নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
আমরা বাঙ্গালিরা আজ একটি অসাধারণ কাজ করে ফেলেছি । আজ আমরা প্রায় তিন লাখ মানুষ এক জায়গায় দাঁড়িয়ে সমবেত কণ্ঠে গেয়েছি আমাদের জাতীয় সঙ্গীত । সংখ্যাটা ভুল বলা হল, আসলে এসময় একসাথে গেয়ে উঠেছে ১৬ কোটি বাঙ্গালীর প্রাণ । এই কাজটি আমরা কোন রেকর্ড কিংবা পেটেন্টের জন্য করিনি, বরং আমরা এটি করেছি দেশের প্রতি, দেশের জাতীয় সঙ্গীতের প্রতি ভালোবাসা থেকে । কেউ আমাদেরকে জোর করে ঠেলে পাঠায়নি প্যারেড গ্রাউন্ডে, এই কাজটি আমরা করেছি স্বতঃস্ফূর্তভাবে । আমরা এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছি । বায়ান্নতে আমরা ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছি, একাত্তরে প্রাণ দিয়েছি দেশের স্বাধীনতার জন্য, আর আজ মনের একান্ত ইচ্ছা আর দেশপ্রেম থেকেই সাক্ষী হয়েছি আরেক ইতিহাসের । পৃথিবীর আর কোন জাতির নিজের দেশ নিয়ে এতটা আবেগ আছে কিনা আমি জানি না ।
খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে তড়িঘড়ি তৈরি হয়ে মল চত্বরে গিয়ে দেখি সরকারিভাবে বাস পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে আমাদেরকে বহনের জন্য । সেই বাসে বন্ধুরা মিলে রওনা দিলেও কারওয়ানবাজার যেতে না যেতেই প্রচণ্ড জ্যাম! বাধ্য হয়ে হেঁটেই রওনা দিলাম । রাস্তার দুই পাশে তখন সারি সারি খালি গাড়ি, লোকজন সব দল বেঁধে হেঁটে রওনা দিয়েছে! কেউ লাল-সবুজের টিশার্ট পড়েছে, কেউ পড়েছে পাঞ্জাবি । মেয়েরা বেশিরভাগই পড়েছে লাল-সবুজ শাড়ি । গার্মেন্টস কর্মীরা দলবেঁধে হেঁটে চলেছেন, পরনে আজকের দিন উপলক্ষে তাঁদের নিজ হাতে বোনা পোশাক! সবার মনে উৎসবের আমেজ ।
প্যারেড গ্রাউন্ডে গিয়ে দেখা গেল মানুষ আর মানুষ । যেন বিশাল এক জনসমুদ্র! এরই মাঝে ঢুকে পড়লাম হাটি হাটি পায়ে । ঠেলাঠেলি আর ধুলোয় অবস্থা খারাপ । ভাগ্যিস তখনও সূর্যটা প্রখর আলো দেয়া শুরু করেনি । গেটে কাউন্টার বসানো আছে, সেখানে লোকসংখ্যা গণনা হচ্ছে । সাথে নাকি দেয়া হয়েছে একটি ব্যাগ, যাতে রয়েছে ক্যাপ, খাবার-দাবার, অংশগ্রহণের সনদসহ আরও কিছু । অনেকেই এই ব্যাগটি পাননি । খাবার-দাবার বড় কথা নয়, এমন একটি ইতিহাসের সাক্ষী হতে পাড়া ভাগ্যের ব্যাপার, অন্তত একটি স্মৃতি থাকা দরকার । কিন্তু হায়! বেশ ক'টি সামরিক বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতেও অব্যবস্থাপনা দেখা গেলো । এত লোক, এত বড় আয়োজন... এসব ব্যাপারে আরেকটু মনযোগ দেয়া উচিৎ ছিল ।
সে যাই হোক, গাইতে এসেছি, গাইতে পারলেই ভালো লাগবে । এমনটা ভেবে নির্ধারিত ব্লকে বন্ধুরা মিলে দাঁড়ালাম । ততক্ষণে আকাশে সূর্যের তাপ অসহ্য হয়ে উঠেছে । একবার রিহার্সেলের পর এলো সেই মহেন্দ্রক্ষণ ১১:২১ মিনিট । আমরা সবাই সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গাইলাম । ওপর থেকে হেলিকপ্টারে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে ছিল গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস টিম ।
