নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এই ব্লগ-বাড়ির সমস্ত লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। লেখকের অনুমতি ছাড়া এই ব্লগ-বাড়ির কোনো লেখা অন্যকোথাও প্রকাশ করা যাবে না।
বইয়ের নাম: আকাশ গঙ্গার তারা
লেখার ধরণ: গল্প সংকলন
লেখক: খন্দকার নাইমুল ইসলাম (ব্লগার মলাসইলমুইনা)
প্রকাশনী: চৈতন্য
প্রচ্ছদ: বিধান সাহা
প্রকাশ: বইমেলা, ফেব্রুয়ারী ২০২১
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ১২০
মলাট মূল্য: ২৫০/=
ব্লগার মলাসইলমুইনার সাথে ব্যক্তিগতভাবে আমার কোনো পরিচয় নেই। উনার ব্লগ নিক ছিল আমার কাছে বেশ আশ্চর্যজনক। এই নামের অর্থ বের করতে আমাকে বেশ কষ্টও করতে হয়েছে। সম্ভবত মনিরা সুলতানা আপু আমাকে এই নামের শানে নযুলটা বলেছিলেন। এরপর থেকে যতবারই উনার পোস্টে মন্তব্য করেছি, আমি সবসময় নাইমুল ভাই হিসাবেই উনাকে সম্বোধন করেছি। ব্লগে উনার লেখা আমি অনেকবার পড়লেও গল্পের চেয়ে সম্ভবত উনার প্রবন্ধগুলোই বেশি পড়া হয়েছে। বইয়ের ভূমিকাতে উনি আমার বেশ কিছু পরিচিত ব্লগারের নাম উল্লেখ করেছেন।
এটা উনার প্রথম বই এবং ব্লগে যখন উনি প্রথম এটার বিজ্ঞাপণ দিয়েছিলেন, আমি সেদিনই বলেছিলাম যে উনার এই বইটা আমি সংগ্রহ করবো, পড়বো ও পড়ার পরে পাঠ প্রতিক্রিয়া অবশ্যই লিখবো। তবে ব্যক্তিগত ব্যস্ততার জন্য দেরি হয়েছে এটা লিখতে। যেকোনো গল্প সংকলন আমার খুব ভালো লাগে পড়তে। কারণ একটা বইতে একইসাথে বিভিন্ন রুচির অনেকগুলো গল্প পড়া যায়। পাঠক হিসাবে আমি খুবই ধীরস্থির স্বভাবের এবং যেকোনো লেখা আমি খুব গভীর মনোযোগের সাথে পড়ি।
এই বইটি দেশ বিদেশের বিভিন্ন পটভূমিতে লিখা এবং গল্পগুলোর কাহিনী, বিষয় বৈচিত্র্য ও অনুপম প্রাকৃতিক বর্ননা মিলিয়ে সংকলনে সর্বমোট বারোটা গল্প দেয়া হয়েছে। বারোটা গল্পের সারসংক্ষেপ একে একে আমি নিচে আলোচনা করবো। তবে তার আগে এই বইটা নিয়ে অন্যকিছু আলোচনা করতে চাই। এই গল্প সংকলনের প্রুফ রিডার তার যথাযথ কাজ করেননি। বইয়ের বিভিন্ন গল্পে কথোপকথনের জন্য ভিন্ন ভিন্ন ফরম্যাট ব্যবহার করা হয়েছে, একই বইতে একই গল্পকারের বিভিন্ন লেখায় কথোপকথনের জন্য অবশ্যই একই ফরম্যাট ব্যবহার করা উত্তম। একজন গল্পকার লেখার বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করতেই পারেন। তবে সেটা যখন একত্রে সংকলনের আকারে আসবে, সেটা অবশ্যই একজন প্রুফ রিডারের দায়িত্ব সব লেখা, বইয়ের সৌন্দর্যের জন্য একই পদ্ধতিতে নিয়ে আসবে। এছাড়াও বেশ কিছু সাধারণ বাংলা বানানে ভুল দেখা গিয়েছে যা প্রমিত বাংলা ব্যাকরণ এর সাথে মিলে না এবং দৃষ্টিকটু লাগে। সম্ভবত প্রুফ রিডার ভালো করে মনোযোগ দিয়ে লেখাগুলো পড়েওনি। বাংলা বানান ভুলের জন্য কখনোই লেখক দায়ী নন। এটা প্রকাশকের ব্যর্থতা। লেখকের কাছে অনুরোধ, পরবর্তিতে বই প্রকাশের সময় উনি যেন এই বিষয়ে যথেষ্ট সর্তক থাকেন।
গল্প ১ - আকাশ গঙ্গার তারা
বিরহের এই গল্পটা শেষ করার পরে যেকোনো পাঠকের মনেই একরাশ বিষন্নতা এসে ভিড় জমাবে। মানুষ জীবনে চায় এক, কিন্তু শেষ পর্যন্ত হয় আরেক। তবুও অতীতের স্মৃতিরা অম্লান হয়ে থাকে মনের অতল গহীনে, কখনো মুছেও ফেলা যায় না। যে সম্পর্কটা চিরস্থায়ী হতে পারতো শ্বেতা ও স্বপ্নীলের মাঝে, সেটাই সময়ের ফিরে ভয়ঙ্কর একটু দুঃস্বপ্নের মত তাড়া করে ফেলে নায়ককে বছরের পর বছর।
