নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ভাগ্যক্রমে আমি এই সুন্দর গ্রহের এক বাসিন্দা! তবে মাঝেমধ্যে নিজেকে এলিয়েন মনে হয়। তবে বুদ্ধিমান এলিয়েন না, কোন আজব গ্রহের বোকা এলিয়েন!
সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার দোকানে থামতো না, আমি দোকানে যেতাম। আব্বা আমাকে পাঁচ টাকা দিতো, তার থেকে ২ টাকা আপাকে দিতাম ৩ টাকা আমি নিতাম। এটা নিয়ে কত যে ঝগড়া হয়েছে। আপা বলতো তুই সব সময় ৩ টাকা নিস আমাকে ২ টাকা দিস কেনো! আম্মাও আব্বাকে বলতো আপনি কোন হিসাবে ওদের ৫ টাকা দেন, হয় ৪ টাকা দিবেন, না হয় ৬ টাকা দিবেন। এটা নিয়ে প্রতিদিন ওরা ঝগড়া করে। এরপর অবশ্য হাইস্কুলে উঠার পর ১০ টাকা দিতো, তাতে ভাগ করতে সমস্যা হতো না।
হাইস্কুলে উঠার পর হাত খরচের চাহিদা একটু বেড়ে গিয়েছিল কিন্তু কখনোই আব্বার কাছে বলে দশ টাকার বেশি পেতাম না। আবার এই দিকে আমাদের বড় এক সুপারি বাগান ছিল। আমি সুপারি গাছে উঠতে পারতাম না তাই সুপারি চুরি করেও বিক্রি করতে পারতাম না। অগত্যা ঘরে যে সুপারি গুলি থাকতো সেখান থেকে কিছু চুরি করে নিয়ে বাজারে বিক্রি করতাম। এরকমই একদিন চুরি করে বিক্রি করতে গিয়ে আম্মার কাছে ধরা পড়েছি। আম্মা কিছুই বললেন না, শুধু বললো চুরি যখন করবি নিজের গাছের থেকে পেড়ে চুরি কর। চোর সব সুপারি চুরি করে নিয়ে যায়। তুই নিলেও তো বলতে পারতাম ঘরের মানুষই নিয়েছে, মনেরে বুঝ দিতাম।
এরপর মনে মনে চিন্তা করলাম সুপারি গাছে উঠা শিখতে হবে, তাহলে আর হাত খরচের চিন্তা থাকবে না। বাগানে গিয়ে বেশ কয়েকবার ট্রায়াল দিয়েছি কিন্তু পারছি না। কোনমতে উপরে উঠলেও সুপারির ফানা টেনে ছিঁড়তে পারছিনা, আবার কেটেও নামাতে পারছি না।
তেমনি একদিন বিকেল বেলা সুপারি বাগানে গিয়েছি ভাবলাম দেখি গাছে উঠে সুপারি পাড়তে পারি কিনা। বাগানের যখন ঢুকেছি একটু ভিতরে গিয়ে দেখতে পেলাম আমাদের বাড়ির আমার এক চাচা বাগানের ভিতর ঘুরঘুর করছে। আমি বুঝতে পারছি চাচা আমাদের সুপারি চুরি করতে এসেছে। আমি আস্তে লুকিয়ে গেলাম। কিছুক্ষণ পর দেখলাম চাচা এদিক ওদিক তাকিয়ে লম্বা একটি সুপারি গাছে চোখের পলকে উঠে পড়লো। গাছের উপরে উঠে সুপারির ফানা টেনে ছিড়ে নিজের পায়ের হাটুর উপরে রেখেছে। চাচা যখনই নামতে যাবে তখনই আমি উপর দিকে না তাকিয়ে জোরে জোরে ওই গাছের নিচে গিয়ে নিচে দাঁড়িয়ে রইলাম। কিন্তু আমি উপরের দিকে তাকাচ্ছি না। এদিক ওদিক কিছু খোঁজার ভান করলাম। চাচা উপর থেকে ভাবল আমি তাকে দেখিনি হয়তো উপরে না তাকালে উনি বেঁচে