![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পাকা আমের মধুর রসে ডুব দিতে চায় মন,
হারাতে চায় স্বাদের ভুবনে।
আমের পুষ্টিগুণ শরীরকে রাখে নানা রোগব্যধি থেকে মুক্ত। অথচ সেই আমই হতে পারে প্রাণহানির কারণ। বাজারে টসটসে যেসব আম পাওয়া যায় তার প্রায় সবই কার্বাইড নামক বিষ প্রয়োগ করে পাকানো হয়। আম অত্যন্ত পচনশীল একটি ফল। এ ফল ৭ দিনের মধ্যে খেতে হবে, না হয় পচে যাবে। কিন্তু ফরমালিনসহ বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক মিশিয়ে ব্যবসায়ীরা এ ফল ৬ থেকে ৭ মাস পর্যন্ত রেখে দেয়। ফল ভাল রাখতে পচন রোধের জন্যই কেমিক্যাল মেশানো হয়ে থাকে।আম গাছে কিংবা আমে যে কীটনাশক প্রয়োগ করা হয় তার বিষ ক্রিয়া থাকে এক সপ্তাহ। ফলে ওই সব আম খেলে মানুষের কোন প্রকার ক্ষতি হয় না।আমের ঝুড়ির নীচে পলিথিন বা কাগজে পুরিয়ার মধ্যে কার্বাইড রেখে তার গ্যাসটির মাধ্যমে আম পাকানো হলেও মানুষের তেমন কোন ক্ষতি হয় না। তবে আমের গায়ে সরাসরি কার্বাইড ছিঁটিয়ে দিলে ওই আম খেলে মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়।মধু মাসের সবচেয়ে মজার ফলে কার্বাইড মিশিয়ে আম তাড়াতাড়ি পাকানো হচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরে টাটকা রাখা হচ্ছে এবং শক্ত রাখা হচ্ছে। আম গাছে নতুন পাতা গজানো, মুকুল ধরা থেকে শুরু করে আম বাজারজাত করা পর্যন্ত ৬/৭ দফায় উচ্চ মাত্রায় কেমিক্যাল মিশানো হয়। প্রথমে পোকা-মাকড় থেকে রক্ষা করতে পাতা ও মুকুলে বিষাক্ত কেমিক্যাল স্প্রে করা হয়। মুকুল থেকে গুঁটি হওয়ার পর আরও দু’দফা কেমিক্যাল স্প্রে করা হয়। আম পরিপূর্ণ হবার আগে একবার এবং গাছ থেকে আম পাড়ার আগে একবার এবং পরে কমপক্ষে ৫বার স্প্রে করা হয়। রাতে গুদাম বন্ধ করার আগে ফরমালিন স্প্রে করা হচ্ছে । ফলে ভোরে আমে ফরমালিন এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায় না । তাছাড়া অতিরিক্ত তাপে ক্যালসিয়াম কার্বাইড মেশানো আম রাখলে তা ক্যালসিয়াম সায়ানাইডে পরিনত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।সর্বশেষে বাজারে নেয়ার আগে, ট্রাকে উঠানোর পূর্বে কেমিক্যাল মেশানো হয়ে থাকে।
ফরমালিন বা কার্বাইড দেয়া আম চেনার উপায়ঃ
গাছ পাকা আম হলে আমের গায়ে মাছি বসে, ফরমালিন যুক্ত আমে মাছি বসবে না।
প্রাকৃতিক ভাবে পাকা ফলের রঙ কিছুটা সবুজ কিছুটা হলুদ হয়ে থাকে কিন্তু কার্বাইড মেশানো ফল আগাগোড়ায় হলুদ হয়ে যায় ।কখনো কখনো বেশি দেয়া হলে সাদাটেও হয়ে যায়।
