নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগ-বাড়ির সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ছাড়া এই ব্লগ-বাড়ির কোনো লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।
যুগ শ্রেষ্ঠ মনীষী, কালজয়ী মুহাদ্দিস, ফিকহ শাস্ত্রবিদ, মুফাসসিরে ইমাম আবুল ফিদা ইসমাঈল ইবনে কাসীর রহিমাহুল্লাহ রচিত 'আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া' একটা অনুপম ঐতিহাসিক রচনাবলী। যার অর্থ হচ্ছে 'আদ্য থেকে অন্ত' পর্যন্ত। আল্লাহ তায়ালার বিশাল সৃষ্টিজগতের সৃষ্টিতত্ত্ব ও রহস্য, মানব সৃষ্টিতত্ত্ব তথা মানব ইতিহাসের বিভিন্ন ঘটনা, নবী-রাসুলদের আগমন ও তাঁদের কর্মব্যস্ত জীবনের ইতিহাস পরিষ্কার প্রাঞ্জল ভাষায় বর্ণনা করা হয়েছে এই গ্রন্থে। কোনো তথ্য বা বর্ণনাতে অতিরঞ্জন, অতিকথন বা নিজের পক্ষ থেকে কোনো পরিবর্তন, সংযোজন, বিয়োজন তিনি সর্ম্পূণভাবে পরিহার করেছেন। আল্লামা ইবনে কাসির এই গ্রন্থকে তিনভাগে ভাগ করেছেন। প্রথম অংশে রয়েছে সৃষ্টিজগতের তত্ত্ব-রহস্য তথা আরশ-কুরসি, আসমান-জমিন ও এগুলোর মধ্যস্থিত যা কিছু আছে তা সৃষ্টি এবং আসমান-জমিনের মধ্যবর্তী যা কিছু আছে সেগুলো সৃষ্টির ইতিহাস। দ্বিতীয় অংশে রয়েছে রাসুল (সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম) এর ওফাতের পর থেকে ৭৬৮ হিজরি সাল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য খলিফা, রাজা-বাদশাহদের উত্থান-পতনের ঘটনা, মনীষীদের বর্ণনা, সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয়ের বিস্তারিত বিবরণ। শেষ বা তৃতীয় অংশে অন্তর্ভুক্ত করেছেন মুসলিম উম্মাহর অশান্তি ও বিপর্যয়ের কারণ, ভবিষ্যতে অনুষ্ঠিতব্য মানবজাতির মধ্যে সংঘাত, অশান্তি, বিপর্যয়, যুদ্ধ-বিগ্রহ, ফেৎনা-ফ্যাসাদ, কেয়ামতের আলামত, পুনরুত্থান, হাশর-নশর, কেয়ামত দিবসের ভয়াবহ অবস্থা, জান্নাত ও জাহান্নামের বিবরণ।
.
তথ্যসূত্রে নির্ভরযোগ্যতার খাতিরে অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই ইসলামী বইটি পড়া শুরু করেছিলাম আমি অনেক আগেই। মাঝে মাঝে বিভিন্ন প্রয়োজনে তথ্য জানার জন্য কিংবা লেখালিখির জন্য এই বইটি নিয়মিতই পড়তে হয় আমাকে। তখন থেকেই এই সিরিজের বইগুলি সংগ্রহ করার ব্যাপারে আমার বিপুল আগ্রহ জন্মায়।
.
আল্লাহর অশেষ রহমতে অবশেষে এই সিরিজের বইগুলো সংগ্রহ করতে পারলাম। অনেকদিনের ইচ্ছা ছিল এটা। এই সিরিজের মোট চৌদ্দটা বই আছে। আমি এবার পেয়েছি মোট এগারোটা। তিন, তের এবং চৌদ্দ স্টলে এখন শেষ। এখন আবার অপেক্ষার পালা, কবে বাকি তিনটা আবার আসবে ইসলামী ফাউন্ডেশনের চট্টগ্রামের শাখায়।
.
