![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১।
এলোমেলো কথা গুলো কারো কারো খুব মানায়
এলোমেলো চুল ও চেহারায়,
আলুথালু গাছ হয়ে কোনমতে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ গুলো
কখন যে অলঙ্কিত আসবাব হয়ে উঠে সৌখিন হাতে
কেউ জানে না অমনটি না হলে পরে,
হয়ে গেলে সখের কেদারা, উন্মুক্ত বুক খোলা চারপায়া খাট,
রত্ন ভরা সোকেস অথবা সখের বই ভরা তাক
সকলে একদিন ঈর্সা চোখে জ্বলে,
কারো বা এক জোড়া শৈল্পিক হাতের অপেক্ষা শেষ হয় উনুনে
ছাই কালির হেসেল ঘরে।
২।
বলেছিলাম চিঠি দিয়ো তিয়াসার অখন্ড দুপুরে,
চিঠি পেলাম, ক্রিং ক্রিং সাইকেলে ডাকপিয়ন দিয়ে গেছে তার ব্যাগ খুলে,
চিঠি পেলাম তবে অবশেষে!
জানি হলুদ খাম টা খুলতেই হাতে পাবো কাক্ষিত জলের স্পর্শ
হাজার অক্ষরের মিলিত ধ্বনিতে ভেঙ্গে পড়বে খৈইয়া ছড়ার পাহাড়,
তৃষ্ণার্ত চাতক আকাশ ডেকে যাচ্ছে বার বার
তাবু এখনই খাম টা খুলছি না,
আলোয় মেলে দেখছি ভেতরের জলের রেখা
কান পেতে শুনছি জলের কলতান,
জল বন্দি করে আছি
আমি এখন মোটেও দরিদ্র নই
আমার দখলে এখন একটা বর্ষার জলপ্রপাত।
৩।
অনেক রকম এক্সপেক্টেশনে দিন পার হয়ে যায়
দেখা যায় সব জায়গা থেকে খারিজ হয়ে যায় আমার নাম
সব ফোনবুক থেকে আমার নাম্বার
সব ফলো লিস্ট থেকে আমার আইডি,
নির্লিপ্ত হতে শিখি, প্রতিশোধ ইচ্ছায় পুড়ে পুড়ে রপ্ত করেছি নিজেতে পৃথক হতে
Bukowski থেকে বলি
Drink from the well of yourself and begin again.
৪।
একটা সম্পূর্ণ কবিতা লেখার জন্য যে সংখ্যক শব্দের প্রয়োজন তা আমার ছিল না।
মানুষের সাথে উঠে বসে হেসে ও আমি অনেক অংশে বধির ছিলাম,
তাদের ভাষা আবেগ প্রণয় আমার ভেতর প্রবেশ করেছে সামান্য ই।
আমি অন্যের সুদৃঢ় শব্দ পাঁচিল ঘেরা প্রাসাদ দেখে কেবল মুগ্ধ হয়েছি
অবাক বিস্ময়ে দেখেছি সিমেন্ট ইটের নিপুন গাঁথুনী
অথচ শাবল চালিয়ে তুলে নিয়ে যেতে পারিনি তার থেকে একটাও শব্দের ইট
বার বার চারকোনা ছাঁচে পুড়িয়েছি মাটি
একটা মসৃণ ইট ও আসেনি
আমার দেয়াল পাঁচিল তাই বরাবর ই এলোমেলো....
