নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বিংশ শতাব্দীর অন্যতম প্রভাবশালী জার্মান ভাষার উপন্যাস ও ছোটগল্প লেখক ফ্রান্ৎস কাফকা। কাফকাকে বিংশ শতাব্দীর অন্যতম সাহিত্যিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কাফকা অস্তিত্ববাদ তত্ত্বকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছিলেন। তাঁর অধিকাংশ কাজগুলো যেমন- “ডি ভারভাণ্ডলাঙ্গ”(রুপান্তর),”ডের প্রোজেন্স”(পথানুসরণ), “ডাস স্কোলস”(দুর্গ)ইত্যাদির বিষয়বস্তু এবং আদর্শিক দিক মূলত বিচ্ছিন্নতাবোধ, শারীরিক এবং মানসিক নিষ্ঠুরতা, অভিবাবক-সন্তান সম্পর্কের সংঘর্ষ, আতঙ্কজনক উদ্দেশ্য চরিতার্থে ব্যস্ত চরিত্র, মানবজীবনে আমলাতান্ত্রিক হস্তক্ষেপ এবং রহস্যময় রূপান্তর এসব বিষয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। তাঁর বিখ্যাত গল্প দ্য ম্যাটাফরসিসের খ্যাতি ও পাঠকপ্রিয়তা আজও বিশ্বে অম্লান। একইভাবে অন্য বইগুলোও সমান মর্যাদায় রয়েছে যেমন দ্য ট্রায়াল, দ্য ক্যাসল প্রভৃতি। লেখক জীবনের একটি সময়ে তিনি কমিউনিজমের প্রতি আকৃষ্ট হন। তাঁর জীবদ্দশায় খুব অল্প লেখাই প্রকাশিত হয়েছে। অনেক লেখাই তিনি নিজে ধ্বংস করে যেতে চেয়েছিলেন। মৃত্যুর আগে এমন একটি চিন্তা তাঁর মাথায় এলে বন্ধু ম্যাক্স ব্রড সেগুলো সংরক্ষণ করেন, যা তাঁর মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়। ১৯২৪ সালের আজকের দিনে অস্ট্রিয়ার কারলিংএ মৃত্যুবরণ করেন কথা সাহিত্যিক ফ্রান্ৎস কাফকা। আজ এই লেখকের ৯৪তম মৃত্যুৃবার্ষিকী। জার্মান ভাষার উপন্যাস ও ছোটগল্প লেখক ফ্রান্ৎস কাফকার মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
ফ্রান্ৎস কাফকা ১৮৮৩ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সম্রাজ্যের প্রাগ (প্রাহা) (বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্রের রাজধানী) শহরের ‘ওল্ড টাউন স্কয়ারে’ একটি মধ্যবিত্ত জার্মান-ইহুদী জার্মানভাষী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা হারমেইন কাফকা এবং মা ইয়ুলি কাফকা। হারমেইন এবং জুলির ছয়টি সন্তানের মধ্যে ফ্রান্ৎস কাফকা ছিলেন জ্যেষ্ঠ সন্তান। ফ্রানৎসের বয়স ছয় হওয়ার আগেই তাঁর অন্য দুই ভাই গেয়র্গ ও হেইনরিখ একদম শিশু বয়সেই মারা যান। এরপর জন্ম নেন ফ্রানৎসের তিন বোন: গ্যাব্রিয়েল, ডাকনাম এলি (১৮৮৯-১৯৪১); ভ্যালেরি, ডাকনাম ভাল্লি (১৮৯০-১৯৪২); ওটলি, ডাকনাম ওট্লা, আমৃত্যু বড় ভাই ফ্রানৎস কাফকার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠজন ছিলেন এই ওট্লা (১৮৯২-১৯৪৩)। তিন বোনের মৃত্যুসন দেখে নিশ্চয়ই আর বলতে হয় না যে এঁরা তিনজনই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে নাৎসি বন্দিশিবিরে প্রাণ হারান। ফ্রান্ৎস কাফকার পিতা হারমেইন কাফকা প্রথম দিকে প্রাগ শহরের রাস্তায় ফেরি করে বিভিন্ন জিনিস বিক্রয় করলেও পরে তিনি একটি পোশাকের