নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
লেখালেখি হচ্ছে প্রেমে পড়ার মতন একটা ব্যাপার, কোনো ধরনের কর্তৃত্ব জাহির করা নয়।
মানুষ স্বেচ্ছায় কি জীবনকে জটিল করে, নাকি কারো কারো ক্ষেত্রে জীবনই মানুষের কাছে জটিল হয়ে ওঠে?
গড়পড়তা মধ্যবিত্ত আলাপ চক্রাকার, উদ্দেশ্যবিহীন এবং খাপছাড়া। এই সময়ে যারা জোর করে মধ্যবিত্ত তকমা নিয়ে বেঁচে আছেন, আমি তাদের একজন। ফলত আমার লেখালিখির প্রাধন ও আধিপত্যশীল প্রসঙ্গই হলো প্রেম। ক্ষেত্র বিশেষ ব্যর্থ প্রেম!
প্রসঙ্গত বলে রাখি, আমি একজন খুব ভালো অবজার্ভার। আমি এত ভালো অবজার্ভার যে, কোনো কিছু দেখার পর সেটা ভুলতে আমাকে চেষ্টা করতে হয়। এফোর্ট দিতে হয়। শিক্ষকতা করার সুবাদে শিক্ষার্থীদের নানা পরিবর্তন প্রায়শই নজরে আসে। এমন একজন হলেন শিহাব। অনার্স কমপ্লিট করার জন্য শিহাব বোধকরি ধনুক ভাঙা পন করেছে যে কম পক্ষে ছয় বছর সময় ব্যয় করবেই। পরিস্থিতি যে নাজুক অবস্থায় আছে, ছয় বছরে যে শেষ হবে না অনার্স সে আশংকা জ্বাজ্জল্যমান। শিক্ষক হিসেবে একটু আধটু শাসন বারণ তো আমি করতেই পারি। জিজ্ঞেস করলাম, কি অবস্থা শিহাব, কী খবর আপনার?
প্রশ্নের গোড়াতে বলে রাখি, শিহাব বর্তমানে 'দেবদাস সিনড্রোম'এ ভুগছে, যাকে ব্যর্থ প্রেমিক বলা হয় আরকি। ফুটনোটে বলে রাখি দেবদাস (গল্প/সিনেমা) এর প্রধান চরিত্র দেবদাসকে নিয়ে ফেসবুকে একটা চমৎকার লেখা পড়েছিলাম। 'সবাই ভেবেছিল পার্বতী দেবদাসকে এত ভালোবাসে, দেবদাসের মৃত্যু সে কিভাবে সহ্য করবে। বাস্তবে যা ঘটে ছিল, তা হলো দেবদাসের মৃত্যুতে পার্বতীর সামান্য জ্বরও আসেনি'।
তো শিহাবের খবর হলো, তার লেখাপড়ার অবস্থা খারাপ, ইতোমধ্যে দুই সেমেস্টার ড্রপ। তার কোনো কিছুতে মন বসছে না। সে কি করবে বুঝে উঠতে পারছে না। রাখি নামের এক মেয়ের সঙ্গে প্রেম ছিল। একবছর আগে ব্রেকাপ হয়ে গেছে। শিহাব এখন নিজেকে ব্যর্থ মনে করে।
তারপর?
শিহাব এই প্রশ্নের জন্য প্রস্তুত ছিলো না। তারপর তো সে আর ভাবে নি। সে ভেবেছিল আমি জানতে চাইবো কেন ব্রেকাপ হয়েছে, রাখি এখন অন্য কোন সম্পর্কে আছে কিনা, ব্লা ব্লা ব্লা। আমি নিশ্চিত জানি, শিহাব নিজের খোঁজ খবর না রাখলেও ফেসবুকের কল্যাণে রাখির সব আপডেট রাখে। রাখবেই বা না কেন? এখন তো আর পরস্পরের মধ্যে দূরত্ব বজায় রাখার সুযোগ নেই। সবসময় পরস্পরকে কাছ থেকে দেখতে হয়।
আচ্ছা শিহাব, বলেন তো প্রেম কী? শিহাব নিরত্তর। এই প্রশ্নের জবাব দেয়ার চেয়ে তিনটা সাবজেক্ট রিটেক দেয়া সহজ সম্ভবত। রিপিট করলাম, আপনি কী জানেন, প্রেম কী? ধরে নিচ্ছি আপনি জানেন, তবুও আমি আমার উত্তরটা শেয়ার করি। প্রেম হচ্ছে, বিচ্ছেদে গলে যায় যে বন্ধন।
আমি বুঝতে পারছি, রাখি'র সাথে ব্রেকাপ আপনি মেনে নিতে পারছেন না, কিংবা সহ্য করতে পারছেন না। এক্ষেত্রে আপনি নিজেই নিজের শত্রু বনে গেছেন। প্রতিনিয়ত দ্বন্দ্বে জড়াচ্ছেন; কখনো আবেগের সঙ্গে, কখনো বিবেকের সঙ্গে।
আচ্ছা আগামী পাঁচ মিনিটের জন্য ভুলে যান আপনি শিহাব। মনে করেন আপনি একজন মেয়ে। আপনার নাম রাখি। আপনার বয়স ২১বছর। আপনি একটা মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। সততার সাথে বলেন, আপনি (রাখি) কী শিহাবের সাথে আড়াই বছরের সম্পর্ক কনটিনিউ করতেন?