৫।
একটুও অধিকার নেই অথচ সামান্য উপেক্ষাতেই রাস্তায় জল জমিয়ে রেখেছি,
সামনে কানাগলি
এটুকু পথ ও একা হাঁটতে পারছি না
একটা বাড়িয়ে দেওয়া হাত ছাড়া।
এটুকু মাত্র পথ রোজ একা যেতেই পারি
আজ পারছি না,
আজ পথ টা লাফিয়ে লাফিয়ে বড় হয়ে গেছে,
চশমা টা ঘোলা হয়ে যাচ্ছে বৃষ্টির ছাঁটে
বার বার মুছেও সে বৃষ্টি বন্ধ করতে পারছিনা
আজ সারাদিন এশহরে বৃষ্টি
আজ ডুবে যাবে সব বাড়ি ফেরা পথ
পুরোটা মেগাসিটি,
শুরু হবে ভয়াবহ যানজট।
৬।
তুমি দীর্ঘশ্বাসের মত কষ্ট কে মুছে ফেলো
তুমি অশ্রুর মত দুঃখ কে ঝরিয়ে শুণ্য করো বুক
পূর্ণ করে রাখা এই মস্তিষ্কে র কোষে তোমার যত প্রেম মুছে নাও
সমুদ্র ঢেউ এর মত এসে মুছে নাও টেপরের্কডার এর ফিতের দু পাশ
জানালা বদলে ফেলো ফরমাট দিয়ে নাও দুশো বায়ান্ন এক্সার পুরোটা হার্ডডিক্স
পাসওয়ার্ড ভেঙে ফেলো, তুলে দাও পার্টিশন,
তুমি সব টা নিয়ে এসো এক হাতে
ফেরার জন্য পুরানো দুঃসময় বড় অভিমানী, বড় জায়গা খায়।
সব মুছে দাও, মুছে দাও পুরোটা ইতিহাস।
৭।
নেমে ছিলাম শখে,
পদ যুগল ডুবিয়েই চলে আসবো ছিল কথা,
সারাজীবন জল ছোঁয়া মানেই চার ফুট দৈর্ঘ প্রস্থের স্নানঘর
পূণ্যস্নান মানেই কচিদের দশ ফুট তাল গাছের ছায়া ধরা সবুজ পুকুর,
নেমে ছিলাম শখে,
ভেসে গেল তিনকাল আচমকা পাকে।
শান্ত হেলাফেলায় পড়ে থাকা নদী,
কে জানতো তার এতো ভরা জোয়ারের টান
ভেসে যাবে চরাচর
আঁধারে ডোবাবে বান !
৮।
চোখে হাত দিতেই দেখলাম চোখ নেই
তারপর হাত ও খসে গেল
গজিয়ে গেল ডানা
বছরের দীর্ঘতম রাতের অন্ধকারে এক অন্ধপাখি ঝাঁপটালো পালকহীন পাখা,
তারপর বুঝলাম ঘর নেই
চারদিকে পাথুরে দেয়াল
মাটি নেই ছাদ ধরে ঝুলে থাকা,
আট নাম্বার বাস ছুটে গেল টিকাটুলি থেকে মতিঝিল
তার ছাদে ঝুলে ঝুলে গেল একদল কানা চোখ বাঁদুর
আমিও দৌঁড়ে অনেক টা বলতে গেলে উড়েই উঠে গেলাম
অন্ধরা কেউ স্বাগতম বললো না
তবু গোড়াপত্তন হলো ঝুলে থাকা আর এক বাঁদুর জীবন..
৯।
শীত আসছে, বুকের ভেতর শুকনো পাতা ভাঙার শব্দ শুনি,
ক্যালেন্ডার চলে যাবার কথা বলে তোমার,
ঘড়ি তে রাত হতেই দেখি সকাল
আর সকাল হতেই রাত!
তুমি তো এ শীতে চলে যাবে
তোমার শীত ফুরবে- বড়জোড় স্থায়ী হবে পাঁচ ছ মাস,
যে শীতে যাবে সে শীত ফুরবে না
বুকের রাস্তায় পা ফেলতেই মর্মর ধ্বনি তুলবে মেহগনি পাতা
চোখের সামনে পাঁচিল তুলে দাঁড়াবে কুয়াশা,
তুমি তো চলে যাবে..
তবে কেন গ্রীষ্মের দুপুরে এসে আমাকে বসন্ত চেনালে?
