নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১।
এতো এতো চিঠি যে লিখে মানুষ পাঠিয়ে দিলো দিকবেদিক
কি থাকে ও চিঠির ভেতর?
গুড়ো রং? প্যারিসের বিদেশী সুবাস? বকুল মালা?!
কি থাকে খামে? একটুকরো শুধু কাগজ তো নয় ই!
চিঠি পেলেই মেয়েটি দুপুরের দরজায় খিল দেয়
বাড়িশুদ্ধ টিভিরুমে তাকে ঘিরে গোল হয়ে বসে
চিঠি এলে গাঢ় হয় ইলা বৌদির সিঁদুরের রং
চিঠি পেয়ে বাবা বসে যায় নিয়ে জায়নামাজ
কি থাকে একটা চিঠিতে?
প্রেম প্রেরণা প্রণয় নাকি কিছুটা হৃদয়?
২।
গতরাতে শুনলাম তুমি পাইন লেকে গেছো
সেখানের জলপ্রপাত তোমাকে মুগ্ধ করেছে,
লেক টা কিভাবে জলপ্রপাত হলো আমি জানি না
প্রশ্ন করিনি সেসব,
আমি সকালের ধানমন্ডি লেক টা জলপ্রপাত বানালাম
আর তার উপরের আকাশ টাকে নীল জলের টলটলে লেক
যেখানে তোমার স্পর্শের তরঙ্গ গুলো মেঘের ঢেউ তুলে আসে।
৩।
একবার ভুল ঠিকানায় চলে গেলে
ফিরতে দেরি হয়ে যায়
ফিরতে ফিরতে ফুরিয়ে যায় সব বেলা
আয়নার স্বলজ্জ মুখ আগলে দাঁড়ায় ফিরবার পথ
কি এক আভিমানের চাপা ঝড় এসে তছনছ করে সব
তবুও যদি নিঃস্ব হয়ে ফিরি
পথিমধ্যে নেমে যায় অনন্তকালের রাত
ফিরতে দেরি হয়ে যায়
বড্ড দেরি হয়ে যায়..
৪।
তাজমহল দেখলাম ভালোবাসা দেখলাম না।
অঢেল বিত্ত বৈভব ধবল সাদা মার্বেল,
বিত্তের সু উচ্চ প্রাচীল, চার কোনে চার প্রহরী মিনার,
নিপূণ ফোয়ারা জল ছিটিয়ে যায় দিবা নিশি,
ছায়াহীন বাগান, তাজের পাথুরে ছায়ার পাশে মরা বিষণ্ণ যমুনা।
আমি হলে একটা ছোট দ্বীপ কিনে নিতাম
আর তার কুমারী অরণ্যে মাচা করে একটা কাঠের ঘর বানাতাম
বুঝলে শাহজাহান?
৫।
সকালের ভেতর আর একটা সকাল ঢুকে গেলে
এ গ্রহের ভেতর আর একটা গ্রহ
শহরের ভেতর একটা উদ্যান ঢুকে যেতো
এ শহরের বুক বরাবর সবুজ একটা অরণ্য জেগে উঠা খুব প্রয়োজন ছিল
অথচ চার রাস্তার মোড়ে ইউক্যালিপটাস গুলো কাটা পড়লো
পাথরের একটা অবক্ষমূর্তি কে স্থান দিতে।
৬।
বাসার সামনের নারিকেলের পাতা গুলো গভীর রাতে র ঝড়ো বাতাসে অদ্ভূত এক শব্দ তোলে। সামনের রাস্তাটায় স্ট্রিট লাইট জ্বলে থাকে আগন্তুকের অপেক্ষায়।
কেউ কি আসছে? একটা দীর্ঘ প্রতীক্ষা নিয়ে রাস্তাটা জেগে আছে যেন!
মধ্যরাতের ছাদ থেকে প্রায় ই দৃশ্যটা দেখি তখন যেন আমি আর রাস্তাটা চলতে থাকে সমান্তরাল...
৭।
দরজায় শব্দ শুনেই দৌড়ে যাওয়ার ভুল ভেঙেছে
তুমি কি আর ফিরছো নাকি
ভিখারী ছাড়া কে বা হবে এই দুপুরে!
তবুও এমন ভুলে বিগত সব বছর গেছে,
এখন যখন দরজা নড়ে
আমি ভাবি ভিখারী নয়তো পথ ভুলো বাতাস ই হবে!
৮।
দিবসসন্ধিক্ষণে যখন ধূপের গন্ধ বাতাসে
মাগরিবের নীরব প্রার্থনা
দু একটা দলছুট পাখিদের একা একা মৌন ঘরে ফেরা
তখন ছায়া মাখা ভাঙা ইটের ঘাটে
একটা নদীর দেখি শান্ত নত পড়ে থাকা!
৯।
ও নিশিথের হাওয়া তুমি সাগরেরে কেন ইন্ধন দাও রাজ্য বিস্তারের,
ক্ষুব্ধ করো শান্ত জলের সাগর,
কেন তুমি সুরভী আনো, দূর সুদূর অতীত,
শার্টের বোতাম স্পর্শ করে কেন বুকের মাংসে হাত রাখো,
লোমকূপ থেকে চলে যাও শিহরণের মন্ত্রমুগ্ধ বিলুপ্ত নগরে.........?
১০।
ভেতরের মেরুদন্ড টি টানটান ঋজু
ভেতরের মেরুদন্ড টি নমনীয়
ভেতরের মেরুদন্ড টি বিনয়ে নত
ভেতরের মেরুদন্ড টি লজ্জ অবনত
ভেতরে একশো একটা মেরুদন্ড
ভেতরে যুদ্ধবিগ্রহ
এর থেকে অমেরুদন্ডী হলে ভাল ছিল।
১১।
চারদিকে ঝড়ো উথাল পাথাল হাওয়া, নৌকা ডুবো ডুবো,
নদীটা এখন দূরন্ত এক কিশোর।
মেঘ উড়ে যায় এদিক ওদিক কোথায়?
আকাশে আজ একটি পাখি ও নাই!
বৃষ্টি ঝরে শিলকড়ই এর ডালে
নারিকেল পাতায় ঝড় পাগলা কথা বলে।
১২।
পুবের জানালায় দাঁড়িয়ে এক সিগ্ধ রাত, শিলকড়ই এর মাথায় জলধোয়া চাঁদ
বাদবাকি মেঘ আর সুদূর ছায়াপথ,
সাপ্তাহিক ছুটির নীরব শহর!
একটা ইজিবাইক দুজন পথচারী
বাকি রাস্তাফাঁকা
ছাদগুলো অন্ধকার জ্যোত্স্নামেশানো ছায়া,
আজ ভাল লাগে সব, সব রাত জাগা,
পুবের জানালা, আকাশের ছাদ....
©somewhere in net ltd.