নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
রাত ১২ টার কিছু পরে। প্রভোস্ট অফিসে স্যারের সাথে গুরুত্বপূর্ণ মিটিং শেষে মনে পড়লো রাতে তো খাওয়া হয়নি। এত রাতে খাবার পাই কই? আচ্ছা, পলাশীই যাওয়া যাক। এই ভেবে পলাশী গেলাম। মোরে ফুটপাথের দোকানদার "রহমান" ভাই দূর থেকে সালাম ঠুকে বললেন, "ভাই বসেন। ঐ ভাই কী খাবে দ্যাখ।"
আমি কী খাব ভাবলাম। আজ রাতেই একটা পোস্ট দেখেছি। সেখানে কয়েকজন বিশেষজ্ঞ দাবি করেছেন, সকালে বেশি, দুপুরে পর্যাপ্ত আর রাতে কম খেলে নাকি স্বাস্থ্য ঠিক থাকে। স্লিম থাকা যায় আর কি। আমি এমনিতেই যথেষ্ট স্লিম। তবু, স্লিম থাকতে তো হবে। অর্ডার দিলাম ডিম-বন। একটু পর একটা প্লাস্টিকে থালায় গরম গরম ডিম-বন এলো। আলাদা থালে কাঁচা পেয়াজ আর মরিচের সালাদ দেয়া হলো। ইদানিং আর বলে দিতে হয় না। বহুদিন পর একদিন এলেও এদের মনে থাকে।
তো, সেই ডিম-বন খাচ্ছি। একটু পরে একটা ছেলে এলো। বাচ্চা ছেলে, ৭ কি ৮ বছরের। গায়ে পোশাক যা আছে, তাতে ভিখারী মনে হয় না। চুলের স্টাইলও বেশ। পিছ থেকে প্রথমে এমনিতেই বললো। আমি মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত দেখে গায়ে হাত দিয়ে বললো, "ভাই, রুটি খামু। কিনে দেন।"
কিছুক্ষণ ওর দিকে তাকিয়ে, ভাবলাম একবার না করে দেখি ও কী করে। আমি "না" করে বললাম অন্য কারও কাছে যেতে। ছেলেটা গেলো না। আমার পাশেই বেঞ্চিতে বসে পড়লো। পেটে হাত দিয়ে কিছুক্ষণ মন খারাপ করে বসে রইলো। তারপর চার-পাঁচ সেকেন্ডেই দেখি বসে বসে ছেলেটা ঝিমুচ্ছে। আমি ডেকে জানতে চাইলাম, "কোথায় থাকিস?" ও হাত দিয়ে পাশেই চৌরাস্তার ওপাশে ফুটপাথ দেখিয়ে বললো, "ঐখানে"। এবার আর আমার দিকে তাকালো না। বোঝা গেলো মন খারাপ করেছে। আমি জানতে চাইলাম, "বাবা-মা আছে? ভাই-বোন?" ও জানালো, "মা আছে। বোন নাই"।
আমি আর কিছু জানতে চাইলাম না। খাওয়া শেষ করে উঠে কাগজ দিয়ে হাত মুছে দোকানদারকে বললাম, "ঐ ছেলেটাকে রুটি আর ডিম দিবেন। ছেলেটাকে দেখে মায়া লাগলো"। তিনি একজন কর্মচারীকে ডেকে ছেলেটাকে রুটি আর ডিম দিতে বললেন। আমি বললাম, "কত দেবো?" দোকানি আমাকে অবাক করে দিয়ে বললেন, "ভাই, আপনে শুধু আপনার বিলডাই দেন। ওরে আইজ আমিই খাওয়াই"।
এই ব্যস্ত শহরে আমাদের সবারই কমবেশি কষ্ট আছে। কে কার খবর রাখে? সময় কই? কতজনই তো আমরা মনে কষ্ট আর ফাঁকা মানিব্যাগ নিয়ে হাসিমুখেই ঘুরে বেড়াই! এই সীমিত সামর্থের মাঝেই আমরা যদি আমাদের আশেপাশের মানুষগুলোর দিকেও একটু করে নজর দেই, যারা আমাদের চেয়েও কষ্টে আছে, তাহলে মনে হয় খুব একটা বেগ পেতে হবে না। জানেন তো, প্রকৃতির নিজের একটা বিচার আছে। মানুষের ক্ষতি করলে একদিন এমনভাবেই আপনার ক্ষতি হবে। কারো উপকার করে দেখুন, বিপদে কারো পাশে দাঁড়িয়ে দেখুন, একদিন আপনিও কারও দ্বারা উপকৃত হবেন। বিপদে আপনিও পাশে অনেককে পাবেন। চলুন না, আমরা এই উপকার করার অভ্যাসটাকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দেই। যার যার সাধ্য অনুযায়ী মানুষের পাশে দাঁড়াই। অন্যায় দুর্নীতি করা ছেড়ে দেই চলুন। আসুন, সবাই মিলে সবাইকে নিয়ে ভালো থাকি। মানুষ তো মানুষের জন্যই!
২| ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:৩১
স্বপ্নচারী গ্রানমা বলেছেন:
আপনার কথাগুলো ভালো লাগলো!
মানুষ তো মানুষের জন্যই,
সবাই এমন করে ভাবতে পারলে এই সমাজে শান্তির পায়রা উড়ে বেড়াতো!
ভালো থাকুন ভ্রাতা।
৩| ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ২:২৫
বোকামানুষ বলেছেন: ভাল লাগলো
৪| ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:৫২
এস কাজী বলেছেন: মানুষ তো মানুষের জন্য। ভাল্লাগসে
৫| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১২:১৭
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: ভাল লাগলো ।
৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:০১
সুমন কর বলেছেন: দোকানির কথা এবং ব্যবহার খুব ভালো লাগল।
লেখায় প্লাস।
৭| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১:২১
তপ্ত সীসা বলেছেন: ভালো কইছেন ভায়া
৮| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৫ রাত ১০:২৬
তুষার কাব্য বলেছেন: ভালো লাগলো। ভাবনাগুলো ,স্বপ্নগুলো আরও বড় হোক ।
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে আগস্ট, ২০১৫ ভোর ৫:১৭
বটপাকুড় বলেছেন: ভালো লাগলো। আসলে মনের ইচ্ছা টাই বড় ব্যাপার। টাকা যাদের থাকে, তাদের মানসিকতা নেই , আর যাদের করার ইচ্ছা থাকে, তাদের ইচ্ছা থাকলেও সাধ্য থাকে না।
জানেন, আমার জীবনে এমন কত অচেনা মানুষের কাছ থেকে উপকার পেয়েছি। কিন্তু পরিচিত মানুষের কাছ থেকে, উপকার করার বদলে পেয়েছি খালি উপহাস। তাও মনের কোন খেদ নেই। চেষ্টা করি আপনার মত আশে পাশের লোকগুলোকে সাহায্য করতে।
আপনার লেখা মাঝে মাঝে পড়ি। লেখার হাত মনে হয় আপনার বাবা এর কাছ থেকেই পেয়েছেন।
ভালো থাকবেন