যাবেন। তাই তিনি উপরেই বসে রইলেন। এদিকে আমার মনে অন্য চিন্তা, আমি দেখতে চাইলাম চাচা কতক্ষণ সুপারি গাছে সুপারি নিয়ে বসে থাকতে পারে। যেহেতু সুপারি গাছের কোন ঢাল নেই সেহেতু আমি নিশ্চিত ছিলাম বেশিক্ষণ থাকতে পারবে না। এরপরও চাচা প্রায় ২০ মিনিটের মত উপরে বসে ছিল। পরবর্তীতে হয়তো আর টিকতে না পেরে আস্তে করে সুপারি গাছের নিচে নামলো। আমিও এবার ঘাপটি মেরে সুপারির ফানা ধরলাম। আর বললাম আপনি আমাদের গাছের সুপারি পাড়লেন কেনো? চাচা সুপারি ফানা আমার হাতে দিয়ে বললো যা তোর আম্মাকে দিয়ে দিস। সুপারি গুলি পেকে গিয়েছে আমি ভাবলাম গাছ থেকে পেড়ে নিয়ে তোদের ঘরে দিয়ে আসবো। এই বলে চাচা চলে গেলো।
বিনা পরিশ্রমে এতগুলি সুপারি পেয়ে আমি আর বাড়িতে যায়নি, সুপারি গুলিকে বাগানে সুন্দর করে ছিঁড়ে নিয়ে বিক্রি করে দিয়েছি। তখনকার সময়ে প্রায় ১৮০ টাকা পেয়েছিলাম। মোটামুটি সপ্তাহখানেক খুব ভালোই কেটেছিল।
স্মৃতি থেকে যা আজও ভাবায় আমায়(৯)
০৫ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০১
নূর আলম হিরণ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
২| ০৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৭
শূন্য সারমর্ম বলেছেন:
বড়সড় কি ফল চুরি করেছিলেন?
০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৭
নূর আলম হিরণ বলেছেন: না বড়সড়ো ফল চুরি করিনি কিন্তু একবার এক বন্ধু আমাদেরকে ডাব খাইয়েছিল। ও বলছিল গাছ গুলো ওদের কিন্তু পরে জানতে পারলাম গাছগুলি তাদের নয়।
৩| ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:০৩
লেখার খাতা বলেছেন: আমার মন চুরি হয়ে গিয়েছিল।
০৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩১
নূর আলম হিরণ বলেছেন: ভালোই তো
৪| ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:২২
এম ডি মুসা বলেছেন: এই কাজ গ্রাম অঞ্চলের বাচ্চা কিশোর বহু করে
০৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩২
নূর আলম হিরণ বলেছেন: ঠিক। যাদের নিজেদের সুপারি গাছ নেই তারাও করে
৫| ০৫ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৬
মনিরা সুলতানা বলেছেন: গাছে উঠার শক্তি না থাক বুদ্ধি তো ছিল ! বেশ বেশ।
০৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৪
নূর আলম হিরণ বলেছেন: হাহা, এখন এগুলোই মাঝে মাঝে মনে পড়ে আর হাঁসি।
এইজন্যই মনে হয় বলে, If you don't do stupid things when you're young, you'll have nothing to laugh about later in your life.
