নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
বন্ধু সেবক ব্রহ্মচারীর লাশের উপর দাঁড়িয়ে আজও শ্রীঅঙ্গনে উৎসব হয়। কিন্তু তাঁর আত্মার শান্তি বিধান হয় না। কারণ, সর্ষের মধ্যেই লুকিয়ে আছে ভূত।
.
২০১৯ সালের শেষের দিকে শ্রী অঙ্গনের ভক্তাবাস থেকে বন্ধুসেবকের লাশ উদ্ধার হয়। লাশ উদ্ধারের ভিডিওতে দেখা যায়, যে রুমে লাশ পাওয়া যায় সেটি বাইরে থেকে খোলা ও বন্ধ করা যায়, লাশ ফ্যানের সাথে ঝুললেও জিহবা বেরনহয়নি, লাশের পা মাটিতে, গলায়ও তেমন গাঢ় দাগ নেই। তারপরেও একে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়া হয়।
.
বন্ধুসেবকের বাড়ি পঞ্চগড় হলেও ছোট থেকে সাধু হয়ে ফরিদপুরে শ্রী অঙ্গনে থাকতেন। তিনি মহিম ইন্সটিটিউটে পড়েছেন, ল কলেজ থেকে এল,এল,বি ডিগ্রিও নেন। আইনজ্ঞ ও সৎ হওয়ায় তাঁর অনেক শত্রু ছিলো। শোনা যায় শ্রী অঙ্গন কমিটির সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় মূলত ভারত থেকে আসা বড় অংকের ডোনেশন তিনি কমিটির গৃহী ও লোভী কতিপয় সাধুকে চুরি করতে না দিয়ে শ্রী অঙ্গনের অ্যাকাউন্টে জমা করান। সেই থেকে তাঁকে হ*ত্যার ষড়যন্ত্রের শুরু। ইতিপূর্বে অনেকবার তাঁকে ময়মনসিংহসহ অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয় লুটপাটের সুবিধার্থে। কয়েকবার মারতেও যায় তাঁকে প্রভাবশালীরা, আমি ও আমার মা নিজেই কয়েকবার তাঁকে নিশ্চিত মারধরের হাত থেকে বাঁচাই।
.
লাশ উদ্ধারের কিছুদিন আগে আমাকে শ্রী অঙ্গন থেকে একটি চিঠি পাঠান তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক বিজ্ঞানবন্ধু ব্রহ্মচারী। তিনি আমার জমি নিজেদের বলে দাবি করে আমি চাকরি পেয়ে স্বাবলম্বী হয়েছি বিধায় আমাকে আমার ৪০+ বছরের বসতভিটা ছেড়ে যেতে বলেন। বন্ধুসেবক মামাকে বিষয়টা জানালে তিনি আমাকে জিজ্ঞেস করেন আমি কি একাই স্বাবলম্বী হয়েছি এখানে? আমি জানাই, না, কাউন্সিলর, পরিবহণ মালিক সমিতির নেতাসহ অনেক কোটিপতি এখানে আছেন যারা শ্রী অঙ্গনের দাবিকৃত জমিতে ভাড়া না দিয়েই আছেন। তাছাড়া আমার জমিটা শ্রী অঙ্গনের নয়। বাবা কবি বাবু ফরিদীর (এটা ছদ্মনাম, আসল নাম কমল কৃষ্ণ গুহ) এই শ্রী অঙ্গন দক্ষিণ পল্লীতেই অকালে রহস্যজনক মৃত্যু না হলে আজ আমাদেরকে এমন ভূয়া জোরজবরদস্তির নোটিশ দিতে পারতো না বলে কান্নাকাটি করি মামার কাছে। তিনি আমাকে দুশ্চিন্তা করতে নিষেধ করেন। সম্ভবত কেউ আমাদের সেই ফোনালাপ শুনে ফেলে। তাঁকে মামা ডাকতাম, কারণ তিনি আমার মাকে দিদি ডাকতেন। আমার বাবা ডা. কৃষ্ণা মিত্র ( Krishna Guho) দীর্ঘ ১৯+ বছর শ্রী অঙ্গনের দাতব্য চিকিৎসালয়ের ডাক্তার ছিলেন, মাত্র ৫০০ টাকা বেতনে বাজারের মারোয়ারি সম্প্রদায়ের দান করা ঔষধে চিকিৎসাসেবা দিতেন। সেই চেম্বার ২০১৯ সাল থেকে ভেঙে রেখে দিছে শ্রী অঙ্গন কমিটি।
.
