দোটানা - অসমাপ্ত প্রেম কাহিনী।

৩১ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ১:৩৯

ইদানিং ভালোবাসি তারে একলা একলা।
সে জানে কিন্তু সায় দেয় নি, আবার না-ও করে নি।
সে এখন ব্যস্ত বড়, তাই আমায় নিয়ে ভাবছে না।
আর কটা দিন, ব্যস্ততা শেষ হবে তার।
তখন হয়তো কিছু জানাবে।
কিন্তু সঠিক বলা যাচ্ছে না- নারীহৃদয় কখন কি বলে, কে জানে?
কিন্তু এখন একটা সঙ্গিনী বড় দরকার।
অনেক কাল হলো একা আছি।
হঠাৎ শুনছি কে নাকি কি আমায় নিয়ে কি বলছে আবার।
ভাবনার বিষয় বটে।

ঘটনার সূচনা: কিশোর বয়সী মেয়ে। বন্ধুর ছাত্রি। একদিন ফেসবুকের নোটিফিকেশন: আমার সেই বন্ধু befriended with মেয়েটি। বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করি, কিরে কাহিনী কি? ফেসবুকে নতুন মেয়ে বন্ধু ! কোন চক্কর চলে নাকি !! বন্ধুর উত্তর: নারে পরিমল হইতে পারব না। আমার প্রশ্ন, মানে কি? আরে "ছাত্রী"। অও.... বন্ধুর উপর অগাধ বিশ্বাস যে সে আসলেই পরিমল হতে পারবে না, ওর একটা এথিকস আছে। সবাই পরিমল হতে পারে না। যাই হোক ঘটনার সূত্রপাত ওখানেই, শেষও ওখানেই হতে পারত। কিন্তু না "পিকচার আভি বাকি থে" ! বন্ধু হঠাৎ বলে বসে, তুই প্রেম করবি নাকি? চরম শীতে গা গরম করা কথা ! বলি মেয়ে ভালো নাকি? বন্ধু বলে ভালোই, চেহারা মোটামুটি। আমি বলি, "ভালো হলে ভালো, কিন্তু কানেকশন তোমাকে করে দিতে হবে।" বন্ধু বলে ও বলে দেখবে। আমিও রাজি কোন সমস্যা নেই, হলে ভালো না হলে তো আমার তেমন কোন সমস্যা নেই। দায়-দায়িত্ব বন্ধুর।

আমিও তেমন গা করি না অনেকদিন। সপ্তাহ কয়েক পর বন্ধু একদিন জানায়, মেয়েটিকে জানিয়েছে। আমার নাম বলে ফেসবুক প্রোফাইলের সন্ধান দিয়ে এসেছে। কিন্তু মেয়ে নাকি বলে, সে ফরেন যাবে পড়াশুনা করতে। সে এখন এসব নিয়ে ভাবছে না। কথা শুনে কিছুটা হতাশ হই বৈকি। বন্ধুকে বলি, "ছাত্রীকে বল যে, প্রবাসী কারও গলায় ঝুলে ফরেন চলে যাক।" কিছুটা মজাও করি। কাহিনী এখানেও শেষ হতে পারতো।

কিন্তু না পরদিন ক্লাসে এসে বন্ধু জানায়, মেয়ে নাকি আমার ফেসবুক প্রোফাইল দেখেছে, আর ও পড়াতে গেলে বলেছে, "ভাইয়াটা ভদ্র আছে।" (আমি আশ্চর্ষ!) আমার বন্ধু ওর ছাত্রীকে জিজ্ঞেস করে, "তাহলে কি হ্যা ভাবব?" ছাত্র তার শিক্ষককে জবাব দিয়েছে, না এখন সে এসব নিয়ে ভাববে না। সামনে পরীক্ষা। (আশা খুঁজে পাই)। আমি ক্রমে মেয়েটির প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ি।

