নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিসর্গ ময়ূখ

নিসর্গ ময়ূখ › বিস্তারিত পোস্টঃ

মেডিকেলনামা : এক

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ১০:৩০

বাংলাদেশে মেডিকেলে চান্স পাওয়া আর লটারির টিকেট জেতা একই কথা...
মেডিকেল অত্যন্ত কঠিন জায়গা ... পৃথিবীর প্রতিটা দেশেই মেডিকেলে ভর্তি হওয়া অত্যন্ত কষ্টসাধ্য আর ব্যয়বহুল। বাংলাদেশের মত দেশে যেখানে পঙ্গপালের মত ছাত্রছাত্রী সেখানে সবচেয়ে এক্সপেক্টেড এই সেক্টরে চান্স পাওয়া লটারির টিকেট জেতার চেয়েও কঠিন
মেধা আর পরিশ্রমের কষ্টি পাথরে যাচাই করে নেওয়া খাটি সোনাদের ভেতরেও অসংখ্য থাকে, যারা এই আইটেম কার্ড টার্ম প্রফ অসপির বিভীষিকাময় জগত মেনে নিতে পারে না, যাদের মুখস্ত বিদ্যায় পারদর্শিতা কম... মেডিকেলে মেধার যতটুকু মূল্য তার চেয়ে মূল্য রেগুলারিটির ...
ইঞ্জিনিয়ারিং এর পরীক্ষার আগের রাতের মত কোন ম্যাজিকাল রাত মেডিকেল পড়ুয়াদের নেই ,মেডিকেলে সারা বছর ই পড়তে হয়, পরীক্ষার সময় বাথরুমেও বই নিয়ে যেতে হয়। এতকিছুর পরেও এক্সাম হলে ফেইল হয়ে যায় মেধাবী ছেলেটা, নিশ্চিত পাশ জেনেও রেজাল্ট দেখে চোখ মুছতে হয় তিন টার্ম এ প্লেস করা মেয়েটার ; এটা খুব কমন সীন । বায়োকেমিস্ট্রি জাতীয় সাবজেক্ট তো আছেই যেখানে কে পাশ আর কে ফেইল বাপের সাধ্য নাই বোঝার ...
নিজের মেডিকেলেই আসি...আমি নিজে আমাদের রামেক ৫৩ ব্যাচে যে রকম মেধাবী ছেলেমেয়ে দেখেছি, রাজউক ভিএনসিতেও দেখি তার ছিটেফোঁটা। প্রতিটা স্টুডেন্ট মেধাবী, আই রিপিট প্রতিটা স্টুডেন্ট মেধাবি , ইউনিক...
তারপরেও প্রফে ৭৮ জন ফেইল করেছিল,যেদের ৮ জন ও ফেইল করার মত না। শুধুমাত্র একজন শিক্ষকের " ব্যক্তিগত রোষে " আর আরেকজন শিক্ষকের 'খামখেয়ালিপনায়' ...
মেডিকেলে শিক্ষকদের ক্ষমতাও অনেক ,দ্বিতীয় ঈশ্বর কথার কথা না ... একজন শিক্ষকের ব্যক্তিগত রোষে পরলে সাপ্লিমেন্টারি লাইফ শেষ । এরপরে আছে রাজনীতি , স্বার্থপর বন্ধুসমাজ (!) ,ব্যক্তিগত জীবন ...
সবচেয়ে ভয়াবহ কথা কি জানেন?
মেডিকেলে মেধাবী ভর্তি হলেও মেডিকেলে শুধু "মেধা" দিয়ে কিচ্ছু হয় না , এখানে মেধার চেয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব পরিশ্রমের ...
নামিদামি কলেজের অনেক মেধাবীরাও এখানে এসে মানিয়ে নিতে পারে না ...
কারন অনেক... অনেক
কেউ বাসার বাইরে হল লাইফ এডজাস্ট করতে পারেনা