এর কিছুদিন পরেই একদিন আমি আঙিনায় (শ্রী অঙ্গনে) বসে আছি, এমন সময় এক স্কুলপড়ুয়া ভদ্র সাধু আমাকে এসে জানায়, বন্ধুসেবক মামাকে উক্ত বিষয়টি নিয়ে অনেক বকাঝকা করেছেন সভাপতি কান্তিবন্ধু ব্রহ্মচারী ও সম্পাদক বিজ্ঞানবন্ধু। আঙিনায় তরকারি কুটে দেয় এমন দুই মহিলাকে ২০+২০= ৪০ হাজার টাকা দিয়ে বন্ধুসেবকের বিরুদ্ধে তাদেরকে কুপ্রস্তাব দেওয়ার মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে (টাকা খাওয়ার কথা মহিলারা স্বীকারও করেছে)। সাথে সাথে সেবক মামাকে ফোন করলে তিনি আমাকে টেনশন না করতে বলেন, জানান তাঁর গুরুদেব তথা কান্তিবন্ধুর প্রতি আস্থার কথা। আমি তাঁকে আশ্বস্ত করি তিনি যেন নিজেকে একা না ভাবেন, দুর্নীতর বিষয়ে প্রয়োজনে আমার সাথে গিয়ে যেন ডিসি-এসপি স্যারদের জানান, যেন নিরাপত্তা চান। কিন্তু তিনি বলেন কান্তিবন্ধু যেহেতু সভাপতি, তাঁর সামনে কেউ তাঁর কিছু করতে নাকি পারবে না! তাছাড়া আমি নিজেই তাদের দ্বারা এলাকায় একঘরে হয়ে আছি, বারবার হামলা ও বদলির শিকার হচ্ছি-- এসব স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি আমাকে আর বিপদে ফেলতে চান না বলে জানান।
.
লাশ উদ্ধারের আগের দিন কর্মস্থল থেকে ফিরে পরীক্ষার খাতা দেখতে দেখতে রাত হয়ে যায়। যেহেতু সাধুরা আগেই ঘুমান ভোর রাতে উঠে কীর্তন করেন বলে, তাই সেবক মামাকে ফোন দিয়ে মিটিংয়ে কী হয়েছে জানতে পারিনি। লাশ উদ্ধারের দিন সকালে উঠে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে শ্রী অঙ্গনের আশপাশে ভীড় দেখলেও কিছু বুঝিনি, কেউ কিছু বলেওনি। বোয়ালমারীর যাওয়ার পথে ফেসবুকে তাঁর লাশ উদ্ধারের খবর পাই। সাথে সাথেই ডিসি-এসপি স্যারের কাছে বিচার দাবি করি ফোন মারফত, কর্মস্থলে গিয়ে জামায়াতের সুরা কমিটির সদস্য প্রিন্সিপালের থেকে ছুটি পেতে অনেক বেগ পেতে হয়। শ্রী অঙ্গন-কর্মস্থল সবাই মিলেই আমাকে আটকিয়েছে। ফিরে এসে ডিসি-এসপি স্যারের সাথে দেখা করে সেদিনের মতো জানতে পারি লাশ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেম করতে দেওয়া হয়েছে। ফেসবুকে লাইভ করে প্রতিবাদ জানাই।
.