দ্বিতীয় ঘটনা: এই সেদিনের। ভার্সিটিতে ঘটনাক্রমে দেখা হয় আরেক বন্ধুর এক দুর্সম্পর্কীয় এক কাজিনের সাথে। তেমন করে তাকাই নি। বন্ধু পরিচয় করিয়ে দিয়েছে, এই যা। মেয়ে যুবতী। কাজ ছিল, কাজ করে চলে এসেছি।কিছুদিন পর এবার সেই বন্ধু জানায়, "দোস্ত, তুই কি এঙ্গেজড?" সাথে সেই আদর্শবাদী শিক্ষক বন্ধু। আমি তো অবাক ! বলি, "কেন কি হলো আবার? আমি এঙ্গেজড হলে তোরা তো জানতি !" বন্ধু বলে, সেদিন ওর কাজিনকে দেখেছি কিনা? আমি বলি, দেখেছিলাম, কিন্তু ভালো করে তাকাই নাই। ও বলে, ও তোকে পছন্দ করছে। (আমি আকাশ থেকে পড়ি) এতকাল চলছি, কাওকে পেলাম না, আজ হঠাৎ সূর্য কোনদিক দিয়ে উঠল ! বলি, ভেবে দেখব। আদর্শবাদী শিক্ষক বন্ধুও বলে আরে দেখাদেখির কি আছে? কথা বল। দেখ কি হয়। কিন্তু মনে আমার যে, তোর ছাত্রী ভাসে। কি করি উপায়?

দুই বন্ধু মিলে বেশ জোড়াজুড়ি করে। পরদিন সেই শিক্ষক বন্ধুকে ফোন দিয়ে দেই ঝাড়ি। "তোমাকে দিলাম দায়িত্ব, তোমার ছাত্রিকে রাজি করানোর, আর তুমি আমারে গছাইতে চাও আরেক মেয়ে!" বন্ধু বলে আরে ধীরে বন্ধু। আমি বলি, কেন কি হয়েছে? সে তখন নতুন টুইস্ট শোনায়। সে তার ছাত্রীকে বলেছে যে,"আমার ঐ বন্ধুকে এক মেয়ে পছন্দ করেছে।" আমি তো অবাক ! এইটা বলছিস ক্যান! তা মেয়ে কি বলে? ও জানায় মেয়ে নাকি হেসে বলে, "তো আপানার বন্ধুকে প্রেম করতে বলেন।" (না আর হলো না)। তারপর ও বলে, "কিন্তু আমার বন্ধু তো তোমার জন্য পাগল। তাড়াতাড়ি রাজি হয়ে যাও।" (মেয়ে নাকি আবার হাসে)। আমিও হাসি।

ওদিকে অপর বন্ধু মেয়ের ফেসবুক আইডি দিয়ে বলে, যদি ভালো লাগে তবে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠা। আমি বলি ভেবে দেখব। আমি ভাবনায় পড়ে যাই।

কিন্তু আমি তো এখন বাস্তবিক এঙ্গেজড না হলেও, মনের ভেতর ঝুঁকে আছি এক দিকে। কি করি উপায়?

ছাত্রী মেয়েটা কিছু খোলাসা করে না, মাঝে মাঝে শিক্ষক বন্ধু আশা দেয়। আবার এইদিকে বন্ধুর কাজিন যেন শিওর সাকসেস অপেক্ষা করে। বন্ধুরা বলে যেটা শিওর ওটাই ভালো। কিন্তু আমি সিদ্ধান্তহীনতায়। নাহ, আমার আর হয় না। বন্ধুর ছাত্রীর জন্য অপেক্ষা করলে এই আরেক বন্ধুর কাজিন হাতছাড়া, আবার অপেক্ষা না করে বন্ধুর কাজিনের সাথে কিছু করার চেষ্টা মানে, বন্ধুর ছাত্রীকে চিরতরে হারানো।

এখনও........ ভেবে চলেছি।



(গল্পের অধিকাংশই শোনা কথা। বন্ধুরা বানিয়ে বললে লেখকের কোন দায় নেই। শুভরাত্রি। )

০ টি +০/-০