দোকান দেন যেখানে তিনি প্রায় ১৫ জন বিক্রয় কর্মী নিয়োগ দেন। কাফকার মা জুলি ছিলেন এক বিখ্যাত পোশাক বিক্রেতার মেয়ে যিনি ফ্রান্ৎস কাফকার বাবা হারমেইন কাফকার চেয়ে অধিকতর শিক্ষিত ছিলেন। তাঁর ছোটবেলা কেটেছে অনেকটা নিঃসঙ্গভাবে। তাঁর বাবা ছিলেন একজন কঠিন প্রকৃতির ব্যবসায়ী। বাবার সঙ্গে চিন্তা-ভাবনার কোনো মিল না থাকায় দূরত্ব বেড়েছিল ফ্রান্ৎস কাফকার । কাফকা ১৮৮৯ থেকে ১৮৯৩ সাল পর্যন্ত প্রাগের তখনকার মাসনা স্ট্রিটে ‘জার্মান বয়েজ এলিমেন্টারি স্কুলে’ পড়াশোনা করেন। ১৮৯৩-এ এলিমেন্টারি স্কুল ছেড়ে কাফকা প্রাগের ওল্ড টাউন স্কোয়ারের ওপর অবস্থিত কিন্স্কি প্যালেসেজার্মান মাধ্যমিক স্কুলে ভর্তি হন। ১৯০১-এ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়ে কাফকা প্রাগের জার্মান কার্ল-ফার্দিনান্দ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। শুরু করেন রসায়নে, কিন্তু দুই সপ্তাহ পরে বাবার ইচ্ছায় আইনের ছাত্র হয়ে যান। ১৯০৬ সালের ১৮ জুলাই তিনি আইনশাস্ত্রে ডক্টরেট ডিগ্রি পান এবং এর পরে এক বছর আদালতে বাধ্যতামূলক বেতনহীন ক্লার্কের চাকরি করেন।
শিক্ষা জীবনের ইতি টেনে কর্মজীবনে কাফকা মোট দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। প্রথম চাকরিটি ছিল এক ইতালিয়ান বিমা কোম্পানি Assicurazioni Generali-তে। ১৯০৭ সালের ১ নভেম্বর থেকে ১৯০৮-এর ১৫ জুলাই পর্যন্ত ইতালিয়ান এই কোম্পানির প্রাগের অফিসে। ১৫ জুলাই ১৯০৮-এ চাকরি থেকে পদত্যাগ করার দুই সপ্তাহ পরে তিনি সরকারি বিমা প্রতিষ্ঠান Workers’ Accident Insurance Institute for the Kingdom of Bohemia-তে যোগ দেন। কাফকার বাবা তাঁর ছেলের এই চাকরিকে Brotberuf বা ‘রুটির চাকরি’ বলে খোঁটা দিতেন; অসংখ্য লেখায় কাফকা নিজেও অফিস-জীবনের অনেক কিছু নিয়ে তাঁর মনঃকষ্টের কথা বলে গেছেন। ১৯১৫ সালে তাঁর যুদ্ধে যাওয়ার ডাক আসে, কিন্তু আগেই যেমন বলা হয়েছে, সরকারি কাজে তাঁর প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে অফিস তাঁকে যুদ্ধে যাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেয়। পরে অবশ্য, ১৯১৭ সালে, তিনি নিজেই কিছুটা যুদ্ধক্ষেত্রের প্রতি রোমান্টিসিজম ও কিছুটা রহস্যময় এক কারণে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার আগ্রহ দেখান। কিন্তু তত দিনে যক্ষ্মার কারণে ডাক্তারি দৃষ্টিকোণ থেকেই সেনাবাহিনী তাঁকে নিতে অপারগতা জানিয়ে বসে। ফ্রানৎস কাফকা জীবনের শেষ দিকে যখন কপর্দকশূন্য মেয়ে ইউলি ওরিৎসেককে বিয়ে করতে চাইলেন, তাঁর বাবা তখন খেপে গেলেন। কাফকার ভাষায়, তাঁর বাবা তাঁকে বললেন: ‘মেয়েটা খুব সম্ভব তার ব্লাউজ একটুখানি উঠিয়েছে, প্রাগের ইহুদি মেয়েগুলো যেভাবে ওঠায় আর কি, আর তুমি? তুমি মজে গেলে, ঠিক করলে ঐ মুহূর্তেই তাকে বিয়ে করবে। বাবার কর্তৃত্ব থেকে মুক্তির জন্য কাফকা পথ হিসেবে দেখতেন নিজের ক্যারিয়ারকে। বাবার