নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিসর্গ ময়ূখ

নিসর্গ ময়ূখ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মানবতা তুমি অমাবস্যার চাঁদ কিংবা ফিনিক্স পাখি ...

১৮ ই জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:১৬

পৃথিবীতে নির্যাতকের কোন ধর্ম বর্ণ দেশ নেই, এরা যুগে যুগে এক, স্থান কাল পাত্রের সীমারেখায় এদের বেঁধে রাখা যায় না। তারা শুধু মুখোশ পাল্টায় যুগের পর যুগ।



নির্যতিতরা হল বাতাসের মত, তারা এক হওয়ার আগে ঝড় হয় না



তারা বাষ্পের মত : একতা না আসার আগ

পর্যন্ত তাদের মেঘজলে কঠিন জমিন ধুয়ে কাঁদা হয়ে ভেঙে পড়ে না, জলের জোয়ারে ভেসে যায় না সবকিছু



বিশ্বাস ঘাতক - সে যেই হোক, দেশ বা জাতি কিংবা শাসক : তারা হল আগুনের ফুলকির মত। এক চিলতে আগুন জ্বলিয়ে দেয় কত স্বপ্ন সাধনা সভ্যতা



হ্যা, অত্যাচারীরা যুগে যুগে এক। তারা শুধু খোলস বদলায়। অত্যাচারিতের আত্মদানে এদের নাশ হয়, কিন্তু বিলুপ্তি হয় না, এরা যুগে যুগে কবর থেকে উঠে আসে, ঠিক ব্রাম স্টোকারের ড্রাকুলার মত



এদের মৃত্যু নেই

এরা অনেকটা শক্তির মত, শুধু রুপান্তরিত হয় যুগে যুগে



মিশরের ফারাও রামেসিস,জার্মানির হিটলার, সোভিয়েতের ব্রেজনেভ, ইসরাইলের শ্যারন, জাপানের হিরোহিতো,শ্রীলংকার রাবন, সিরিয়ার হাফিজ আল আসাদ, পাকিস্তানের ইয়াহিয়া, ইরানের পাহলভি, তুরকিস্তানের আফ্রাসিয়াব-হোশংগ, চিলির পিনোচেট,রুমানিয়ার চসেস্কু কিংবা মংগোলিয়ার তৈমুর - হালাকু - চেংগিস খান : এরা সবাই এক!



যুগে যুগে শুধু বিভীষিকাগুলো শরীর বদল করেছে, এদের আত্মা এক,অভিন্ন



এই অত্যাচারী কখনো রাশিয়ান সোলজার, তালেবান বিরোধি যুদ্ধের নামে আফগানিস্তানের প্রত্যন্ত গ্রামে পাহাড়ের সুড়ংগে আগুন আশ্রয় নেওয়া লাখো নিরীহ মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছিল,লেলিন স্ট্যালিনেরা পুরো রাশিয়া জুড়েই চালিয়েছিল অজানা অসংখ্য গনহত্যা কমিউনিজমের দোহাই দিয়ে



এই অত্যাচারী যুক্তরাষ্ট্র : বিশ্ব জয়ের নেশায় অন্ধ সম্রাট হিরোহিতোর অপরাধে মুহূর্তেই পুড়িয়ে গলিয়ে ছাই করে দিয়েছিল হিরোশিমা নাগাসাকির মত দুই সমৃদ্ধ জনপদ, চীন আরর কোরিয়ার কাছে এখনও আতংক জাপান



মধ্য এশিয়ার সমৃদ্ধ জনপদগুলোতে কান্না রোল তুলেছল মোংগল তাতারেরা : বোখারা মরভ সমরকন্দ কিংবা বাগদাদ : শিল্প সাহিত্য বিজ্ঞানে শীর্ষে ওঠা শহরগুলো আজ স্মৃতি

স্প্যানিশদের হাতে লাঞ্চিত হয়েছিল ল্যাটিন আমেরিকার ইনকা আজটেক সভ্যতা, অস্ট্রেলিয়ায় ইংরেজদের ধংসযজ্ঞ এবরিজিনদের শেষ করে দিয়েছিল, আমেরিকায় রেড ইন্ডিয়ানরা ক্ষমা পায়নি, ফ্রান্স ক্ষমা করেনি ফ্রান্সের জন্য রক্তের বন্যা বইয়ে দেওয়া আলজেরিয়াকে, শুধুমাত্র ইংরেজদের জন্যই পৃথিবীর অন্যতম সমৃদ্ধ জনপদ বাঙলায় ছিয়াত্তরের মন্বন্তর হয়েছিল, ঝরে গিয়েছিল এক কোটি প্রান