৬| ০৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫
ডঃ এম এ আলী বলেছেন:
সুপারি চুরি , দারুন স্মৃতি কথা ।
গাছে উঠে সুপারী পেরে চুরি করতে
না পারলেও গাছের নীচ হতে তা
হাত বদল করে নেয়ার বুদ্ধি কিন্ত
প্রখর ছিল সেটাই বা কম কিসে ।
তবে কথা হল সব চুরিই চুরি নয়
বিশ্বাস না হলে এই লিংকে গিয়ে
আমার লেখা কবিতাটি দেখতে পারেন
আশ্রয়হীন ও অভুক্তের চুরি অপরাধ নয়
তবে আপনি আশ্রয়হীন আর অভুক্ত
না হলেও, দৈনিক স্কুলে পছন্দের টিফিনের
তরে অনেকটাই ক্ষুধার্থ ছাত্রতো ছিলেনই
তাই সেই চৌর্যকর্ম চুরি বলে গন্য নয়।
তার পরেও মায়ের সায়তো ছিলই
নীজের বাগানের সুপারী চুরির তরে।
যাহোক, এখন ভিয়েতনামী হাই ব্রিড
সুপারির চারা পাওয়া যায় বাংলাদেশে
তারি শ খানেক চারা বাগানে লাগিয়ে
দিলে বছর তিনেকের মাঝে কোটিপতি
হতে ঠেকায় কে ? এ সুপারী চুরির জন্য
কষ্ট করে গাছ বেয়ে উঠতে হবেনা উপরে,
নীচে গাছ তলায় বসে সহজেই নেয়া যাবে
কারি কারি নাদুস নুদুস পাকা সুপারি পেরে
ছবিতে বিষয়টি দেখা যাবে বেশ ভাল করে ।
শুভেচ্ছা রইল
০৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৭
নূর আলম হিরণ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ আলী ভাই।
তবে এই জাতের সুপারি গাছ একবার লাগাবো ভাবছিলাম কিন্তু অনেকেই বলে এগুলো যেভাবে ছবি ও ভিডিও তে দেখায় ফলন সেভাবে হয় না। আপনি কি বিস্তারিত জানেন?
৭| ০৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:০২
শেরজা তপন বলেছেন: এধরনের চুরি সবাই বোঝে সবাই জানে তবুও কিছু বলে না- ঘরের লোক ও এলাকার ছেলেরা হাত খরচের জন্য এধরনের চুরি হরহামেশাই করত।তবে বড়সড় ক্ষতি করত না কারো।
মজার স্মৃতি ভাল লাগল।
*চাচা যখনই নামতে যাবে তখনই আমি উপর দিকে না তাকিয়ে জোরে জোরে ওই গাছের নিচে গিয়ে নিচে দাঁড়িয়ে রইলাম।
~ এই লাইনটা ঠিক বুঝতে পারলাম না।
০৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১
নূর আলম হিরণ বলেছেন: মানে আমি উনাকে চুরি করতে দেখে চোর চোর করে সেখানে সিন ক্রিয়েট করতে চায়নি। আমি জানতাম উনি গাছে বেশিক্ষন বসে থাকতে পারবে না, নামতে তাকে হবেই। নামলেই আমি খপ করে ধরবো
এছাড়াও বড় কারণ ছিল এভাবে সুপারি নিয়ে সুপারি গাছে ঝুলে থাকা অনেক কষ্টের। উনাকে আমি উপরের দিকে না তাকিয়ে কিছুক্ষণ ঝুলিয়ে রেখে শাস্তি দিয়েছিলাম। উপরের দিকে তাকালেই উনি ধরা পড়ে গেছে ভেবে নেমে যেতেন।
৮| ০৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:৪৫
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: কত কিছু চুরি করে খেয়েছি হাহাহা
চাচা আমাদেরকে ডাব দিতো না । তাই ফুফাত ভাই আর আমরা মিলে ডাব পেড়ে মধ্যরাতে খেতাম। জাম্বুরাও এমন করে খেতাম।
আল্লাহ যেন বিগত গুনাহ মাফ করে দেন
০৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৪
নূর আলম হিরণ বলেছেন: খেজুরের রস চুরির অভিজ্ঞতাও আছে, অন্য কোন দিন লিখবো।
©somewhere in net ltd.
১| ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫০
আরাফআহনাফ বলেছেন: সুখপাঠ্য স্মৃতি।