নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

"শীতল থাকার পরিবেশবান্ধব কৌশল, মেনে চলি মন্ট্রি প্রটোকল" প্রতিপাদ্য নিয়ে আজ পালিত হচ্ছে আর্ন্তজাতিক ওজোন দিবস

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৮


আজ ১৬ সেপ্টেম্বর আর্ন্তজাতিক ওজোন দিবস। ১৯৯০ সালে মন্ট্রিল প্রটোকল স্বাক্ষরসহ প্রটোকলের লন্ডন, কোপেনহেগেন, মন্ট্রিল ও বেইজিং সংশোধনীসমূহ যথাক্রমে ১৯৯৪, ২০০০, ২০০১ ও ২০১০ সালে অনুমোদন করে। ওজোনস্তর রক্ষায় ভিয়েনা কনভেনশন ও মন্ট্রিল প্রটোকল স্বাক্ষরকারী পক্ষসমূহের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ৩৩ বছর উদ্যাপন করা হচ্ছে। এবছরের আন্তর্জাতিক ওজোন দিবসের প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘শীতল থাকার পরিবেশবান্ধব কৌশল, মেনে চলি মন্ট্রি প্রটোকল’। মন্ট্রিল প্রটোকল বাস্তবায়নের প্রথম দিকে সিএফসি ও এইচসিএফসির পরিবেশবান্ধব বিকল্প না থাকায় হাইড্রোফ্লোরোকার্বন ব্যবহার অনুমোদন করা হয়, যা উচ্চ মাত্রায় উষ্ণায়ন ক্ষমতাসম্পন্ন রাসায়নিক। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় পরিবেশবান্ধব বিকল্প ব্যবহারের মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় মন্ট্রিল প্রটোকল উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে এবং আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস পালনের মাধ্যমে এ ব্যাপারে জনসচেতনতা সৃষ্টি হবে।’বায়ুমন্ডলের ওজোনস্তর সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ভূমন্ডলকে রক্ষা করে। পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে কার্বন-ডাই অক্সাইড, মিথেন, কোরোফুরোকার্বন (সিএফসি), নাইট্রাস অক্সাইড, কার্বন টেট্রাকোরাইড, সালফার হেক্সাকোরাইড, পার ফোরোকার্বন প্রভৃতি ওজোনস্তর ধ্বংস করে। তবে সিএফসি (ক্লোরোফ্লোরোকার্বন) গ্যাস সরাসরি ওজোনস্তরকে ধ্বংস করে। ওজোনস্তর পৃথিবীকে ছাতার মতো আড়াল করে বহুকাল ধরে রেখেছে। এ ছাতার কারণে সূর্যের অতিবেগুনি ক্ষতিকর রশ্মি পৃথিবীর বুকে আসতে পারে না। ওজোনস্তর তাকে আসতে দেয় না। সে জন্যই পৃথিবীতে আমরা জীব-জগৎ টিকে আছি। সভ্যতা টিকে আছে। প্রাণবৈচিত্র্য রয়েছে। আন্তর্জাতিক ওজোন দিবস পালনের মাধ্যমে দেশে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং ওজোন ক্ষয়কারী সামগ্রী ব্যবহার থেকে সাধারণ মানুষ বিরত থাকবেন সেই প্রত্যাশা আমাদের।