বেশকিছু বই বিক্রেতার সাথে আমি যোগাযোগ করেছি, তারা কেউই বইগুলো একবারে দিতে পারছিলেন না। যারা দিবে বলেছিলেন তাদের আসলে নিজেদের ছাপানো কোন বই নেই, বরং ইসলামী ফাউন্ডেশন থেকে বই জোগাড় করে বেশি দামে পাঠকদের কাছে বিক্রি করে। অথচ যখন জিজ্ঞেস করা হয়, তখন বলে এটা নিজেদের প্রকাশিত বই। ইসলামী বই বিক্রি নিয়েও এদের এত মিথ্যাচার দেখে আমি যথেষ্টই অবাক হয়েছিলাম।
.
'আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া' সিরিজের বইগুলির বঙ্গানুবাদ করা হয়েছিল একমাত্র ইসলামী ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ছাড়া বাইরের অপরিচিত কোন প্রকাশনী থেকে বঙ্গানুবাদ করা ইসলামী বই কেনা এখন কিছুটা বিপদজনক। দেশে এখন ভুঁইফোড় আজগুবি কিছু লোভী সম্প্রদায় বের হয়েছে, পথভ্রষ্ট এই সম্প্রদায়গুলো নিজেদেরকে বিভিন্ন নামে ডাকে। আবার এদের সাথে আবার যোগ দিয়েছে বেশ কিছু হুজুর নামের পথভ্রষ্ট লোকজন, যারা বিখ্যাত ইসলামী বইগুলো বঙ্গানুবাদ করার সময়ে অরিজিনাল লেখার সাথে নিজেদের বিভিন্ন মিথ্যাচারের মতবাদগুলো শয়তানি বুদ্ধিতে ঢুকিয়ে দেয়। এমনকি বুখারী শরীফের হাদিস বঙ্গানুবাদ করার সময় তাফসীরের নামে এরা নিজেদের বিতর্কিত মতামত কিছু জায়গায় ঢুকিয়ে দিয়েছিল যা ছিল সরাসরি ইসলামের মূলনীতির সাথে সাংঘর্ষিক। মাহে রামাদানের পবিত্র তারাবিহর নামাজের ওয়াক্ত নিয়ে উম্মুল মূমেনীনা হযরত আইশাহ রাদিআল্লাহু আনহার সুপ্রশিদ্ধ একটা হাদিসের ব্যাখ্যা পর্যন্ত এরা বিকৃত করে দিয়েছিল। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন এদের সুপথে আবার ফিরে আসার তৌফিক দান করুন, আমীন। এদের ভয়ে বাংলায় অনুবাদ করা ইসলামী বই বেশ কিছুদিন ধরেই পড়া বন্ধ রেখেছিলাম।
.
ইসলামী আরেকটা দুর্দান্ত সিরিজ আছে, 'The history of Al-Tabari'। ইতিহাস নির্ভর এই সিরিজ পাশ্চাত্যদেশগুলিতে পর্যন্ত বিভিন্ন লেখায় নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র হিসেবে ব্যবহার করে এখনো। চল্লিশ খন্ডের এই সিরিজের মাত্র দশ খন্ড ইসলামী ফাউন্ডেশন বঙ্গানুবাদ করেছে। ইনশা আল্লাহ পুরোটা বঙ্গানুবাদ করলেই এই সিরিজটাও আমি কিনে ফেলবো।
.
অনেকেই এত দূর লেখা পড়ার পর আশা করছেন বইগুলির পাঠ প্রতিক্রিয়া দেবো আমি। সেই সাহস বা যোগ্যতা কোনটাই নেই আমার।
.
আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআন শরীফে ঘোষণা করেছেন 'ইকরা' অর্থাৎ তোমরা 'পড়'। এবং পড়ে জ্ঞান অর্জন করো। মহানবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম, এরপর থেকে সাহাবায়ে কীরাম, ফিকহ শাস্ত্রবিদ পর্যন্ত সবাই নির্দ্বিধায় একটা কথা বলে গেছেন যে, ইসলামে অন্ধ অনুসরণ করা বা ত্বাকলিদ করা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। ইসলামের চার প্রসিদ্ধ মাযহাবের ফিকহবিদগণ সরাসরিভাবে তাদেরকে অনুসরণ করতে পর্যন্ত মানা করে গেছেন তাদের লেখা বইগুলিতে। বরং বলে গেছেন তোমরা মহানবী সাল্লালাহু আলাহিস ওয়াসাল্লাম'কে অনুসরণ করো। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পবিত্র কুরআন শরীফে শুধুমাত্র উনার রাসূলকে অনুসরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন আর কাউকেই না।
.
