নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পুরো নাম মুহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম রনি, জন্ম- যশোর, পৈত্রিক নিবাস- ঝিনাইদহ। পড়ালেখা করছি বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ। ঠিকানা- https://www.facebook.com/nasirul.rony

এন ইসলাম রনি

এন ইসলাম রনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্প: একাকী কারাগারে (part - 2)

০৮ ই জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:৩৩

তার বড় মেয়ে তৃণার ইতিমধ্যে বিয়ে হয়ে গেছে সে স্বামীর সাথে শিকাগোতে থাকে,মেজ তিতলি nsu তে পড়ছে,ছেলে তামিম এবার Oলেভেল পরীহ্মা দেবে স্ত্রী রাহেলা নারী মুক্তি আন্দলনের একজন নেত্রী স্থানীয় সদস্যা | সারা দিন ই মহিলা ক্লাবে পড়ে থাকেন, সেখানে একাধারে আলোচনা হচ্ছে,আড্ডা হচ্ছে, মাঝে মাঝে চা নাস্তা শপিং হিন্দী সিরিয়াল

এমন কি রূপচর্চা পরচর্চা কোন বিষয় ই বাদযায় না| এ হিসাবে নারীমুক্তি আন্দলনের এই সকল

সম্মানিত সদস্যা কে all rounder বলা যেতে পারে|



-নাহিদ ভাই যে, কখন এসেছেন? আজ বাবা তো বাসাতে নেই

কথাগুলো বলে তিতলি একটু

মুচকি হাসলো,সে ছুটিতে বাসায় ই আছে

-তাহলে আজ আমি আসি

-আরে! আপনিতো দেখি মজাও বোঝেন

না,বাবার শক্ত শক্ত কথা বোঝেন

কিভাবে? এই

বাড়িতে কি বাবা ছাড়া কারো সাথে কথা বলা যায়

না?

নাহিদ একটু

বিব্রত,সে কি বলবে বুঝতে পারছেনা |

তিতলি আবারো হাসলো

-আপনি বসুন বাবা বাসাতেই আছেন

আপনি এসেছেন শুনে হাতমুখ ধুচ্ছেন

এই মেয়েটির কথা বলার ধরন

টা নাহিদের এতো ভালোলাগে যে শুধুই

শুনতে ইচ্ছা করে

নাহিদ টেবিল থেকে ১টা ম্যাগাজিন

হাতে নিয়ে সোফাতে বসলো

৪.

"রানু.... ও রানু গেলি কয়

জানালাটা তো ভেঙ্গে গেল.. রানু ..."

সাহিদা খাতুন গত ৩বছর

চলাফেরা করতে পারেন না বড়

১টা স্ট্রোকে কোমড়ের নিচের অংশ

পহ্মাঘাতে অচল

আগে কথাও পরিষ্কার

করে বলতে পারতেন না দীর্ঘ দিন

ফিজিওথেরাপি নেয়াতে এখন অবস্থার

কিছুটা পরিবর্তন হয়েছে|

এ বাড়ির কেও সচর আচর তার

ঘরে আসতে চাই না ছেলে মেয়েরা ও না|

তার একটু অভিমান

হলো তিনি রানুকে ডাকা বন্ধ

করে দিলেন নিজেই নিজেকে বললেন,

"আমিকে, এ ঘরে মরে পড়ে থাকলেই

বা কার কি আমিতো সবার বোঝা"

প্রচন্ড বাতাস বইছে ঝড় উঠেছে মনে হয়

জানালার পাল্লাগুলো বার বার

বারি খাচ্ছে বন্ধ করা দরকার

তিনি রানুকে আবারো ডাকতে শুরু করলেন

-কি হয়েছে মা, রানুকে ডাকছো কেন কিছু

লাগবে?

নাজনিন ঘরে ঢুকলো

-জানালাটা বন্ধ

করতো মা বাতাসে একভাবে পাল্লাগুলো বারি খাচ্ছে

নাজনিন জানালা বন্ধ করে মার

কপালে হাত দিলো

নাহ্ এখন আর জ্বর নেই গত কাল রাতেও

বেশ জ্বর ছিলো

সে চলে যাচ্ছিলো এ ঘরে তার দম বন্ধ

হয়ে আসে কেমন ১টা অসুখ অসুখ গন্ধ

মনে হয়

-একটু বোস

নাজনিন তার মার খাটে বসলো

-নাহিদ কি এখনো ঘুমোচ্ছে?

-না,ভাইয়া তো একটু আগে ঘুম

থেকে উঠে বাইরে গেল

-আচ্ছা ও

কি সত্যি আমেরিকা চলে যাবে?

-অমনিতো কথা

-তোকে কিছু বলেছে কবে যাবে?

-না কিছু বলেনি ভিসা পাওয়া এতো সহজ

না

সাহিদা খাতুন ১টা দীর্ঘঃশ্বাস

ফেললেন,ছেলেটা কেন দেশ ছেড়ে দূর

দেশে যেতে চাচ্ছে অসুস্থ মা ছোট

বোনের প্রতি কি তার কোন মায়া নেই

-মা আমি এখন গেলাম কিছু লাগলে বল

-রানু কই ওকে একটু পাঠিয়ে দে

-রানু এখন আসবে না ফুফুর জন্য

মেহেদী বাটছে

-রোজি এই সন্ধ্যার সময়

মেহেদি দিয়ে কি করবে?

-তা তো জানি না,মাথায় দেবে মনে হয়

-হ্যা রে রোজির কি চুল পেকে গেছে?

