| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ষষ্ঠ অধ্যায় – ফাসল ৫
হাকিমিয়াতুল্লাহর নামে তাকফীরের ভয়ানক ফিতনা
(পৃষ্ঠা ১৪৬-১৭৮ – প্রায় ৩৩ পৃষ্ঠা। কিতাবের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ও সবচেয়ে বিপজ্জনক অধ্যায়)
শায়খ যাকারিয়া রহ. এখানে লিখেছেন:
“মওদূদী সাহেবের সবচেয়ে বড় ফিতনা হলো ‘হাকিমিয়াতুল্লাহ’ নামের স্লোগানকে এমন অস্ত্র বানানো যার দ্বারা যে কোনো মুসলিমকে এক মিনিটে কাফির বানানো যায়। এই একটি চিন্তা দিয়ে তিনি পুরো মুসলিম উম্মাহকে কাফির বানিয়ে দিয়েছেন। এটা খারেজীদের পুরানো ফিতনার নতুন সংস্করণ।”
মূল অভিযোগ ও উদ্ধৃতিসমূহ:
১. মওদূদী সাহেব লিখেছেন (“তফহীমুল কুরআন”, “ইসলামী রিয়াসত”, “জিহাদ ফী সাবীলিল্লাহ”):
“যে ব্যক্তি বা সমাজ আল্লাহর আইনকে রাষ্ট্রীয় আইন হিসেবে কায়েম করছে না, সে তাগুতের হাকিমিয়াত কায়েম করছে। আর তাগুতের হাকিমিয়াত কায়েম করা কুফরে আকবার (সবচেয়ে বড় কুফর)।”
শায়খ যাকারিয়া বলেন:
“এর মানে পাকিস্তান, ভারত, সৌদি আরব, মিশর, তুরস্ক – কোনো মুসলিম দেশেই পূর্ণ শরীয়ত কায়েম নেই। তাহলে কি আজকের কোটি কোটি মুসলিম সবাই কাফির? তাদের রক্ত-মাল হালাল?”
২. গণতন্ত্র, সংসদ, আইনসভা – সবই কুফর
মওদূদী সাহেব লিখেছেন:
“যে ব্যবস্থায় মানুষ নিজে আইন বানায়, সেটা আল্লাহর সঙ্গে শিরক। এটা কুফরে বোয়াহ (স্পষ্ট কুফর)।”
শায়খ বলেন:
“তাহলে পাকিস্তানের সংবিধান সভায় যে সব আলেম-ওলামা ছিলেন (মাওলানা শাব্বীর আহমদ উসমানী রহ. সহ), তারা সবাই কাফির? এই ফতোয়া দিয়ে মওদূদী সাহেব পুরো উম্মাহর গর্দানি কেটে দিয়েছেন।”
৩. “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ” বললেও যথেষ্ট নয়
মওদূদী লিখেছেন:
“যে ব্যক্তি শুধু زبانی বলে ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’, কিন্তু আল্লাহর হাকিমিয়াত মানে না, তার কোনো ঈমান নেই। সে জাহেলিয়াতেই আছে।”
শায়খ বলেন:
“এটা খারেজীদের কথার নকল। সাহাবায়ে কিরাম কখনো এমন বলেননি। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর যুগেও মদীনার বাইরে অনেক জায়গায় শরীয়তের পূর্ণ হুকুমত ছিল না। তাহলে কি সাহাবারা কাফির ছিলেন?”
৪. আজকের কোনো মুসলিম দেশ দারুল ইসলাম নয়
মওদূদী সাহেবের ফতোয়া:
“আজ পৃথিবীতে কোথাও দারুল ইসলাম নেই। সব জায়গাই দারুল হারব বা দারুল কুফর।”
শায়খ যাকারিয়া বলেন:
“চার মাযহাবের ফকীহরা বলেছেন: যে দেশে মুসলিমরা নিরাপদে নামায-আযান দিতে পারে, সেটাই দারুল ইসলাম। কিন্তু মওদূদী সাহেবের ফতোয়ায় পাকিস্তানও দারুল কুফর! তাহলে মুসলিমরা কোথায় যাবে?”
৫. শাসকদের কাফির ঘোষণা
মওদূদী লিখেছেন:
“যে শাসক শরীয়তের আইন কায়েম করে না, সে কাফির, মুরতাদ। তার বিরুদ্ধে জিহাদ ফরযে আইন।”
শায়খ বলেন:
“এই একটি কথা দিয়ে মওদূদী সাহেব খারেজীদের মতো তাকফীরের দরজা খুলে দিয়েছেন। ফলে আজকের তথাকথিত জিহাদী গ্রুপগুলো তাঁরই কিতাব পড়ে মুসলিম শাসকদের হত্যা করছে।”
শেষে শায়খ লিখেছেন:
“হাকিমিয়াতুল্লাহ কিয়ামত পর্যন্ত পূর্ণরূপে কায়েম হবে না। এটা কোনো মুসলিমের ঈমানের শর্ত নয়। এই শর্ত বানানো খারেজীদের পথ। আল্লাহ আমাদের এই ফিতনা থেকে বাঁচান।”
ফাসল ৫ শেষ।
©somewhere in net ltd.
১|
২৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ দুপুর ২:১৫
নকল কাক বলেছেন:
ফিতনা-এ-মওদূদিয়াত_(০)
ফিতনা-এ-মওদূদিয়াত_(১)
ফিতনা-এ-মওদূদিয়াত_(২)
ফিতনা-এ-মওদূদিয়াত_(৩)
ফিতনা-এ-মওদূদিয়াত_(৪)
ফিতনা-এ-মওদূদিয়াত_(৫)
ফিতনা-এ-মওদূদিয়াত_(৬)
ফিতনা-এ-মওদূদিয়াত_(৭)
ফিতনা-এ-মওদূদিয়াত_(৮)
ফিতনা-এ-মওদূদিয়াত_(শেষ)