নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

গান্ধী পরিবারের উজ্জল নক্ষত্র, ভারতের সপ্তম প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ৭৩তম জন্মবার্ষিকীতে শুভেচ্ছা

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:০৮


ইন্দিরা গান্ধী ও ফিরোজ গান্ধীর জ্যৈষ্ঠ পুত্র ভারতীয় কংগ্রেস পার্টির সাবেক সভাপতি এবং ভারতের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী প্রায়াত রাজীব গান্ধী। ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে কংগ্রেস আর গান্ধী পরিবারের নাম। জওহরলাল নেহরু, ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী প্রত্যেকেই ভারতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রেখেছেন অবিস্মরণীয় ভূমিকা। গান্ধী পরিবারের উজ্জল নক্ষত্র রাজীব গান্ধী তাদের অন্যতম। ১৯৮৪ সালের ৩১ অক্টোবর মায়ের মৃত্যুর দিন তিনি মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে ভারতের কনিষ্ঠতম প্রধানমন্ত্রীরূপে কার্যভার গ্রহণ করেন এবং ১৯৮৯ সালের ২রা ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে পরাজয়ের পর পদত্যাগ করার আগে পর্যন্ত তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া ১৯৯১ সাল পর্যন্ত রাজীব গান্ধী ছিলেন ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি। ১৯৪৪ সালের আজকের দিনে তিনি ভারতের মুম্বাইয়ে জন্মগ্রহণ করেন। আজ রাজীব গান্ধীর ৭৩তম জন্মবার্ষিকী। ভারতের সর্বকনিষ্ঠ রাস্ট্রপতি রাজীব গান্ধীর জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।

রাজীব গান্ধী ১৯৪৪ সালের ২০ আগস্ট ব্রিটিশ ভারতের বোম্বাই (অধুনা মুম্বাই) শহরে বিশিষ্ট রাজনীতিক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ফিরোজ গান্ধী এবং মাতা ইন্দিরা নেহেরু। ইংলান্ডে থাকাকালীন ইন্দিরা এবং ফিরোজ পরস্পরের প্রতি আকৃষ্ট হন এবং ফিরোজের পার্সি ধর্মাবলম্বী হবার কারণে প্রাথমিক ভাবে জওহরলাল নেহরুর তরফ থেকে আপত্তি থাকা স্বত্তেও ১৯৪২ সালের মার্চে তাঁরা বিবাহ করেন। ১৯৪৪ সালে যখন তাঁর পিতা, মাতা উভয়েই প্রায়ই ইংরেজের কারারুদ্ধ হচ্ছিলেন তখন তাঁর জন্ম হয়। ১৯৬০ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হযে ফিরোজের মৃত্যু হয়। পিতার মৃত্যু কালের মধ্যেই গান্ধী, প্রাথমিক ভাবে বেসরকারী আবাসিক বিদ্যালয় ওয়েলহাম বয়'স স্কুল, ও পরে দ্য দুন স্কুলে চলে যান। 'এ লেভেল', এই স্তরের পড়া-শোনার জন্য ১৯৯১ সালে তাঁকে লন্ডনে পাঠানো হয়। ১৯৬২ সালে তিনি কেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার সুযোগ পান। ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত রাজীব কেমব্রিজে ছিলেন এবং কোনো ডিগ্রী ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয় পরিত্যাগ করেন। ১৯৬৬ সালে তিনি লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজে ভর্তি হবার সুযোগ পান এবং এক বছর পরেই আবার তিনি কোনো ডিগ্রী ছাড়াই ইম্পেরিয়াল কলেজ পরিত্যাগ করেন।