হাত থেকে পালানোর আরেকটি রাস্তা হচ্ছে ‘সাহিত্য’। কাফকা স্বীকার করেছেন, সাহিত্যের মধ্যে সত্যিই কিছুটা হলেও তাঁর সান্তনা মিলেছিল। কর্তৃত্বপরায়ণ বাবার মূর্তি আমরা কাফকার অন্যতম বিখ্যাত দুটো গল্প ‘রায়’ ও ‘রূপান্তরের মধ্যে পাই ’। প্রথমটিতে ছেলে বিয়ে করে স্বাধীন হতে চাইলে তাঁর বুড়ো বাবা তাঁকে তাঁর বিয়ের পাত্রী নিয়ে ওভাবেই খোঁটা দেন, যেভাবে হারমান তাঁর ছেলেকে দিয়েছিলেন, যেমনটা উপরে বলা হয়েছে, সে ইউলি ওরিৎসেককে বিয়ে করতে চাইলে। গল্পের মধ্যে, পরে এই বাবা ছেলেকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। আর দ্বিতীয় গল্পটিতে ছেলে পোকা হয়ে গেলে বাবাই একসময় তার গায়ে একটা আপেল ছুড়ে মেরে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।
ফ্রানৎস কাফকার লেখায় সব বিচিত্র ও উদ্ভট ঘটনা ঘটে এমনভাবে, যেন ওগুলোতে অস্বাভাবিকতার কিছু নেই। বিচিত্র, আপাত-অর্থহীন, মানসিক ও শারীরিক নৃশংসতার ঘটনা অবলীলায় ঘটে যেতে থাকে কাফকার গল্পের পরে গল্পে, বারবার মনে হয়, সবটা দুঃস্বপ্নে ঘটছে, সবটাতে গল্পের চরিত্রেরা যেন অন্ধকারের মধ্যে হাতড়ে বেড়াচ্ছে তাদের জীবনের মানে, কিংবা খুঁজে ফিরছে খোদার সাহায্যের হাত, মালিকের অনুগ্রহ বা শাসকের কৃপাদৃষ্টি। নাকি পুরোটাই ঠাট্টা, নাকি পুরোটাই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে-পরের ইউরোপিয়ান অনিশ্চিতির এক গদ্যকবিতা, তখনকার সামাজিক-বাস্তবতার এক কমিক উপস্থাপন। যেমনঃ ‘এক গ্রাম্য ডাক্তার’ গল্পের এক বৃদ্ধ গ্রাম্য ডাক্তার গভীর রাতে আজব এক ঘোড়াগাড়িতে চড়ে, তার নিজের বাসার কাজের মেয়েটাকে ধর্ষণোদ্যত এক লোকের হাতে ফেলে রেখে রোগী দেখতে যান দূরের গাঁয়ে, রোগীর শরীরে জ্বলজ্বল করছে ফুলের মতো একটা ক্ষত, আর সেখানে কিলবিল করছে পোকা, আর গ্রামবাসীরা ডাক্তারের রোগ সারানোর ব্যর্থতার শাস্তি হিসেবে এই অসহায় ডাক্তারকে শুইয়ে দেয় বিছানায়, রোগীর পাশে। কাফকার রুপান্তর গল্পে দেখা যায়ঃ গ্রেগর সামসা নামের এক সেলস্ম্যান এক সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে, সে একটা তেলাপোকায় পরিণত হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বেচারা তখনো ভাবছে অফিসে যাওয়ার ট্রেনটা যেন আবার মিস না হয়ে যায়। ফ্রান্ৎস কাফকা স্বাভাবিক জীবনকাল পাননি। মাত্র ৩৫ বছর বয়সে ১৯১৮ সালে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তাঁর অফিস তাকে পেনশন মঞ্জুর করে। এর পরের ছয়টি বছর মোটামুটি নানা স্যানাটোরিয়ামে (হাসপাতাল বা স্বাস্থ্যনিবাস) ঘুরে ঘুরেই জীবন কাটে তাঁর। ১৯২০ সালে, অসুস্থ অবস্থায়ই, কাফকা প্রেমে পড়েন চেক সাংবাদিক ও লেখক, সুন্দরী মিলেনা য়েসেন্স্কার। মিলেনাকে লেখা তাঁর চিঠিগুলো Letters to Milena নামের আরেক বেস্টসেলিং বই। পারিবারিক দূরত্ব ও অনেকটা বন্ধুবিহীন জীবনযাপনের কারণে তাঁর মধ্যে কিছু অস্বাভাবিকতা পরিলক্ষিত হয়। কাফকা ভয়ে থাকতেন যে অন্য মানুষের কাছে তিনি বোধ হয় বিরক্তিকর এক চরিত্র– শারীরিক ও মানসিক, দুই দিক দিয়েই।