কম্বোডীয় ভিয়েতনাম মায়ানমার ইথিওপিয়া কিংবা শ্রীলংকা গনহত্যা হয়েছে সবখানে, অত্যাচারীদের পরনে কখনো ছিল ধর্মের মুখোশ কিংবা আভিজাত্যের বর্ম



জয়ীরা ইতিহাস লেখে বলেই পৃথিবীতে "#দিগবিজয়ী বীর" বলে একটা শব্দ আছে।



ফরাসি বিপ্লবের শিশু নেপোলিয়নের কথা মনে আছে? সেই যে, তুরস্ক কে হারিয়ে ১৭৯৯ সালে বারোশ তুরকিকে বন্দী করলেন। মুক্তি দিতেই বলেছিলেন বন্দীদের। সেই মুহূর্তে ভয়ংকর কাশি হল তার, বলে উঠলেন " মা সাকরি তাকস " ( অর্থ : কি বিধঘুটে কাশি)। আশে পাশের সবাই ভুলে শুনলেন " মাসাকরি তাওস " ( অর্থ : হত্যা কর সবাইকে )।



সামান্য উচ্চারণগত ভুলের জন্য প্রান গিয়েছিল ১২০০ জন মানুষের



গাজায় গনহত্যা করছে ইসরাইলি শাসক গোষ্ঠী

ড্রোন আর মারকাভা ট্যাংকে ধুলিস্যাত হচ্ছে মানবতা, কুকুর বিড়ালিকেও এতটা নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়না। প্রতিবন্ধী থেকে গর্ভবতী, শিশু থেকে অশতীপর বৃদ্ধা : কেও রেহাই পাচ্ছেনা কাপুরুষ জায়নবাদীদের হাত থেকে। চারপাশের বড় বড় ধনী আরব দেশগুলো চুপ



Sderot পাহাড়ে বসে উপভোগ করছে ইসরাইলের আপামর জনগোষ্ঠী, কোথাও বোমা ফেললেই উল্লাস করে উঠছে, হাততালি দিচ্ছেন। পৃথিবীর রাগ পড়ছে ইহুদিদের উপর,ঘেন্না আর নিজেদের অক্ষমতায় মনেপ্রাণে কামনা করছেন আরেক সাদ্দাম হোসেন কিংবা হিটলার কে



এজন্যই হয়ত অনেকে হিটলার কে লিজেন্ডের পর্যায়ে নিয়ে গেছেন। অথচ এই হিটলার ছিলেন আরেক অসুর, ঠান্ডা মাথায় লাখ লাখ ইহুদিকে তিনি গ্যাস চেম্বারে দমবন্ধ করে মেরেছিলেন। এক মার্কিন কুখ্যাত জেনারেল বিশ্ব যুদ্ধ পরবর্তী জার্মানি তে যেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন



কি দেখেছিলেন তিনি, জানেন?



এক গ্যাস চেম্বারের বাইরে হাজার হাজার জুতো, সবই শিশুদের যারা কোনদিন ফিরে আসবে না। " আন ফ্যাংকের ডায়েরী " কিংবা " The boy in stripped pajamas " এর মত দুনিয়া কাঁপানো বই - চলচ্চিত্রগুলোও হিটলারের ধংসযজ্ঞ বর্ণনা করতে ব্যর্থ।

আজ গাজার জন্য আমাদের আবেগ অবশ্যই শ্রদ্ধার, কিন্তু শুধুমাত্র মুসলিম জন্য তাদের সমর্থন করে আমরা সমগ্র মনুষ্যত্বের অপমান করছি। বিহারী ক্যাম্পে জ্বলে খাক হয়ে যাওয়া বিহারী, মায়ানমারে পরিবারের সবাইকে চোখের সামনে জবাই হতে দেখেও চোখের পানি ফেলার সাহস করতে না পারা রোহিঙা কিংবা ইসরাইলের অপহৃত তিন শিশু কিংবা টুইন টাওয়ারে মুহূর্ত লাশ হয়ে যাওয়া অসংখ্য মানুষ : এরা সবাই এক





আসুন, দৃষ্টিভঙ্গি বদলাই।



শুধু গাজা না, পৃথিবীর যুগে যুগে প্রান্তে প্রান্তে দেশে দেশে নির্যতিতের পাশে এসে দাড়াই শুধুমাত্র একটাই কারনে



আমরা মানুষ





© নিসর্গ অমি



মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.