নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নীল

নীলব্ল্

নীলব্ল্ › বিস্তারিত পোস্টঃ

অপ্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ অপ্রয়োজনীয় লেখা!

১২ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:৪৩

বেশ কিছুদিন যাবৎ আমি বিস্মিত হচ্ছি একটি মূল্যহীন বিষয় নিয়ে লেখা দেখে, জনগনের আলোচনা শুনে , সংবাদ পত্রে কিছু সেই বিষয় সম্পর্কে পড়ে এবং সবশেষে মহান জাতীয় সংসদে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী থেকে শুরু করে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী -সংসদ সদস্যদের আলোচনা শুনে। জনাব তারেক রহমান নাকি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কীসব বলেছেন !

আমার প্রসঙ্গ হলো এই তারেক রহমান টি কে যাকে নিয়ে আম জনতা থেকে শুরু করে একেবারে রাষ্ট্র প্রধানরা আলোচনায় উন্মত্ত ? আমরা মোটামোটি তাঁকে সবাই নামে অন্তত চিনি। তিনি সাবেক প্রধান মন্ত্রী ও সাবেক বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রথম পুত্র। তাঁর আরো একটি পরিচয় হলো, তিনি একসময়ের সেনা প্রধান ও পরবর্তীতে রাষ্ট্র প্রধান প্রয়াত জিয়াউর রহমান সাহেবের ছেলে বটে।

তাঁর আরো অনেক পরিচয় আছে (যা না বলাই শ্রেয়) তবে আমি কেবল তাঁর জন্মগত পরিচয়টি দিলাম মাত্র। ”দর্শনে পিতার মতো, বচনে মাতার মতো” এই তারেক রহমান -ছেলেবেলার স্কুল জীবনের অনেক কথা আমরা আঁড়ে-চাঁড়ে-আকাড়ে- ঈঙ্গিতে শুনেছি। তাঁর শৈশব – কৈশর এর কথা বাদ থাক পরবর্তীতে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের তারুণ্য ও যৌবনেরও অনেক জয়গাঁথা (?) আমরা, জনগণ ও গণমাধ্যমের কাছ থেকে জানার সৌভাগ্য অর্জন করেছি।

২০০১ এর নির্বাচনে জামাত – বি এন পি জোট বিজয় লাভ করে ক্ষমতায় বসার পর হঠাৎ করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এই ”নব জাতক” টি একেবারে ক্ষমতার শীর্ষে আরোহন করলেন। সেটি তিনি করতেই পারেন । কারন বাংলাদেশে বি এন পি’র মতো একটি দলকে টিকিয়ে রাখার একমাত্র উপায় ”পরিবার তন্ত্র ” কায়েম করা । তখন শুনতাম, বাংলাদেশের, বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য, অর্থনীতির কলকাঠি, রাষ্ট্রনীতি, ব্যাবসা বানিজ্য, পররাষ্ট্র নীতি যাই বলি না কেন, সকল কিছুই পরিচালিত হতো ”হাওয়া ভবন” দ্বারা এবং সেই ”হাওয়া ভবনে”র মালিক নাকি ”জনাব তারেক রহমান” । তাঁর ইশারা, ঈঙ্গিত, আশ্রয়- প্রশ্রয়েই নাকি সব ঘটন – অঘটন বাংলাদেশে ঘটছে সেই সময়ে যার দোসর ছিলেন গিয়াসউদ্দীন আল মামুন । সেলুকাস !

