাদের অন্য হিসাব করার সময় নাই। এটাই বাস্তবতা।

১৪ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৫৫

নীল আকাশ বলেছেন: হেডিং লেখার সময়ে আমি ঠিক এই শব্দ নিয়ে কয়েকবার ভেবেছি। আমাদের শব্দ এখানে আমি ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করেছি।
এই ধরনের ঘটনার সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গ অল্প কিছু মানুষ নন। বরং সরকারী বেসরকারী অনেকগুলি সংস্থা এবং প্রতিষ্ঠান এর সাথে জড়িত। দেশের ভিতরে শিল্প প্রতিষ্ঠান চালাতে গেলে সরকারী কিছু সার্টিফিকেট লাগে। কমপ্লায়েন্স সার্টিফিকেট লাগে। এইসব সার্টিফিকেট হয় আপনাকে মানতে হবে বেশ কিছু যন্ত্রপাতি বসিয়ে। কিংবা টাকার বিনিময়ে সার্টিফিকেট কিনে নিয়ে। যেইসব প্রতিষ্ঠানগুলি আগুন লাগে তাদের বেশিরভাগেরি কোন সার্টিফিকেট নেই। সব কিছু আছে কাগজে কলমে। এইসব সার্টিফিকেট বিক্রির সাথে সরকারী এবং রাজনৈতিক অনেকেই জড়িত থাকেন। এরা সবকিছু জানে এবং জেনেই এইগুলি বিক্রি করে। কারণ এরা জানে, যারা এদের টাকা দেয় এরাও জানে, এদের কোনদিন বিচার হবে না। টনক এদের ঠিক আছে। কিন্তু টাকার কাছে সবকিছু ভ্যানিস। দিন শেষ যেই লাউ সেই কদু।
আমাদের লিখেছি আরেকটা কারণে। দেশে ডিজিটাল আইন নামক একটা খুব নোংরা আইন আছে। কাকে কোন কেসে ফাঁসিয়ে দেবে তার কোন হদিশ নাই। বাইরে থাকেন তো টের পাচ্ছেন না ।
সুন্দর একটা মন্তব্য করার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ। ব্যস্ততার জন্য ব্লগে নিয়মিত আসা হয় না।


৯| ১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ৮:৫৯

সাহাদাত উদরাজী বলেছেন: বার বার মনে হয় একজন ধনী ব্যক্তি মনে করেন তার বিচার করতেই পারবে না এই দেশ ও সরকার, ফলে তিনি যে কোন মূল্যে টাকা বানিয়েই যাবেন।

১৪ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ৯:৫৭

নীল আকাশ বলেছেন: যা বলেছেন দিন শেষ এটাই মূল কারন। এরা দেশের প্রচলিত বিচার ব্যবস্থাকে পাত্তাই দেন না।
কারণ টাকা দিলে এই দেশে সব কিছু ম্যানেজ করা যায়।

১০| ১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১০:৫০

মনিরা সুলতানা বলেছেন: এখন টনক কতটুকু নড়েছে জানেন ? কর্মচারী দের বাড়ি হানা দিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। মালিক তো নিশ্চয়ই ধরা ছোঁয়ার বাইরে :(

১৪ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:০০

নীল আকাশ বলেছেন: যেহেতু মিডিয়ায় এসেছে, কিছু দিন পাবলিক শো অফ চলবে। এইসব ব্যক্তিবর্গকে নিয়ে হাইড এণ্ড সীক গেম চলবে। কিছুদিন পরে মিডিয়া অন্য কোন কিছু ব্যস্ত হলে আম পাবলিক এই ঘটনা ভুলে যাবে। তখন এরা এই কেস ধামাচাপা দিয়ে ফেলবে। রানা প্লাজা ঘটনা মনে আছে? বেশিরভাগ শ্রমিকই আর্ত্থিক সাহায্যের টাকাই পায়নি। পূর্নবাসন তো দূরের কথা।

১১| ১২ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১১:১৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আমার মাথায় আসেনা একটা দেশে প্রায়ই এরকম ঘটনা কেন ঘটবে? অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থার অভাব আছে মানতেই হবে।
শুভ কামনা

১৪ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১০:০৩

নীল আকাশ বলেছেন: কারণ খুব সোজা। এইসব শিল্প প্রতিষ্ঠানে উপযুক্ত অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা বসাতে যা খরচ করতে হবে সেটা ভালো এমাউন্ট। এইসব শিল্পপতিরা শ্রমিকদের এত টাকা খরচ করতে রাজি না। টাকার বিনিময়ে এরা কমপ্লায়েন্স সার্টিফিকেট কিনে নিয়ে। সবকিছু আছে কাগজে কলমে। এইসব সার্টিফিকেট বিক্রির সাথে সরকারী এবং রাজনৈতিক অনেকেই জড়িত থাকেন। কারণ এরা জানে, যারা এদের টাকা দেয় এরাও জানে, এদের কোনদিন বিচার হবে না। টনক এদের ঠিক আছে। কিন্তু টাকার কাছে সবকিছু ভ্যানিস। দিন শেষ যেই লাউ সেই কদু।