গল্পটা ২০১৯ ব্লগারস ডেতে সামহ্যোয়ারইন ব্লগের ব্লগারদের সাহিত্য সংকলন ‘বাঁধভাঙার আওয়াজ’ এ প্রকাশিত হয়েছিল। এই গল্পে নায়ক ও নায়িকার কথোপকথন অনেকটাই নাটকের স্ক্রিপ্টের মতো হয়ে গিয়েছে। নাম ব্যবহার করে এইধরনের কথোপকথন সাধারণত স্ক্রিপ্ট এর কাজেই ব্যবহার করা হয়। তবে গল্পের থিম খুব চমৎকার এবং ফিনিশও খুব ভালো লেগেছে। গল্পের বিভিন্ন জায়গায় লাইন গ্যাপ ভিন্ন ভিন্ন দেয়া হয়েছে, বিশেষ করে কথোপকথনের সময়।
গল্প ২ - জ্যোতিষী
মানুষের জীবনে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে যার কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া আসলে কারো পক্ষে সম্ভব হয় না। যুক্তি তর্ক সবকিছু ছাপিয়ে বিশ্বাসটাই বড় হয়ে দাঁড়ায়। করিম সাহেবের জীবনে এমনই অলৌকিক এক ঘটনা নিয়ে এই গল্পটা তরতর করে এগিয়ে গেছে সামনের দিকে। পরাবাস্তব দিয়ে লেখা এই গল্পটা পাঠককে ভিন্ন এক ডাইমেনশনে নিয়ে যাবে। করিম সাহেবে যুবক থেকে প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছিয়েও অপেক্ষায় আছে কোনো অলৌকিকত্বের জন্য, আবার কারও সাথে দেখা হওয়ার জন্য।
একটা গল্পের মাঝে আরেকটা গল্প নিয়ে আসলে, নতুন গল্পটার ভেতরে থেকেই হুটহাট করে অরিজিনাল গল্পে যাওয়া আসা করলে এবং সেটা পরিস্কার করে পার্থক্য সহ উল্লেখ না করা হলে, পাঠকদের জন্য সেটা বুঝতে খুবই অসুবিধা হয়ে দাঁড়ায় ।
গল্প ৩ - জাঙ্ক ইমেইল
আমেরিকায় দুর্গম এক রাস্তায় বাসায় ফেরার পথে জামানের সাথে গাড়ি দুর্ঘটনায় মারাত্মক আহত হলির দেখা হলো। আহত হলিকে উদ্ধারের জন্য জামান পুলিশের ইমারজেন্সিতে ফোন করে উদ্ধারের ব্যবস্থা করলো। কিন্তু তারপরেই জামানের জীবনে একের পর এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটতে শুরু করলো। অচেনা এক অ্যাকাউন্ট থেকে ওর মোবাইল আসতে লাগলো বিশেষ একটা দিনে বাইরে বের না হওয়ার জন্য জাঙ্ক ইমেইল। কী সেই মেইলে লেখা আছে এবং জামানের ভাগ্যে শেষ পর্যন্ত ঘটলো সেটা জানার জন্য পাঠকদের পড়তে হবে এই সাসপেন্স গল্পের শেষ পর্যন্ত।
তবে এই গল্পে ইংরেজি শব্দগুলোর বাংলা উচ্চারণে অনেক বানান বিভ্রাট আছে। প্রমিত বাংলায় ইংরেজি শব্দের শুদ্ধ উচ্চারণের নিয়ম এখানে মানা হয়নি। অনেক ক্ষেত্রেই অপ্রয়োজনীয়ভাবে খুব সহজলভ্য বাংলা শব্দের জায়গায় ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে।
গল্প ৪ - ভেজাল
গ্রামের গৃহস্থ পরিবারের ছোট ছেলে মোবারক। শিক্ষিত ছেলে হওয়ার কারণে কৃষক বাবার সাথে জমিতে কাজ করতে লজ্জা পায়। শেষ পর্যন্ত বাবার জমি ও মায়ের গয়নাগাটি বিক্রি করে দালালের খপ্পরে পড়ে মালয়েশিয়ায় গিয়ে সর্বশ্রান্ত হয়ে আবার দেশে ফিরে আসে। দেশে ফেরার পরে মায়ের বকাঝকা সহ্য করতে না পেরে বেকার মোবারক ভেজাল এড্রিন খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেও কোনোরকমে বেঁচে ওঠে। কিন্তু তারপর একদিন সদরে গিয়ে মিষ্টি দোকানে বন্ধু-বান্ধবের সাথে মিষ্টি খেতে গিয়ে ভেজাল মিষ্টির বিষক্রিয়ায় হঠাৎ মারা যায়।
গল্পের শেষের অংশটা মোটেও যুতসই হয়নি। শুধু রসমালাইয়ে ভেজাল খাওয়ার জন্য মৃত্যু হওয়া পুরোপুরি স্বাভাবিক মনে হয়নি। মিষ্টির দোকানে ভেজাল দিলে সবকিছুতে ভেজাল দেওয়ার কথা। সেক্ষেত্রে মোবারকের সাথে বাকি বন্ধুদেরও অন্তত অসুস্থ হয়ে যাওয়ার কথা, যেটা এই গল্পের শেষে পাওয়া যায়নি। এখানে ভেজাল মদ্যপানে মৃত্যু দেখালেও হতো। তাছাড়াও যে কোনো ডাক্তার কোনো রোগীকে পরীক্ষা করে মৃত্যুবরণ করেছে পেলে অন্ততপক্ষে ‘পাখি উড়ি গেছে’ এই জাতীয় ডায়ালগ দেবে না। এটা ডাক্তারি পেশার সাথে ও প্রফেশ্যনালিজমের সাথে মানায় না।
গল্প ৫ - প্রিয়বরাসু
