নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম সেনানায়ক লর্ড ক্লাইভের ২৪৫তম আত্মহনন দিবস আজ

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:০৪


ভারত উপমহাদেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠায় মূল ভূমিকা পালনকারী রবার্ট ক্লাইভ। ক্লাইভ এবং ওয়ারেন হেস্টিং দু’জনে মিলেই সৃষ্টি করেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়া। রবার্ট ক্লাইভ ! যার সঙ্গে সমৃদ্ধ বাংলার পতন আর অনুপ্রবেশকারী ব্রিটিশের উত্থানের ইতিহাস অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত?। পলাশীর ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে যার নাম উচ্চারিত হয়। ২৩ জুন ১৭৫৭ সাল। কয়েক ঘণ্টার ‘তথাকথিত-যুদ্ধ’ নামের প্রহসনে পাল্টে গেল বাংলার এবং দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক ভাগ্য। পলাশীর যু্দ্ধে তিনি ছিলেন ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাপতি। তাকে পলাশীর প্রথম ‘ব্যারন’ (যুদ্ধবীর) ছাড়াও মেজর জেনারেল দ্য রাইট অনারেবল দ্য লর্ড ক্লাইভ, কেবি, এমপি, এফআরএস ইত্যাদি সনদ ও সম্মাননায় ভূষিত করা হয় ইংরেজ জাতির ঐতিহাসিক উপকার করার জন্য। পলাশীর যুদ্ধে তার নেতৃত্বে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেনাদল বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার সৈন্যদল কে পরাজিত করে ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠা করে। সকল ইতিহাসবিদই একবাক্যে স্বীকার করেছেন যে, বাংলায় তথা ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠায় মূল ভূমিকা পালনকারী রবার্ট ক্লাইভ। সাফল্যের জন্য আর্থিক ছাড়াও বহুবিধ সম্মান লাভ করেন ইংরেজ কোম্পানির কাছ থেকে। বস্তুতপক্ষে, বাংলার রাজনৈতিক এলিট বা রাজ-দরবারের আমত্যদের পারস্পরিক বিবাদ, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও পারস্পরিক ষড়যন্ত্রের চাপা-অবস্থাটি পলাশীতে উন্মুক্ত করেন ক্লাইভ এবং পরবর্তীতে এদের মধ্যকার বিবাদকে প্রচণ্ডভাবে উস্কে দিয়ে এই রাজনৈতিক শ্রেণিটিকে ধ্বংস করে দেন। ফলে ইংরেজের পক্ষে বাংলার ক্ষমতা দখলের পথে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী অবশিষ্ট থাকে নি। ক্লাইভ অত্যন্ত সুকৌশলে মধ্যযুগের বাংলার রাজদরবার কেন্দ্রিক রাজনৈতিক কাঠামোটিকে এমনভাবে ভেঙে দেন যে, আগ্রাসী ইংরেজের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মতো আর কেউ থাকে নি এবং পলাশী-পরবর্তী শতবর্ষকাল কোম্পানি নির্বিবাদে শাসন-শোষণ চালাতে সমর্থ হয়। পলাশীর যুদ্ধের ১০ বছর পর ১৭৬৭ সালে ক্লাইভ ইংল্যান্ড ফিরে যান। কিন্তু ভারতে রেখে যান ঘুষ, দুর্নীতি, সম্পদ আত্দসাৎ, প্রাসাদ ষড়যন্ত্র, দুর্বৃত্তায়ন আর অপরাজনীতির এক জঘন্য ইতিহাস। তার দুর্নীতি এমন পর্যায়ে পেঁৗছে ১৭৭২ সালে ইংল্যান্ডের পার্লামেন্ট তার দুর্নীতির তদন্ত শুরু করতে বাধ্য হয়। এতে একে একে তার দুর্নীতির তথ্য বেরুতে থাকে। আত্মসম্মানের কথা বিবেচনা করে তিনি সব সম্পদের বিনিময়ে তদন্ত বন্ধ তথা তার সম্মান রক্ষার করুণ আর্তনাদ জানান। তবুও চলতে থাকে তদন্ত। এতে অপমানের জ্বালা সহ্য করতে না পেরে ১৭৭৪ সালের ২২ নভেম্বর আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। আত্মহত্যার জন্য তিনি নিজের শরীরে ছুরি চালান বা নিজেই নিজের গলায় ছুরি ঢুকিয়ে দেন বলে প্রচলিত আছে। তবে সম্মান রক্ষার্থে কেউ কেউ প্রচার করেন অতিরিক্ত আফিং বা মাদক গ্রহণ অথবা হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়। তবে মরেও বেঁচে আছে লর্ড ক্লাইভ এক ঘৃণিত বিদেশি প্রভুর আদলে। ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম সেনানায়ক লর্ড ক্লাইভের ২৪৫তম আত্মহনন দিবস আজ।