নাজনীন হাসে ফেললো তার মার যেমন

সব কথা

৫.

রোজিনা পারভিন নাজনীনের মেজ ফুফু

বয়স ৪০ প্রায়,বিয়ে করেননি এ

বাড়িতেই থাকেন বলতে গেলে এই

বাড়ির বর্তমান অভিভাবক তিনিই|

দেখতে এখনো বেশ

সুন্দরী তাকে দেখলে ৩০এর বেশি বয়স

মনেও হয় না|

তিনি টিভি নাটক সিনেমা কিছুই

দেখেন না এমন কি গান ও শোনেন না

নাটক সিনেমা সম্পর্কে তার বক্তব্য

এগুলো সস্তা প্রেমপিরিত

নিয়ে আতলামি ছাড়া কিছু নয় গান

মানেও প্রায় এক ই প্রলাপ,তার এ

বদ্ধমূল ধারনার পেছেনে অবশ্য তার

১টা অতীত কাহিনী জরিত|

যায় হোক, তিনি এককালে বেশ

ভালো রবীন্দ্রসংগীত গায়তেন

"আমার হিয়ার

মাঝে লুকিয়ে ছিলে দেখতে আমি পায়নি তোমায়

দেখতে আমি পায়নি...." এই গান টি ই

বিষেশত গুনগুন করে তাকে সারাহ্মণ

গায়তে শোনা যেত

এবং সিনেমায় অভিনয়ের জন্য অফার ও

এসেছিল তিনি অতিমাত্রায় উত্সায়ীও

ছিলেন কিন্তু তার মরহুম স্বর্গীয়

পিতা হাজী মুহাম্মদ সাদেক আলীর

ধমকের ভয়ে শেষমেষ তার সে উত্সাহ

অঙ্কুরেই বিনষ্ট হয়েছে|

নাহিদের বাবা মুবিন সাহেব

এবং আত্বিয়

স্বজনেরা তাকে বিয়ে দেবার বহু

চেষ্টা চরিত্র করেছেন তিনি প্রতিবার

এই ছেলে বেটে রং ময়লা যেন কাঠ

কয়লা এখন ই চুলের যে হাল আর কয়েক

দিন পর পুরো স্টেডিয়াম কোদালের

মতো দাত ইত্যাদি না নান খুঁত বার

করে সম্বন্ধ ভেঙ্গে দিয়েছেন|

আগে পানি প্রার্থী দের প্রচুর প্রস্তাব

ও আসতো বিয়ের বাজারে তার বাজার দর

মোটামুটি উদ্ধমুখীই ছিল বলা যায়|

তবে এখন সে সব বন্ধ হয়েছে|

তবু মুবিন সাহেব বহু চেষ্টা করেছিলেন

যা কোন ফলাফলের মুখ দেখেনি

বৃষ্টি জনিত কারনে ম্যাচ পরিত্যাক্ত

বলা চলে|

তার এখন প্রধাণ কাজ নাজনীনের

বিয়ে দেয়া, সুন্দরী মেয়েদের

বেশি দিন ঘরে রাখা ঠিক না এই

বয়সের মেয়ে দের বিশ্বাস ও নেয় যদিও

নাজনীনকে তার ভালো মেয়ে বলেই

মনে হয়|

তবু তিনি কোন রিক্স নিতে রাজিনন,

ভায়ের অবর্তমানে সব দায়িত্ব তার ই|

তিনি আত্বীয় স্বজনের

ভিতরে ভালো ছেলে খুজছেন অপরিচিত

ছেলের হাতে তিনি নাজনীন

কে তুলে দিতে রাজি নন আসলে অপরিচিত

লোক দের তিনি বিশ্বাস করেন না তার

উপর সব পুরুষ সম্পর্কে তার ১টা গোপন

নেতিবাচক

ধারনা রয়েছে তিনি এটা প্রকাশ করেন

না ঠিকই কিন্তু তার কথা কাজে প্রকাশ

পেয়ে যায়|

নাজনীন নাহিদ নাহিদের

মা রোজিনা পারভিন আর তাদের কাজের

মেয়ে রানু এই ৫জন ই এই পরিবারের

বর্তমান সদস্য

৬.

রোদে চার পাশ তেতে উঠেছে, রাস্তায়

রিকশা নেই বললেই চলে|

নাহিদ এই কাঠফাঁটা রোদে হাটছে তার

মনের অবস্থা ভালো নয় সে বেশ চিন্তিত

টেক্সাসের

ভার্সিটি থেকে চিঠি এসেছে তারা ৫০%

scholarship দেবে বাকি টিউশন

ফি তাকেই দিতে হবে, অবশ্য এজন্য

তাকে এখন ই তেমন কিছু

দিতে হবে না পার্টটাইম জব করেই

ওটা মেনেজ করা যাবে

শুধু তাকে তার পারিবারিক ব্যাংক

একান্টের বর্তমান হিসাব

জানাতে হবে এটা সিকিওরিটি

কিন্তু গোলাম মোস্তফা সড়কের তার

দাদার

তৈরি ২তালা পুরোনো বাড়িটা ছাড়া কিছুই

নেই বলা চলে বাবার পেনশনের

যে টাকা টা তার মা পান আর বাড়ির

নিচতলার ভারা দিয়ে যা আসে তাতেই

তাদের সংসার চলছে তার বাবার

যা সঞ্চয় ছিলো তা মায়ের চিকিত্সার

পেছনে শেষ হয়েছে |

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.