১৯৬৫ সালে কেমব্রিজের ভার্সিটি রেস্তোরায় সোনিয়া মাইনের সঙ্গে পরিচয় হয় রাজীব গান্ধীর। সোনিয়া তখন লেন্নোক্স স্কুল অফ ল্যাঙ্গুয়েজে ইংরাজি নিয়ে পড়া-শোনা করছিলেন এবং ভার্সিটি রেস্তোরায় একজন সহকারিনী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মাইন এর পরিবার তাদের বিয়েতে রাজি না হওয়ায় সো্নিয়া মাইন গান্ধীর সঙ্গে ভারত বর্ষে চলে আসেন এবং ১৯৬৮ সালে তাঁদের বিবাহ হয়। ১৯৬৭ সালে তাঁর মা যখন ভারতের প্রধানমন্ত্রী তখন রাজীব ইন্ডিয়ান এয়ার্লাইন্সে একজন পেশাদার বিমানচালক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭০ সালে তাঁর স্ত্রী তাঁদের প্রথম সন্তান রাহুল গান্ধীর এবং ১৯৭২ সালে তাঁদের দ্বিতীয় সন্তান প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর জন্ম দেন। রাজীব গান্ধি কখনই রাজনীতিতে আগ্রহ প্রকাশ করেননি এবং নিয়মিত ভাবে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নিবাসে তাঁর মায়ের সঙ্গেও বসবাস করতেন না। গান্ধী রাজনীতিতে নিরুত্সাহী হলেও, তাঁর কনিষ্ঠ ভ্রাতা সঞ্জয় তাঁদের মায়ের একজন নিকট পরামর্শদাতা হয়ে উঠেছিলেন। ১৯৮০ সালে সঞ্জয়ের মৃত্যুর পর তাঁর মা এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস পার্টির রাজনীতিকদের দ্বারা তাঁকে রাজনীতিতে প্রবেশ করার জন্য রাজি করানোর চেষ্টা করা হয়। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী উভয়েই এই প্রস্তাবের বিরোধিতা করেন এবং প্রকাশ্যেই জানান যে তিনি তাঁর ভাইয়ের আসন থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করবেন না। তা সত্বেও, ঘটনাচক্রে ১৯৮১ সালের ফেব্রুয়ারীতে তাঁর ভাইয়ের উত্তর প্রদেশ রাজ্যের আমেথি লোকসভা (সংসদীয়) কেন্দ্র থেকে তাঁর প্রতিদ্বন্দী লোকদল নেতা শরদ যাদব কে ২০০,০০০ এর ও বেশি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে নির্বাচিত হয়ে গান্ধী তাঁর মায়ের একজন গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক উপদেষ্টা হয়ে ওঠেন এবং শীঘ্রই তিনি 'যুবো কংগ্রেস' কংগ্রেস পার্টির যুবো শাখার সভাপতি মনোনীত হন।

১৯৮৪ সালের ৩১শে অক্টোবর যেদিন ইন্দিরা গান্ধী তাঁর দুই শিখ দেহরক্ষীদের দ্বারা নিহত হন সেদিন রাজীব গান্ধী পশ্চিম বঙ্গে ছিলেন। তাঁর মায়ের হত্যা-কান্ডের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই উচ্চ পর্যায়ের কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ এমনকি রাষ্ট্রপতি জৈল সিং ও তাঁকে প্রধানমন্ত্রী হবার জন্য চাপ দিতে থাকেন। বাধ্য হয়ে তিনি মাত্র চল্লিশ বছর বয়সে ভারতের কনিষ্ঠতম প্রধানমন্ত্রীরূপে কার্যভার গ্রহণ করেন। গান্ধী ভারতের সমাজতান্ত্রিক নীতি ও সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বন্ধুত্যপুর্ণ সম্পর্কের কারণে দীর্ঘ সংকটাদীর্ণ ভারত-মার্কিন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নতি এবং অর্থনৈতিক ও বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার প্রসার সাধন করেন। ১৯৮৮ সালে রাজীব গান্ধী প্রশাসন মালদ্বীপের সামরিক অভ্যুথান ব্যর্থ করে দিয়ে পিপলস লিবারেশন ওর্গনাইজেশোন অফ তামিল ইলমের (PLOTE) মতো অন্য একটি জঙ্গি তামিল গোষ্ঠীর সঙ্গেও শত্রুতা সৃষ্টি করেছিল। এই শত্রুতার জের ধরে ১৯৯১ সালের ২১ মে শুধুমাত্র বিরোধের জের ধরে দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যের শ্রীপেরামবুদুরে আত্মঘাতী বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় রাজীব গান্ধীকে। পতন হয় একটি নক্ষত্রের। ভারতের ইতিহাসে এই হত্যাকাণ্ড রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ড নামে পরিচিত। বোমা বিস্ফোরণে রাজীব ছাড়াও আরও ১৪ জন নিহত হয়েছিলেন। এই হত্যাকান্ডটি একজন স্থানীয় চিত্রগ্রাহকের ক্যামেরায় ধরা হয়ে থাকে যেটি পরে ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া যায়। চিত্রগ্রাহকও ওই বিস্ফোরণে প্রাণ হারায় কিন্তু ক্যামেরা টি অক্ষত ছিল।

