নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বিশ্বজোড়া পাঠশালাতে সবাই ছাত্র-ছাত্রী, নিত্য নতুন শিখছি মোরা সদাই দিবা-রাত্রী!

নীল আকাশ

এই ব্লগের সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা অন্য কোথাও প্রকাশ করা যাবে না।এই ব্লগের সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। আমার অনুমতি ছাড়া এই ব্লগের লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।

নীল আকাশ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ মোহরানার টাকা

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৮:৩৭



প্রায় মাঝরাত। ঘরের বিছানায় ফাহিব চুপ করে বসে আছে। পাশেই ভাঁজ খোলা সিটি কর্পোরেশনের একটা চিঠি। এক পৃষ্ঠা ধরে লেখা চিঠির বিষয়বস্তু খুব ছোট। শিরিন ওর কাছে ডির্ভোস চাইছে, অভিযোগ গুরুতর অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতা। অভিযোগটা নিয়ে কিছুটা তর্ক ফাহিব করতে পারতো, কিন্তু কী লাভ? যে চলে যেতে চায় তাকে কি আটকানো সম্ভব? সৃষ্টিকর্তা পছন্দের মানুষকে বেঁধে রাখার জন্য একটা অদৃশ্য শিকল বানিয়ে দিলে মনে হয় ভালোই হতো। কিন্তু দিন শেষে কাউকেই শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা সম্ভব হয় না, হাতপায়ে যত কঠিন শিকলই দেয়া হোক! যে পাখি একবার মুক্ত বাতাসের স্বাদ পেয়েছে তাকে ধরে এনে খাঁচায় ভরে রাখা সম্ভব না। এলিফ্যান্ট রোডের বাটার দোকানের সামনে বিকালবেলা দেখা সেই দৃশ্যটা আবারও মনে পড়ে গেলো ফাহিবের......

রাস্তার পাশের একটা টং দোকান থেকে ফাহিব সিগারেট কিনে ধরিয়েছে, এমন সময় ওর পাশেই একটা সাদা টয়োটা হ্যারিয়েট এসে থামলো। দরজা খুলে রাস্তায় নেমেই শিরিন দেখে সামনেই ফাহিব দাঁড়িয়ে আছে। বিন্দুমাত্র ইতঃস্তত না করে ফাহিব’কে পাশ কাটিয়ে বাটার দোকানে যেয়ে ঢুকলো। গাড়িটা পার্কিং করে শিরিনের পিছু পিছু খুব হ্যান্ডসাম একটা ছেলেও সেই দোকানে যেয়ে ঢুকলো। এই ছেলেটার কথা ফাহিব শুনেছিল, আজকেই প্রথম দেখলো। বয়সে কিছুটা ওর ছোটই হবে। বড়লোকের বখে যাওয়া ছেলে। হাতে খুব দামী একটা আইফোন। গলায় মোটা একটা স্বর্নের চেইন। কেন যেন ফাহিবের সেখান থেকে চলে যেতে ইচ্ছে করলো না। দোকানের সামনে ঠায় দাঁড়িয়ে থাকলো। বেশ কিছুক্ষণ পরে হাতে অনেকগুলি শপিং ব্যাগ নিয়ে শিরিন সেই ছেলের হাত ধরে বের হয়ে এসে ফাহিবের পাশ দিয়ে সোজা গাড়িতে যেয়ে উঠলো। ফাহিব মেজাজ নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলো না। সহসাই গাড়ির দরজা খুলে শিরিনের হাত ধরে টেনে গাড়ি থেকে নামিয়ে নিয়ে আসতে চাইলো রাস্তায়।
- কোন সাহসে তুমি আরেক ছেলের সাথে ঘুরে বেড়াও?
- তুই কখনো আমার হাত আর ধরবি না। আজকে শেষবারের মতো তোকে মাপ করে দিলাম।
- ধরবো, একশোবার ধরবো। তুমি আমার বিবাহিতা স্ত্রী।
- তোর বিয়ের আমি নিকুচি করি। বেহায়া কোথাকার! আমাকে ডির্ভোস দিতে বলিছি না? আমি তোর সাথে সংসার করবো না। তোর মতো ফকিন্নির তো ডির্ভোস দেয়ার মুরোদও নেই!
চুপ হয়ে গেল ফাহিব। বিয়ের কাবিনে পঁচিশ লাখ টাকা মোহরানা ধরা আছে। এত টাকা ও কোথা থেকে দেবে?
- আগামী দশদিনের মধ্যে যদি ডির্ভোস না দিস, তাহলে আমার এই বয়ফ্রেন্ড’কে তোর বাসায় নিয়ে যেয়ে, তোর বিছানায় তোর চোখের সামনেই মৌজফুর্তি করা শুরু করবো। দেখি কী করতে পারিস, আর কয়দিন সহ্য করে থাকতে পারিস?