অতীতের স্মৃতির আড়ালে লেখা এই গল্পটা অনেকটাই গল্পের চাইতে স্মৃতির রোমন্থন হিসেবেই ধরে নেয়া যায়। চিঠির আকারে লেখা এই গল্পটায় লেখক সম্ভবত তার বিদেশ জীবনের বিভিন্ন জায়গা ভ্রমণের স্মৃতিগুলো নায়কের আদলে তুলে ধরেছেন। তবে পরিবেশ ও জায়গার বর্ণনা তুলনায় অতীতের স্মৃতির পরিমাণ অনেকটাই কম ছিল।
এখানেও বাংলা বানানে প্রমিত রীতি অনুসরণ করা হয়নি। ‘তো’ ও ‘কি/কী’ সঠিকভাবে ব্যবহার করা হয়নি।
গল্প ৬ - পরিচয়
এই গল্প সংকলনে শ্বেতাকে নিয়ে এটা দ্বিতীয় গল্প। কিছুটা ইন্ট্রোভার্ট স্বভাবের আসিফ ফেসবুকে নতুন একটা একাউন্ট খুলে শ্বেতার সাথে পরিচিত হয়। দেড় বছরের মতো সম্পর্কের শেষে অনলাইনে স্কাইপেতে বিয়ে হয় দুইজনের। শ্বেতাকে আমেরিকাতে নিয়ে আসার পরে প্রথমবারের মতো আসিফ জানতে পারে যে শ্বেতা কথা বলতে পারে না শারীরিক অসুস্থতার কারণে। এই দুইজনের মধ্যে কথাবাত্রাগুলো স্বাভাবিক কথোপকথনের স্টাইলে দেওয়া হয়েছে, যেটা পাঠককে বিভ্রান্ত করতে পারে (শ্বেতা বলতে পারে না)। এক্ষেত্রে লেখক শুরুতে লিখে দিতে পারতেন যে দুইজন একে অপরকে লিখে পাঠাচ্ছে। লিখে প্রতি-উত্তর দিচ্ছে।
এই গল্পের সবচেয়ে দুর্বল দিক হচ্ছে এই বিয়ের প্রস্তাব নায়ক আসিফের দেয়া তথ্যমতে, ওর বাবা-মা শ্বেতাদের বাসায় নিয়ে গিয়েছিল। বোবা একটা মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ের কথা উনারা ছেলেকে কিছুই জানায়নি এটা রীতিমতো অবিশ্বাস্য ব্যাপার। শেষে এসে কেমন যেন সবকিছু জট পাঁকিয়ে গিয়েছে।
গল্প ৭ – উৎসব
করোনার এই দেশে প্রাদুর্ভাব নিয়ে এই গল্পের প্লট সাজানো হয়েছে। বেশ সুন্দর সাজানো গোছানো একটি গল্প। যে কোনো পাঠকেরই এটা পছন্দ হবে। জ্ঞানের অভাবে কীভাবে করোনা সারাদেশে গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে পড়েছিল সেটা এই গল্পে খুব সুন্দর করে ফুটে উঠেছে। এই গল্প সংকলনের অন্যতম সেরা গল্প এটা। এই গল্পটা সংকলনের প্রথম দিকে দিলে পাঠকের এই বইয়ের প্রতি আগ্রহ আরো বেশি তৈরি হতো।
গল্প ৮ – সেলফোন
স্বপ্নীল ও শ্বেতাকে নিয়ে এটা আরও একটা গল্প। যথারীতি একই নায়ক নায়িকা নিয়ে আরেকটা বিরহের গল্প। এখানেও নায়িকা শ্বেতা নায়ককে ছেড়ে চলে যায় মৃত্যুর কারণে।
সম্ভবত এই গল্পটা পড়ার পরে পাঠক কিছুটা বিস্মিত হবে একই রকমের বেশকিছু গল্প একই সংকলনে দেওয়ার কারণে। বিরহের এই গল্পগুলোর নায়ক নায়িকার নামও এক, থিমও এক, মানবীয় অনুভূতির প্রকাশগুলো পর্যন্ত একইরকম। গল্পকারকে তার পরবর্তী বইতে এই জিনিসটা মাথায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। গল্পের থিম যদি কাছাকাছি হয়, অন্তত নায়ক নায়িকার নাম যেন পাল্টে দেওয়া হয়। না হলে পাঠক বিরক্তি নিয়ে পৃষ্ঠা উল্টিয়ে অন্য গল্পে চলে যেতে পারে।
গল্প ৯ – হ্যালুসিনেশন
এই গল্প সংকলনের অন্যতম সেরা গল্প এটা। আমার মতে এটা গল্প সংকলনে প্রথমেই দিলে পাঠকের মনে লেখক সম্পর্কে অন্যরকম একটা ভালো ধারণা গড়ে উঠতো। তবে এইধরনের থিমে গল্প লেখা বর্তমান সময়ে খুব বিপদজনক ব্যাপার, বিশেষ করে স্বাধীনতা যুদ্ধের পরের কিছু দৃশ্য নিয়ে এসেছেন লেখক, যা এখন প্রকাশ করাও নিরাপদ নয়। সাইকোলজিক্যাল থিমের এই গল্পের নায়ক তোফাজ্জল নামের একজন ছাত্রলীগ কর্মী, যে সরকারদলীয় সমর্থনে ক্রমাগত বিভিন্ন অন্যায় কাজ করতে গিয়ে একসময় প্রচন্ড মানসিক নিপীড়নে হ্যালুসিনেশন দেখা শুরু করে এবং চিকিৎসার জন্য বিখ্যাত মানসিক ডাক্তার মবিনুল হক সাহেবের কাছে আসে। মনোবিদ হিসেবে উনি তার চিকিৎসা করেন এবং প্রায় সুস্থই করে তুলেছিলেন। গল্পের ভিতর বেশ কয়েকটা জায়গায় ডাক্তারের জায়গায় ডক্টর এসেছে। সম্ভবত মুদ্রণ বিভ্রাট এটা।