রাজীব হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থলে রাজীব গান্ধী স্মৃতি স্তম্ভ গড়ে তলা হয়েছে এবং এই ছোট শিল্প নগরীটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থান হয়ে উঠেছে। তাঁর অন্তেষ্ঠী স্থানটিতে বীর ভূমি নামে একটি স্মারক স্তম্ভ গঠিত হয়ছে। হায়দ্রাবাদে নির্মিত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটি রাজীব গান্ধীর নামে নামাঙ্কিত করা হয়েছে এবং সেটির উদ্বোধন করেন UPA এর সভাপতি সোনিয়া গান্ধী। আজ ২০ আগস্ট রাজীব গান্ধীর ৭৩তম জন্মবার্ষিকী। ভারতের সর্বকনিষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
সম্পাদনাঃ নূর মোহাম্মদ নূরু

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:২৪

অনল চৌধুরী বলেছেন: একটা চোর আর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা লাগনো ব্যাক্তি উজ্জ্বল নক্ষত্র হয় কিভাবে?এতকিছু জানেন আর এটা জানেন না?

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৩৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
6 কে উল্টা করে ধরলে 9 দেখা যায়,
আমি দেখছি ছয় আপনি দেখেন নয়।
কেউ অর্ধেক গ্লাস পানি দেখে কেউ দেখে অর্ধেক খালি।
সুতরাং দেখার ভিন্নতা থাকতেই পারে।
আমি সর্বদা পজেটিভ দেখতে পছন্দ করি।
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

২| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৫

রাজীব নুর বলেছেন: তথ্যসুত্র কোথায়?

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তথ্যসূত্র লিখতে গেলে লেখার চেয়ে সূত্রই বেশেী হবে।
বিভিন্ন পত্রিকা, সাময়িকি এবং তাঁর জীবনী গ্রন্থে এসব তথ্য পাবেন ।
ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্যের জন্য।

৩| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৪৯

দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: চমৎকার একটি পোস্ট।






ভালো থাকুন নিরন্তর। ধন্যবাদ।

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৪:৪১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ দেশ প্রেমিক বাঙ্গালী
উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য।

৪| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৩:৫৯

ডার্ক ম্যান বলেছেন: ভারত এক সময় তামিল টাইগারদের নানা ভাবে সহায়তা করেছিল। রাজীব গান্ধী সম্ভবত তার রাশ টেনে ধরেছিলেন এবং তামিল টাইগারদের বিরুদ্ধে লংকান সরকারকে সহযোগিতা করেছিলেন । তার জের ধরে তামিল টাইগার তাকে হত্যা করে। হত্যাকারীর নাম বোধহয় নলিনী ছিল । আমার তথ্য ভুল হলে বলবেন। ইদানীং তথ্য বিভ্রাট বেশি হচ্ছে ।
পোস্টের জন্য ধন্যবাদ