সূর্যের ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মির ৯৯ ভাগ ওজোনস্তর শোষণ করে। মাত্র একভাগ পৃথিবীতে এসে পড়ে। সেই একভাগও বিশ্বের জীব-প্রাণবৈচিত্র্যের জন্য হুমকি। মানুষসহ প্রাণিজগতের জন্য সূর্য থেকে আসা ক্ষতিকর আলট্রাভায়োলেট তথা অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষায় বায়ুমণ্ডলের ওজোন স্তর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অতিবেগুনি রশ্মির ৯৭ থেকে ৯৯ শতাংশই শোষিত হয় এ স্তরে। পৃথিবীর উপরিভাগে ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার দূরত্বে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার অঞ্চলে ৯০ শতাংশ ওজোন স্তর। ১৯১৩ সালে ফরাসি পদার্থবিদ চার্লস ফ্যাব্রি ও হেনরি বাইসন ওজোন স্তর আবিষ্কার করেন। এ স্তরের বৈশিষ্ট বের করেন ব্রিটিশ আবহবিদ জিএমবি ডবসন। তিনি নিজের তৈরি স্পেকট্রোফটোমিটার বা সরল বর্ণবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে ভূমি থেকেই স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের ওজোন মাপার কৌশল বের করেন। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাধারণত বিষুবরেখার কাছাকাছি ওজোনের পরিমাণ কম, আর মেরু এলাকায় বেশি।বসন্তকালে ওজোন স্তর বেশি পুরু, আবার শরতে কম।উত্তর আর দক্ষিণ গোলার্ধের মাঝামাঝি থেকে উচ্চতর অক্ষাংশে বেশি পরিমাণে ওজোন গ্যাস থাকে। ওজোনের এ তারতম্য আবহাওয়ার পরিবর্তন ও সৌরশক্তির তীব্রতায়। কিন্তু ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি শোষণের জাল ওজোন স্তর দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে।

ওজোন গাঢ় নীল রঙের একটি গ্যাসের নাম। ওজোনের এক অণু অক্সিজেনের তিন পরমাণু নিয়ে গঠিত। অক্সিজেনের অপেক্ষা ওজোন দেড় গুণ ভারী এবং অধিক কার্যকর। পানি ও বাতাস বিশুদ্ধ করতে ওজোনের ব্যবহার রয়েছে। বাতাসে ওজোনের পরিমাণ সহনীয় মাত্রার বেশি হলে জীবকুলের জন্য ক্ষতিকর। এর প্রতিক্রিয়ায় মাথাব্যথা, বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট এবং শেষ পর্যন্ত অজ্ঞান হয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। সত্তরের দশকে ওজোন স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি প্রথম ধরা পড়ে। দেখা যায়, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে প্রতি দশকে ৪ শতাংশ হারে ওজোন স্তরের পুরুত্ব কমে আসছে। ফলে সৃষ্টি হয় ওজোন গহ্বরের। ওজোন স্তর ক্ষীণ হওয়ার জায়গায় পাওয়া যায় সিএফসি ও ফ্রেয়ন গ্যাস। বিশের দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাজারজাত করা সিএফসি ও প্রেয়ন বিভিন্ন যন্ত্র ও শিল্পে অহরহ ব্যবহৃত হতো। সিএফসি উৎপাদিত হতো রাসায়নিক বিক্রিয়ার সহযোগী উৎপাদক হিসেবে। সত্তরের দশকে প্রমাণ হয়, সিএফসি আবহাওয়ামণ্ডলের নিচের দিকে পৌঁছালে অতিবেগুনি রশ্মির প্রভাবে ক্লোরিন ত্যাগ করে। এই ক্লোরিন ওজোন স্তরের বড় শত্রু, যা ভূপৃষ্ঠে অক্ষত থাকে শতাব্দীকাল। নাসার গবেষণায় ধরা পড়ে, বায়ুমণ্ডলের অন্যান্য এলাকার তুলনায় অ্যান্টার্কটিকা অঞ্চলে ওজোন স্তরের খুব দ্রুত ক্ষতি হচ্ছে। সেখানে বসন্তকাল ওজোন স্তরের জন্য মারাত্মক। স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের নিচের অংশে প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষতি এ সময়েই ঘটে। এর জন্য দায়ী (ক্লোরোফ্লোরোকার্বন) সিএফসি।

