![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেশে হঠাৎ করেই দেশে গুম- অপহরণ- খুন – চাঁদাবাজির মাত্রা -মাত্রাছাড়িয়েছে । সেই রাখাল ছেলের কাহিনীর মতো অনেকটা। ”প্রতিদিন বাঘ বাঘ বলে চিৎকার করে যে মানুষ এর সাথে মজা করতো আর মানুষ ছুটে আসতো ছেলেটিকে বাঁচাতে, একদিন যখন সত্যিই সে বাঘের কবলে পড়লো তখন আর কেউই ছুটে এলো না।” এই গল্পটি প্রায় সকলেরই জানা। এর সাথে আমি আমাদের মতো সাধারন নাগরিকের জীবন এর মিল ঘটাতে চাই না । কিন্তু আমাদের রাজনীতির সাথে মিলাতে চাই। কারন একদিকে মানুষ গুম, হত্যা, অপহরণ, খুন হচ্ছে আর আমাদের রাজনীতিবিদেরা কেবল একে অপরকে দূষেই চলেছেন। আজ দেশ ও জাতীর এক সংকট ময় মূহুর্তে কোথায় একে অপরের সাথে হাতে হাত মিলিয়ে , কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে মানুষের মঙ্গলের জন্য কাজ করে যাবে, তা নয় কেবল কে কাকে অপহরন করেছে সেই দোষারোপ একে অপরকে করতেই ব্যস্ত সবাই। ব্যাক্তি ইমেজ নষ্ট করা জরুরী। অন্যেও ইমেজ নষ্ট করলে যে নিজের ইমেজই নষ্ট হয় সেটি আমাদের কারোরই খেয়াল থাকে না। আমাদের নেতারা যেন আগে থেকেই এই সব হত্যাকারী, গুমকারী, অপহরনকারীদেরকে খুব ভালো করেই চিনতেন , জানতেন এবং ঘটনার প্লট রচনায়ও সক্রিয় ছিলেন। তাই বিস্ময়করভাবে মহান মে’ দিবসে শ্রমিকের আলোচনা সভাতেও সবার মুখে একই বাক্য- একই কাব্য । কী আশ্চর্য !
দেশের রাজনৈতিক ক্ষমতার পালাবদলে একেকটি রাজনৈতিক দল একেকটি বার একেক সময় ক্ষমতায় আসবেন আবার ক্ষমতাচ্যূতও হবেন এটাই স্বাভাবিক। প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু তাই বলে আমাদেরই ভোটে ক্ষমতায় গিয়ে আর ক্ষমতাচ্যূত হয়ে আমাদেরকেই আপনাদের রাজনৈতিক ”হলি খেলার বলি” বানিয়ে দেশ বা রাষ্ট্র এভাবে চালাবেন ? এটা হতে দেয়া উচিৎ নয়।
কেউ কেউ অপহরনের নাটক সাজাবেন আর তারই খেসারত দিতে হবে গোটা দেশ ও জাতিকে এটি হতে পারে না। নারায়নগঞ্জ এর ঘটনা দেশের একটি খন্ড চিত্র মাত্র। গোটা দেশে নিরবে- নিভৃতে ঘটে চলেছে অসংখ্য খুন, হত্যা, গুম, অপহরন, মুক্তিপণ দাবীর মতো নৃশংস অনৈতিক ঘটনা। যা আজ রাজনীতিবিদদের কাছে এবং দেশ ও জাতির বন্ধু পুলিশ প্রশাসনের কাছেও সহজ ও সস্তা হয়ে গিয়েছে।
খুব সহজভাবে সত্য কথা বললে এই কথা অস্বীকার করার উপায় নাই আজ দেশে আমরা কেউই নিরাপদ নয়। কারন একটি চক্র, একটি মহল আমাদের মাঝে ভয় , আতংক ঢুকিয়ে দিয়ে যেন তেন প্রকারে সরকার – প্রশাসন কে আবারো অস্থিতিশীল করে তুলে দেশকে অন্ধকারের গভীরে নিমজ্জিত করতে ব্যতিব্যস্ত।
কেবল নারায়ণগঞ্জবাসী নয় আমরা সকলেই আজ গভীর শোকে শোকাভিভুত। ছয় দিন যাবৎ গুম হয়ে যাওয়া মানুষগুলির কোন খবরই যখন পুলিশ প্রশাসন গোয়েন্দা সংস্থা পান না এবং ছয় দিন পর যখন সাত জন মানুষের লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ভেসে ওঠে তখন আমরা যেমন শোকাভিভুত তেমনি একইভাবে আতংকিত। কারন একজন আইনজীবী চন্দন সরকার আমাদেরই বন্ধু, সহকর্মী তিনি তাঁর পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে অপরপক্ষের রোষানলের শিকার হবেন এটি ভাবতেই শরীর কেঁপে ওঠে।