কেউ বাংলা মিডিয়ামে সারাজীবন পড়ে এসে পুরোপুরি ইংলিশ বইগুলো আয়ত্ব করতে পারে না
অনেকের তোতাপাখির মত মুখস্তবিদ্যা নাই, তারা বিপদে পরে
কি কি পড়ব আর কি পড়ব না, এটা বুঝতেই এক বছর চলে যায় অনেকের
কেউ র‍্যাগ খেয়ে বিধ্বস্ত
কেউ সিম্পলি মেডিকেল ব্যাপারটা পছন্দই করতে পারে না ( অনেকেরই মেডিকেলে আসার কারন সামাজিক মর্যাদা আর বাবা -মায়ের স্বপ্ন, জানেন তো? )
সবচেয়ে বড় কথা, তেতো হলেও সত্য , বাংলাদেশের মেডিকেলের পড়াশোনার সিস্টেম টাই faulty..সার্জারী তে পোস্ট গ্রাড করতে থাকা জন এনাটমি ডেমো নেন, গাইনীর ম্যাডাম বায়োকেমিস্ট্রি, মেডিসিনের স্যার কম মেড !
এই ধরনের একেকটা সাবজেক্ট পড়াতে যে দক্ষতা প্রয়োজন, তা তাদের ম্যাক্সিমাম ই নেই, যেমন আমি বলতে পারি, বায়োকেমিস্ট্রি কিছুই পড়ানো হয়নি কিন্তু ফার্স্ট প্রফে ভাইভায় ছাড় পায়নি কেউ... কিচ্ছু বলার নেই
এখন, এই ধরনের অত্যন্ত কমপ্লিকেটেড সিস্টেমে ছেলেমেয়ে পাশ মার্ক ৬০, প্রতিটা বিষয়ের প্রতিটা সাবজেক্টে তুলতে না পেরে অনেকেই ফেইল করবে স্বাভাবিক ...
এফসিপিএসের পরীক্ষার কথা বাদই দিলাম, সেখানে কি দুষ্টচক্র কাজ করে নন মেডিকেল কাওকে বোঝানো অসম্ভব...
বাইরের মানুষ এই ফেইলের খবর শুনেই কিছু না বুঝে বলবে " কি মেধা যে ফেইল কর? " কিংবা " প্রশ্ন পেয়ে ভর্তি হয়েছিলে?"
প্রশ্ন ফাঁসের বিপক্ষে কি জন্য আন্দোলন হওয়া উচিত বুঝতে পেরেছেন?
আজ আপনি প্রশ্নফাসের বিপক্ষে আন্দোলনে ঘরে বসে বসে পপকর্ন খাচ্ছেন, ফেসবুকে লিখে কিছু হবে না বলে হাত গুঁটিয়ে বসে আছেন, তামাশা দেখছেন, মজা নিচ্ছেন ... ভবিষ্যতে যখন ই কোন এক্সামে ফেইল করবেন, ডাক্তারীতে ভুল করবেন কিংবা কোন ধরনের ক্ল্যাশে জড়াবেন, হাজার হাজার আঙ্গুল আপনার দিকে তাক করার জন্য প্রস্তুত জেনে রাখেন
অনেক দেরী হওয়ার আগেই এগিয়ে আসুন , রাস্তান নামুন, মুখে প্রতিবাদ করুন কিংবা ফেসবুকেই প্রতিবাদ করেন, তাহরীর স্কোয়ার থেকে শাহবাগ গনজাগরন মঞ্চ : সব আন্দোলন কিন্তু ফেসবুক ব্লগ থেকেই শুরু হয়েছিল , মনে রাখবেন...
প্রতিটা কণ্ঠ এখন মহামূল্যবান
ভ্যাট প্রত্যাহারে সরকারকে বাধ্য করা গেলে, ক্যারি অন বহাল করা গেলে ভর্তি পরীক্ষাও বাতিল করা যাবে
আবারও বলছি, কালি একবার লেগে গেলে তা উঠানো যাবে না ...এই কালি লাগবে সবার গায়ে
"নগরে আগুন লাগলে দেবালয় রক্ষা পায় না"
মনে আছে তো ?

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.