এত সুন্দর আয়োজন, অথচ কিছু ব্যাপার ভালো লাগে নি । খাবার-দাবার, ব্যাগের অব্যবস্থাপনা এর মধ্যে সবার প্রথমে আসে । যারা পেয়েছে তারা একজন চার/পাচটা করেও পেয়েছে, আর যারা পায়নি তারা পায়নাই একটাও । আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে এমনটি কি করে হয়? জানাই তো ছিল এতো লোক আসবে, সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নেয়া দরকার ছিল । যারা অনুষ্ঠানে যাওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছিল, তারা তো গিয়েছেই, এর বাইরেও অনেকে গিয়েছে । জাতীয় সঙ্গীত গাওয়ার সময় বারবার মাইকে বলে দেয়া স্বত্বেও অনেক তরুণ ছেলেপেলে (বিশেষ করে আমার দেখা BUBT এর ছেলেপেলে) একে অন্যের ছবি তুলেছে, নড়াচড়া করেছে, এমনকি হেলিকপ্টারের দিকে হাত নেড়ে চিৎকারও করেছে গান গাওয়া ফেলে! এসব ছেলেপেলে কাউন্টেড হয়নি । এদের আসার কি দরকার ছিল শুধু শুধু? আর ফেরার সময় দেখলাম যেসব পতাকাগুলো দেয়া হয়েছিল ব্যাগের ভেতর, সেগুলো অনেকেই ফেলে দিয়েছে (এমনকি ছিঁড়ে ফেলেছে অনেকে!) নিচে! ভিড়ের মাঝে না পারিয়েও উপায় ছিল না । বাধ্য হয়েই ফেরার পথে জাতীয় পতাকা মাড়িয়ে ফিরতে হয়েছে! এসব মেনে নেয়া যায় না । এঁদেরকে কমন সেন্সের ওপর ট্রেনিং দেয়া উচিৎ । বড় দেশপ্রেমের জায়গাটা থাকা উচিৎ এসব ক্ষেত্রে ।
সবমিলিয়ে বলব, এত বড় আয়োজন, ভুলত্রুটি থাকবে, অব্যবস্থাপনাও থাকবে । কিন্তু দিনশেষে আমরা যে প্রাপ্তিটুকু সাথে করে ফিরতে পেরেছি, সেটা কি অনেক না? এই যে এত এত মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের মানুষগুলোর মিলন, এজন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ ও সাধুবাদ জানাই । এখন শুধু রেকর্ড ঘোষণা শোনার অপেক্ষা...
২| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৪৫
নিষ্কর্মা বলেছেন:
বেশির ভাগ অংশগ্রহনকারীই মাননীয় স্পিকার হয়ে ফিরেছেন। ব্যতিক্রম শুধু আপনিই!! মারহাবা ........ মারহাবা
৩| ২৮ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৪৪
মাসুদ ০০৭ বলেছেন: সত্যি কথা গুলো বলেছেন, আসলে সেনা বাহিনির কাছে এমনটা আশা করেনি সাধারন মানুষ
৪| ২৮ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১২:৪৪
মাসুদ ০০৭ বলেছেন: সত্যি কথা গুলো বলেছেন, আসলে সেনা বাহিনির কাছে এমনটা আশা করেনি সাধারন মানুষ
৫| ২৮ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১:০৯
মদন বলেছেন: অনুষ্ঠানের জন্য ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা নেয়া
ইবনে সিনার স্যালাইন খাবার প্যাকেটে দেয়া
জাতীয় পতাকা পাছার তলায় দিয়ে বসা, পতাকা পাড়িয়ে চলাচল করার পরেও এই বিষয়ে আপনার আাবেগ থাকায় আপনার আবেগকে শ্রদ্ধা করছি, কিন্তু বিবেচনাবোধকে নয়।
©somewhere in net ltd.
১| ২৬ শে মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:২২
পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: শুভ স্বাধীনতা দিবস