কার্বাইড বা অন্য কিছু দিয়ে পাকানো আমের শরীর হয় মোলায়েম ও দাগহীন। কেননা আম গুলো কাঁচা অবস্থাতেই পেড়ে ফেলে ওষুধ দিয়ে পাকানো হয়। গাছ পাকা আমের ত্বকে দাগ পড়বেই।
হিমসাগর ছাড়াও আরও নানান জাতের আম আছে যারা পাকলেও সবুজ থাকে, কিন্তু অত্যন্ত মিষ্টি হয়। গাছপাকা হলে এইসব আমের ত্বকে বিচ্ছিরি দাগ পড়ে। ওষুধ দিয়ে পাকানো হলে আমের শরীর হয় মসৃণ ও সুন্দর।
গাছ পাকা আম হলে অবশ্যই বোটার কাছে ঘ্রাণ থাকবে। ওষুধ দেয়া আম হলে কোনও গন্ধ থাকবে না, কিংবা বিচ্ছিরি বাজে গন্ধ থাকবে।
ফরমালিন দেওয়া আমে এক ধরনের ঝাঁঝালো গন্ধ থাকবে ,যা কেনার আগে নাকের কাছে আনলে পাওয়া যায় ।
ফলের এক অংশে টক অন্য অংশে মিষ্টি হয় ।
ফরমালিন যুক্ত আম ফ্রিজে না রাখলে নষ্ট হয়ে যাবে কিন্তু ফরমালিন না দেওয়া আম ফ্রিজে রাখলেই পচে যাবে এবং স্বাদ টক হয়ে যাবে ।
ফরমালিন বা কার্বাইডের ক্ষতিকর প্রভাব
ফরমালিনযুক্ত খাবারে ফারমালডিহাইড এর ঝাঁজালো গন্ধ পাওয়া যায়। অপরদিকে ক্যালসিয়াম কার্বাইড প্রধানত আর্সেনিক ও ফসফরাসের যৌগ উপাদান। এ দুটি উপাদান মানুষের শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ক্যালসিয়াম কার্বাইড দিয়ে অনিয়মতান্ত্রিক উপায়ে পাকানো ফল খেলে নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
কার্বাইড থেকে উৎপন্ন অ্যাসিটিলিন গ্যাস দেহের স্নায়ুতন্ত্রের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
এটি দেহে অক্সিজেনের পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
রোগের প্রাথমিক অবস্থায় বমি হওয়া, চুলকানি, ডায়রিয়া, পেটের পীড়া, বুক জ্বালাপোড়া, ঘন ঘন তৃষ্ণা পাওয়া এবং কথা বলতে অসুবিধা হয়।
দীর্ঘ দিন এ উপাদান দিয়ে পাকানো ফল খেলে হাত-পা অবশ হয়ে যেতে পারে, গলব্লাডারে ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা থাকে এবং রক্তচাপ কমে যেতে পারে।
কার্বাইড ছাড়া ঘরোয়া পদ্ধতিতে আম পাকানোর সহজ পদ্ধতিঃ
প্রথমে কাঁচা আমগুলোকে বাছাই করে নিতে হবে।
এবার একটি কাগজের ব্যাগে ভরে নিন। আমগুলো খবরের কাগজ দিয়েও মুড়ে নিতে পারেন।
দশটি আমের জন্য ব্যাগের ভেতর একটি আপেল অথবা একটি কলা বা একটি টমেটো রেখে দিন। কাগজের ব্যাগের মুখটি ভালোকরে বেঁধে দিতে হবে।
আম ভর্তি ব্যাগটি রান্না ঘরে বা বাসার গরম কোনো স্থানে রেখে দিতে পারেন।
আপেল থেকে নির্গত ইথিলিন গ্যাস আম গুলোকে দ্রুত পাকাতে সাহায্য করবে । ১ থেকে ২ দিনের মধ্যেই ব্যাগ থেকে পাকা আমের মিষ্টি ঘ্রাণ বের হতে থাকবে।
©somewhere in net ltd.