১৭২৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে সেপ্টেম্বর, ইংল্যান্ডের ওয়েস্ট মিডল্যান্ডের শ্রোপশ্যায়র (Shropshire) কাউন্টির উত্তরাংশের মার্কেট ড্রাইটোন (Market Drayton) নামক শহরের ক্লাইভ পরিবারে রবার্ট জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম ছিল রিচার্ড ক্লাইভ এবং মায়ের নাম রেবেকা গ্যাসকেল ক্লাইভ। রবার্ট ক্লাইভ ছিলেন তাঁর পিতামাতার ১৩টি সন্তানের মধ্যে (৭ কন্যা ও ৬ পুত্র) বড়। শৈশবে তিনি তাঁর খালার কাছে প্রতিপালিত হন। রবার্টের ৯ বৎসর বয়সে তাঁর এই খালার মৃত্যু হয়। সম্রাট হেনরি চতুর্থ-এর আমলে ক্লাইভ পরিবারের একটি ছোট জমিদারি ছিল। ছেলেবেলা থেকেই সে ছিল খুবই দুষ্ট প্রকৃতির। প্রায়ই সে চার্চের ওপর ওঠে পানি মুখে নিয়ে গার্গল করে নিচের মানুষজনের ওপর ফেলে দেয়ার ভয় দেখাত। তাছাড়া সে এলাকায় গ্যাং তৈরি করে ব্যবসায়ীদের জিনিসপত্র জোর করে ছিনিয়ে নিত। তাঁর বাবা তাঁকে প্রথমে Market Drayton Grammar School -এর ভর্তি হন। কিন্তু উচ্ছৃঙ্খল আচরণের জন্য ওই স্কুল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ তোলে, পরে তাঁর বাবা তাঁকে লণ্ডনের Merchant Taylors' School-এ ভর্তি করে দেন। এখানেও উচ্ছৃঙ্খল আচরণের জন্য বহিস্কৃত হলে, তাঁকে হার্টফোর্ডশায়ারের একটি স্কুলে ভর্তি করে দেওয়া হয়। এই স্কুল থেকে তিনি প্রাথমিক শিক্ষা লাভ করতে সক্ষম হন। স্কলারশিপ না পাওয়ায় তাঁর পরবর্তী শিক্ষাকার্যক্রম ব্যাহত হয়। এই সময় তিনি নিজের মতো করে লেখাপড়া করতে থাকেন। রবার্টের বাবা ইষ্ট-ইন্ডিয়া কোম্পানি-তে তাঁর জন্য একটি লেখকের চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। এই সূত্রে ১৭৪৩ খ্রিষ্টাব্দের শুরুর দিকে তিনি জাহাজে করে ভারতে রওনা দেন। কিন্তু ওই জাহাজের মেরামতির জন্য ব্রাজিলের রিও দি জেনেরিও বন্দরে প্রায় নয় মাস অবস্থান করে। এই সময় তিনি কিছুটা পর্তুগিজ ভাষা রপ্ত করতে সক্ষম হন। উল্লেখ্য সেকালের ভারতে পর্তুগিজ ভাষা বিদেশী বণিকরা অল্পবিস্তর ব্যবহার করতো। ভারতে তাঁর এই ভাষা বিশেষ কাজে লেগেছিল। জাহাজ মেরামত হওয়ার পর, উত্তমাশা অন্তরীপে তাঁদের জাহাজ কিছুদিন থাকে। অবশেষে তাঁদের জাহাজ যখন মাদ্রাজ উপকূলে পৌঁছায়, তখন তাঁর কাছে খরচ করার মতো কোনো অর্থ ছিল না। ফলে জাহাজের ক্যাপ্টেনের কাছ থেকে তিনি চড়া সুদে ঋণ নেন। ভারতে পৌঁছে তিনি প্রথমেই তেমন কাজ জোগার করতে পারেন নি। কথিত আছে এই সময় তিনি দুই বার আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলেন। সে সময়ে বর্তমান চেন্নাই-এর কাছে মাদ্রাজপত্তম নামক ছোট্ট গ্রামে কোম্পানির সেন্ট জর্জ নামক একটি দুর্গ ছিল। ১৭৪৪ খ্রিষ্টাব্দের জুন মাসে এই দুর্গে পৌঁছান। তিনি কোম্পানিতে লেখালেখির পাশাপাশি নানা ধরণের কাজে দুই বৎসর কাটান।

