নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
বাবা বলতো, একজন শিশুর পরিপূর্ণভাবে বেড়ে ওঠার জন্য নিয়মিত মন দিয়ে লেখাপড়া করার পাশাপাশি তার সাংস্কৃতিক বিকাশের দিকটাও ভালোভাবে খেয়াল রাখা প্রয়োজন। সে কারণেই একদম ছোট বেলায় আমাকে ফরিদপুরের স্থানীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘ফুলকি’-তে নিয়ে যাওয়া হলো। ‘খেলাঘর’, ‘বহুরুপী’তেও যেতাম। মনে আছে, সকালে স্কুল ভ্যানে ব্যাপ্টিস্ট চার্চ মিশন স্কুলে যাওয়া, সেখান থেকে স্কুল শেষে ফুলকিতে যাওয়া, সেখানে নাচ-গান-আবৃতি-নাটক-ছবি আঁকা, অতঃপর মায়ের হাত ধরে হেঁটে বাসায় ফেরা –এটাই ছিল আমার প্রতিদিনের ব্যস্ত রুটিন। মাত্র ৫ বছর বয়সে প্রথম মঞ্চে উঠি। স্থানীয় একটি পত্রিকায় প্রথম গল্প লিখি ৭ বছর বয়সে, যে গল্প পড়ে এখন আমার ভীষণ হাসি পায়! তখন খুব লাজুক ছিলাম, মেয়েদের সাথে কথা বলতে লজ্জা পেতাম। গান-নাটকের ফাঁকে সুন্দরী বান্ধবিদের দিকে হঠাৎ এক ঝলক তাকিয়েই আবার সরিয়ে নিতাম চোখ । পাছে চোখে চোখ পড়ে যায়! সেইসব বান্ধবিদের অনেকেরই ইতিমধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে, কেউ বিয়ের পিঁড়িতে বসি বসি করছে।
আমি নাকি খুব জেদি ছিলাম তখন । অতটুকু বয়সে মঞ্চে ওঠার আগে বুক ধুকপুক তো একটু করতোই, তবে সেটাকে কাজে লাগিয়ে ফাঁকিবাজি করার সাহস পাইনি কখনোই, বাবার ভয়ে। এভাবেই একটা সময় এসবের প্রতি ভালোলাগা জন্ম নিলো। মনে পড়ে কবিতা আবৃতির কথা। ‘স্বাধীনতা তুমি’ কিংবা ‘মাগো, ওরা বলে... সবার কথা কেড়ে নেবে... তোমার কোলে শুয়ে গল্প শুনতে দেবে না। বল মা, তাই কি হয়?’ –আমার প্রিয় কবিতা ছিল। এই দুটি কবিতা আবৃতি করতে গেলে বাবার গলার স্বর আজও কানে বাজে। কতটা ধৈর্য নিয়ে আমায় আবৃতি শেখাতো বাবা! বাবার ‘চিঠি-১’ কবিতাটিও আবৃতি করেছি বহুবার। ঘরে আজও আছে স্কুল ও জেলা পর্যায়ের পুরষ্কারগুলি।
ফুলকিতে আমার প্রিয় শিক্ষকদের অন্যতম ছিলেন সিরাজ মামা এবং অঞ্জলি বালা। কিছুদিন আগে বিপ্লব বালা মামার বাসায় গেলাম, বলতে গেলে সেই ক্লাস ৩ এর পর এই প্রথম অঞ্জলি দিদার সাথে আমার দেখা হল। চিনতে পারলেন না আমাকে, না পারাটাই স্বাভাবিক। তবে ‘নিপুণ’ বলতেই চিনতে আর দেরী হলো না। আদর করে অনেক কিছু খেতে দিলেন। এই বয়সেও তিনি সুস্থ আছেন, নিজে হাতে চা করে খাওয়াচ্ছেন –দেখতে খুব ভালো লাগে। বললেন, এখন আর বাবা-মায়েরা আগের মতো তাঁদের সন্তানদেরকে নিয়ে আসেন না সাংস্কৃতিক শিক্ষা দেবার জন্য। পড়ালেখার অতিরিক্ত চাপকেই দুষলেন তিনি । ফেরার পথে, তিনি যেভাবে আমাকে বুকে জড়িয়ে আদর করে দিলেন, তার একটাই অর্থ- “দীর্ঘদিন পর সন্তানকে কাছে পাওয়ার আনন্দ!” দরজার দাঁড়িয়ে, দিদার চোখে আমি জল দেখেছি।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৩
...নিপুণ কথন... বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সকাল ১০:২৭
সুফিয়া বলেছেন: স্মৃতি রোমন্থন এত অল্পতে শেষ হলে কি চলে ?
ভালেঅ লাগল।
২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১১:০৪
...নিপুণ কথন... বলেছেন: বেশি লিখলে আজকালকার পাঠকেরা পড়ে না। দেখুন, মাত্র ২০ জনেরও কম পড়েছেন।
©somewhere in net ltd.
১| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ রাত ১:০৭
এনামুল রেজা বলেছেন: চমৎকার স্মৃতিচারণা। ভাল লাগলো।