১২| ১৩ ই জুলাই, ২০২১ রাত ১২:৩৮

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:




কয়দিন পরপর এসব ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এগুলো স্রেফ হত্যাকান্ড।
তদন্ত কমিটি হয়। কোন বিচার হয় না।

২৩ শে মার্চ, ২০২২ বিকাল ৩:৪৯

নীল আকাশ বলেছেন: আসল পাপীদের কোন বিচার না হবার কারনেই বারবার এইসব ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে চলছে।
এগুলোকে হত্যাকান্ড বললেও ভুল বলা হবে না
তদন্ত কমিটি হয়। যথারীতি তদন্ত হয়। কিন্তু কোন বিচার হয় না। কারন তার আগেই সবকিছু ম্যানেজ করে ফেলা হয়।
ধন্যবাদ।

১৩| ১৩ ই জুলাই, ২০২১ সকাল ১১:৫৪

নিঃশব্দ অভিযাত্রী বলেছেন: টাকা পয়সার কাছে সবাই কাইত!

২৪ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:০২

নীল আকাশ বলেছেন: এটাই চরম সত্য, ধন্যবাদ।

১৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:০৫

খায়রুল আহসান বলেছেন: "আমি-যে দেখেছি প্রতিকারহীন শক্তের অপরাধে
বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে"
- 'প্রশ্ন' কবিতায় কবিগুরু যে পর্যবেক্ষণটি রেখেছিলেন 'আজি হতে শতবর্ষ আগে', সেটা আজও দাপটের সাথে এ সমাজে টিকে আছে।

বিবেকতাড়িত হয়ে, অগ্নিদগ্ধের যন্ত্রণা নিয়ে পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া পঞ্চাশাধিক শ্রমিকের পক্ষ হয়ে আপনি এখানে যে কথাগুলো বলে গেলেন, তা রেকর্ড হয়ে রইলো। যারা চিরতরে নীরব হয়ে গেছেন, তাদের পক্ষ হয়ে আপনি অন্ততঃ লিখিতভাবে সরব হয়েছেন, এজন্য আপনাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। আল্লাহ আব্বুল 'আ-লামীন এজন্য আপনাকে উত্তম বিনিময় দিন, আপনাকে সম্মানিত করুন, কারণ আপনি মানবতার পক্ষে কথা বলেছেন।

সাংবাদিকদের মধ্যে এখনও যদি বিবেকবান ব্যক্তি কেউ থেকে থাকেন, তাদের প্রতি অনুরোধ রইলো, পোস্টে উল্লেখিত সকল হত্যকান্ডের প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করে অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করুন! একসময় সালেহা হত্যা, নীহার বানু হত্যা, ইত্যাদি হত্যাকান্ডের যথাযথ বিচার করা সহজ ও সম্ভব হয়েছিল তৎকালীন সাংবাদিকদের উচ্চমানের অনুসন্ধানি রিপোর্ট প্রকাশের জন্য।

নীরো বাঁশি বাজাচ্ছে, বাজাক। মধ্য যুগের বাংলা সাহিত্যের শেষ কবি 'ভারতচন্দ্র রায় (১৭১২ – ১৭৬০)' সেই কবেই তো বলে গেছেন তার 'অন্নদামঙ্গল' কবিতায়ঃ "নগর পুড়িলে দেবালয় কি এড়ায়"?

২৪ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:২৫

নীল আকাশ বলেছেন: দেরি করে ফিরে আসার জন্য লজ্জিত। ইদানিং খুব ব্যস্ত থাকতে হয়।
আমি এই পোস্ট দিয়েছিলাম বিবেকের তাড়না থেকে। কোন বিচার হবে না সেটা আমিও জানি।
তাও লিখে রাখলাম। ব্লগ সাক্ষী থাকলো অন্ততঃ কেউ একজন এই জঘন্য কাজের প্রতিবাদ করে কিছু লিখে গিয়েছিল।

সকল হত্যকান্ডের প্রকৃত তথ্য উদঘাটন করে অপরাধীদের মুখোশ উন্মোচন করুন! - এই দেশে এটার কখনোই হবে না। রাষ্টযন্ত্রই এটা চায় না।
ধন্যবাদ এবং শুভ কামনা।

১৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ১০:৫৩

খায়রুল আহসান বলেছেন: 'পরীমনি'র কিসসা কাহিনী শুনতে শুনতে ও দেখতে দেখতে আম জনতা তথা পাব্লিক এখন এসব বর্বরতার কথা ভুলে গিয়ে দিব্বি সুখে দিনাতিপাত করছে। এর পরে হয়তো অন্য সিরিয়ালের অন্য কোন কিসসা শুরু হবে।