হয়তো লেখালেখি জগৎ তাঁকে রক্ষা করে যাচ্ছিল। তিনি ভয় পেতেন এ ভেবে যে, লোকজন তাঁর শরীর ও মনের অসুখের খবর জেনে যেতে পারে। জীবনের বহু বছর তিনি যক্ষ্মা রোগে শয্যাশায়ী ছিলেন। ভেতরে অসুখ পুষে পুষে এক সময় শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। বিছানায় শুয়ে শুয়ে ‘অ্যা হাঙ্গার আর্টিস্ট’ বইটি সম্পাদনা করেন। চিকিৎসার জন্য বার্লিন থেকে ভিয়েনা পাঠানো হয় কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
দীর্ঘ রোগ ভোগের পর ১৯২৪ সালের ৩ জুন ৪০ বছর বয়সে তাঁর একচল্লিশতম জন্মদিনের এক মাস আগে অস্ট্রিয়ার কারলিংএ মৃত্যুবরণ করেন কথা সাহিত্যিক ফ্রান্ৎস কাফকা। আজ তাঁর ৯৪তম মৃত্যুৃবার্ষিকী। জার্মান ভাষার উপন্যাস ও ছোটগল্প লেখক ফ্রান্ৎস কাফকার মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]
০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
তোমাকে ধন্যবাদ প্রান্তর পাতা,
শুভেচ্ছা রইলো।
২| ০৩ রা জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৩৭
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: ওনার কয়েকটি ছোট গল্প।
০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৪
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লিংক কাজ করছেনা ভাগ্নে !!
Error 404 - Not Found
Sorry, the page that you are looking for does not exist.
তবে এই লিংকে বিখ্যাত সব লেখকদের চমৎকার ছোট গল্প পাওয়া যাবে
মন্দ কি !
৩| ০৩ রা জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৪১
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: খালু লিংক কাজ করছে না মনে হয়, কয়েকটি ছোট গল্প এখানেই দেই, ২ নং ডিলেট করে দেন...
এক)
একটি ছোট্ট উপকথা
‘হায়,’ ইঁদুর বললো, ‘দুনিয়াটা প্রতিদিনই ছোট হয়ে আসছে। শুরুতে এটা এতো বড় ছিলো যে আমি চিন্তিত হয়ে গিয়েছিলাম, আমি দৌঁড়াতেই থাকি, দৌঁড়াতেই থাকি, এবং অবশেষে আমি দূরে ডানে ও বামে দেয়াল দেখে খুশি হই, কিন্তু এই দেয়াল দুটো ক্রমশ সরু হয়ে যেতে থাকে আর আমি ততোক্ষণে কামরার শেষে এসে দাঁড়াই, এবং ওইখানে এক কোণায় ফাঁদ পাতা রয়েছে যা অবশ্যই অতিক্রম করে যেতে হবে আমাকে।’
‘তোমার শুধু পথটা বদলানো দরকার ছিলো,’ বিড়াল বললো এবং ওটাকে খেয়ে ফেললো।
দুই)
প্রহরী
আমি প্রথম প্রহরীকে অতিক্রম করে গেলাম। তখন আমি ভয় পেলাম, আবার দৌঁড়ে ফিরে এলাম এবং প্রহরীকে বললাম, ‘আপনি যখন অন্য দিকে খেয়াল রাখছিলেন আমি তখন এখান দিয়ে দৌঁড়ে গিয়েছিলাম।’
প্রহরী তার সামনের দিকে তাকিয়ে থাকলো এবং কিছুই বললো না। ‘আমার মনে হয় আসলে আমার এমনটা করা উচিত হয়নি,’ আমি বললাম।
প্রহরী তবুও কিছু বললো না। ‘আপনার নীরবতা কি আপনাকে অতিক্রম করে যাওয়ার অনুমতির ইঙ্গিত দেয়?’