কিন্তু একমাত্র বাংলাদেশেই অদ্ভুত বিরল প্রজাতীর এক ঘটনা দেখা যায়। ধর্মীয় জ্ঞান শিক্ষা অর্জনের নামে সাধারণ মানুষজন কিছু পীর-ফকির, হুজুর, ওয়াজকারীদেরকে অন্ধভাবে অনুসরণ করে। টাকা-পয়সার বিনিময়ে যারা এভাবে ধর্ম প্রচার করে বেড়ায় এরা অবশ্যই আপদমস্তক ভন্ড। ইসলামের কোথাও এভাবে টাকা-পয়সা নিয়ে ওয়াজ এর মাধ্যমে ধর্মের বাণী প্রচারের কথা ইসলামের কোনকালের ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যায় না। লাখ লাখ টাকা খরচ করে হেলিকপ্টারে যেয়ে 'সাহাবীরা কীভাবে দিনের-পর-দিন অভুক্ত অবস্থা জিহাদের মাধ্যমে ইসলাম প্রচার করে বেরিয়েছে' কাহিনী যারা বলে বেড়ায় এরা পুরোপুরি ভন্ড পথভ্রষ্ট এবং যারা এদেরকে অন্ধভাবে অনুসরণ করে এরাও পথভ্রষ্ট।
.
সবাইকে অনুরোধ, এইসব ভণ্ডদের ওয়াজ শুনে, অন্ধ অনুকরন করে ইসলামের ভুলগুলি না শিখে বরং ইসলামী বই পড়ে সত্যিকারের ইসলামকে শিখুন।
.
ইসলামী ফাউন্ডেশন প্রচুর মূল্যবান ইসলামী বইগুলির বঙ্গানুবাদ প্রকাশ করেছে। এইগুলি সংগ্রহ করুন, পড়ুন এবং সত্যিকারের ইসলাম কী সেটা জানুন।
.
আল্লাহ আমাদের সবাইকে সীরাতুল মুস্তাকীমের পথে চলার তৌফিক দান করুন, ছুম্মা আমীন।
.
সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইলো
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, সেপ্টেম্বর ২০২১
০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:৩১
নীল আকাশ বলেছেন: এদের বেশিরভাগই ইসলাম নিয়ে অজ্ঞ।
এদের কাউকে পেলে জিজ্ঞেস করবেন কোন সালাতে কয় রাকাতে ফরজ সেতা যেন আল কুরআন থেকে বের করে দেখায়।
মহানবী নিজেই বলে গেছেন শেষ জামানায় ৭৩ ফিরক বের হবে যার ৭২টাই পথভ্রষ্ট।
২| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১৯
কামাল১৮ বলেছেন: ইসলামের খেদমত করে যদি টাকা পয়সা না নেয় এরা কি ঘাস খেয়ে বাচবে।
০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:৩৩
নীল আকাশ বলেছেন: ওয়াজের নাম এরা যা করে বেড়ায় তা হারাম এবং শরীয়ত বিরোধী কাজ। বেশিরভাগই ওয়াজে বসে গীবত করে সেটাও নিষিদ্ধ।
৩| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ বিকাল ৪:৩৯
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: সঠিক ইসলামী বই এবং সঠিক ইসলামিক স্কলার নির্ণয় করতে অনেকে ভুল করে। ফলে ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়। আপনার দেয়া বইটার অনেক নাম শুনেছি কিন্তু পড়া হয় নাই। কিছু ভগ্নাংশ হয়তো নেটে প'ড়ে থাকতে পাড়ি। বুখারি শরীফের বাংলা অনুবাদে নোট হিসাবে বাড়তি কথা যোগ করাটা আমারও ভালো লাগে না। হাদিসের নাম্বার আরবি বইয়ের সাথে মেলে না, এটা একটা সমস্যা মনে হয় আমার কাছে। সুন্দর কিছু বইয়ের সূত্র দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:৫৫