পৃষ্ঠা নাম্বার ৯০তে উনি বেশ বড় করে একটা প্যারা লিখেছেন যেটা গল্পের চাইতেও উনার ব্যক্তিগত ক্ষোভ বেশি প্রকাশ পেয়েছে। তবে উনি যা যা লিখেছেন তার প্রতিটি বর্ণই সত্য। এইদেশের বেশিরভাগ মানুষই উনার এই লেখার সাথে সহমত পোষণ করবেন। গল্পের ভেতরে এইধরনের লেখা দেয়া প্রসঙ্গে ব্লগের মডারেটর শ্রদ্ধেয় জাদিদ ভাইয়ের একটা বিখ্যাত উপদেশের কথা মনে পড়ে গেল। আমি একটা গল্পের মধ্যে ঠিক এইধরনের একটা কাজ করার পরে উনি বলেছিলেন, ‘আপনি যখন গল্প লিখতে বসবেন, তখন শুধু গল্পই লিখবেন। পাঠকরা সেটা পড়ার পরে নিজেরাই সিদ্ধান্ত নেবে। আপনি কেন তাদের সিদ্ধান্ত নিজেই দিয়ে দিচ্ছেন?’ আশা করছি গল্পকার যা বুঝার বুঝে নিবেন।
গল্প ১০ – জলছবি
বিরহের খুব চমৎকার একটা গল্প। যদিও এই গল্পের নায়িকার নামও শ্বেতা, তবে এক্ষেত্রে নায়কের নাম হিসেবে মিতুল ব্যবহার করা হয়েছে। শিক্ষাজীবনের শেষে এসে মিতুল ও শ্বেতার ছাড়াছাড়ি হয়ে গেলে মিতুল আমেরিকাতে চলে আসে এবং শ্বেতাও বিয়ে করে বরের সাথে দেশের বাইরে চলে যায়। এদের মধ্যে আর কখনোই দেখা হয় না। প্রায় দশ বছর পরে মিতুল হঠাৎ করে সামহ্যোয়ার ইন ব্লগে লগইন করে ওর জীবনের অতীতে ফেলে আসা মধুর স্মৃতি নিয়ে লেখা একটি গল্প দেখতে পায়। যে লেখাটা একমাত্র শ্বেতার পক্ষেই লেখা সম্ভব।
একটা গল্পের ভেতরে অন্যকারো লেখা নিয়ে আসলে সেটা কীভাবে প্রেজেন্ট করতে হয়, সেটা ভালোভাবে মানা হয়নি এখানে। যার কারণে ব্লগের গল্পটা মূল গল্পের সাথে মিশে গিয়েছে। পাঠক পড়ার সময় দুইটা গল্পের পার্থক্য বের করতে কিছুটা দ্বিধাবোধ করবে। তবুও লেখার অনন্যশীলতার কারণে এই গল্পটা আমার যথেষ্ট ভালো লেগেছে।
গল্প ১১ – নোটবুক
বিরহের এই গল্পের নায়িকার নামও শ্বেতা যে লেখাপড়া পাঠ চুকিয়ে বিয়ে করে দেশের বাইরে চলে গিয়েছিল। দশ বছর দেশে ফিরে এসে নিজের ঘরে আবিষ্কার করে নোটবুকের ভেতরে একটা ইমেইল একাউন্ট ও তার পাসওয়ার্ড। সেই ইমেইল একাউন্টে লগইন করে দেখতে পায় ছাত্র জীবনে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ার সময় সহপাঠী ছেলে যার নাম স্বপ্নীল, যে ইমেইলে ৫ বছর আগে ওকে গোপন ভালোবাসার কথা জানায়। স্বপ্নীল ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত এবং খুব শীঘ্রই সে মারা যাচ্ছে এটাও জানায়।
গল্প ১২ – ভালোবাসার ঘ্রাণ
এই গল্প সংকলনের অন্যতম সেরা লেখা এটা। যদিও এই গল্পের নায়িকার নাম শ্বেতা, তবে গল্পের মূল থিমে এই মেয়েটার ভূমিকা খুবই নগণ্য। অতি প্রাকৃত ঘটনার উপর ভিত্তি করে এই গল্পটি লেখা হয়েছে। নায়কের বাসার কাছেই স্যাম নামের একজন থাকতেন। দেখতে খুব সাধারন হলেও স্যামের অদ্ভুত একটা গুণ ছিল। স্যাম মানুষের মাঝে লুকায়িত ভালোবাসা ঘ্রাণ টের পায়। অতি আশ্চর্যজনক হলেও কোনো দম্পতিদের দেখলেই তাদের মাঝে ভালোবাসার গভীরতা কতটুকু সে ঠিকই তাদের ভালোবাসার ঘ্রান শুকে বলে দিতে পারত। একদিন বিকালবেলা নায়কের বাসায় এসে স্যাম ওর জীবনের আশ্চর্যজনক কাহিনী বলে এবং জানায় ঠিক কখন থেকে ও এই অতিপ্রাকৃত ক্ষমতা অর্জন করে।
এই গল্প সংকলন এর মধ্যে এই গল্পটাই আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে। ছোটখাটো কিছু বানান ভুল বাদ দিলেও, গল্পের ভেতর অন্য আরেকজনের গল্পকে মূল গল্পের ভেতরে স্থান করে দেওয়ার প্রক্রিয়ায় ভুল আছে। পাঠক পড়তে শুরু করলে কোনটা নায়কের কাহিনী এবং কোনটা স্যামের কাহিনী এই দুইয়ের মাঝে তালগোল পাকিয়ে যেতে পারে। অন্য আরেকজনের গল্প বা কাহিনী নিয়ে আসলে সেটা ‘ ’ এর ভিতরে দিয়ে দেওয়াই উত্তম, সেক্ষেত্রে সেটা বোঝা যাবে যে এটা কারো কাছ থেকে শোনা হচ্ছে বা উদ্ধৃত করা হয়েছে।