আপনার নিরবতা এবং ঝুঁকে পড়া কাধ বলে দিচ্ছে করতেন না। কেন জানেন, বাস্তবে আপনি যতটা প্রেমিক তার চেয়ে বেশি ম্যানেজার। আপনি নিজের উপর আস্থা রেখে ম্যানেজ করতে চান। আজকে রাত জেগে ক্লাব ফুটবলের ম্যাচটা দেখি, এই সপ্তাহে ট্যুরটা করে আসি, এই সেমেস্টারটা ড্রপ করি; আপনার আস্থা পরের দিন, পরের সপ্তাহ, পরের সেমেস্টার।
রাখি যেতে যেতে আপনাকে এটা শিখিয়ে গেছে নিজেকে ভুলিয়ে রাখা যায় কিন্তু যে সম্পর্কের বয়স বাড়ছে তাকে নয়। আপনি আসলে কোনো কিছুতে সিরিয়াস না, সিরিয়াসনেসের ভান করেন। মানুষ যখন ভান করে সেটা প্রতারণার সমান। যখন কাছের মানুষের থেকে প্রতারণার শিকার হতে হয়, তখন মনে ঘৃণা জন্মায়। রাখির ঠিক সেটা হয়েছে।
আপনার জীবনে যে ব্রেকাপ, এটা কি আদৌ সমস্যা, নাকি ‘সমস্যা’ শব্দটি ব্যবহারে তার ওপর অর্থ আরোপ করেছেন? এটা এখন বাস্তবতা। বুদ্ধিমানরা বাস্তবতা অস্বীকার করে না, একসেপ্ট করে। রাখি'র অনুপস্থিতির গভীরতাবোধ থেকে অন্তত আপনার এই লার্নিংটুকু হোক যে, অন্যের কাছে গ্রহনযোগ্য হয়ে ওঠার আগে, নিজেকে নিজের কাছে যোগ্য হয়ে উঠতে হবে।
চিয়ার আপ!
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৩৭
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ বিজন রয়, আমি ভালো আছি।
জ্বী অ+নে-ক দিন পরে পোস্ট দিলাম।
পোস্ট কি এখনো ভালো করে পড়া হয়নি?
২| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৪২
মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: বড়ই আচানক ঘটনা।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১০:৪৫
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন, ভাষার মাধ্যমে ভাব প্রকাশের সৌন্দর্য নির্ভর করে ব্যক্তির পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির উপর।
আপনার মন্তব্যের মৃদু ভর্ৎসনা দেখে বলাই বাহুল্য যে, কেউ কেউ পড়ার জন্য পড়েন; আর কেউ কেউ পড়েন বোঝার জন্য।
ধন্যবাদ।
৩| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:৫৮
সোহানী বলেছেন: এ যুগে কি এখনো দেবদাসের দেখা পাওয়া যায়??? আমিতো ভেবেছি ফেসবুক/টিকটকের কল্যাণে সবাই এখন নতুন সম্পর্কে বিশ্বাসী ............
জীবনকে সহজ গরল করার দায়িত্ব একান্ত নিজের। কেউ সহজ সরল জীবনটাকে প্যচায়ে পুচায়ে একেকার করে। আবার কেউ কেউ কঠিন জীবন অবলীলায় মেনে নিয়ে সহজভাবে জীবন যাপন করে।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:৪৮
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: সোহানী আপু,
এ যুগের 'দেবদাস'রা ডিজিটাল দেবদাস।
পার্বতীদেরকে ফেসবুকে ফেক আইডি দিয়ে স্টক করে আর চন্দ্রমুখীদের সাথে ফ্রেন্ডস উইথ বেনিফিট নামে ঘুরাঘুরি করে।
এযুগে বেশিরভাগ তরুণ-তরুণীদের দ্বারা পৃথিবীতে সবাই সুখি, সবার সবকিছু আছে; কেবল সে ছাড়া।
৪| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:০৪
ডার্ক ম্যান বলেছেন: আপনার এই লার্নিংটুকু হোক যে, অন্যের কাছে গ্রহনযোগ্য হয়ে ওঠার আগে, নিজেকে নিজের কাছে যোগ্য হয়ে উঠতে হবে।
এটাতো নারী পুরুষ দুইজনের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
মারফতি পোস্ট।
আসলে মানুষের লোভ মানুষের জীবনকে জটিল করে তোলে।
স্টুডেন্ট লাইফ বেশির ভাগ ছেলে দেবদাস সিনড্রোমে ভুগে।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:১৬
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ভালো বলেছেন ডার্ক ম্যান।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
৫| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:২৫
মিরোরডডল বলেছেন:
অন্যের কাছে গ্রহনযোগ্য হয়ে ওঠার আগে, নিজেকে নিজের কাছে যোগ্য হয়ে উঠতে হবে।
very well said.