কারন আমিও আইনজীবী । পেশাগত কারনে আমাকে আমার নাম , ধাম , ঠিকানা , ফোন নং পাওয়া কারো জন্যে কোন কঠিন কাজ নয়। আমি মামলায় কখোনো বাদীর আবার কখোনো বিবাদীর পক্ষ নিব এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাই বলে আমার জীবন বিপন্ন হবে ? অস্তিত্ব বিপন্ন হবে ? আশ্চর্য জনক হলেও সত্য বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই মামলা পরিচালনার জন্যে যখন আমি একটি পক্ষের হয়ে আইনী লড়াই করি তখন অপরপক্ষ আমাকে ”পারচেজ” করার জন্য যারপরনাই চেষ্টা করে। যখন দেখে কোন মতেই আর সেটি করা হচ্ছে না বা যাচ্ছে না তখন যে পরিমানে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে ফোন আসে সেগুলি যদি প্রতিদিন থানায় জিডি করতে চাই তাহলে ঢাকা শহরের শাহবাগ থানা, কোতয়ালী থানা বা মোহাম্মদপুর থানর পুলিশের আর কারো জিডি লেখার সময় থাকবে না। আর ইদানিং জিডি যেহেতু খুবই গুরুত্বেও সাথে তদন্ত করা হয় সুতরাং আমার মত একটি সাধারন আইনজীবীর প্রতিদিনের জিডি তদন্ত করতেই পুলিশ ফোর্স এর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু আমি যদি সেটি আবার না করি তাহলে বেঘোরে আমার প্রাণ টি চলে গেলে আমার পরিবারকেই কষ্টটি পেতে হবে এবং সকলেই বলবে , আইনের লোক হয়ে আমি এই কাজটি কেন করি নি ?
আমরা সাধারন জনগণ , আমরা পেশাজীবী আমরা আমাদের জীবন ও পেশার নিরাপত্তা চাই। বেশ কয়েক বছর আগে ঢাকা কোর্টে বহু আইনজীবীর বেঘোরে প্রাণ দিতে হয়েছে। ইদানিং সেটির প্রকোপ নাই বললেই চলে তবে জানি না সামনের দিনগুলি। কারন প্রতিদিনই মামলা পরিচালনার একটি পক্ষ হয়ে কাজ করতে গেলেই আইনসম্মতভাবেই আমাকে কিছু কথা বলতেই হয় যে কথাগুলি নিশ্চয়ই অপরপক্ষের মনের মতো নয় । আর তাই প্রতিনিয়ত যে পরিমান ভয় -ভীতি- হুমকি ও জীবন নাশের ফোন কল আমাকে পেতে হয় (ইদানিং তো সামনি অপরপক্ষের আইনজীবীর উপস্থিতিতেই ঘটনা ঘটে) না জানি কোনদিন নারায়ণগঞ্জে চন্দন সরকারের মতই আমার জীবন অপরপক্ষের হাতেই দান করে দিতে হয় – কে জানে ?
একজন চন্দন সরকার নয়- একজন কাউন্সিলর নয় আমরা সকলেই আমাদের পেশাগত নিরাপত্তা চাই। আমরা আমাদের সভ্য ব্যবসা শালীন ভাবে, আইনানুগভাবে করতে চাই। স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা অনেকদিন আগেই আমরা হারিয়োছি। স্বাভাবিক কর্ম জীবন তো পেতে পারি ?
এই দেশ আমাদের সকলের। এই দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব সকলকেই নিতে হবে। আমরা সবার জন্যই । সবাইকে নিয়েই আমরা ভাল থাকতে চাই । পুলিশ প্রশাসন আমাদের বন্ধু – সেবক । ধনী – গরীব- নারী- পুরুষ- শিশু-জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-পেশা নির্বিশেষে বাংলাদেশের সকল জনগণের মঙ্গলের জন্যই তাঁরা সমভাবে কাজ করবেন- এই প্রত্যাশা করা কী খুব অন্যায় ? কোন রাজনৈতিক দলের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্যে নয় । কারন কোন রাজনৈতিক দলই তাঁদের বেতন – ভাতা দেয় না। দেই আমরা । আমাদের জান মালের নিরাপত্তার স্বার্থে , আমাদের ঘাম ঝড়ানো কষ্টার্জিত অর্থ থেকে আয়কর প্রদানের মাধ্যমে । তাই আমরা আমাদের নিরপত্তা চাই। জীবনের – কর্মের ।
সকলের মঙ্গল কামনায়।
দিলরুবা সরমিন
আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মী
প্রধান সম্পাদক,প্রথমবার্তা ডটকম
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই মে, ২০১৪ সকাল ১০:৪৭
একাকী বাংলাদেশি বলেছেন: কারন একটি চক্র, একটি মহল আমাদের মাঝে ভয় , আতংক ঢুকিয়ে দিয়ে যেন তেন প্রকারে সরকার – প্রশাসন কে আবারো অস্থিতিশীল করে তুলে দেশকে অন্ধকারের গভীরে নিমজ্জিত করতে ব্যতিব্যস্ত।
উপরিউক্ত এই লাইনটার মানে কি? এইটা কি সরকারের পা চেটে দেওয়া যে আমি কিন্তু তোমাদেরই লোক। আমার গোস্বা হইওনা?????????