পরেরদিন লাশ এনে শ্রী অঙ্গন নাট মন্দিরে রাখা হয়। গিয়ে দেখি প্রভু জগদ্বন্ধু সুন্দরের সামনে কীর্তন হচ্ছে, সেবক মামার স্বজন, শুভাকাঙ্খীদের কান্নার রোল। তাঁর মতো একজন মহৎ সাধুকে নাকি শিষ্য বানাতে দেওয়া হয়নি! এরপর প্রভুই আমাকে আদেশ দেন প্রতিবাদ করতে। আমি ও মা ফেসবুক লাইভে গিয়ে প্রতিবাদ করি। স্থানীয়রা সাক্ষ্য দেয় বিষয়টা রহস্যজনক, বিচার চান অনেকে। স্থানীয়দের সাথে নিয়ে সরকারি চাকরিজীবী হয়ে চাকরিসহ জীবনের ঝুঁকিতে থেকেও আন্দোলনের নেতৃত্ব দেই। তৎকালীন এমপি ও সাবেক মন্ত্রী খন্দকার সাহেবের লোকজন এসে ও ট্রাক পাঠিয়ে বারবার লাশ গুমের চেষ্টা চালায়। কিন্তু আমরা লাশ নিয়ে যেতে দেইনি। অনেক কিছুর পর প্রশাসন এসে লাশ শ্রী অঙ্গনেই দাফন করতে বলে, তারপর সেবক মামাকে সমাধিস্ত করা প্রভুর সামনে ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক অমর দাদুর পাশে। বিচারের আশ্বাস দেওয়া হলেও বিচার হয়নি। তাকে নাকি সালিশি মিটিংয়ে কান্তিবন্ধুর সামনেই বেদম মারা হয়। মারেন শ্রী অঙ্গনের তৎকালীন কমিটির সদস্য সুবল চন্দ্র সাহা (জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি), জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি সুকেশ সাহা, কিংকর সাহা গং।
.
হবে কী করে বিচার? সর্ষের মধ্যেই যে ভূত! একটা লোক দেখানো আত্মহত্যায় প্ররোচনায় মামলা করেন মহানাম সম্প্রদায় বাংলাদেশের সভাপতি কান্তিবন্ধু সাধারণ সম্পাদক বিজ্ঞানের বিরুদ্ধে। বিজ্ঞান কিছুদিন জেল খেটে বেরিয়ে এখন আবার সাধু হয়েছেন! লোক দেখানো মামলাও শুনেছি ডিসমিস হয়ে গেছে, কারণ বাদী কান্তিবন্ধু মামলা গুরুত্ব দিয়ে পরিচালনা করেননি। করলে যদি সর্ষের মধ্যেকার ভূত বেরিয়ে আসে! তবে শ্রী অঙ্গনের গঠনতন্ত্র চেঞ্জ করা হয়, কমিটি ভেঙে শুধু সাধুদের দিয়ে কমিটি করা হয়। এর সাথে জড়িত সাবেক মন্ত্রী ঘনিষ্ট কাউন্সিলর তৃষ্ণা সাহা বহিষ্কৃত হন, সুবল সাহা সভাপতির পদ হারান জেলা আওয়ামী লীগের, সুকেশ সাহা কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করতে পারেননি, পূজা উদযাপনের কমিটি হয় নতুনদের নিয়ে তাকে অঘোষিত সভাপতি থেকে নামিয়ে, গোলাম নাসির কাউন্সিলর, শ্রমিক লীগ আহবায়ক, আওয়ামী লীগের সদস্য ইত্যাদি হন, অমিতাভ বোস হন পৌর মেয়র। এমনকি সদর আসনের এমপি পরিবর্তন হন। খন্দকার সাহেব এখন সুদূর প্রবাসের অন্ধকারে বসে হতাশার দিন কাটান, কারণ গ্রেপ্তারের ভয়ে তিনি দেশছাড়া, মন্ত্রীত্ব নাই, এমপিত্ব নাই, এলাকায় রাজনীতি নাই, এমনকি পিএম স্যারের মেয়ের সাথেও পারিবারিক সম্পর্ক নাই। ফরিদপুরে তার বাড়িতে বছর তিনেক আগে থেকেই ভূত বাস করে। তার অনুগতরা দুই হাজার কোটি টাকা পাচার মামলায় অনেকেই গ্রেপ্তার বা পলাতক, সাবেক পিএস সত্যজিত মুখার্জি পলাতক, এপিএস ফুয়াদ জেলে, রুবেল-বরকত জেলে, লেভী জেলে।
.