চরম নিষ্ঠুর এই পৃথিবীতে নিজেকে হঠাৎ খুব অসহায় মনে হলো ফাহিবের। শিরিনের সাথে বেশি কিছু করা ওর সম্ভব না। শিরিনের মামা মতিঝিল থানার পুলিশ ইন্সপেক্টর। কিছুদিন আগে ঝগড়ার সময়ে শিরিনকে একটা থাপ্পড় দিয়েছিল ফাহিব। কিছুক্ষণ পরেই সেই থানা থেকে পুলিশ এসে ওকে ধরে নিয়ে গিয়েছিল। রাতেরবেলা সেলের ভিতর লাইট নিভিয়ে হান্টার দিয়ে দুইজন পুলিশ যেই মার ওকে দিয়েছিল সারাজীবনে ও ভুলবে না। রাস্তায় অসহায়ের মতো শিরিনের দিকে ও তাকিয়ে আছে। ছেলেটা ইতিমধ্যেই গাড়ি স্টার্ট দিয়ে দিয়েছে। শিরিন ফাহিবের মুখের উপর দরজা সশব্দে লাগিয়ে দিতেই গাড়ি চলতে শুরু করলো। নিজের উপর প্রচণ্ড ক্ষোভে রাস্তার উপর একদলা থুথু ফেললো ফাহিব।

পরেরদিন সন্ধ্যের সময়ে শিরিন ওর বয়ফেন্ডের সাথে বেশ কিছু খুব অন্তরঙ্গ ছবি পাঠিয়ে কিছুক্ষণ পরেই ফোনে জিজ্ঞেস করলো ছবিগুলি কেমন লেগেছে ফাহিবের। দাঁতে দাঁত চেপে চুপ করে থাকলো ফাহিব।
- তুই তাহলে আমাকে ডির্ভোস দিবি না?
- আমার পক্ষে এত টাকা একসাথে দেয়া সম্ভব না। তুমি আমার অর্থনৈতিক অবস্থার কথা তো জানো।
- রাস্তার ফকিন্নি কোথাকার! আমাকে সংসার করার জন্য ডাকিস কেন তাহলে? আমাকে পালার মুরোদ নেই তোর। বিয়ে করার সময় খেয়াল ছিল না তখন?
- বিয়ে কি আমি নিজে করেছি? বিয়ের প্রস্তাব তোমাদের বাসা থেকেই তো এসেছিল। তোমার বাবা-মা’ই সবকিছুর আয়োজন করে বিয়ের ব্যবস্থা করেছিলেন।
- আমার বাবা মা বললেই তুই কি চব্বিশ তলা বিল্ডিংয়ের উপর থেকে নীচে লাফ দিবি? আমার বাবার টাকাপয়সা সয়সম্পত্তি দেখে মাথা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল তখন, এটা স্বীকার করিস না কেন?
- আমার সাথে তুই তুই করে কথা বলছো কেন? আমি তোমার আল্লাহকে সাক্ষী রেখে বিয়ে করা স্বামী।
- রাখ তোর বিয়ের সাক্ষী। আমাকে কাবিনের মোহরানার টাকা এখন দিতে পারবি কিনা বল?
- আমি এখন পারবো না।
- তাহলে আমিও যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াবো। কিচ্ছু বলতে পারবি না। আমাকে ডির্ভোস দে। তোর মতো ফিকিন্নীর সাথে আমি সংসার করবো না। রাস্তাঘাটে আমাকে নিয়ে আবার সীন ক্রিয়েট করলে সোজা মামাকে ফোন দেবো আমি। তখন বুঝবি কেমন লাগে?

