![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রিয় নিজ
আমি জানি আমাকে নিয়ে তোমার অনুশোচনার অন্ত নেই । আমি রোজ রোজ তোমার প্রভাতে পৃথিবীর সকল রাগ অভিমান নিজের অবয়বে ধার-কর্জ করে যে অন্যায় দৃষ্টিতে দৈবলোকের নিন্দা করি তাতে তোমার অমন অনুশোচনা আর যাই হোক অবজ্ঞা করার মতো নয় । কিন্তু কি করবো বল ? আমার দু’বাহু আর কোমরে যা বল তাতে তোমা হতে দ্বিতীয় এমন কাকে পাব, যাকে অমন করে নিন্দা করে যেতে পারি । আমি জানি আমার রাগ-বিরাগ, মান-অভিমান ভূগোলকের কোথাও আশ্রয় না পাইলেও তোমার নিশ্চুপ বুকে ঠিকই আশ্রয় করে নিবে ।
এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো তোমাকে লিখলাম । এইখানে একটু স্রষ্ট্রার নিকটবর্তী হওয়ার চেষ্টা করি । কেননা একখানা প্রার্থনা মঞ্জুর হওয়া আমার জন্য খুবই অত্যাবশ্যক । কেননা প্রথম চিঠির প্রেরকের নাম যদি তোমার মজ্জাগত থেকে যায় তবে আর রক্ষে নেই । এই চিঠি নির্ঘাত ডাস্টবিনে যাবে । এবং তা জগত ভূমিষ্ট পাবার আগেই । তাই স্রষ্টা যদি তোমার মস্তিষ্কের কলকব্জায় কিঞ্চিত ফাঁকফোকর রেখে এই অধমের একখানা উপায় করে তবেই রক্ষে । এইখানে তোমাকে একটা সহজ রক্ষে দেই । এই চিঠি মনোযোগ দিয়ে পড়ার তোমার তেমন কোন আবশ্যকতা নেই । অবশ্য পড়িলেও অনাবশ্যক তেমন বাধ্যবাধকতা থাকবে না । তবু জানিয়ে রাখলাম । তোমার স্বাধীনতার কিছমাত্র সুযোগ’তো থাকল ।
প্রিয় নিজ । তোমাকে লেখার মতো এমন অসাবধান স্বাধীনতা আমি আর কোথাও পাই না । এখানে নিয়মের গন্ডি নেই, আইনের মাত্রা নেই । এমডি নেই, ডিএমডি নেই । এমনকি ম্যানেজারও নেই । কর্পোরেট আচার নেই, এমনকি অনাচারও নেই । বল এমন স্বাধীনতা আমি আর কোথায় পাবো ? আমার নিঃশ্বাসবন্ধ কর্পোরেট জীবনের যে প্রাত্যহিক আর্তনাদ তা যদি তোমার ইন্দ্রিয়’তে কোন উপায়ে স্হান পেয়ে থাকে তবে আমার এ বাড়াবাড়ি তুমি কিছুতেই অগ্রাহ্য করবে না । তুমি’তো জানো ঐ যোগ্য দুনিয়ার সর্ব অযোগ্য ব্যক্তি আমি । এককালে আমি পলো শার্ট পরতাম না (এখনো পরি না) কেননা ঘাড়ের উপর দোদুল্যমান পাটিশাপটা পিঠা (গেঞ্জির কলার) আমাকে সস্তি দিত না । কদাচিৎ শার্ট পরতাম বটে । তবে শার্টের হাতা যথাসম্ভব গোটানোই থাকত । আমার প্রিয় ছিল টিশার্ট । এখনো তাই । কিন্তু কালের পরিক্রমায় অফিস আদালতে কি করে যেন ইহা পরিধানের অযোগ্য হয়ে উঠেছে । সাথে সাথে আমাকেও বিভ্রান্তিতে ফেলে দিয়েছে । তাই সকল অভ্রান্তি দূরে রেখে আজকাল ফুরশার্ট পরিধান করি । এবং তা হাতা না গুটিয়েই । এই অপাপ পোশাক পরিচ্ছদের সাথে যুক্ত হয়েছে টাই নামক একখানা দড়ি । কি কায়দা কানুন করে যে ইহাকে গলায় ঝুলাইতে হয় তা যদি তুমি স্বচক্ষে দেখতে তবে আমার জন্য তোমার নয়নে অশ্রূ বিয়োজন না হলেও কিছুমাত্র ঝাপসা হতো এ আমি নিঃসংকোচে বলতে পারি ।
প্রিয় নিজ । এবার বিদায় নিব । ধৈর্য্যশক্তির টানাটানি সে আমার চিরকালের । তাছাড়া অত্যাচারেরও একটা মাত্রা থাকা উচিত । মনুষ্যেত্ব বোধ আমার নেই । কিন্তু আফসোস আছে । তাই মনুষ্যত্বের আশায় আমি অনন্ত অপেক্ষা করলেও যমদূত আমার জন্য অপেক্ষা করবে এমন আশা ছেড়ে আজকের মতো উঠি । এবং পুনঃ নিমন্ত্রন রাখি আমার অসাবধান স্বাধীনতায় ।
ইতি
নিজেকে নিজ ।
……………………..নিঃশব্দ নাগরিক ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৮ শে মার্চ, ২০১৫ রাত ৯:৫৯
সেলু বলেছেন: ও বাপ, কত্ত বড় চিঠি.....