২০ শে আগস্ট, ২০১৭ বিকাল ৫:২১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন: ধন্যবাদ ডার্ক ম্যান আপনার মন্তব্যের জন্য
"বিরোধী দলের নেতা থাকাকালীন ১৯৯০ সালে সানডে ম্যাগাজিন এর ২১শে আগস্ট সংখ্যায় রাজীব গান্ধী একটা সাক্ষাৎকার দেন। সেই সাক্ষাৎকারে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরবর্তী নির্বাচনে যদি তিনি প্রধানমন্ত্রীত্ব পান তাহলে শ্রীলঙ্কায় আবার ইন্ডিয়ান শান্তিরক্ষী বাহিনী পাঠানো হবে। এই সাক্ষাৎকার প্রকাশ হবার পরপরই লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম মরিয়া হয়ে উঠে রাজীব গান্ধীকে হত্যা করার জন্য কারন সে সময় সব জরিপেই রাজীব গান্ধী এগিয়ে ছিলেন। এল টি টি ই হিসাব করে দেখেছিল যে রাজীব গান্ধীর কংগ্রেস ক্ষমতায় আসলে ইন্ডিয়ান শান্তিরক্ষী বাহিনী এসে যোগ দিবে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর সাথে। কঠিন হয়ে যাবে তাদের যুদ্ধ। সাথে যোগ হয়েছিল আগের পুষে রাখা ক্ষোভ। এর কারণ ইন্দিরা গান্ধী প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় এল টি টি ইকে সমর্থন দিয়েছিলেন। এল টি টি ইর জঙ্গীরা প্রশিক্ষণ পেত ইন্ডিয়ান গোয়েন্দাদের কাছে। ইন্দিরা গান্ধী মারা যাবার পর রাজীব গান্ধী প্রধানমন্ত্রী হন। সে সময় এল টি টি ই বেশ লাগামছাড়া হয়ে গিয়েছিলো। ইন্ডিয়ান অফিসিয়ালদের তোয়াক্কা করত না তারা। তার উপর ‘গেরিলা মনোভাব’ ও ‘সব তামিলদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের বীজ’ বপন করা শুরু করেছিল ইন্ডিয়ার তামিল নাড়ুতে বসবাসকারী তামিলদের মধ্যেও। রাজীব গান্ধীর প্রশাসন তাই ঠিক করেছিল লাগাম টেনে ধরার। বন্ধ করে দিয়েছিলো অর্থ ও অস্ত্র সরবরাহ ।এতেও এল টি টি ই নেতা প্রভাকরণের ঔদ্ধত্য না কমলে পাঠিয়ে দেয়া হয় ইন্ডিয়ান শান্তিরক্ষী বাহিনী। এল টি টি ই এটাকে দেখেছিল বিশ্বাসঘাতকতা হিসেবে। চাচ্ছিল বদলা নিতে।

তারিখ ১৯৯১ সালের ২১শে মে রাজীব গান্ধীর হত্যাকারী এলটিটিই জঙ্গী তেনমোঝি রাজারত্নমের আত্মঘাতী বোমার হামলায় নিহত হন রাজীব। তেনমোজি রাজারত্নমের অপর নাম ছিল ধানু। পরবর্তীকালে আত্মঘাতী বোমারুর প্রকৃত নাম জানা যায় গায়ত্রী। ধানু ছিল শ্রীলংকার লিবারেশন টাইগার্স অব তামিল ইলম (এলটিটিই) বাহিনীর আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য। সে শ্রীলঙ্কা থেকে নৌ-পথে দুই মাস আগে এল টি টি ই প্রধান ভেলুপিল্লাই প্রভাকরণের নির্দেশে ভারতের মাদ্রাজ (এখনকার চেন্নাই) শহরে আসে রাজীব গান্ধীকে হত্যা করার জন্য।