হুট করেই ফোনের লাইন কেটে গেলে চরম হতাশায় ডুবে গেল ফাহিব।

এক
অফিসে এসেই অনলাইনে আজকের একটা দৈনিক পত্রিকা খুলে মেজাজ খারাপ হয়ে গেল ফাহিবের। ইদানিং মডেল হবার জন্য প্রাণান্ত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে শিরিন। সমস্যা হচ্ছে এই চেষ্টার রাস্তায় কোন দিকে হাঁটছে শিরিন ফাহিব বুঝতে পারছে না। আজকে জনৈক সিনেমার ডাইরেক্টরের সাথে কক্সবাজারে শিরিনের প্রকাশ্যে খোলামেলা পোষাকে ঘুরে বেড়ানো ছবি দিয়ে খবর ছাপিয়েছে। ইদানিং বেশ খুল্লাখুল্লাভাবে যা ইচ্ছে তাই করে বেড়াচ্ছে শিরিন। নিয়মিতই নিজের ফেসবুকের পেজে ভয়ংকর সব ছবি পোস্ট দিচ্ছে। নিজের আত্মীয় স্বজনের কাছে মুখ দেখানোর উপায় নেই এখন ফাহিবের। শিরিনের মায়া ও আগেই কাটিয়ে ফেলেছে। শিরিন এখন কী করে বেড়াচ্ছে সেটা নিয়ে ফাহিবের কিছুই যায় আসে না।

কিন্তু সমস্যা হচ্ছে মিডিয়া শিরিনের সাথে ফাহিবের পিছুও ছাড়ছে না। প্রায় সব খবরেই ওদের বিয়ের কথা তুলে ফাহিবের নাম পরিচয় সহ ছবি দিয়ে দেয় সাংবাদিকরা। অনেকবার পত্রিকা অফিসে ফোন করে ও অনুরোধ করেছে। কিন্তু কে শোনে কার কথা? নিজের মান সম্মান বাঁচাতে মুখে দাড়ি রাখা শুরু করেছে ফাহিব। পারতপক্ষে ঘর থেকেই বের হওয়া না এখন ও। মিডিয়া এবং সাংবাদিকদের এই মানসিক অত্যাচার থেকে ওকে মুক্তি পেতেই হবে।

দাঁতে দাঁত চেপে শিরিনের মোহরানার টাকা ফাহিব যোগাড় করা শুরু করলো। গ্রামের বাড়িতে পৈত্রিক একটা চাষের জমি ছিল। গত সপ্তাহে সেটা নয় লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়ে এসেছে ফাহিব। শিরিনের সাথে ওর অবশেষে আটমাস পরে ডির্ভোস নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। শিরিন বিশ লাখেই রাজি। পাঁচ লাখ কাবিনে উসুল দেখানো হয়েছিল। শিরিন মাসিক খোরপোষের ঝামেলা থেকেও ফাহিব’কে মুক্তি দিয়েছে। তবে দেয়ার আগে ইচ্ছেমতো অপমান করেছে ওকেঃ
- আমার প্রতিমাসে হাতখরচ লাগে এক লাখের মতো। তুই বেতন পাস ত্রিশ হাজার। যে কয় টাকা দিবি তাতে আমার মাসে একবার পার্লারে যাবার টাকাও উঠবে না। যা, তোর মতো ফিকিন্নীর আর খোরপোষের টাকা দিতে হবে না, মাফ করে দিলাম। শুধু মোহরানার পাওয়া থেকে বিশ লাখ দিয়ে ডির্ভোস পেপারে সাইন করিয়ে নিয়ে যাস।

হাঁফ ছেড়ে বাঁচলো ফাহিব। বিশ লাখের মধ্যে জমি বিক্রির নয় লাখ টাকার সাথে এতদিনের জমানো তিন লাখ টাকা মিলিয়ে বারো লাখ ইতিমধ্যেই শিরিনকে দিয়ে এসেছে। আরো বাকি আট লাখ দিতে হবে। না হলে শিরিন কোনভাবেই কাগজে সাইন দেবে না।

দুই
মানুষের ক্ষণস্থায়ী এই জীবনের বাঁকে বাঁকে এত বড় বাধা-বিপত্তি আসে যে সেইগুলো অতিক্রম করে বেঁচে থাকা যেন খুব কঠিন হয়ে যায়। গত তিনদিন ধরে অফিসে যাওয়া বন্ধ রেখেছে ফাহিব। মোবাইলও পুরোপুরি বন্ধ। লজ্জায় কারো সামনেই যেতে পারছে না ফাহিব। চারদিন আগে থাইল্যান্ডে গিয়ে দেশের নামকরা বিত্তশালী একজন শিল্পপতির সাথে শিরিনের সুইমস্যূট পরে সাঁতার কাটার ছবি সহ পাঁচ মিনিটের চরম অশ্লীল একটা ভিডিও ক্লীপস কে যেন সোশাল মিডিয়ায় লিক করে দিয়েছে। পুরো সোশাল মিডিয়া এখন সরগরম এই ভিডিও নিয়ে। প্রায় সব জায়গায় শিরিনের সাথে ফাহিবেরও ছবি ও পরিচয় দেয়া হয়েছে। কোন এক হারামজাদা সাংবাদিক আবার রির্পোট করেছে যে শিরিন নাকি স্বামীর সম্মতিতেই এইসব করে বেড়াচ্ছে টাকাপয়সার জন্য। চরম ইন্ট্রোভার্ট ফাহিবেরও ইচ্ছে করলো প্রকাশ্যে সেই সাংবাদিককে কুপিয়ে হত্যা করে ফেলতে। সেই ভিডিও ক্লীপস একবার দেখার পর বেশ কয়েকবার বমি করেছে ফাহিব। শিরিন যে এখনো ওর বৌ আছে, এটা মনে পড়ে যেতেই গত তিনদিন ধরে দুইচোখের পাতা এক মুহূর্তের জন্যও বন্ধ করতে পারেনি ফাহিব।

