![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সময়ের সাথে দৌঁড়ে পারিনা, জীবনের দৌঁড়েও পিছিয়ে আমি!খুঁজে ফিরি আপন মানুষ, মাঝে মাঝে হই বেহুঁশ...হৃদয়ে অবিরাম স্বপ্ন গাঁথন, বলব আজ নিপুণ-কথন।
"হ"হরিপুরুষ জগদ্বন্ধু মহাউদ্ধারণ,
চারি হস্ত চন্দ্রপুত্র হা-কীটপতন।
প্রভু প্রভু প্রভু হে, অনন্তানন্তময়.."
এই লাইনগুলিই জন্মের পর থেকে শুনে আসছি ফরিদপুর শ্রীধাম শ্রীঅঙ্গনে। কিন্তু আজকাল সেখানে শুধুই কৃষ্ণনাম শুনি! তবে কি শ্রীহরির অবতার জগদ্বন্ধু সুন্দরের আরাধনা বাদ দিয়ে মহানাম সম্প্রদায়ের সাধুরা শ্রীঅঙ্গনে শ্রী কৃষ্ণের মূর্তি বসিয়ে পূজা শুরু করেছে? জগদ্বন্ধুই যদি শ্রীহরির অবতার হবেন, অনন্তময় হবেন, তিনিই যদি চন্দ্রের পুত্র হবেন, তিনিই যদি সবার উদ্ধারকর্তা হবেন, তবে তো সেখানে তাঁর নাম বাদ দিয়ে উচ্চস্বরে মাইকে শ্রীকৃষ্ণের নাম প্রচার ও আরাধনার প্রয়োজন থাকার কথা না! জনমনে প্রশ্ন, এটা কি তবে ইস্কনের শাখায় রূপান্তরিত হলো? কিন্তু পাশেই ইস্কনের শাখা আছে তো!
আসল ব্যাপারটা হচ্ছে, কৃষ্ণনামের আড়ালে শ্রীঅঙ্গনের কতিপয় ভন্ড ও পাপাচারী সাধুরা তাদের পাপ ঢাকতে চাইছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর এবং ইস্কনের অনুসারী তুলসী গ্যাবার্ডকে মার্কিন গোয়েন্দাপ্রধান নিযুক্ত করার পর শ্রীকৃষ্ণের নাম বেশি বেশি উচ্চারণ করা শুরু করেছেন তারা। স্বয়ং মহানাম সম্প্রদায়ের সভাপতি কান্তিবন্ধু ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধেই শ্রীঅঙ্গনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বন্ধুসেবক ব্রহ্মচারীকে হত্যায় ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ আছে। বন্ধুসেবক একজন এল,এল,বি পাশ সাধু ছিলেন, যিনি প্রভুর সেবায় নিজেকে নিয়োজিত রাখেন, বিয়ে করেননি, আইনপেশাতেও জড়াননি। সেই সীমান্তে পঞ্চগড়ে বাড়ি হলেও তিনি ছোট থেকে ফরিদপুরেই থাকতেন, শ্রী অঙ্গনের সামনের মহিম স্কুলে পড়েছেন। কান্তিবন্ধু নিজে হাজার হাজার দীক্ষা দিয়ে সকলের গুরু হয়ে দেশব্যাপী পূজা নিয়ে বেড়ালেও নিজের শিষ্য বন্ধুসেবককে দীক্ষা দিয়ে কারো গুরু হতে দেননি। শেষে বাঁচতেও দেননি।
২০১৯ সালে শ্রী অঙ্গনের ভক্তাবাস থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার হয়, তার আগে দুজন সব্জিকাটার কাজের মহিলাকে ২০+২০ = ৪০ হাজার টাকা ধরিয়ে দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দিইয়ে মিটিংয়ে কান্তিবন্ধুসহ গোটা কমিটির সামনেই তাঁকে পেটানো হয়। এই ঘটনাকে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিলেও অনেকের দৃষ্টিতে সেটা ছিলো হত্যা। যদিও ধর্মীয় প্রভাব খাটিয়ে সেটা ধামাচাপা দেওয়া হয়। তবে আমাদের প্রতিবাদের কারণে লাশ গুম করতে পারেনি, কমিটিও ভেঙে দেয়া হয়েছিলো। পরে গৃহীদের বাদ দিয়ে শুধু সাধুদের নিয়ে কমিটি করে দেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার।
ভেবেছিলাম পরিবর্তন আসবে, কিন্তু আসেনি। গৃহীদের বাদ দেয়ার কারণে সাংবাদিক রাহুল রাহা তখন আমাকে ফোন করে বলেছিলেন, "দাদা, সব মধু কি সাধুরাই খাবে? আমরা গৃহীরা কিছু পাব না?" আমি তখন নায়েমে ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ে, বললাম, "দাদা, মন্দিরের প্রাপ্ত দানের অর্থে প্রভুর সেবা হোক আর দুস্থ মানুষের উপকার হোক। এটাকে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বানানো কি ঠিক?" দাদার কথাই ঠিক হলো। আমার নেতৃত্বের প্রতিবাদে সাধুরাই লাভবান হলো। প্রভাব খাটিয়ে সেই মামলাও ডিসমিসড, আসামী সাধু বিজ্ঞানবন্ধু ব্রহ্মচারী খালাস হয়ে আবার সাধু হয়েছে। এখন সাধুরাই লুটে খাচ্ছে শ্রী অঙ্গনের মধু!