১০।
হে পৃথিবী এখন তোমার অরণ্য পাখি খাঁচায় বাঁধা
টিকিট কেটে দেখে এলাম পাঁচিল ঘেরা বন অটবি
আতঙ্কিত রুগ্ন বাঘের ক্ষয়ে যাওয়া নখের থাবা,
এখন তোমার একটিও নেই আর অজেয় পাহাড়
তোমার রাজ্য এখন পদানত
বিলুপ্ত সব সৈন্যসামন্ত, বন্দি সেলে বন দেবতার লক্ষ কোটি সেনা,
শোধ নেবে কি
বুকে থেকে বুকের মাংস খুঁবলে খায় শ্বাপদ, এটা তো সবার চেনা।
১১।
আগষ্টে হলো চেনা জানা
সেপ্টেম্বারে দিয়েছো অনেক টা বিরহ ব্যথা
অবশ্য তুমি সেপ্টেম্বারে থাকবেই না ছিল কথা
পুরো সেপ্টেম্বারে শূণ্যতা থেকে প্রেম এগলো
অদেখাতে প্রেম হয়? হয় না, তবু হলো,
ভালবাসা সরিয়ে নিতে নিতে প্রেমের লরি
মাঝ রাস্তায় তোমাতে ক্রাশ খেলো;
এখন ক্যালেন্ডারে অক্টোবার,
নভেম্বর ডিসেম্বর সেই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শীত-
কুয়াশা শিশির ভেজা ঘোলাটে রাতদিন,
এতোবড় দীর্ঘ শীত চলে যেতেই নেমে যাবে বর্ষা
আমাদের কি হবে?
অঙ্কুরিত চারা দীর্ঘ বারান্দায় জলহীন টবে একাকী শুকবে?
১২।
মিথ্যা দিয়ে এ জিনিস গড়তে নেই। স্বপ্নে ভালবাসতে নেই।
তবু প্রতিদিন যা ভাল লাগা তাই দিয়ে গড়ছি তোমায়।
তোমাকে শেখাচ্ছি ছেলেটার পাশে হাঁটা,
তার সাথে কফির কাপ হাতে বারান্দায় দাঁড়ানোর কৌশল;
পৃথিবীর শ্রেষ্ট কোন চিত্রকর্ম থেকে দাঁড় করাচ্ছি তোমার তাকানোর ভঙ্গি-
যা তে ঈর্ষায় পোড়ে চার ভাগ পৃথিবী।
তোমার ঠোঁট নিয়ে আসছি শীতের সব থেকে কমনীয় বিঙ্গাপন থেকে,
তোমার নগ্ন সৌন্দর্য ঢাকছি যার তার পোষাক খুলে,
তোমার বলা কথা গুলো আনছি উপন্যাস থেকে,
আয়নার সামনে বসে তুমি যে আঙুলে পেঁচাচ্ছো চুল সেটাও শামসুর রহমানের আমার প্রিয় কবিতা থেকে তোমাকে দেওয়া।
তুমি যে উপেক্ষা আর অবজ্ঞা ধরে থাকো ঠোঁটে ওটাও আমার ই তৈরী,
অহংকারী চরিত্র আমার বরাবর ই প্রিয়,
গায়ে পায়ে লেপ্টে থাকা প্রেম আমার পছন্দ ছিল না কখনোই
আর তাই উপেক্ষিত হয়ে লিখছি একশো প্রেম ও বিরহের কবিতা,
তোমায় হাসতে দেখে রাতের আকাশ টাও জাদুমন্ত্রে বানাচ্ছি নীল।
তোমাকে গড়ার একমাত্র ক্ষমতা আমার।
ঈশ্বর একদিন চ্যালেন্জ যদি করে বসে এই দাম্ভিক আমায়
যদি এ নকশায় তোমায় তৈরী করে নামিয়ে দেয় স্বর্গ থেকে পৃথিবীতে
সেদিন ঈশ্বর কে আমিও চোর বলে গালি দিয়ে অকৃতঙ্গ হবো,
আমার চোখে ও আমি সেদিন মানুষের জন্য মুগ্ধতা দেখাবো।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই অক্টোবর, ২০১৫ রাত ৯:২৭
নাবিক সিনবাদ বলেছেন: ভালো লাগলো, ধন্যবাদ।