এই ঘটনার পর শিরিনের কাছ থেকে প্রচণ্ড চাপ এসেছে মোহরানার বাকি টাকা দ্রুত দিয়ে দেবার জন্য। টাকাগুলি নিয়ে শিরিন আপাতত দেশের বাইরে চলে যাবে বেশ কিছুদিনের জন্য। ফাহিবের হাতে এখন এত টাকা নেই শুনে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেছে শিরিন।

প্রায় চার ঘন্টা ধরে স্তব্ধ হয়ে বিছানায় শুয়ে আছে ফাহিব। নিজের জীবনের উপর চরম বিতৃষ্ণা এসে গেছে ওর। শিরিনের মোহরানা টাকা ওকে শোধ দিতেই হবে, যেভাবেই হোক।

তিন

অল্প কিছুদিন পরেই একটা ইন্সুরেন্স কোম্পানী থেকে শিরিনের সাথে যোগাযোগ করা হলে বেশ অবাক হলো শিরিন। এক ভদ্রলোক এসেছেন ওর বাসায় একটা চেক নিয়ে। শিরিনের নামে ইস্যু করা চেক, আট লাখ টাকার। ভদ্রলোককে চেনে শিরিন, ফাহিবের খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধু, সাজেদুর রহমান।

শিরিনদের বাসায় ড্রয়িংরুমে সোফায় বসে সারা শরীর রাগে এখন কাঁপছে সাজেদ সাহেবের। কিছুক্ষণ পরে শিরিন এসে সামনে বসতেই সাজেদ উঠে দাঁড়িয়ে চেকটা এগিয়ে দিয়ে বললোঃ
- নিন, আপনার মোহরানার বাকি টাকা। কষ্ট করে আর ডির্ভোস দিতে হবে না ফাহিবকে। আপনার পাওনা ফাহিব পুরোপুরি শোধ করে দিয়ে গেছে। কিছুই বাকি রাখেনি।

শিরিন অবাক হয়ে কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই একটা ডেথ সার্টিফিকেটের ফটোকপি এবং একটা লাইফ ইন্সুরেন্সের নমিনি ফর্মের পূরণ করা ফটোকপি শিরিনের সামনে রেখে উঠে চলে গেলো সাজেদ।

ফটোকপি করা কাগজগুলির ভাঁজ খুলে পড়তেই ফুঁপিয়ে উঠলো শিরিন। পাঁচদিন আগে নিজের ঘরে ব্রেইন স্ট্রোক করে মারা গেছে ফাহিব। তিনদিন পরে লাশ বাসা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। আশেপাশের মানুষ সেই বাসা থেকে আসা প্রচণ্ড দুর্গন্ধের জন্য স্থানীয় থানায় খবর পাঠিয়েছিল।

হাতে আট লাখ টাকার চেক নিয়ে নির্বাক হয়ে এখন বসে আছে শিরিন। ফাহিব মারা যাবার কোন সংবাদ ওকে দেয়া হয়নি।

চেকটার উপরে শিরিনের নাম এবং টাকার পরিমান লেখা অক্ষরগুলি থেকে রক্তের মতো টকটকে লাল রং চুইয়ে চুইয়ে যেন শিরিনের হাতে এসে পরছে।

সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইলো।
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, ডিসেম্বর ২০২১




মন্তব্য ৯ টি রেটিং +৭/-০

মন্তব্য (৯) মন্তব্য লিখুন

১| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:২৭

ইসিয়াক বলেছেন:




বেচারা ফাহিব!
লাগামছাড়া অতি আধুনিকতার করুন পরিণতি ... পারিবারিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের করুন কাহিনী।
গল্প ভালো লাগলো।

২| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:২৭

নজসু বলেছেন:


গতকালই একটা ইসলামিক পেইজ কিংবা গ্রুপে দেখলাম তারা লিখেছে-যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন না করে দেনমোহর পরিশোধের জন্য স্বামীকে চাপ দেয়া উচিত।

কথাটা ভালোই লেগেছিলো। কিন্তু আজকে বেচারা ফাহিবের জন্য আমার প্রচন্ড মায়া হচ্ছে। সেই সাথে হচ্ছে করুণাও।

শিরিনের মতো মেয়েকে এতোটা কেন ভালোবেসেছে ফাহিব?
বোঝাই যায়, আমাদের সমাজের লোভী মেয়েদের অবস্থানটা কোথায়? টাকার জন্য নির্ভেজাল ভালোবাসা ত্যাগ করে বখে যাওয়া কৃত্রিম ভালোবাসার পিছে ছোটে। নিজের শরীরকেও বিকিয়ে দেয়। মোহরনার টাকার জন্য পরপুরুষকে নিয়ে স্বামীর সামনে মৌজ করতে চায়।

টাকাওয়ালা পুরুষদের টার্গেট করে শিরিনের মতো মেয়েরা । মাঝখানে কখনও মা বাবার পছন্দের ফাহিবের মতো ছেলেদের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। কিন্তু পছন্দের সেই গো-বেচারা ছেলের জীবন করে তোলে নারকীয়।

গল্পটা শুধু গল্প নয়। সমাজের জঘন্য একটি দিক উপস্থাপন করেছেন আপনি। মা বাবাকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। প্রত্যেক মা বাবাই চান তাদের সন্তান সঠিক এবং ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক। হয়তো পরিবেশগত কারণে শিরিন রাণীরা নিজেদেরকে তৈরি করে নেয় অন্যভাবে।

ধন্যবাদ প্রিয় ভাই। গল্পের ঢং এবং রং সবই আকর্ষনীয়। লাইক।

৩| ২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২১ সকাল ১০:৫৪

নতুন বলেছেন: বিয়ে করার সময় ২৫ লাখ টাকা কাবিন করলো কেন যেটা সে পরিশোধ করতে পারবেনা?

আর আমাদের সমাজের পুরুষদের মহরানা আদায় সম্পর্কে ধারনা নেই বললেই চলে। অধবা তারা কি ভাবে ফাকি দেওয়া যায় তার বাহানা খোজে।

২৩ শে ডিসেম্বর, ২০২১ দুপুর ১২:৪৭

নীল আকাশ বলেছেন: বিয়ের সমইয়ে কাণ্ডজ্ঞান থাকে না। বিয়ের পর ঝামেলা লাগলে তখন বুঝে মোহরানা কাকে বলে।
অতি উচ্চমূল্য ধরা এখন ফ্যাশন গেছে।

৪| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: কাবিনের টাকা বেশি হওয়াই ভালো।
তাহলে দুষ্ট পুরুষলোক স্ত্রীকে ছেড়ে যেতে পারবে না।

৫| ২৪ শে ডিসেম্বর, ২০২১ রাত ১১:২৪

জটিল ভাই বলেছেন:
মোহরানাতো এখন কলমের কালির মাঝেই সীমাবদ্ধ! ভালো হয়েছে।
তা কেমন আছেন?

৬| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০২২ রাত ১০:০৮

খায়রুল আহসান বলেছেন: গল্পে বর্তমান সমাজের বাস্তবতা প্রতিফলিত হয়েছে।
দেন-মোহরের অংক নির্ধারণের সময় বর এবং তার মা বাবার সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে, যেন সেটা বরের সামর্থ্যের বাইরে চলে না যায়।
গল্পে ষষ্ঠ প্লাস। + +

৭| ১১ ই জানুয়ারি, ২০২২ দুপুর ২:৩০

নিঃশব্দ অভিযাত্রী বলেছেন: এখনকার বাস্তব চিত্র। খুব সুন্দর হয়েছে।

৮| ০২ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৯:৫৯

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: বাস্তবতার কি নির্মম কশাঘাত! আহারে কি নিষ্ঠুর নিয়তি এযুগের পুরুষ নায়কের। পড়তে গিয়ে দম বন্ধ হয়ে আসছিল। সমাপ্তিটা আরও একটু দীর্ঘায়ীত হলে প্রাণ ভরতো। শুভকামনা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.