এরপর সেই ১৫৭তম এফটিসি আমাকে অর্ধেকের বেশি করতে দেয়া হয়নি, ২ মাসে দুটা শোকজ দেয়া হয়। আমাকে পরে নতুন ক্লজ বানিয়ে পরের একটি ব্যাচের সাথে(১৬৫তম এফটিসি) ট্রেনিং সম্পন্ন করতে হয়। ৩ বছরে চাকরি স্থায়ী হওয়ার কথা থাকলেও অনেক কষ্টে আমাকে ৭ বছরে স্থায়ী হতে হয়। আমাকে লীগের আমলে তিরস্কার দণ্ডও দেওয়া হয়। অথচ আমি ছিলাম নির্দোষ। শান্তিতে একটু চাকরি করতে পারলাম না এই জীবনে। আজও সীমান্তে বদলি করে রেখেছে যেন ফরিদপুর আসতে না পারি! শ্রী অঙ্গন আজও আমার পিছে লেগে আছে। তারা এতটাই প্রভাবশালী যে আর কোনো মন্দিরেও আমাদের জায়গা হয় না দেশে-বিদেশে। রামকৃষ্ণ মিশনে আমার মা ডা. Krishna Guho (কৃষ্ণা মিত্র)-কে চেম্বার দেয়ার কথা বলে আজ প্রায় এক বছরেও চেম্বার দেয়নি, শুধু নাম লিখে রাখছে পাঠাগারে, তাও বাবার বন্ধু নিতাই কাকার ছেলের নামের নিচে, যে কিনা মায়ের ছেলের চেয়েও ছোট। মিশনে গেলেও আমাদের সাথে অত্যন্ত দুর্ব্যবহার করা হয়। আমি একজন বিসিএস ক্যাডার, আমাকে শ্রী অঙ্গনের গুপ্তচরদের সামনে 'পাগল' বলে ওখানকার সাধুরাও! ফরিদপুর মিশনের বড় মহারাজ আবার কান্তিবন্ধুর বন্ধু, সব অনুষ্ঠানে ঐ পক্ষাঘাতগ্রস্ত পাপীষ্ঠটাকেই মুখ্য আলোচক হিসেবে রাখা হয়!
২০০৮ সালে আমার বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত অ্যাডভোকেট কমল কৃষ্ণ গুহ ওরফে কবি বাবু ফরিদীর রহস্যজনক অকালমৃত্যুও হয় এই শ্রীঅঙ্গনের পিছেই দক্ষিণ পল্লীতে, যিনি অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাও। বাবা আজ থেকে ৩০+ বছর আগে শ্রী অঙ্গনে কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও গঠনতন্ত্র প্রণেতা ছিলেন। তিনি একাত্তরে শ্রীঅঙ্গনে সাধুদের হত্যার নির্মম ঘটনা প্রথম তাঁর 'কমলের একাত্তর' বইয়ে তুলে ধরেন এবং এ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় লেখালেখি করেন। তিনি শ্রী অঙ্গনের লুট হয়ে যাওয়া বিশাল কড়াইগুলো উদ্ধার করে এনে দিয়েছিলেন সাবেক সাধারণ সম্পাদক শ্রী অমরবন্ধু ব্রহ্মচারীকে।
অথচ বাবার রহস্যজনক অকালমৃত্যুর পর থেকে আমাদেরকে একঘরে করে রেখেছে এখানে। কয়েক দফায় হামলাও করেছে আমাদের উপর। ১৯ বছর মাত্র ৩০০ থেকে পাঁচশত টাকা মাসিক বেতন শ্রীঅঙ্গনের দাতব্য চিকিৎসালয়ে ডাক্তারি করার পর মায়েএ চেম্বার তারা ভেঙে রেখে দিছে ২০১৯ সাল থেকেই। মন্দির ভিত্তিক শিক্ষার শিক্ষক হিসেবেও মাকে অন্যায়ভাবে বাদ দিয়েছে। আমরা বারবার প্রশাসনের কাছে অভিযোগ দিয়েও বিচার পাচ্ছি না। এখন আমি ও মা শ্রী অঙ্গনে ঢুকতেই ভয় পাই। প্রায় ২+ বছর হলো যাই না হামলার ভয়ে।
তবে কি সব অন্যায়-দুর্নীতি-অপকর্ম এভাবেই কৃষ্ণনামের নিচে ধামাচাপা দিয়ে দেবে শ্রী অঙ্গন? এই সরকারের আমলে বিচার নাহলে আর কবে হবে? সরকারের কাছে উক্ত ঘটনাগুলোর তদন্তের দাবি জানাচ্ছি।
দেব দুলাল গুহ -- দেবু ফরিদী
আরও বিস্তারিত জানুন: https://www.facebook.com/share/p/1S8ka3b3B3/
©somewhere in net ltd.