চরিত্র চিত্রায়ন:
বেশিরভাগ গল্পগুলোই প্রেম ভালোবাসার থিমের উপরে লেখা হলেও বর্তমানে সময়ে স্রোতের সাথে গা ভাসিয়ে ভালোবাসার নোংরা, সস্তা বা খোলামেলা কোনো বর্ণনা এখানে দেওয়া হয়নি যেটা অবশ্যই বাহাবা পাওয়ার যোগ্য। লেখায় উৎকর্ষতার সাথে শালীনতা সহও যে প্রেমের গল্প লিখা যায় এই গল্পগুলো তারই দারুণ উদাহারন। বিদেশের কিছু প্রাকৃতিক দৃশ্যের মনোমুগ্ধকর বর্ননা বাড়তি বোনাস হিসেবে তো থাকছেই।
এই সংকলনে প্রায় বেশিরভাগ মূল চরিত্রই চিত্রায়ন করা হয়েছে একটা ছেলে যার নাম স্বপ্নীল ও একটা মেয়ে যার নাম শ্বেতা, এই দুইজনকে নিয়ে। এই দুইটা চরিত্র বাদ দিয়ে খুব কম চরিত্রই ব্যবহার করা হয়েছে এখানে। তবে একেবারে শেষের দিকে স্যাম নামের একটা চরিত্রকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে, যেটা বেশ ভালো লেগেছে। এছাড়াও আরেকটি গল্পে করিম সাহেবের চরিত্র খুব সুন্দর করে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। কোনো গল্পের ভিতরে একাধিক চরিত্র চিত্রায়নের সময় গল্পকার যদি উত্তম পুরুষে না লিখে নাম পুরুষে বা প্রথম পুরুষে লিখতো, তাহলে কিছু কিছু চরিত্র আরো সুন্দর করে ফুটে উঠতো। এখানে কয়েকটা গল্প নাম পুরুষে লেখা হয়েছে যেইগুলো পড়ার সময় বেশ ভালো লেগেছে। অনেকগুলোই গল্পে নায়কের চরিত্র উত্তম পুরুষে লেখা হয়েছে। এবং গল্পের মাঝখানে আরেকটি চরিত্রকে নিয়ে আসার সময় সেটিও উত্তম পুরুষে লেখা হয়েছে। একই গল্পে একাধিক উত্তম পুরুষে লেখা থাকলে সেটা কিছুটা কনফিউজিং দেখায়। সাধারণত যেকোনো গল্পে উত্তম পুরুষ চরিত্রে একজনকে নিয়ে লেখাটাই উত্তম। তবে চরিত্র চিত্রায়নের সময় এই বিষয়গুলো পুরোটাই গল্পকারের লেখার বৈচিত্র, পারফরম্যান্স এবং বাক্য গঠনের পারঙ্গমতার ওপর নির্ভর করে।
কিছু গল্পে দেখা গিয়েছে যে, চরিত্র চিত্রায়নের চাইতে পরিবেশের বর্ণনা দেওয়ার ব্যাপারে বেশি জায়গা নেওয়া হয়েছে। যেহেতু লেখক যে জায়গাগুলোর বর্ণনা করেছেন সেগুলো দেশের বাইরে এবং বেশিরভাগ পাঠকরাই সেই জায়গাগুলোর সাথে পরিচিত থাকবে না, এইসব জায়গার দীর্ঘ বর্ণনাগুলো সময় স্বল্পতার কারণে অনেক পাঠকরাই এড়িয়ে যেতে পারে।
যা ভালো নাও লাগতে পারে:
এখন আমি যে মতামতটা দেবো সেটা সম্পূর্ণই একজন পাঠক হিসাবে আমার একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতি, যা হয়তো অন্যকারোর সাথে মিল নাও হতে পারে। বেশ কয়েকটা গল্প সংকলনে লেখা ছাপানোর কারণে গল্প সংকলনে নির্বাচকরা কীভাবে গল্প পছন্দ করেন ও এসব ক্ষেত্রে কী কী নিয়ম মেনে চলেন তার সম্পর্কে সামান্য কিছু ধারণা আছে আমার। এই গল্প সংকলনে লেখক প্রায় কাছাকাছি থিমের বেশ কিছু গল্প নির্বাচন করেছিলেন। এই ধরনের ঘটনা ঘটলে পাঠকরা একটা দুটো গল্প পড়ার পরে বাকি গল্পগুলো পড়তে বসে শুরুতে কোনো মিল পেলেই সোজা অন্য গল্পে চলে যাবে। ভালো সংকলকরাও একই থিমের একাধিক গল্প পেলে বেছে সবচেয়ে ভালোটা নেয়।
বইয়ের অনেক পাতায় ফরম্যাটে যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই লাইন গ্যাপ একপাতার সাথে আরেক পাতার কিংবা এক গল্পের সাথে অন্য গল্প মিলে না। মাত্র দুইজনের কথোপকথনে মাঝখানেও লাইন গ্যাপ অতিরিক্ত বড় হলে সেটা দৃষ্টিকটু লাগে। এছাড়াও বিভিন্ন গল্পে কথোপকথনের জন্য আলাদা আলাদা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। বেশ কিছু জায়গায় শব্দের শেষে প্রত্যয় যোগ করার ক্ষেত্রে লেখক হাইফেন দিয়ে তারপর প্রত্যয় যোগ করেছেন। যেমন -ই। এখানে হাইফেন হবে না। কিছু গল্প পড়ার সময় অনেকগুলো বাক্যে ভাব অসম্পূর্ণ মনে হয়েছে, যেন মনে হয়েছে লাইনগুলো উনি শেষ করেননি।