রাষ্ট্রীয় কোন ক্ষমতায় না থেকেও যদি পুরো রাষ্ট্র যন্ত্রকে এইভাবে চালানো যায় – দরকার কী পদের ? জনাব তারেক রহমানেরও পদের দরকার ছিল না। তারপরও কিছু চ্যালা -ব্যালা বেচারাকে একপ্রকার জোর করেই (?) একলাফে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে বসিয়ে দেন। যার পূর্ণাঙ্গ ব্যবহার তিনি করেছেন এবং তারই সূত্র ধরে জনাব তারেক রহমানকে ১/১১ এর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের ফলে যা পোহাতে হয়েছে তারই ফর স্বরুপ তিনি হয়তো এখোনো ধাতস্থ হতে পারেন নি। তাই একটু (?) উল্টা পাল্টা বা আবোল তাবোল কথাবার্তা দিয়ে ফেলছেন তিনি।

এটা কিছু নয়। এটুকু ছাঁড় বেচারাকে আমাদের দিতেই হবে । কারন আপাত দৃষ্টিতে তাঁর উপর দিয়ে তো ”কম কিছু যায় নি” । পুরানো রেকর্ড না হয় নাই বাজালাম নূতন রেকর্ডই যা বাজছে সেটির ধকলও নেহায়েত তো কম নয়! এতদিন তাও মাতাজি ছিলেন বিরোধী দলীয় নেত্রী। এখন সেটিও তিনি আর নন। এই সুপুত্রের কথাতেই নির্বাচনে যেতে সাহস পান নি তিন তিন বারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, দুই বার বিরোধী দলীয় নেতা ও বি এন পি’র চেয়ারপার্সন। তাই আজ জনাব তারেক রহমান যে এখোনো সুদূর ইংল্যান্ডে বসে খাচ্ছেন- ঘুরছেন – ফিরছেন – কথা বার্তা বলছেন এটিই আমাদের ধরে নিতে হবে অনেক বেশী !

তাই তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে আবোল তাবোল , এলো মেলো , উদ্ভট -অবাস্তব , অবান্তর কথা বার্তা বলতেই পারেন ! যার এই দেশে ফেরা সম্পূর্ণ অনিশ্চিত- যার সেই রাজত্ব পূণর্দখল করা প্রায় অসম্ভব ( বি এন পি ক্ষমতায় এলেও দলের নেতারা যেভাবে তাঁর উপরে ক্ষিপ্ত বলে বিশ্ব সূত্রে আমরা জানি এবং ইদানিং তাঁর দলীয় সমর্থকরা বা নেতারা ”বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধ” নিয়ে করা তাঁর মন্তব্য নিয়ে প্রকাশ্যে গণ মাধ্যমে যেভাবে বলতে শুরু করেছেন তার প্রেক্ষিতেই বলছি) সেখানে তিনি তো একটু আধটু এলো মেলো তো হয়েই যাবেন।

তবে তিনি যদি এই ”একটু আধটু” বলতেন বিষয়টি হয়তো বাংলাদেশের জনগনের জন্য মেনে নেয়া সহজ হতো বা বাংলাদেশের মাটি- মানুষ হয়তো ক্ষমাও করে দিতেন। কিন্তু যে কোন কারনেই হোক না কেন, তাঁর বলার মাত্রা টা তাঁর ধারন ক্ষমতার বাইরে উপচে পড়েছে। তাই তাঁর নিজ দল সংকুচিত বোধ করছে এবং নিজ দলের নিকট জনেরা বাধ্য হচ্ছেন তাঁর বিরুদ্ধে মুখ খুলতে।

ব্যক্তিগত ভাবে জনাব তারেক রহমান আমার কোন শত্রু নয় । তিনি এদেশের নাগরিক। এখন নানা ফৌজদারী মামলার আসামী হিসাবে ফেরারী জীবন যাপন করছেন। একজন ফেরারী আসামী কী করতে পারেন বা পারেন না সেই বিষয়ে নিশ্চয়ই রাষ্ট্রের আইন জানা আছে। চিকিৎসার নামে উন্নত দেশে উন্নততর জীবন যাপন করার পাশাপাশি তিনি আর কী কী করছেন সেটিরও জানা উচিৎ সরকারের । কারন শত অন্যায় করলেও তিনি এদেশের নাগরিক। তাঁর ভাল মন্দ খোঁজ খবর রাখা তো রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব বটে।

