নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাহিত্যিক। ফেসবুকে যুক্ত হোনঃ www.facebook.com/dev.d.nipun

...নিপুণ কথন...

সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।

...নিপুণ কথন... › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা

০৯ ই মে, ২০১৫ রাত ১১:৩০

মা দিবস এলেই আমার মনটা কেমন খারাপ হয়ে যায়। হবেই বা না কেন? মায়ের জন্য বছরে একটিমাত্র দিন, আর আমি কিনা এই দিনটাতেও মায়ের কাছে থাকতে পারি না! ভালো কিছু বাজার করে এনে দিয়ে বলতে পারিনা- "মা, তাড়াতাড়ি রান্না বসাও তো, খিদে লাগছে।" মায়ের সাথে একসাথে বসে গল্প করিনা কতদিন! কষ্ট পেলে মা যখন কাঁদে, আমি তখন তাঁর চোখের জল মুছে দিতে পারিনা। বুকে জড়িয়ে বলতে পারিনা- "মা, আমিতো আছি!"

সেদিন অনেক রাতে ফোন দিয়েছিল মা। আমি জানতে চাইলাম, এত রাত হলো, এখনো ঘুমাওনি কেন? মায়ের নাকি ঘুম আসে না। কারনটা অদ্ভুত, একমাত্র মায়েরাই এমন করে ছেলেকে ভালোবাসতে পারে। মা জানালো, আমাদের বাসার একমাত্র আম গাছটায় নাকি এবার ভালোই কয়েকটা আম পেকেছে। পাকছে আর টপাটপ নিচে পড়ছে। এভাবে অনেকগুলো আম একসাথে জড়ো হয়েছে, আর মা আশায় আছে আমি কবে বাড়ি যাব, কবে সেগুলো খাব। ছেলেকে রেখে মায়ের কি একা একা গাছের আম খেতে মন চায়? বেশ কদিন ধরেই আমাকে এই কথা বলবে ভাবছে, কিন্তু কাজের ক্ষতি করে বাড়ি যাই এটাও চায় না মা। তাই মনের মধ্যেই রেখেছে কথাটা। আবার এসব আবেগের কথা শুনে আমিও যদি রাগ করি, যদি বলি, "বর্তমান জামানায় আবেগের কোন দাম নেই। সামান্য ক'টা আমের জন্য কাজ ফেলে পড়ালেখা ফেলে এতদূর যাওয়া সম্ভব না", তবে মা কষ্টই পাবে। কিন্তু আজ এতরাত জেগে বসে আছে মন খারাপ করে, এই একটা কারণেই। ছেলেকে ছেড়ে সে একা কী করে আম খায়? কাউকে দিয়ে যে পাঠাবে, তেমন কাউকে পাওয়াও যাচ্ছে না। এখন মনে হচ্ছে কুরিয়ার সার্ভিসের ওপরই ভরসা করতে হবে। নাহলে আমগুলো তো মায়ের পেটে যাবেই না, কিছু আম এ বাড়ি-ওবাড়ি দেয়া হবে, আর বাকিটা ঘরে বসে বসে পচবে।

এই হলো আমার মা। গত ১৫ বছর ধরে ফরিদপুরের একটি দাতব্য চিকিৎসালয়ে ডিএইচএমএস ডাক্তার আমার মা, রোগী দেখে মাত্র ৫ টাকা ভিজিটে। গত ৭ বছর ধরে ধর্ম মন্ত্রনালয়ের অধীনে প্রাক-প্রাথমিকের বাচ্চাদেরও পড়ায় মা। এই স্কুলে গত বছরখানেক ধরে কোন এক অজানা কারণে বেতন বন্ধ, তবুও পড়ানো থেমে নেই। সকালে বাচ্চাদের মানুষ করা,তারপর নিজেই রান্না করে খেয়ে বিকেলে আবার চেম্বারে গিয়ে গরিব-দুঃখীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেয়া। এই তাঁর প্রতিদিনের কাজ। আবার গোয়ালচামট শান্তি শৃংখলা উন্নয়ন সংস্থার একজন সম্পাদিকার দায়িত্বেও আছে অনেক বছর ধরে। এতকিছুর পরেও তাঁর মতো সাদামাটা মানুষ, সহজ-সরল মানুষ মেলা ভার। এজন্য অনেক কষ্টও সহ্য করতে হয় তাঁকে। বাবা মারা যাবার পর গত ৭ বছর ঐ চার দেয়ালের মাঝে একা থেকে এমন মানবসেবার কাজ করে যাচ্ছে আমার মা। আমি আমার মাকে নিয়ে যার-পর-নাই গর্বিত এবং আনন্দিত।

মা, তোমার গর্ভে জন্মেছি বলে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। পাশাপাশি এখনো তোমার সুখেদুঃখে কাছে থেকে তোমাকে সাপোর্ট দিতে পারিনা বলে আমি ক্ষমাপ্রার্থী। আশা করি অচিরেই সব সমস্যার সমাধান হবে। তোমাকে মা দিবসের শুভেচ্ছা জানাই। ভালো থেকো মা!

মা দিবসে, পৃথিবীর সকল মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা। পৃথিবীর কোথাও কোন মায়ের ঠাই যেন বৃদ্ধাশ্রমে না হয়।

মন্তব্য ১ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই মে, ২০১৫ রাত ৯:৩৯

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: অনেক শ্রদ্ধা রইল আপনার মায়ের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.