নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পুরো নাম মুহাম্মদ নাসিরুল ইসলাম রনি, জন্ম- যশোর, পৈত্রিক নিবাস- ঝিনাইদহ। পড়ালেখা করছি বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এ। ঠিকানা- https://www.facebook.com/nasirul.rony

এন ইসলাম রনি

এন ইসলাম রনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

উপন্যাস : আধো আলো আধো ছায়া (part-1)

০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৪

১.

দরজায় কড়া নাড়ার শব্দে মুহিতের ঘুম ভেঙ্গে গেল বালিশের নিচ থেকে হাত ঘড়িটা নিয়ে সে দেখলো ৯টা বেজে ১১মিনিট,

এতো বেলা হয়ে গেছে |

কোন মতে পায়ে স্পঞ্জটা দিয়েই আসি বলে দরজা টা খুলতে গেল মুহিত,

কাঁঠাল বাগানের এই তিন তলা বাসাটার নিচের দুই তলা মেস উপরে বাড়ি ওয়ালা থাকে গত দের বছর এখানে মুহিত রয়েছে আর ২জন বোডারের সাথে ১টা রুম ভাগাভাগি করে এর মাঝে তার জীবনের তেমন কোন পরিবর্তন আসে নি পরিবর্তনের ভেতর ঘরের দেয়ালে এই বর্ষায়

নোনা লেগেছে যেটা আগে ছিলো না আর সবুজ নামের ছেলেটা এই মেস ছেড়ে চলে গেছে তার সিটে এখন আজাদ সাহেব উঠেছেন,সংসারী মানুষ প্রতি বৃহত্স্পতিবার সকালেই ছোট ১টা ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে অফিসে যান ফেরেন শনিবার রাতে, উনি মনে হয় বিকেলে অফিস থেকেই মানিকগঞ্জ গ্রামের বাড়ি চলে যান | এই লোকটার সাথে মুহিতের তেমন কথা হয় না জামিলের সাথেও না,

জামিল আর মুহিত প্রায় সমবয়সী যদিও এই মেসে আসার আগে কেও কাওকে চিনতো না সে একটা প্রাইভেট ফার্মে চাকরী করে হাসি খুশি তবে কথা বলে সম্পূর্ণ শুদ্ধ ভাবে মেপে মেপে যাতে আঞ্চলিক

ভাষার টান চলে না আসে,এটা অবশ্য মুহিতের ধারনা যাদের

বাড়ি পাবনা বা বরিশাল তারা নোয়াখালিদের মতো নিজেদের

কে প্রকাশ করতে চাই না, কে জানে কেন?

জামিলের সম্পর্কে মুহিত এটুকুই জানে |

দরজা খুলে মুহিত একটা ধাক্কার মতো খেলো তার সামনে ২৩-২৪ বছরের অসম্ভব রূপবতী ১মেয়ে দাড়িয়ে আছে যার পড়নে কালো আর লাল রং মেশানো ১টা তাঁতের শাড়ি এই যুগের মেয়েরা সাধারণত কোন উত্সব ছাড়া শাড়ি পড়ে না কিন্তু এই মেয়েটা পড়েছে সাথে শাড়ির সাথে মিলিয়ে মাটির গহনা সে মুখ টিপে হাসছেও বোধ হয় কিংবা গোল মুখটাতেই হাসি হাসি একটা সিগ্ধ ভাব আছে,

আজ কি কোন উত্সব,নববর্ষ জাতীয়,

কালো শাড়িতে কোন উত্সব হয় কি? মুহিত ভেবে পেল না

-দরজাতেই দাড় করিয়ে রাখবেন না ভিতরে আসতে বলবেন?

-জি মানে ভিতরে?

-কোন অসুবিধা? আপনি যখন চাচ্ছেন না ঠিক আছে তাহলে না হয় গেলাম না

- না না আসুন

মুহিত দরজার কপাট থেকে হাত সরিয়ে নিলো|

মেয়েটা এক জাগায় দাড়িয়েই মাথা ঘুরিয়ে ঘরের চার দিক টা দেখছে, মুহিত কি বলবে বুঝতে পারছে না সে নিজেকে নিয়ে কিছুটা বিব্রত

তার গায়ে কোন জামা নেই শুধু

একটা লুঙ্গি সব মিলিয়ে আলু থালু

অবস্থা এই অবস্থায় ১টা অপরিচিত মেয়ের সামনে যাওয়া যায় না,তার উপর

সে মেয়ে টা হয় যদি রূপবতী |

গত রাতে প্রচন্ড গরম পরেছিলো রুমে কেও ছিলো না আজাদ সাহেব বাড়ি গেছেন জামিল রাতে ফেরেনি তাই সার্ট খুলেই শুতে গিয়েছিলো অন্য সময় প্রচন্ড গরমের ভিতরও সে এমনটা করে না,

ছোট বেলা থেকেই সে অনেকটা লাজুক

তার ছোট মামার এক বন্ধু একবার মজা করে তার ইলাস্টিক দেওয়া হাফ প্যান্ট হঠাত্

১টানে খুলে ফেলেছিলো এতেই সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো মরে যাবে,

আত্মহত্যা জিনিসটা কি তখন সে বুঝে ওঠে নি বুঝে ছে অনেক টা পরে

তখন মুহিতের বয়স কতো হবে ৫

কি সাড়ে ৫



মেঝের দিকে চোখ পড়তেই

মেয়েটা বললো

-ঘরে এতো ধূলা কেন কাজের বুয়া ঝাড়ু দেয় না?