সম্ভবত প্রকাশক এই বইটা প্রকাশের সময় বেশ তাড়াহুড়া করেছেন, এই কারণে প্রুফ রিডার তেমন মনোযোগ দেয়নি বইটার বিভিন্ন ভুল সংশোধন করার কাজে। তবে সমস্যা হচ্ছে সবগুলো ভুলের দায়-দায়িত্বই শেষমেশ লেখকের কাঁধেই এসে পড়ে। তাই আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই বানান ভুল ও ব্যাকরণ ভুলজনিত সমস্যাগুলোর কারণে এই গল্পকারকে দায়ী করা কোনোভাবেই ঠিক হবে না। এটা প্রকাশক ও প্রুফ রিডার এর দায়িত্ব। একজনে দায়ভার আরেকজনকে চাপিয়ে দিতে আমি মোটেও রাজি নই।
এই গল্প সংকলনের গল্পগুলোর ক্রমটাও পারফেক্ট হয়নি। বেশ কিছু ভালো গল্প বইয়ের শেষের দিকে দেওয়া হয়েছে। যে কোনো পাঠককে শুরু থেকেই এই বইয়ের সাথে বেঁধে রাখতে পারে এরকম কিছু গল্প এই সংকলনের প্রথমদিকে দিলে খুব ভালো হতো। সেক্ষেত্রে পাঠক বইটা শেষ পর্যন্ত পড়ার ব্যাপারে অনেক বেশি আগ্রহ পেত। আমি যদি সম্পাদক হতাম কিংবা নির্বাচক হতাম তাহলে সুনিশ্চিতভাবে গল্পগুলো এই ক্রমে কোনোভাবেই সাজাতাম না।
পরিশেষ:
এই গল্প সংকলনে বেশিরভাগ গল্পই বিরহের থিম নিয়ে লেখা। বেশিরভাগ গল্পেরই প্লট একইরকম, নায়ক নায়িকা শুধু উলটপালট হয়েছে। বিরহের অনুভূতিগুলো প্রকাশও একই রকম। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গেছে একই ধরনের থিমের গল্প পরপর রেখে সাজানো হয়েছে। আমার মতন খুব ধীরে পড়া পাঠকও পড়তে গিয়ে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। গল্প সংকলনটা মনোটোনাস লাগছিল। শেষের দিকে গল্পগুলোতে ইচ্ছে করছিল তাড়াহুড়া করে পড়ে যাই।
বেশিরভাগ গল্পগুলোতে বিদেশে বসে দেশের স্মৃতি রোমন্থন করাকে নিয়ে লেখা হয়েছে। লেখক হয়তো খেয়াল করেননি কিন্তু বেশিরভাগ স্মৃতিগুলোই একই প্যাটার্নে লেখা, একই ঢংয়ে লেখা। ক্রমাগত একই প্যাটার্ন নিয়ে লেখা পড়তে থাকলে পাঠকের মনে সামান্য হলেও বিরক্তিবোধ আসতে পারে।
এটা কোনো বড় গল্প বা উপন্যাস নয়। তাই প্রকাশকের সম্ভবত হতো শ্বেতা নামের মেয়েটাকে নিয়ে লেখা গল্পগুলো শুধু বেছে নিয়ে আলাদা করে একটা বইটা বের করা। নামকরণ সেক্ষেত্রে দেওয়া যেত ‘শ্বেতাকে নিয়ে কিছু ফেলে আসা স্মৃতি’। এই নামকরণ দেখলে পাঠকরা সহজে অনুমান করে নিত গল্প সংকলনে শ্বেতা নামের একটা মেয়েকে নিয়েই স্মৃতিগুলো লেখা হয়েছে। তখন আর এই সমস্যাটা হতো না।
আমি এই পাঠ প্রতিক্রিয়ার শুরুতেই প্রুফ রিডারকে পুরোপুরি দায়ী করেছিলাম সংকলনটায় ঠিকমতো মনোযোগ দিয়ে কাজ না করার জন্য। একজন ভালো প্রুফ রিডার হলে খুব সহজেই এই সংকলনের মূল সমস্যাগুলো ধরতে পারতেন। একজন লেখকের পক্ষে এই সমস্ত টেকনিক্যাল সমস্যাগুলো ধরতে পারার কথা নয়, কারণ এটা তার প্রথম বই।
গল্পকার যদি তার পরবর্তী বই প্রকাশ করতে চান সেক্ষেত্রে তার কাছে অনুরোধ রইল বই প্রকাশের পূর্বেই ভালো একজন প্রকাশক খুঁজে বের করা এবং একজন ভালো প্রুফ রিডারকে দিয়ে তার পান্ডুলিপি পরীক্ষা করানোর জন্য। না হলে এইধরনের সমস্যা বার বার তৈরি হতে থাকবে।
তবে লেখক খুব সহজেই একটা কাজ করতে পারতেন, গল্পগুলোতে একই নায়িকার নাম ব্যবহার না করে নায়িকার নাম ইচ্ছে করলেই উনি পরিবর্তন করে দিতে পারতেন। এই সামান্য কষ্টটুকু করলেও লেখাগুলো এতটা মনটোনাস হয়ে যেত না। পরপর একই ধাঁচের একই নায়িকার নাম নিয়ে লেখা গল্প পড়তে থাকলে একটা উপন্যাস বা ধারাবাহিক গল্পের মতো মনে হয়। আপনারা যারা এই গল্প সংকলনটি পড়েছেন তারা এই জিনিসটা অনুধাবন করতে পেরেছেন।