১৭৫১ খ্রিষ্টাব্দের দিকে ক্লাইভ আবার দাক্ষিণাত্যে আসেন। আন্‌ওয়ার উদ্দিন-এর পুত্র মোহম্মদ আলী ত্রিচিনপল্লীতে অবস্থান নিলে, কর্ণাটকের শাসক চাঁদ সাহেব ত্রিচিনপল্লী আক্রমণ করেন। ফরাসি বাহিনী এবং চাঁদ সাহেবের বাহিনী ত্রিচিনপল্লী জয় করতে সক্ষম না হলেও, মোহম্মদ আলী সেখানে অবরুদ্ধ হয়ে থাকেন। ইংরেজ সেনাবাহিনীও এই অবরোধ ভেঙে মোহ্ম্মদ আলীকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হন। এই অবস্থায় মোহম্মদ আলী, মাদ্রাজের ইংরেজ গভর্নর স্যান্ডার্সকে চাঁদ সাহেবের রাজধানী আর্কট আক্রমণের অনুরোধ করেন। ইংরেজরা আর্কট আক্রমণে প্রথমে সুবিধা করতে না পারলে, মেজর স্ট্রিন‌জার এই আক্রমণের দায়িত্ব দেন ক্লাইভকে। ক্লাইভ এক আকস্মিক আক্রমণে আর্কট দখল করতে সক্ষম হন। এরপর আর্কট উদ্ধারে ফরাসি এবং চাঁদ সাহেবের বাহিনী আক্রমণ শুরু করলে, ক্লাইভ প্রায় দুই মাস এই আক্রমণ প্রতিহত করতে সক্ষম হন। ১৭৫২ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসি সেনাপতি জেকি-ল আত্মসমর্পণ করেন। প্রায় একই সময় চাঁদ সাহেব তাঞ্জোরের রাজার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। পরে চাঁদ সাহেবকে হত্যা করে, কর্ণাটকের সিংহাসনে মোহম্মদ আলীকে বসানো হয়। এর কিছুদিন পরে লরেন্স ক্লাইভকে কমিশনারের দায়িত্বে নিয়োগ করেন। ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তাকে তখনকার সময়ে ৭০০ পাউন্ড মুল্যের তলোয়ার প্রদান করে সম্মান জানান। ১৭৫৩ খ্রিষ্টাব্দে দেশে ফিরে যান এবং বন্ধু নেভিলের ছোট বোন মারগারেট মেইস্কিলিনকে বিয়ে করেন। ১৭৫৫ খ্রিষ্টাব্দের জুলাই মাসে ডেপুটি গভর্নর হিসাবে মাদ্রজে ফিরে আসেন। ফিরতি পথে তাঁরর জাহাজ বিধ্বস্থ হলে, তিনি তাঁর ৩৩ হাজার পাঊন্ড মুল্যের গোল্ড কয়েনের বাক্স হারিয়ে ফেলেন। ফিরে আসার কিছুদিনের মধ্যেই রবার্ট ক্লাইভ প্রমোশন পেয়ে লেফন্যান্ট কর্নেল হন। এই যাত্রায় ভারতে এসেই তিনি ভারতবর্ষ তথা বাংলা-বিহার-উড়িষ্যায় ব্রিটিশ আধিপত্য বিস্তারে কূটকৌশল চালাতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় পলাশীর যুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা করে মীর জাফর এবং তার মিত্ররা। নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যু এবং মীর জাফরের ক্ষমতাগ্রহণের ঘটনা ঘটলেও প্রকৃতপক্ষে অস্তমিত হয় বাংলার স্বাধীনতার সূর্য। আর উত্থান ঘটে লর্ড ক্লাইভ তথা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের। নবাব সিরাজকে হারিয়ে ক্লাইভ মীরজাফরের আগেই মুর্শিদাবাদ পৌঁছান এবং নবাবের খাজাঞ্চিখানার সমুদয় ধন-দৌতল লুট করেন। ষড়যন্ত্রমূলক যুদ্ধের শর্ত অনুযায়ী মীরজাফরকে চাপ দিয়ে টাকা আদায় ও অন্যবিধ লুটতরাজে ক্লাইভ ও তার বাহিনি বাংলায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে। তদুপরি চক্রান্তের অংশ হিসাবে ক্ষমতালোভী নানা জনের মধ্যে বিবাদ লাগিয়ে ক্লাইভ এর বিরুদ্ধে ওকে লেলিয়ে দেন। প্রীতিভাজন ও পলাশীর অন্যতম প্রধান ষড়যন্ত্রী মীরজাফরকে স্বার্থের প্রয়োজনে ছুঁড়ে ফেলতেও ক্লাইভের বিন্দুমাত্র দ্বিধা হয় নি। বস্তুতপক্ষে, বাংলার রাজনৈতিক এলিট বা রাজ-দরবারের আমত্যদের পারস্পরিক বিবাদ, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও পারস্পরিক ষড়যন্ত্রের চাপা-অবস্থাটি পলাশীতে উন্মুক্ত করেন ক্লাইভ এবং পরবর্তীতে এদের মধ্যকার বিবাদকে প্রচণ্ডভাবে উস্কে দিয়ে এই রাজনৈতিক শ্রেণিটিকে ধ্বংস করে দেন। ফলে ইংরেজের পক্ষে বাংলার ক্ষমতা দখলের পথে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী অবশিষ্ট থাকে নি। ক্লাইভ অত্যন্ত সুকৌশলে মধ্যযুগের বাংলার রাজদরবার কেন্দ্রিক রাজনৈতিক কাঠামোটিকে এমনভাবে ভেঙে দেন যে, আগ্রাসী ইংরেজের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর মতো আর কেউ থাকে নি এবং পলাশী-পরবর্তী শতবর্ষকাল কোম্পানি নির্বিবাদে শাসন-শোষণ চালাতে সমর্থ হয়। পলাশী যুদ্ধের ১০০ বছর পরে ১৮৫৭ সালের সিপাহী যুদ্ধের পর কোম্পানি শাসনের অবসান হয়ে ভারতবর্ষে খোদ ব্রিটিশ রানির শাসন চালু হয়।