তিন)
প্রমিথিউস
প্রমিথিউসকে কেন্দ্র করে চারটি কিংবদন্তি আছে:
প্রথম কিংবদন্তি অনুযায়ী, তাকে ককেসাস পর্বতের পাথরের সঙ্গে বেঁধে রাখা হয়েছিলো দেবতাদের গোপনীয়তা মানুষের কাছে প্রকাশ করার প্রতারণার অভিযোগে, এবং দেবতারা তার হৃদয় ছিঁড়ে খাওয়ার জন্যে ঈগল পাঠাতো, আর অবিরতভাবে সে হৃদয় পুননির্মিত হতো।
দ্বিতীয় কিংবদন্তি অনুযায়ী, প্রমিথিউস প্রতিনিয়ত বিদারিত হওয়ার যন্ত্রণায় নিজেকে ক্রমশ পাথরের গভীরে ঠেলে দিয়েছিলো যতক্ষণ না সে পাথরেরই অংশ হয়ে গেছে।
তৃতীয় কিংবদন্তি অনুযায়ী, হাজার বছরের সময় পরিক্রমায় প্রমিথিউসের প্রতারণার কথা ভুলে যাওয়া হয়, ভুলে যান দেবতারা, ভুলে যায় ঈগল এবং প্রমিথিউস নিজেও।
চতুর্থ কিংবদন্তি অনুযায়ী, প্রত্যেকেই এই অর্থহীন বিষয়ে ক্লান্ত-বিরক্ত হয়ে যায়। দেবতারা বিরক্ত হয়ে যায়, ঈগল ক্লান্ত হয়ে যায় এবং ক্লান্ত-বিরক্ত হয়ে ক্ষতও সেরে যায়।
সেখানে ব্যখ্যাতীত পরিমাণের পাথর ছিলো। কিংবদন্তি এই ব্যাখ্যাতীতকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছে। যখন এই সত্যের ভিত্তির উপর প্রকাশিত হয়েছে তখন ব্যাখ্যাতীতভাবে এর সমাপ্তি ঘটেছে।
চার)
অন্যমনস্কের জানালা দর্শন
ক্রমশ এগিয়ে আসছে যে বসন্ত দিনগুলি তা নিয়ে আমরা কী করবো? আজ খুব সকালেই আকাশ ছিলো ধুসর, কিন্তু তুমি যদি এখন জানালার কাছে যেতে তাহলে বিস্মিত হতে এবং গরাদহীন জানালর পাল্লায় তোমার চিবুক রাখতে।
ইতোমধ্যে সূর্য ডুবে যাচ্ছে, কিন্তু তুমি দেখবে সে নিচে অলসভাবে যে মেয়েটি হাঁটছে তার মুখে আলো ফেলছে, এবং একইসময়ে সে ঢাকা পড়ে যাচ্ছে, তাকে অতিক্রমরত একটি লোকের ছায়ার কারণে।
এবং তারপর লোকটি চলে গেছে এবং ছোট্ট মেয়েটির মুখ যথেষ্ট উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
পাঁচ)
পরের গ্রাম
আমার দাদা সব সময়ই বলতেন, ‘জীবন বিস্ময়কর রকমের ছোট। আমার কাছে, পেছন ফিরে তাকালে জীবন এতোই ছোট মনে হয় যে আমি খুব সামান্যই এর অর্থ বুঝতে পারি। ধরা যাক, একজন তরুণ কীভাবে কোনো দুশ্চিন্তা ছাড়া পাশের গ্রামে যাওয়ার কথা ভাবতে পারে- কোনো দুর্ঘটনা ছাড়াই- এমনকি স্বাভাবিক সুখের মুহূর্তেও এরকম একটি ভ্রমণের জন্যে যে সময়ের প্রয়োজন সে বিবেচনা করলেও জীবন অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত মনে হবে।’
০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
চমৎকার উপদেশ মূলক গল্প
সংযোজন করার জন্য তোমাকে
অসংখ্য ধন্যবাদ।
৪| ০৩ রা জুন, ২০১৮ দুপুর ১:৩১
কথার ফুলঝুরি! বলেছেন: ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধাঞ্জলি
০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৪৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ কথার পুলঝুরি,
লেখাটি ভালো লাগার জন্য।
শুভেচ্ছা জানবেন।
৫| ০৩ রা জুন, ২০১৮ দুপুর ২:৩৯
দিলের্ আড্ডা বলেছেন: ইহুদী লেখকরা ভালই ফ্যান্টাসিতে ডুবিয়েছে পাঠকদেরকে।
০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৫১
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লেখকদের কোন জাত হয়না,
দেশ থাকেনা, তারা সার্বজনীন।
তাদেকে গণ্ডীর সীমানায় আটকানো
বুদ্ধিমানের কাজ নয়। ভাই গিরিশচন্দ্র সেনকে
মুসলমানরা অশ্রদ্ধা করেনা। সর্ব প্রথম আল
কোরআন বাংলায় অনুবাদ করেন ভাই গিরিশচন্দ্র সেন।
৬| ০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।
০৩ রা জুন, ২০১৮ বিকাল ৩:৫২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ রাজীব ভাই
last but not least
©somewhere in net ltd.
১| ০৩ রা জুন, ২০১৮ সকাল ১১:৩২
ব্লগার_প্রান্ত বলেছেন: আজকের লেখাটি অনেক সুন্দর হয়েছে।