টেকসই ও বাসযোগ্য নিরাপদ পরিবেশ গড়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ওজোন দিবসের গুরুত্ব সমধিক। ওজোনস্তর ক্ষয়রোধে বাংলাদেশ বিশ্ববাসীর সাথে কাজ করে যাচ্ছে। এজন্য বাংলাদেশ ১৯৯০ সালে মন্ট্রিল প্রটোকল স্বাক্ষরসহ প্রটোকলের লন্ডন, কোপেনহেগেন, মন্ট্রিল ও বেইজিং সংশোধনীসমূহ যথাক্রমে ১৯৯৪, ২০০০, ২০০১ ও ২০১০ সালে অনুমোদন করে। ওজোনস্তর সুরক্ষার মাধ্যমে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি নিরাপদ পৃথিবী উপহার দেবার প্রত্যাশা নিয়ে জাতিসংঘের সদস্য দেশ হিসাবে প্রতিবছরের মত এবছরও বাংলাদেশে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালিত হবে। দিবসটি পালনের মর্মবাণী সবার কাছে সঠিকভাবে পৌঁছলেই ওজোনস্তরের সুরক্ষা করে একটি টেকসই বাসযোগ্য নিরাপদ পৃথিবী গড়া সম্ভব। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ পরিবেশ আমাদেরকেই গড়ে তুলতে হবে, যারা আজ এ ধরণীতে বসবাস করছে। এটি সবার নৈতিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। তা না হলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এ পৃথিবী ধ্বংস হবে। ফলে জীবন নিয়ে বেঁচে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়বে। সেজন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়, পরিবেশ অধিদফতর, গণমাধ্যম এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিরলস প্রয়াস চালানো অত্যাবশ্যক।দিবসটি পালনের মাধ্যমে দেশে তৃণমূল পর্যায়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং ওজোন ক্ষয়কারী সামগ্রী ব্যবহার থেকে সাধারণ মানুষ বিরত থাকবে এটাই আমাদের প্রত্যাশা।

নূর মোহাম্মদ নুরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ১:০৯

ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন: নূর মোহাম্মদ নুরু ভাই, ওজোন ক্ষয়কারী প্রতিষ্ঠান তো বাংলাদেশে প্রচুর তার মধ্যে একটির নাম বলছি - “মাটি পোড়া ইট ফেক্টোরী তথা ব্রিক ফিল্ড”

ওয়াটার এইড বাংলাদেশে একটি প্রজেক্ট করেছিলো বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ ও পাণীয় পানির অভাব দুরিকরণ, প্রজেক্ট টার্মিনেট করা হয় কারণ বাংলাদেশের আকাশে সিসা, কার্বন, লোহা, থেকে শুরু করে সোনা, রুপা হেনো ধাতু নেই - যা বাংলার আকাশে পাওয়া যাবে না ! বাংলাদেশে বৃষ্টির পানি পাণ করা দুষনীয় !!!

আপনার লেখায় খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছে, যা আমাদের মতো মহাজ্ঞানীজন যারা ব্লগে আছি আমাদের জ্ঞানের বাইরে !!!

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ঠাকুর ভাই
মহাজ্ঞানীদের বাণী শ্রবণের আশায় আমার
এ লেখা নিবেদিত হলো।

২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ দুপুর ২:৫৬

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সবচে বেশী দায়ী উন্নত বিশ্ব!
তারা নিজেদের ব্যক্তিক সুবিধার জন্য প্রথিবীকে বিপন্ন করে তুলছে!
ভুক্তভূগি সারা বিশ্ব!
আমাদেরও সেই কথিত উন্নয়নের নামে নিয়ন্ত্রনহীন ব্রিকফিল্ড থেকে শুরু করে কল কারাখানা সবই যেন যেমন খুশি তেমন চলো নীতিতে চলছে প্রকৃতির ধ্ংবস সাধান করে।

আমাদের সচেতনতার চেযৈ বেশি প্রয়োজন উন্নত বিশ্বের নিজেদের ষংশোধন করা। এবং জীবন মানের পরিবর্তনের মাধ্যমে প্রথিবীকে সুরক্ষায় প্রচেষ্টা করা।

কে শোনে কার কথা
কে ভাবে কার ব্যাথা

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ ভৃগু'দা
চমৎকার মন্তব্য প্রদানের জন্য।
শুভেচ্ছা জানবেন।

৩| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: ভালো পোষ্ট।

১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৫:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ !!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.