২৪ শে মার্চ, ২০২২ দুপুর ১২:০৩

নীল আকাশ বলেছেন: পরীমনি'র কিসসা কাহিনী তৈরি করা হয়েছিল পাব্লিক সেন্টিমেন্ট ডাইভার্ট করা জন্য। এটা এই সরকার নিয়মিতই করে আসছে। নতুন কিছু না।

১৬| ০৯ ই আগস্ট, ২০২১ সকাল ৯:১৪

নীল আকাশ বলেছেন: রূপগঞ্জে কারখানায় আগুন : তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন
মালিক ও সরকারি দুই সংস্থার গাফিলতি

------------------------------------------------------
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুনে পুড়ে প্রাণহানির ঘটনায় মালিক কর্তৃপক্ষ এবং সরকারি দুটি সংস্থার গাফিলতির প্রমাণ পেয়েছে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি। কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শ্রম অধিদপ্তর এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর যথেষ্ট দায়িত্ব নিয়ে কাজ করেনি। তারা ঠিকঠাকমতো দায়িত্ব নিয়ে মনিটরিং (তদারকি) করলে এ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়ানো যেত। তদন্তে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা না থাকা, ভবন নির্মাণে নীতিমালা না মানা, ফায়ার সার্ভিসের এনওসি ও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র না নেওয়া, শিশুশ্রমসহ কারখানা মালিকের নানা ধরনের অনিয়মের চিত্রও উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার রাতে তদন্ত কমিটি আহ্বায়ক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) শামীম ব্যাপারী জেলা প্রশাসকের কাছে ৪৪ পৃষ্ঠার এই তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ্ রোববার রাতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। জেলা প্রশাসক বলেন, ওই কারখানায় অগ্নিনির্বাপণে পর্যাপ্ত সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা ছিল না, আগুন নেভানোর জন্য কারখানায় প্রশিক্ষিত জনবল (শ্রমিক) ছিল না, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের এনওসি (অনাপত্তিপত্র) পাওয়া যায়নি, পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছিল না, বিল্ডিং কোড না মেনে ভবন নির্মাণ, শিশুশ্রমসহ নানা অনিয়ম পেয়েছে তদন্ত কমিটি। জেলা প্রশাসক মোস্তাইন বিল্লাহ্ বলেন, প্রতিটি বিভাগ যদি ঠিকভাবে কারখানা মনিটরিং (তদারকি) করত, তাহলে সেখানে শিশুশ্রম থাকত না, বিল্ডিং কোডের অসংগতি থাকত না। ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা পর্যাপ্ত থাকত। তাহলে এ দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি এড়ানো যেত। তাদের তদারকির কমতি পেয়েছে তদন্ত কমিটি। জেলা প্রশাসক জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন শ্রম মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।

তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, কারখানার নিচতলার কেন্দ্রীয় গুদামের কমপ্রেসারের রুমের এক পাশে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। রাসায়নিকের উপস্থিতি থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার পর ধোঁয়া বের হলে শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। তখন চতুর্থ তলার ফ্লোর ইনচার্জ শ্রমিকদের আশ্বস্ত করেন, আগুন নিভে যাবে। এরপর শ্রমিকদের তার রুমে নিয়ে যান। পরে আগুন ছড়িয়ে পড়লে শ্রমিকেরাসহ তিনি ওই রুম থেকে আর বের হতে পারেননি, সেখানেই একটি কক্ষে আগুনে পুড়ে তাদের মৃত্যু হয়। তদন্ত কমিটি কারখানার প্রতি তলায় নেট দিয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরির প্রমাণ পেয়েছে।

জেলা প্রশাসক বলেন, তদন্ত কমিটি আগুনে বেঁচে যাওয়া ওই কারখানার শ্রমিক, সংশ্লিষ্ট মোট ২১ জনের জবানবন্দি নিয়েছে। তদন্ত কমিটি সরকারি নয়টি সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে তদন্ত কাজ করেছে। তদন্ত কমিটি কারখানায় শিশুশ্রম বন্ধে নিয়মিত তদারকি করা, যেসব শ্রমিক মারা গেছেন তাদের শ্রম আইন অনুসারে কারখানার মালিকপক্ষ থেকে দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান, বেঁচে যাওয়া শ্রমিকদের আড়াই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ প্রদান, নিহত শ্রমিকদের পরিবারের কর্মক্ষম কেউ থেকে থাকলে তাকে ওই মালিকের অন্য কারখানায় চাকরির ব্যবস্থাসহ ২০ দফা সুপারিশ পেশ করেছে।

৮ জুলাই হাসেম ফুডস কারখানায় আগুনে পুড়ে ৪৯ জনসহ মোট ৫২ (লাফিয়ে পড়ে ৩ জন) জনের মৃত্যু হয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ৪৮ ঘণ্টার চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এবং কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি গঠন করে।

(সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় রোজ ০৯-০৮-২০২১ তারিখে এই সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.