নীল আকাশ বলেছেন: সঠিক ইসলামী বই এবং সঠিক ইসলামিক স্কলার নির্ণয় করতে অনেকে ভুল করে। ফলে ইসলাম সম্পর্কে ভুল ধারণা তাদের মধ্যে সৃষ্টি হয়।
কারন এরা ভুল মানুষ বা হুজুরের বা পীরের কাছ থেকে বই নিয়ে পড়ে। আমি একজনের বাসায় এক পীরের বই পেলাম। সেখানে দেখি মীলাদের পক্ষে বিভিন্ন তথ্য হুজুরদের ভাষ্য দেয়া আছে অথচ কোন হাদীস কিংবা ফতোয়া সূত্র সহ দেয়া নেই। কেউ পড়লে খুব সহজেই বিভ্রান্ত হবে।
আমি হাদিসের জন্য বাংলা এবং ইংরেজি দুইটাই চেক করি। বাংলা বইগুলিতে অনেক সময়ে আহলে হাদিসের উলটা পালটা মতবাদ চোরের মতো নোটে ঢুকিয়ে দেয়। সাধারন মানূষ বুঝবেও না।
আল বিদায়া ওয়াল নিহায়া পড়ুন, অন্যতম সেরা বই এটা।
৪| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:৫৭
রাজীব নুর বলেছেন: যখন বুড়ো হয়ে যাবো। হাতে কোনো কামকাজ থাকবে না তখন এসব বই পড়া যেতে পারে।
০৩ রা অক্টোবর, ২০২১ বিকাল ৩:৫৫
নীল আকাশ বলেছেন: বুড়ো হওয়া পর্যন্ত বেঁচে থাকবেন এটার গ্যারান্টি আপনাকে কে দিয়েছে?
৫| ৩১ শে অক্টোবর, ২০২১ সন্ধ্যা ৭:৪১
খায়রুল আহসান বলেছেন: ওয়াজ শুনে কিংবা কাউকে অন্ধ অনুকরণ না করে বরং যথাযথ পুস্তক পাঠ করে প্রকৃত ইসলামকে চেনার এ আহবান কে স্বাগত জানাচ্ছি। এমন একটি পোস্টের জন্য ধন্যবাদ।
০৬ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ১:৪৪
নীল আকাশ বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপ্নাকে। আমি খুব নিয়মিত পড়াশুনা করতাম ধর্ম বা যে কোন বিষয়ে। জানার আগ্রহ আমার খুব বেশি। তবে ইদানিং লেখাপড়া থেকে দূরে থাকতে হচ্ছে মাথা ব্যথার জন্য। লেখালিখিও আপাতত স্টপ। ডাক্তার দেখাচ্ছি।
সুস্থ হয়ে ব্লগে আবার স্বরূপে ফিরবো। দোয়া করবেন।
৬| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:০৪
এভো বলেছেন: এই সৃষ্টি তত্ত, মানব তত্ত বিজ্ঞানের সাথে মিলে কি? একটু যদি আলোচনা করেন, ধন্যবাদ।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩২
নীল আকাশ বলেছেন: না, সব ক্ষেত্রে না। আধুনিক বিজ্ঞানের চিকিতসা শাস্ত্রের সাথে কিছু কিছু বিষয় নিয়ে এখনো ইসলামের পুরোপুরি মিল নেই। কারন আধুনিক বিজ্ঞানের চিকিতসা শাস্ত্র পুরোপুরি উতকর্ষতা অর্জন করতে পারেনি।
এই বই বিশাল ঐতিহাসিক টপিক নিয়ে লেখা। ইসলামীক ইতিহাস ব্যাপাক এবং বিস্তৃতভাবে এখানে দেয়া আছে।
পড়ার আমন্ত্রণ দিলাম।
৭| ০৬ ই নভেম্বর, ২০২১ দুপুর ২:৫৫
নতুন নকিব বলেছেন:
গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সুন্দর লিখেছেন। +
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩২
নীল আকাশ বলেছেন: আপনার নিশ্চয় এই সিরিজ পড়া আছে।
লেখাটা পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১| ২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:১৭
নূর আলম হিরণ বলেছেন: অনলি কোরআন নামে একদল অনুসারী আছে ইসলামে। আপনি কি তাদের আলোচনা শুনেছেন? আমি শুনেছি বেশ ইন্টারেস্টিং লেগেছে।