-হুঁ....না মানে দেয় মাঝে মাঝে,সব সময় সেন্ডল পড়ে থাকা হয়তো সমস্যা হয় না

(মেয়েটা ঠোঁট টিপে আবার একটু

হাসলো মুহিতের উত্তর টা কৈফিয়ত দেয়ার মতো শুনালো বলে হয় তো)

-আমি বোধ হয় আপনার ঘুম ভাঙ্গিয়ে ফেলেছি,অসময়ে বিরক্ত

করলাম,সরি

-না তা হবে কেন

আপনি দরজা না নাড়ালে আজ হয়তো ঘুম ও ভাঙ্গতো না আমার দশটায় ১টা ইন্টারভিউ ছিলো

মেয়েটা তার বা হাতের

কজ্বিটা তুলে ঘড়িতে সময় দেখলো

-ওমা এখন তো ৯টা ১৭

বেশি দেড়ি নেই,আচ্ছা আজ

তা হলে আসি আর এক দিন দেখা হবে

মেয়েটি চলে গেলেও মুহিত কিছুহ্মণ এক ই জায়গায় দাড়িয়ে থাকলো মেয়েটা কেন এলো কার কাছে এলো কিছুই বলেনি, তার

কাছে যে আসে নি এটা নিশ্চিত,

মেয়েটিকে সে এই প্রথম ই দেখলো|

সম্ভবত জামিলের কাছে এসেছিলো,

জামিলের খোঁজে প্রায় সময় ই নতুন নতুন মেয়ে আসে এটা নতুন নয় |



মুহিত ব্রাশে পেস্ট নিয়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে এলো, সামনের করিডোরে ফায়জুল সাহেব দাড়িয়ে আছেন

হাতে BCS এর মোটা ১টা বই, এই লোকটা কে মুহিত খুব একটা পছন্দ করে না সারা দিন ঘরে বসে শুধু BCS এর বই পত্র নিয়েই আছে অথচ মেসের একটা পিঁপরার ও সাধ্য নেই তার চোখ এড়িয়ে যায় |

এ বার ৩৩তম BCS

দিলে এটা হবে ফায়জুল কবিরের ৪র্থ বার ক্যাডার হওয়ার চেষ্টা যদিও সে আগের তিন বারের ১বার ও প্রিলিমিনারীতেও টেকেনি

সে কোন প্রশ্ন ছেড়ে আসতে পারে না সব টিক ই সে দাগায়,

BCS এর ফলাফল বার হলে পত্রিকা ছিড়ে কুটি কুটি করে, এই

সময় তাকে দেখলে মনে হবে সে পত্রিকার কাগজ কে অনু পরমানুতে বিশ্লিষ্ট করার চেষ্টা চালাচ্ছে

এর পর ২ তিন দিন হা হুতাশ করে বেড়ায়, মেসের এর ওর কাছ

থেকে সিগারেট নিয়ে খায় সবাই

কে ধরে বলে- "বুঝলেন ভাই সব শালা নেমক হারাম" এই কথার গুর অর্থ সেই জানে|

সপ্তাহ খানিকের ভেতর সব স্বাভাবিক, সে পূর্ণ উদ্দতে আবার BCS MP3 গাইড নিয়ে অংক করতে বসে |



মুহিত কে দেখে কবির এগিয়ে এলো

-মুখে তো ব্রাশ গুজে ফেলেছেন টয়লেটে পানি আছে কিনা কে জানে,গত কাল রাত ২টায় টয়লেটে যেয়ে দেখি এক ফোঁটা পানি নেই তখন ই ভাবলাম বাড়িওয়ালাকে ডাকি,এতো গুলো মানুষ এখানে আর উনি মটর ছাড়বেন না ইয়ার্কি, ম্যানেজার ব্যাটাও তো দেশের বাড়ি যাবার নাম করে সেই যে গেছে আসার নাম নেই

-অতো রাতে বাড়িওলার

ওখানে গিয়েছিলেন?

-যাওয়াই উচিত ছিলো,পরে ভাবলাম বউ বাচ্চা নিয়ে ঘুমাচ্ছে ডিস্টার্ব করা ঠিক হবে না, আচ্ছা মেয়ে টা কে?

-কোন মেয়েটা?

-ওই যে একটু আগে আপনাদের ঘর থেকে বেড়োলো

-ও, ঠিক জানি না,জামিলের

কাছে এসেছিল মনে হয়

-আমিও তাই ভাবছিলাম, কিছু

বলে টলে নি? জামিলকে দেখা করতে বা চিরকুট ফিরকুট কিছু রেখে যায় নি?

-না তো!

-হু....দেখে কি মনে হলো বাজারের নাকি...?

-কি যা তা বলছেন, ভদ্র ঘরের মেয়ে

-কি করে বুঝলেন ভদ্র ঘরের মেয়ে ?

মুহিত হতমত খেয়ে গেল সে কি উত্তর দেবে বুঝতে পারলোনা

-হা হা হা এই সব মেয়েরা সব

শেয়ানা চিজ দেখে বোঝা যায় না,

এসেছিলো ওই জামিলের বাচ্চার

সাথে খেলতে বুঝলেন

এটা বলেই কবির হাত দিয়ে একটা অশ্লীল অঙ্গ ভঙ্গী করলো

(to be continued)

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:০৮

পরিবেশ বন্ধু বলেছেন: ভাল লাগল চালিয়ে যান
শুভকামনা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.