একটা প্রকাশিত বইকে তুলনামূলকভাবে রেটিং জন্য নিন্মোক্ত পদ্ধতি আমি সবক্ষেত্রে ব্যবহার করি-
* থীম / প্লট - ১
* কথোপকথন - ১
* চরিত্র বিন্যাস - ১
* ট্যুইষ্ট / পাঠকের আকর্ষন – ১
* লেখার মুন্সিয়ানা – ১
আমার দৃষ্টিতে 'আকাশ গঙ্গার তারা' এর জন্য মার্কিং হবে-
* থীম / প্লট – ০.৩৫
* কথোপকথন – ০.৫০
* চরিত্র বিন্যাস – ০.৫০
* ট্যুইষ্ট / পাঠকের আকর্ষন – ০.২৫
* লেখার মুন্সিয়ানা – ০.৫০
ব্লগার মলাসইলমুইনার ব্লগ বাড়ির ঠিকানা যোগাড় করতে গিয়ে আশ্চর্যজনক একটা ঘটনা দেখলাম। উনি সম্ভবত উনার সব লেখা ড্রাফটে নিয়ে গেছেন। ব্লগ বাড়িতে এখন শূন্য পোস্ট। যদি কোনো কারণে কিংবা অভিমানে উনি ব্লগ ছেড়ে দিয়ে থাকেন তাহলে উনাকে একান্ত অনুরোধ করবো ব্লগে আবার ফিরে আসার জন্য।
উৎসর্গঃ ব্লগার মলাসইলমুইনা, প্রতিভাবান এই লেখকের আরেকটা বই পড়ার অপেক্ষায় রইলাম।
যারা এর আগে আমার লেখা পাঠ প্রতিক্রিয়াগুলো পড়তে চান তাদের জন্য-
পাঠ প্রতিক্রিয়া ১ - সাদাত হোসাইনের অর্ধবৃত্ত
পাঠ প্রতিক্রিয়া ২ - শায়মা হক এর “বসন্তদিন (বরুণা ও প্রতিফলন)”
পাঠ প্রতিক্রিয়া ৩ - যে সূর্যটা রানুর জন্য উঠেছিল
পাঠ প্রতিক্রিয়া ৪ – তামান্না জেনিফার এর ‘আঁধারের কাহন'
পাঠ প্রতিক্রিয়া ৫ - মেঘ ছুঁয়েছে মনের আকাশ
পাঠ-প্রতিক্রিয়া ৬ - জীবন ও জীবিকার গল্প (গল্প সংকলন)
সবাইকে ধন্যবাদ ও শুভ কামনা রইল
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত @ নীল আকাশ, জানুয়ারী ২০২৩
২২ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৩২
নীল আকাশ বলেছেন: সেটাই। আমি উনাকে ফিরে আসার জন্য অনুরোধ করেছি।
প্রথম মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:৫৭
কামাল১৮ বলেছেন: লেখক একজন প্রখ্যাত সাংবাদিক।সাংবাদিকতার শুরু ভোরের কাগজ,(বর্তমানে বিলুপ্ত)পত্রিকার মাধ্যমে।তার পরে একটা পত্রিকায় সম্পাদক হিসাবে কাজ করেন।কিছু মালিকানাও ছিলো।কি সব গন্ডগোলে পত্রিকা ছেড়ে চলে আসন।তার অনেক আলোচনা টিভিতে দেখেছি।বর্তমানে বড় কোন কাজে যুক্ত আছেন।ব্লগে কেন আসছিল বোঝতে পারছিনা।তার মতো লোক ব্লগে আসার কথা না।
৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:০৯
সোনাগাজী বলেছেন:
@কামাল১৮,
আপনি বলছেন যে, উনার মতো লোক ব্লগে আসার কথা না।
আপনি কিন্তু সারাক্ষণ ব্লগে আছেন; এখন এটার অর্থ দাঁড়াচ্ছে যে, আপনার প্রজ্ঞা উনার লেভেল থেকে কিছুটা কম হওয়াতে আপনি ব্লগে আসছেন, উনার মতো প্রাজ্ঞ হলে, আপনিও ব্লগের মতো যায়গায় আসতেন না।
৪| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ রাত ৩:৫২
কামাল১৮ বলেছেন: আমার সময় কাটানোর যায়গা থাকলে আমি ব্লগে আসতাম না।উনি একটি ইংজেকি ও একটি বাংলা পত্রিকা চালান।উনার তুলনায় আমার প্রজ্ঞা ১০/১।উনি সবদিক থেকে একজন বড়মাপের মানুষ।উনার লেখা আমি পড়ি বহু বছর আগে থেকে।আব্বাসিয় সাথে ওনার একটা বিতর্ক আছে ইউটিউবে।শময় হলে শুনে দেখবেন।ওনার প্রজ্ঞা সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পাবেন।
৫| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৪:০৩
কামাল১৮ বলেছেন: উপরের মন্তব্যটি গাজী সাহের জন্য।
৬| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৬:২৯
সোহানী বলেছেন: এ রিভিউ পড়ে ভয়ে আছি, যে কঠিন ভাবে রিভিউ করেছেন তাতে আমার আত্মা শুকিয়ে গেছে। এরপর প্রতিটা বিষয় একশবার দেখবো।
মাইনুল ভাই ব্লগে নেই??? কেন ???? আবার কি হলো????