রবার্ট ক্লাইভের কর্মক্ষেত্র বাংলায় তিনি বরাবরই ঘৃণিত থেকেছেন। জনগণমনে খল হিসেবে পরিচিত হয়েছেন। একজন নিচ ও ষড়যন্ত্রকারী, শঠ ও প্রতারক হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন। লর্ড ক্লাইভ ভারতবর্ষের দায়িত্ব পালন শেষে ফিরে যান লন্ডনে। সেখানে তিনি নিঃসঙ্গ অবস্থায় অবসর জীবনযাপন করেন। ওই নিঃসঙ্গ সময়ে বিগত জীবনের সমুদয় নিচুতা, অতীতের গ্লানি ও পাপ চিন্তায় তার মানসিক ভারসাম্য নষ্ট হয়। অবশ্য ক্লাইভের জীবনীকার ম্যালকম বলেন, ক্লাইভ শৈশব থেকেই বিষণ্নতাজাত মানসিক রোগে আক্রান্ত ছিলেন। তবে ভারতবাসী বিশ্বাস করত, ক্লাইভের পাপই তাকে অসুস্থ করে দেয় এবং পাপ চিন্তায় জর্জরিত ও অভিশপ্ত লর্ড রবার্ট ক্লাইভ। ইতিহাসের এক নির্মম পরিণতি এটাই যে, ক্লাইভ ষড়যন্ত্রমূলক জীবন কাটিয়ে শেষ জীবনে ব্যর্থতা ও জনমানুষের ঘৃণার শিকার হন। নানা অভিযোগ ও অপমানে ১৭৭৪ সালের ২২ নভেম্বর স্বীয় গৃহে নিজ পিস্তলের গুলিতে আত্মহত্যা করেন। ইংল্যান্ডের লন্ডন শহরে তাকে সমাহিত করা হয়। রবার্ট ক্লাইভের ষড়যন্ত্রে বাংলা তার স্বাধীনতা হারাল। ক্লাইভ ইংরেজ জাতির কাছে সম্মানিত ও খ্যাতিমান হলেন। তবে ভারতীয়দের কাছে ঘৃণিত ও খল হিসেবেই চিহ্নিত হলেন। বাঙালির ইতিহাসে ক্লাইভ মন্দ ইয়াগোই হয়ে থাকলেন। পলাশীর অপরাপর ষড়যন্ত্রী যথা মীরজাফর, জগৎশেঠ, ঘসেটি বেগম প্রভৃতি সকলেরই অপঘাতে বা অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠার অন্যতম সেনানায়ক লর্ড ক্লাইভের ২৪৫তম আত্মহনন দিবস আজ। যিনি মরেও বেঁচে আছে এক ঘৃণিত বিদেশি প্রভুর আদলে।

