নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যতদিন মানুষের আশা থাকে, ততোদিন কিছুই ফুরায় না। আশা ফুরাইলে, সব ফুরাইলো.....

নুদরাত নিসা

নুদরাত নিসা › বিস্তারিত পোস্টঃ

উড়ো চিঠি - আট

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১:১৪

"হায়রে বোকা মেয়ে! ! অন্ধকারকে, কেউ বুঝি এতো ভয় পায়! আমার তো ভীষণ ভালোলাগে। শুধু দুর হতে এক ফালি চাঁদের আলো এসে চুপটি করে তোমার গালে বসবে..আমি সেই আলোতে তোমাকে দেখবো....কি অদ্ভূত ঐশ্বরিক লাগছে তোমাকে! চোখ বন্ধ করলে ঠিক দেখতে পারছি তোমার সেই রূপ। মানুষ এতো সুন্দর হয় কি করে!! আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করছে," এ শুধু আমার, শুধুই আমার......"। সেই অন্ধকারে তোমার কোমল হাত আমি শক্ত করে ধরে রাখবো। তুমি চাইলেও আর আলগা করবো না। যত অন্ধকারই হোক আমি তোমায় ঠিক খুঁজে নেবো....কখনও হারিয়ে যেতে দেবোনা।

ছাতা নিয়ে বের না হওয়ার অভ্যেসটা তোমার কখনওই যাবেনা, তা যতই নিউমোনিয়ায় ভুগো না কেন! ঝুম বৃষ্টির দিনেও, কয়েক মূহুর্তের জন্যও যদি বৃষ্টি থেমে যায়, তুমি সবার কথা অগ্রাহ্য করেই দিব্বি খালি মাথায় বাইরে বেরিয়ে পরো! কবে যে শুধরাবে তুমি! শেষ বার কি ভীষণ জ্বর বাধিয়েছিলে, মনে পরে? আমার উপর রাগ করে ছাতাটা না নিয়েই হনহন করে বেড়িয়ে গেলে...এতো রাগ তোমার! আমিও জেদ করে কফি হাউসেই বসে ছিলাম। পুরো তিন কাপ শাবার করার পর মাথাটা কিছুটা ঠাণ্ডা হলো, তখনই দেখলাম টেবিলের উপর অসহায় তোমার ছাতাটা পরে আছে। দৌড় দিয়ে বেড়িয়েও তো কোনও লাভ নেই, অলরেডি ত্রিশ মিনিট পার হয়ে গেছে....ফোনটাও বন্ধ। অগত্যা রওনা দিলাম তোমার বাড়ির দিকে। ছাতা ফেরত দেয়ার নাম করেও তো অন্তত তোমার দেখা পাবো।

গেট খুলেই তোমার বাবার গম্ভীর মুখ দর্শন করলাম। ঠিক পেছনে আশি শতাংশ ভেজা শরীরে তুমি দাঁড়িয়ে...ভদ্রলোকের চেহারা দেখে মনে হলো তার মেয়ের এই সিক্ত দশার পুরো দায়ভার আমার, এবং ছাতা ফেরত দিতে আসাটাও মহা পাপ! যাই হোক আমিও সব দায়ভার মাথায় নিয়ে নত মুখে ভিতরে এসে বসলাম। তুমি অবশ্য করুনা করে একটা তোয়ালেও দিয়েছিলে, আমার ভেজা চুল মুছতে। রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে নেমেছিলাম বলে হালকা ভিজে গেছিলাম। তোমার মায়ের মিষ্টি অনুরোধের গরম চা অগ্রাহ্য করার ইচ্ছে না থাকা সত্তেও, তোমার উপর অভিমান, আর তোমার বাবার কঠিন চোখের বাঁকা চাহনি, পাঁচ মিনিটের বেশি বসতে দেয়নি আমাকে। বিয়ের পর শ্বশুর সাহেব খুব ভোগাবেন বোঝা গেলো!রেগে গেলে নাকি আবার?

যাই হোক, মেজাজটা খুব খারাপ লাগছিল। রূমে ঢুকেই গোসল সারলাম অনেকক্ষন ধরে। একটু ঠান্ডা হলাম, শরীর আর মাথা দু দিক দিয়েই। তবু নিত্য দিনের রূটিনের মতো, ঘুমানোর আগে আর ফোন দেইনি সেদিন তোমাকে। যদিও সেদিনের রাত্রিটা খুব বেশি দীর্ঘ মনে হয়েছিল। মধ্য রাতে অর্নবির ফোন পেয়ে কেমন জানি আঁতকে উঠেছিলাম। ফোন ধরতেই ওর উদ্বেগ মাখা কন্ঠ, " তোমার জলকন্যা হসপিটালে....."। মাথা কাজ করছিল না। ঠিক শুনেছি কি? বুকের ভেতর কেমন চিনচিনে ব্যথা শুরু হলো। জানো, অন্য কিছু ভাবনা হয়নি...শুধু মনে হয়েছিল তুমি ছাড়া আমি থাকবো কি করে! তক্ষুনি ছুটে যেতে ইচ্ছে করছিল। তবু ভোরের অপেক্ষা না করে উপায় ছিলোনা আমার। ভোরের আলোর জন্য কখনও এভাবে অপেক্ষা করিনি আমি...

কেন এতো ভয় তোমার? আমিতো সবসময় তোমার কাছেই থাকি, পাশেই থাকি.....তুমি কি আমাকে দেখতে পাওনা? অনুভব করতে পারোনা? এইতো আমি, তোমার হাত শক্ত করে ধরে আছি। আমি আমার জলকন্যাকে কখনও হারিয়ে যেতে দেবোনা....ওকে হারালে যে, আমি আমাকেই হারাবো। আমি এই আমাকে, শুধু এই গভীর ছলছলে চোখ দুটোতে সপষ্ট দেখতে পাই। এই বুকটার ভেতরে, আমার জন্য যতো ভালোবাসা লুকিয়ে আছে, তা আমি আর কোথায় পাবো! আমার জলকন্যা ছাড়া আমি শূন্য, আমার পৃথিবী অন্ধকার অমানিশা ......"

ইতি
"ছেলেটি "

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৬ রাত ৩:৫৫

শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: ভালো লিখেছেন।
লিখতে থাকুন এবং অন্য পড়েতে থাকুন। শুভ ব্লগিং

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:২৭

নুদরাত নিসা বলেছেন: ধন্যবাদ :)

২| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৬ বিকাল ৩:১৮

ঋতো আহমেদ বলেছেন: ভাল লাগল

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৬ রাত ২:২৭

নুদরাত নিসা বলেছেন: ধন্যবাদ :)

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.