রাজীব গান্ধী সমর্থক পরিবেষ্টিত হয়ে ১০টার দিকে মঞ্চের দিকে এগিয়ে যান। অনেক সমর্থক তাকে মালা পরিয়ে দিতে থাকে। একসময় ধানুও এগিয়ে যায়। আনুসয়া কুমারী কি মনে যেন ধানুকে বাঁধা দেন। রাজীব গান্ধীর নজর পরে সেই দিকে। তিনি আনুসয়া কুমারীকে ইশারা করেন ধানুকে আসতে দিতে। আনুসয়া কুমারী সরে দাঁড়ান, ধানু রাজীব গান্ধীর কাছে পৌঁছে তাকে মালা পরিয়ে দেয়। একটু দূর থেকে এর ছবি তুলে হারিবাবু। মালা পরিয়ে দিয়ে ধানু রাজীব গান্ধীকে প্রণাম করার জন্য নিচু হয় এবং পোষাকের নিচে বাধা ৭০০ গ্রাম ওজনের আরডিএক্স ভর্তি বেল্টটি ফাটিয়ে দেয়। বিস্ফোরণের আঘাতে রাজীব গান্ধীর দেহ দুই মিটার দূরে ছিটকে যায়, মৃত্যু হয় তাৎক্ষণিক। ধানুর শরীরও ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। মাথা যেয়ে পরে ২৪ মিটার দূরে। আরও মারা যায় চৌদ্দজন মানুষ যার মধ্যে হারিবাবু একজন। হারিবাবু হয়তো শুধু জানতো ধানু প্রণাম করে চলে আসবে। হারিবাবুর প্রাণ চলে যায় বিস্ফোরণের আঘাতে, কিন্তু তার ক্যামেরায় প্রাণ থেকে যায়। ইন্ডিয়ার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা পরে সেই ক্যামেরার ফিল্ম ডেভেলপ করে বিস্ফোরণের ঠিক আগ মুহূর্তের কয়েকটা ছবি পায়।

৫| ২০ শে আগস্ট, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৪

লাডল্লা পোলা বলেছেন: শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারনে গান্ধী পরিবার বারবার প্রাণ দিয়েছে।
ভালো লাগলো। অজানা অনেক কিছু জানতে পারলাম।

২১ শে আগস্ট, ২০১৭ দুপুর ১:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
রাজনীতি এক সময় ছিলো রাজাদের
এখন এটা চলে গেছে ব্যাবসায়ীদের নিয়ন্ত্রণে,
তাই এত হানাহানি !

৬| ২৩ শে আগস্ট, ২০১৭ সকাল ৮:০৮

সোহানী বলেছেন: হাঁ, রাজিব ছিল সত্যিকারের আধুনিক নেতা। তবে মায়ের মতো বোকামীই তিনি করেছেন। যেখানে গোয়েন্দা সংস্থা তাঁর মাকে সাবধান করেছিল শিখদের ব্যাপারে তেমনি তাঁকে সাবধান করেছিল তামিলদের ব্যাপারে। কিন্তু কেউই কথা শুনেনি, আত্ববিশ্বাস বেশী ছিল উভয়ের।

ভালোলাগলো এবং সবসময় ভালোলাগে আপনার এ ধরনের সিরিজগুলো..........

৭| ২৬ শে আগস্ট, ২০১৭ রাত ২:১৪

অনল চৌধুরী বলেছেন: 6 কে উল্টা করে ধরলে 9 দেখা যায়,
আমি দেখছি ছয় আপনি দেখেন নয়।
কেউ অর্ধেক গ্লাস পানি দেখে কেউ দেখে অর্ধেক খালি।
সুতরাং দেখার ভিন্নতা থাকতেই পারে।
আমি সর্বদা পজেটিভ দেখতে পছন্দ করি-আপনার এই যুক্তি অনুযায়ী স্বৈরশাসন,গণহত্যা,নারী নির্যাতন,চুরি,দুর্নীতি পৃথিবীর সব অপকর্মই বৈধ।
জেনে রাখবেন, অপরাধ আর অপরাধীদের কোন যুক্তি দিয়েই অব্যহতি দেয়া যায়না।রাজীব গান্ধী বেচে থাকলে বোফর্স দুর্নীতির দায়ে জেলে যেত।অার ১৯৯০ সালে সমর্থন প্রত্যাহার করে ভিপি সিং সরকারের পতন ঘটিয়ে সে বাবরী মসজিদ ভাঙ্গার সুযোগ করে দিয়েছিল।সেইসময় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাও হয়েছিল তার ইন্ধনে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.