নূর মোহাম্মদ নুরু
গণমাধ্যমকর্মী
nuru.etv,[email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ বিকাল ৫:৩৩

রাজীব নুর বলেছেন: দারুন বুদ্ধিমান লোক।
অনেক রাস্তা ঘাট হাসপাতাল করেছেন।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৪২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বুদ্ধিমান লোক নন
তিনি বাজে লোক।
গাজী থুক্কু পাজী টাইপের!!

২| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০২

চাঁদগাজী বলেছেন:


আপনাকে ইতিহাসের ভাষা শিখতে হবে অ আ থেকে: রবার্ট ক্লাইভ ভারতে "ইংরেজ শাসনের প্রতিষ্টা করেনি"; ইংরেজ শাসন মানে "বৃটিশ রাজ বংশের শাসন/ব্রিটিশ সরকারের শাসন"; রবার্ট ক্লাইভ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসনের প্রতিষ্টা করে; ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী হচ্ছে বেক্সিমকো'র মতো একটি কর্পোরেশন।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ছাল নাই কুত্তার বাঘা নাম
বু্ঝি বা না বুঝি ঘেউ করবেই।
আমি কখন বললাম ক্লাইভ ভারতে
ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে?
আমি বলেছি "ভারত উপমহাদেশে ইংরেজ শাসন প্রতিষ্ঠায় মূল ভূমিকা পালনকারী রবার্ট ক্লাইভ।"
ক/খ পড়তে জানলেই বিদ্যান হওয়া যায়না।

৩| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:


*প্রতিষ্ঠা

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
এটুকু বুঝতে আমার সমস্যা হয়নি্,
না বুঝেই ঘেউ!!

৪| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:১৮

নগরসাধু বলেছেন: জয় গুরু

প্রকৃতির পাঠ এমনই হয়।
য়েমন কর্ম তেমন ফল।

ক্লাইভের প্রথম জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু নতুন করে জানলাম।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ
অন্তত কিছু জানার জন্য।

৫| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:১৮

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন:
মহামান্য রবার্ট ক্লাইভ সাহেবের জন্য ফুলেল শুভেচ্ছা রইল।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:২৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমি জানাইনি তাকে শুভেচ্ছা
আপনি জানালে আমার দোষ নাই।

৬| ২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:২১

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: একটি দেশের মানুষ কতটা অযোগ্য হলে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির মতো একটি ব্যবসায়ী কোম্পানি দেশটাকে দখল করে নিতে পারে তা বলাই বাহুল্য।

২২ শে নভেম্বর, ২০১৯ রাত ৯:৩২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বর্তমানে কি আমাদের দেশ আগের মতোই আছে
নাকি উত্তরণ ঘটেছে? কি করে পেঁয়াজ হাতের নাগালের
বাইরে চলে যায়?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.