বইটি পড়া হয়নি। কিন্তু পড়ার ইচ্ছে খুব।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:১৫
নীল আকাশ বলেছেন: এই বইতে প্রকাশক যা ইচ্ছা তাই করেছে। প্রুফ রিডার কোনো কাজই করেনি। কিছু নবানান ভুল দেখলে হতভম্ব হয়ে যাবেন।
একবার পড়তে বসলেই বুঝবেন কী অবস্থা করেছে বইটার। আমি এত বিস্তারিত করে লিখেছি শুধু নাইমুল ভাইয়ের জানার জন্য যে উনার প্রকাশক কী সর্বনাশ করেছেন উনার সাথে। উনি এত ভালোভাবে না জানলে আবার উনার সাথে একই কাজ করা হবে।
ব্লগের বাকিরাও জানুন, সুপারভিশন না করলে ও সুযোগ পেলে প্রকাশকরা লেখকদের কীভাবে বারোটা বাজায়।
শুভ কামনা।
৭| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৬:৪২
সোহানী বলেছেন: কামাল১৮ ভাই, আপনি মনে হয় মুইনুল ইসলাম খান আর মুইনুল ইসলাম কে এক করছেন। আমাদের ব্লগার মুইনুল ভাই ইউএস এ থাকেন। একজন শিক্ষক।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ৮:১৮
নীল আকাশ বলেছেন: ঠিকই বলেছেন। আমারও তাই ধারণা। উনি নাম ভুল করছেন।
৮| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:৪৭
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: নির্বিঘ্নেই অপারেশন সম্পন্ন হল। খুবই সাহসী একটি রিভিউ।++ মূল্যায়ন সম্পর্কে বলবো জহুরির চোখ।
২৩ শে জানুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ২:২১
নীল আকাশ বলেছেন: ঊনি আমাকে বেশ ভালোভাবে দেখে রিভিউ লিখতে অনুরোধ করেছিলেন।
সাধারণত কোনো ব্লগার আমাকে কোনো অনুরোধ করলে সেটা রাখার চেষ্টা করি।
আমার অনেক সময় ও পরিশ্রম হয়েছে এটা লিখতে।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।
৯| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:৪৪
মিরোরডডল বলেছেন:
এই বইটা আমি পড়েছি।
সবগুলো গল্প ভালো লেগেছে।
বিশেষ করে শ্বেতাকে নিয়ে লেখাগুলো অনেক ভালো লেগেছে।
খুবই কষ্ট পেলাম দেখে যে উনি ওনার সব লেখা ড্রাফট করে ফেলেছেন কিন্তু কেনো করলেন ?
অনেক লেখা এখনো পড়া বাকি ছিলো
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৪৭
নীল আকাশ বলেছেন: আমিও অনেক অবাক হয়েছি। উনি আমাকে অনেকদিন ধরেই এই বইটার রিভিউ লিখতে বলেছিলেন।
আজকে যখন রিভিঊ লেখা শেষ পোস্ট করতে এসে দেখি উনি সম্ভবত ব্লগ ছেড়ে চলে গিয়েছেন।
এই বইটাতে শুধু শ্বেতাকে নিয়ে গল্পগুলো দিলে ভালো হতো। নামটাও দেয়া যেত- শ্বেতাকে নিয়ে কিছু অসীম দীর্ঘশ্বাস বা এইধরনের কিছু একটা।
শুভ কামনা।
১০| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৪:৫৪
মিরোরডডল বলেছেন:
@কামাল১৮
সাংবাদিক নাঈমুল ইসলাম আর আমাদের সামু ব্লগার খন্দকার নাইমুল ইসলাম একজন নন।
সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যক্তি, ভিন্ন পার্সোনালিটি।
@সোহানী
আপু তুমিতো আরো ভুল করলে, নাইমুল ইসলামকে তুমি মইনুল ইসলাম বলেছো।
১১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সন্ধ্যা ৬:১২
ঢাবিয়ান বলেছেন: জনৈক ব্লগার আপনার পোস্টে আজেবাজে কমেন্ট করে আপনাকে ক্ষেপিয়ে তুলে পোস্টের বারোটা বাজাতে পারে। কাজেই ব্লক করে দিলেই ভাল করবেন ।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১১:২৩
সোনাগাজী বলেছেন:
লেখক তো সব লেখা ড্রাফট করে, তল্পিতল্পা নিয়ে কোথায় যেন চলে গেছেন!