![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
"ওরে বাবা!! এতো অভিযোগ! আমি ঠিক দেখতে পাচ্ছি বড় বড় চোখ করে, ঠোঁট ফুলিয়ে একটা বাচচা মেয়ে দাড়িয়ে আছে আমার সামনে। এখনই যদি আদর করে না দেই, তবে ছলছলে চোখ দুটি থেকে বন্যা বইতে শুরু করবে। রেগে গিয়ে একদম ছেলেমানুষ হয়ে যাও তুমি! খুব অসহায় লাগছে নিজেকে...কি করে যে অভিমানী মেয়েটার মান ভাঙাই! আচ্ছা, এবার ফিরে তোমাকে নিয়ে মেঘের দেশে যাবো...কোলে তুলে নিয়ে যাবো পাহাড়ের চূড়ায়। মেঘের ভেলায় ভেসে যাবো দুজনে...
মেয়েটির নাম শৈলী। অর্নবির বড় খালার মেয়ে। এখন নিশ্চয় ভাবছো, "ইশ! নামটাও মনে আছে!" আরে বাবা, সিডনিতে যখন গিয়েছিলাম, প্রথম কয়েকদিন ওখানে থাকতে হয়েছিল। তাই ওর অনুরোধ উপেক্ষা করাটা খুব অভদ্রতা হয়ে যেতো। আর মডেল ফটোশুট শব্দটা ছিল অন্যায় অভিযোগ। কয়েকটা মাত্র ছবি তুলেছিলাম। তবে সেই সুযোগে অন্যান্যদের ছবি তোলার হিড়িকে, সত্যিই মেজাজটা খুব খারাপ হয়েছিল। তবে তখন তোমার গাম্ভীর্য মাখা মুখটার দিকে তাকিয়ে বুঝতেই পারিনি সামনে কি ঘটতে যাচ্ছে। তোমরা মেয়েরাও কিন্তু কম যাওনা!
ঘটনা বুঝতে পারলাম কিছুক্ষণ পর হতে। ফেরার পথে একটি বারের জন্যও হাতটা ধরতে দিলেনা। গলির মুখেই নেমে গেলে গাড়ি হতে। বাড়ি পর্যন্ত ঢুকতেই দিলেনা কিছুতে। খুব অস্থির বোধ হচ্ছিল কেন জানি। রাতে কথা বলতে গিয়ে বুঝলাম ঝড় উঠবে। কারনটা যদিও মাথায় ঢুকেনি। তবে এভাবে ঝড় হতে যে বৃষ্টি হবে কে জানত! কি ভীষণ কান্না করলে তুমি! কিছুই বুঝতে পারিনি আমি...কিসের এতো ভয় তোমার! ঝড়, মেঘেই কাটলো সারারাত। রেগে গিয়ে আমিও উল্টো পাল্টা বলেছি খুব। আর তার শাস্তিও পেয়েছি কঠিন। মনে আছে, টানা চারদিন কথা বলোনি আমার সাথে? প্রথম দুইদিন কষ্ট করে সহ্য করেছি...তারপর আর পারিনি। কতো ভাবেই না চেষ্টা করেছি একটু দেখা করার। জানতাম, অসহায় চেহারার আমাকে দেখে ফেরাতে পারবেনা আমার মায়াবতী।
সব কারসাজি জলে গেলো। শেষ সম্বল ছিল একখানা কবিতা......
"এক রাত্রির বৃষ্টিতে আমি তোমাকেই
ভালোবাসতে চেয়েছিলাম জলকন্যা,
আজন্ম দু'চোখ বরুনে ডেকেছি জলকন্যা
এসো,আমার স্পর্শের দেবালয়ে এসো...
জলকন্যা, তোমাকে পাবো ভেবেই
একখণ্ড মেঘে মুখ গুজে পরে থাকি,
তুমি না এলে, আমি
আর কখনও মুখ তুলবোনা।"
নিচে লিখে দিয়েছিলাম কাঁচের দেয়াল ঘেরা তোমার পছন্দের কফি শপের ঠিকানা।
সন্ধ্যা ছয়টা....ভেবেছিলাম আসবেনা। কিন্তু গিয়ে দেখি ঠিক বসে আছো কোনার দিকের এক টেবিলে। আমার প্রান ফিরে পেলো। ঘুমহীন, কাজলহীন ফোলা ফোলা চোখ...শুধু নাকফুলটা জ্বলজ্বল করছে। একবার তাকিয়েই চোখ ফিরিয়ে নিলে। আমি মুচকি হেসে হাতের উপর হাত রাখলাম। কি করে রাগ করি এই বোকা মেয়েটির উপর! এ যে আমার নন্দিনী....সবার মাঝে শুধু সুখ দিয়ে বেড়ায়। আর আমার জন্য রেখে দেয় বুকের কোনের চিনচিনে এক ব্যথা। একে ছাড়া আমি থাকতে পারিনা, ভাবতে পারিনা....
হুম, ঠিক মনে আছে। কি করে ভুলি শীতের সেই রাত! আমার মুগ্ধতার শুরুতো সেই রাতেই হয়েছিলে। জানো, আজও বুঝে উঠতে পারিনি কি মুগ্ধ করেছিল আমায়! তোমার গান, তোমার বিষণ্ণতা, নাকি শুধুুই তুমি! শুধু মনে হয়েছিল এতো আমার নন্দিনী.....মনে পরে আমাদের প্রথম কথোপোকথন? কফির মগ হাতে আমার অদ্ভুত প্রশ্ন, আর তার উত্তরে ছিল তোমার অবাক দৃষ্টি। সেই দৃষ্টি আমাকে যে কোথায় হারিয়ে নিয়ে গিয়েছিল...মনে হয়েছিল পুরো ছাদটাতে আর কেউ নেই। সবাই চলে যাক...শুধু আমি বসে থাকব তোমার পাশে। তোমার আলতো করে কফির কাপে চুমুক দেয়া দেখব...আর দেখবো তোমার বিষণ্ণতা।
একটা সিক্রেট বলি? সেদিন না কফিতে চুমুক দেয়া তোমার ভেজা ঠোঁট আঙুল দিয়ে ছুঁয়ে দিতে খুব ইচ্ছে করছিলো। নির্লজ্জ ভাবছো তাইনা? হা হা হা....ভাবতে থাকো। জানো, কদিন ধরে সেইদিনের সেই অদম্য ইচ্ছেটা আমার আবার জেগে উঠছে। আর আমি যে কি ভীষণ কষ্ট করে সেই ইচ্ছেটা দমিয়ে রাখি, তা আমার অভিমানী যদি জানত!"
ইতি
"ছেলেটি"
পরবর্তী পোস্ট:
উড়ো চিঠি - সাত
পূর্ববর্তী পোস্ট:
উড়ো চিঠি - পাচ
২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৫:০৫
নুদরাত নিসা বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১০:৪৪
ঋতো আহমেদ বলেছেন: সবার মাঝে শুধু সুখ দিয়ে বেড়ায়। আর আমার জন্য রেখে দেয় বুকের কোনের চিনচিনে এক ব্যথা। -- খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন ভালবাসার ব্যাথার কথা।