নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নীল রাত্রি

খেলা খেলা দিয়ে শুরু, খেলতে খেলতে শেষ, কেউ বলেছিল ছিঃ ছিঃ, কেউ বলেছিল বেশ, কেউ বেসেছিল ভালো, কেউ খুঁজেছিল আলো, কেউ আলো খুঁজে পায়নি বলেই– হয়তো নিরুদ্দেশ

নীল রাত্রি › বিস্তারিত পোস্টঃ

রবি ও কাদম্বরী

২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:১৯

রবি ঠাকুরের লেখা পড়লেই আমার হৃদয় কাঁপে।

তাকে নিয়ে অন্য কারো লেখা পড়লে আমার স্পন্দন হয় মনে।

আর আমি রবিকে নিয়ে লিখছি, ভাবলেই রোমাঞ্চিত হই।



সেই কিশোরী বয়সে রবির প্রেমে পড়েছিলাম। কেউ তুলেনি, তাই আজও পড়েই আছি। প্রেম যে এতো মহিমান্বিত তা তো রবির কাছ থেকেই জানতে পেরেছি।



রবির জীবদ্দশায়ও কম প্রেমিকা ছিলো না তার। কাদম্বরী থেকে শুরু করে আন্না, প্রিয়ংবদা, ইন্দিরা, রাণু, ভিক্টোরিয়া সকলেই তার একান্ত প্রণয়প্রার্থী।



মৃণালিনী তার বিবাহিতা স্ত্রী হলেও, সত্যিকারের প্রেয়সী হয়ে হয়ে উঠতে পারেনি কখনোই। তার মন প্রাণজুড়ে কৈশোরের একান্ত প্রণয়ী কাদম্বরী। কোনো দৈহিক যোগ নেই, অথচ মনের আনাচে কানাচে সর্বক্ষণ বিচরণ। সে এক অনন্য প্রেমের আখ্যান। যা কোনো ভাষাতেই উপস্থাপন করা যায়না। শুধু হৃদয় দিয়ে হৃদি অনুভব করা যায়।



এ তো গেলো বৌঠানের প্রতি রবির ভালোবাসা। বৌঠান কি রবিকে কম ভালবাসতো?

এই যে রবির অযুত নিযুত লেখা, তা কি বৌঠানের প্রেরণা ছাড়া সম্ভবপর ছিলো? বৌঠাকুরাণীর সহচার্য না পেলে রবির প্রতিভা মাঠে মারা যেতো।



বড় অকালেই চলে গিয়েছিলো কাদম্বরী। এত মায়া, এত স্মৃতি জমেছিলো মনে, তারই ফাঁকে কীভাবে যে অভিমানের ঘন কালো মেঘের স্তুপ জমে গিয়েছিলো কেউ টেরই পায়নি।



ছেলেবেলায় বাবা-মার ঘর ছেড়ে এসে ঠাকুরবাড়িতে একমাত্র মনের ভাব প্রকাশের সঙ্গী হিসেবে পেয়েছিল রবিকে। তাকে ছেড়ে চলে যাওয়া কী এতই সহজ কাজ?

ইকটুও মন কেমন করেনি?



করেছিলো হয়তো! তাইতো ঠিক আত্মহত্যা করার আগে যখন রবির সাথে দেখা করতে এসেছিলো, কাদম্বরীর চোখে আকুতি, মুখে স্মিত হাসিতে রবির ঘরে আলো ছড়িয়ে দিয়ে চিরতরে চলে গিয়েছিল কোনো এক অজানার পানে। যা বলতে এসেছিলো, তা আর কোনোদিন বলা হলোনা কাদম্বরীর। রবির কাছেও চিরন্তন রহস্যময়ী হয়ে রইল নতুন বৌঠান।



অনেকদিন পরে এক গভীর রাতে ঝড়ো বাতাসে রবির ঘুম গেলো ভেঙে। তার চোখ বেয়ে অঝোর ধারায় অশ্রু বইছে। কী এক অজানা কষ্টে বুকটা হাহাকারে ভরে গেছে। সে ঠাকুরবাড়ির ছাদে চলে এলো। আকাশে সেই ধ্রুবতারাটি দেখা যাচ্ছেনা। এমন সব সময়েই হয়তো ইচ্ছে করে পৃথিবীর সব মায়া কাটিয়ে চলে যেতে। কিন্তু রবি জানে, আমাকে চলে গেলে চলবেনা। অনেক কাজ বাকি। সে খাতা নিয়ে লিখতে বসল। কী আশ্চর্য! কোনো এক দৈবশক্তিতে তার খাতায় যে গানটি লেখা হল, তার সমস্তটা জুড়ে বৌঠানের চলে যাওয়ার আগের মুহূর্ত চলে এলো...



মনে কী দ্বিধা রেখে গেলে

চলে সে দিন ভরা সাঁঝে,



যেতে যেতে দুয়ার হতে কী

ভেবে ফিরালে মুখখানি--



কী কথা ছিল যে মনে॥



তুমি সে কি হেসে গেলে

আঁখিকোণে--

আমি বসে বসে ভাবি নিয়ে

কম্পিত হৃদয়খানি,



তুমি আছ দূর ভুবনে॥



আকাশে উড়িছে বকপাঁতি,

বেদনা আমার তারি সাথি।



বারেক তোমায় শুধাবারে চাই

বিদায়কালে কী বল নাই,



সে কি রয়ে গেল গো সিক্ত

যূথীর গন্ধবেদনে॥

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ সকাল ১১:৪৭

ফয়সাল হিমু বলেছেন: লেখাটা অসাধারণ হয়েছে।
আরও দারুনভাবে লেখা যেতো।
আবেগটা এতটাই হৃদয়ছোঁয়া যে, আরও কিছুক্ষণ পড়তে পারলে ভালো লাগতো :)

২| ২১ শে এপ্রিল, ২০১৫ দুপুর ১২:৫০

জেন রসি বলেছেন: রবি ও কাদম্বরীর রহস্যময় সম্পর্কের ছোঁয়া রবি ঠাকুরের অনেক কবিতা পাঠ করলেই পাওয়া যায়।

ভালো লেগেছে। :)

৩| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:১১

নীল রাত্রি বলেছেন: আরও ভালো লেখার চেষ্টা করব :)
ফয়সাল হিমু

৪| ২৩ শে এপ্রিল, ২০১৫ বিকাল ৪:১২

নীল রাত্রি বলেছেন: ধন্যবাদ :)
জেন রসি

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.