তবে হাস্যকরভাবে মাঝে মাঝে গণ মাধ্যম জনাব তারেক রহমানের উপর চড়াও (?) হচ্ছেন এই প্রপাগান্ডা চালিয়ে যে, তিনি লন্ডনে ব্যারিস্টারী পড়ছেন। ব্যারিস্টারী পড়ার আগে কী কী পড়তে হয় সেটি বোধহয় গণ মাধ্যম এর সাহসী ও মেধাবী সাংবাদিকরা আমার চেয়েও ভালোই জানেন। ব্যরিস্টারী পড়ার আগের স্তর গুলি তিনি কবে, কোথায়, কীভাবে সম্পন্ন করেছেন জাতির জানার অধিকার আছে বৈকি ! নইলে যে আবারো তিনি অর্থাৎ তারেক রহমান প্রতারনা- জাল – জালিয়াতির ফাঁদেই জড়িয়ে পড়বেন! এছাড়াও তিনি লন্ডনে স্ত্রী- কন্যা সহ কীভাবে দিনাতিপাত করছেন, তাঁর পরিবারসহ দৈনন্দিন খরচ কে- কীভাবে মেটাচ্ছেন বা চিকিৎসাই বা তিনি কিভাবে করাচ্ছেন সেটিও জানা জাতীর জন্য প্রয়োজন। বিষয়টির গভীরতার বিবেচনায়ই লেখা।

কারন এদিকে শুনছি এদেশে তাঁর মা বেগম জিয়া নিদারুন অর্থ কষ্টে থাকার জন্য বাড়ী ভাড়া পর্যন্ত ও দিতে পারছেন না, তাই এদেশে ১/১১ এর সরকার এর জব্দকৃত ব্যাংক একাউন্ট খুলে দেবার জন্য বর্তমান সরকারকে অনুরোধ জানিয়েছেন। তারউপরে যেটুকু আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা, লন্ডন একটি ব্যয় বহুল ও বিলাস বহুল দেশ। সেক্ষেত্রে প্রচন্ড অসুস্থ্য জনাব তারেক রহমান ও তাঁর পরিবার – পরিজন সেখানে চলছেন কীভাবে ?

ঠান্ডা দেশে বাস করে তাঁর মাথা এতটা তো নষ্ট হবার কথা নয় যে তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধ বা জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আবোল- তাবোল বলেই যাবেন আর দেশ ও জাতি সেগুলি শুধু বধির এর মতো শুনেই যাবে আর হযম করেই যাবে সেটি তো হয় না। কারন আমরাও তো মানুষ। তাই হয়তো আমরা সবাই একটু নড়ে চড়ে বসছি। কেউ কেউ কিছু মন্তব্যও করছেন জনাব তারেক রহমানের ”ইওটোপিয়ান” বক্তব্যর উপর। তবে খুব বেশী ভাবার দরকার নাই তার অবান্তর বক্তব্য নিয়ে । কারন ” মানুষের মস্তিষ্কের ” সব গুলি শিরা- উপশিরা যখন এক যোগে কাজ করে বা একেবারেই করে না তখন মানুষ আর মনুষ্য পর্যায়ে থাকে না। তখন সেই কান্ডজ্ঞানহীন এর পক্ষে – দিক ভ্রান্তের পক্ষে – উ™£ান্তের পক্ষে অনেক কিছুই বলা বা করা সম্ভব। ” মাথা ঠিক হলে সব ঠিক হয়ে যাবে”।

জনাব তারেক রহমানের মস্তিষ্ক ঠিক হবে অচিরেই এই প্রত্যাশাই করি। আর এটি ঠিক করার জন্য তাঁর যথাযথ চিকিৎসাও জরুরী বৈকি।

দিলরুবা সরমিন

আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী

প্রধান সম্পাদক , প্রথমবার্তা.কম

সূত্র: প্রথমবার্তা.কম

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.