বন্ধুসেবকের অতৃপ্ত আত্মা আজও শ্রী অঙ্গনে ঘুরে বেড়ায় আর প্রভুর কাছে বিচার চায়। আমি তাঁর মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে দীর্ঘদিন ধরে আঙিনায় ঢুকি না। আমাকে একের পর এক বিরূপ মন্তব্য, তিরস্কার দণ্ড দিয়ে, ৪৫০ কিমি বদলি করে সেবক মামার খোঁজ নেওয়ার সুযোগ তারা রাখেমি। আমার অসুস্থ বিধবা মা একা ফরিদপুরে দক্ষিণ পল্লীর ভাঙা ঘরে পাগলপ্রায়। বিসিএস ক্যাডার হয়েও আমি আজও এলাকায় একঘরে অবরুদ্ধ, চাকরি ৭ বছর পর অসম্ভবকে সম্ভব করে স্থায়ী হলেও শান্তি নেই জীবনে। শ্রী অঙন ও প্রভাবশালীদের মিথ্যা রটনার কারণে সংসারীও হতে পারছি না। থিতু হয়ে দাঁড়ানোটাও হচ্ছে না। আমার বাবার মৃত্যুর রহস্যেরও কোনো কূল-কিনারা হলো না। ডিসি-এসপি যায়-আসে, শ্রী অঙ্গনের সাধুরা প্রভাবশালী হয় আরও, বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদে। সুন্দর মনোরম ছিমছাম সেই শ্রী অঙ্গনে বৃক্ষনিধন হয় আর একের পর এক অট্টালিকা ওঠে, চাকচিক্য বাড়ে। আমাদেরকে কেউ একবেলা ডেকে প্রসাদও খাওয়ায় না। অথচ আমার মা ১৯+ বছর বাইরে কোনো চেম্বার না দিয়ে শুধু শ্রী অঙ্গনেই সেবা দিয়ে গেছেন প্রায় বিনামূল্যে। আমার বাবা শ্রী অঙ্গনের গঠনতন্ত্র প্রণেতা ছিলেন, কমিটির সদস্য ছিলেন অমরবন্ধুর সময়ের, শ্রী অঙ্গনের লোহার কড়াইগুলো মুক্তিযুদ্ধের পর উদ্ধার করে দিয়েছিলেন, মুক্তিযুদ্ধে শ্রী অঙ্গনের সাধুদের হত্যা নিয়ে লিখেছিলেন 'কমলের একাত্তর' যা যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে সংরক্ষিত আছে। মুক্তিযুদ্ধে নিহত সাধুদের স্মরণে বাবা প্রতি বছর স্মরণ অনুষ্ঠান করতেন বিপ্লবী কর্ণেল তাহের মঞ্চের হয়ে, যেটায় তিনি প্রতিষ্ঠাতা ও আমৃত্যু সভাপতি ছিলেন। আমি নিজেও যদি সেদিন প্রতিবাদী হয়ে না দাঁড়াতাম, মুসলিমরা এসে সেবক মামার হত্যার বিচার চাইতো। সেটাই মনে হচ্ছে বেশি ভালো হতো!
কবি বাবু ফরিদী ও বন্ধুসেবক ব্রহ্মচারীর আত্মা শান্তিলাভ করুক। প্রভুর শ্রী অঙ্গন সকল পাপাচার থেকে মুক্তিলাভ করুক।
দেব দুলাল গুহ
[সেই প্রতিবাদের লাইভ ভিডিওগুলো একসাথে জোড়া দেওয়া অবস্থায় এই ইউটিউব লিংক পাবেন: Click This Link ]
২| ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৪৩
নতুন বলেছেন: উনার পা মাটিতে থাকলে হত্যা হবার সম্ভবনা খুবই বেশি।
সার্থ থাকলে সব কিছুই ধামাচাপা হয়ে যায়।
উনার অত্নার শান্তি কামনা করি।
২৭ শে জুন, ২০২৪ রাত ৯:০০
...নিপুণ কথন... বলেছেন: সেটাই হয়েছে ভাই। ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট কাজে লাগিয়ে বাইরের শক্তি দিয়ে চাপ প্রয়োগে কালক্ষেপণ করে হিন্দু ডিশিকে দিয়ে ধামাচাপা দিয়ে দিছে।
৩| ৩০ শে জুন, ২০২৪ রাত ৮:১২
নতুন বলেছেন: স্যার আপনি যে আমাকে আবাল বললেন কেন সেটা তো বললেন না।
আপনি আমাকে চেনেন না জানেন না আপনি নাকি শিক্ষকতা করেন আর ব্লগে আমার কমেন্টের জবাবে আবাল বলে তুই বললেন?
আপনার সাথে একটু আলোচনা করা দরকার স্যার।
©somewhere in net ltd.
১| ২৩ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৬
প্রামানিক বলেছেন: স্বার্থর কাছে সত্যপথের পথিকগুলো এভাবেই মার খায়।