প্রেম সম্পর্ক নিয়ে লিখে বলেই নন্দিনীর লেখাগুলো বেশি ভালো লাগে।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১২:৫১
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ মিরোরডডল আপু।
৬| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১১:২৭
রানার ব্লগ বলেছেন: ব্রেকাপ বা বন্ধন ছিন্ন করা মানেই যদি হয় সম্মুখপানে এগিয়ে যাবার তাগীদ তাহলে সে প্রেম না করাই উত্তম। ভালোবাসবো কিন্তু সময় কে মানতে পারবো না। সম্পর্কের মেয়াদ বেড়ে গেলেই উদবিগ্ন হবো তা হলে বাপু প্রেম টা করতে এলে কি দুঃখে? যুবক কে ভালোবাসলে তাকে সময়ের বাধনে বেধে ফেলা এক ধরনের নিষ্ঠুরতা।
দু দিন হতে না হতেই বিয়ে করো না হলে মাফ করো এমন প্রেমের সংসারে ঝাটার ঝনঝনানি বেশি শোনা যায়। উহা কে সংসার বলে না বলে পুটি মাছের তিমি ভক্ষন।
শিহাব কে বলুন মাজা সোজা করে অন্য আর একটা প্রেমে ঝাপ দিতে।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৫৮
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: আমি কাঊকে কু-পরামর্শ দিই না।
৭| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১২:৩৪
কামাল১৮ বলেছেন: পৃথিবীর সকল নিয়মের মতো ভালো বাসাও শর্তযুক্ত। সহজ ভাবে চিন্তা করলেই জীবন সহজ হয়ে যায়।এই জন্য প্রয়োজন যে অবস্থাই সাননে আসুক তাকে মেনে নেয়া।।বাস্তবের সাথে না মানিয়ে বাস্তবকে নিজের মতো করতে চাওয়াতেই যত রিড়ম্বনা।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৫৯
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: সবার জীবন 'বিড়ম্ভনা' মুক্ত হোক, আমিন।
৮| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সকাল ১১:১৫
রাজীব নুর বলেছেন: আপনি অভিজ্ঞ মানুষ। আপনার দেখার ক্ষমতা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:০১
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: আমি অভিজ্ঞ মানুষ কিনা জানি না, তবে দাবি নিয়ে বলতে পারি; আমি মানবিক মানুষ।
ধন্যবাদ, রাজীব নুর।
৯| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:১৮
প্রামানিক বলেছেন: দুইজনের সমঝোতা ছাড়া এসব সম্পর্ক বেশিদিন টিকে না।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৫৪
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: সমঝোতা ছাড়া ভোটের জোট-ই টিকে না, প্রেম তো তারচেয়েও বেশী গুরুত্বপূর্ণ।
১০| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ১:৩২
অপু দ্যা গ্রেট বলেছেন:
আমি জানি না শিহাব সাহেব আসলে কেমন মানুষ। আপনার লেখা থেকে এটুকু বুঝলাম উনি আসলে ভবিষ্যত নিয়ে তেমন একটা বিচলিত নন। আমার অভিজ্ঞতা বলে মেয়েরা এই টাইপের মানুষদের সাথে একটা সময় পর্যন্ত থাকে কিন্তু বাস্তবতা সামনে আসলেই তারা সেটা থেকে বের হয়।
আর শিহাবরা জানেই না যে আসলে সে তার ভবিষ্যত, পরিবার ও ভালবাসার মানুষটিকে পাওয়ার জন্য কি কি করতে হবে। সম্পর্ক কিভাবে টিকিয়ে রাখতে হবে।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৬
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ঠিক ঠিক, অপু দ্যা গ্রেট।
১১| ১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ দুপুর ২:১৬
নীলসাধু বলেছেন: যাকে বলেছেন সে
এবং সাথে আমরা যারা পোষ্ট পড়েছি তারা যদি বুঝতে পারতাম জীবনটা সত্যি সহজ হয়ে উঠতো। কিন্তু এই বোঝাটাই সহজ নয়, বরং কঠিন অনেক। যে কারণে আমরা অনেকে একটা জীবন কাটিয়ে দেই বোধবুদ্ধিহীন হয়েই।
ভালো থাকুন।
আমি আপনার লেখা আগে পড়িনি।
শুভেচ্ছা রইল।
১৭ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ সন্ধ্যা ৭:২৮
নান্দনিক নন্দিনী বলেছেন: ধন্যবাদ নীলসাধু।
আপনিও ভালো থাকবেন।
©somewhere in net ltd.
১| ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০২৩ রাত ১০:২৬
বিজন রয় বলেছেন: কেমন আছেন?
অনেক দিন পর পোস্ট দিলেন!
আপনার পোস্ট তো তাই ভালো করে পড়ে কথা বলতে হবে..............