নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা জগতের উজ্জল নক্ষত্র নির্মল কুমার সেন গুপ্তের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:২১


আপসহীন সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা, সারা জীবন মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়া বাম রাজনীতিবিদ নির্মল কুমার সেন গুপ্ত যিনি নির্মল সেন নামে সমাধিক পরিচিত। একজন সুসাহিত্যিক ও ক্ষুরধার কলামিস্ট হিসেবে নির্মল সেনের ছিল বিপুল জনপ্রিয়তা। সংবাদপত্র ও সাংবাদিকতা জগতের এক উজ্জল নত্র নির্মল সেনের শৈশবকাল থেকেই লেখালেখির হাত ছিল। নির্মল সেন সাংবাদিক ছিলেন। হ’তে চান নি। হ’য়ে গেছেন। আসলে ছিলেন রাজনীতিক। ছিলেন ছাত্র আন্দোলনে, পরে শ্রমিক আন্দোলনে সক্রিয়। তার চেয়েও বেশি ছিলেন রূপান্তরের রূপকার – সমাজের, দেশের। অষ্টম শ্রেণীতে পড়ার সময় হাতে লেখা ‘কমরেড’ পত্রিকায় তিনি লিখতেন। ১৯৭২-৭৩ সালে নির্মল সেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ১৯৭৩-৭৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ছিলেন। তিনি জাতীয় প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্য ছিলেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে অতিথি শিক্ষক হিসেবে শিক্ষকতাও করেছেন। প্রখ্যাত সাংবাদিক ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নির্মল কুমার সেন গুপ্তের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০১৩ সালের এই দিনে ঢাকার ল্যাব এইড হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়। প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট, লেখক, বাম রাজনীতিবিদ, মুক্তিযোদ্ধা নির্মল কুমার সেন গুপ্তের মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

বাম রাজনীতির পুরোধা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক নির্মল সেন ১৯৩০ সালের ০৩ আগষ্ট গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার দিঘীরপাড় গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সুরেন্দ্রনাথ সেন গুপ্ত। মাতার নাম লাবন্য প্রভা সেন গুপ্ত। বাবা সুরেন্দ্র্র্র্র্র্র্রনাথ সেনগুপ্ত ছিলেন কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের গণিত শিক্ষক। ছয় ভাই, তিন বোনের মধ্যে নির্মল সেন চতুর্থ। বাড়ির পাঠশালায় নির্মল সেনের শিক্ষাজীবন শুরু হয়। এরপর কোটালীপাড়া উপজেলার প্রাচীনতম বিদ্যাপীঠ কোটালীপাড়া ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনে চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটিগাতি এমই স্কুলে পঞ্চম থেকে ষষ্ঠ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া করেন। ১৯৪২ সালে নবম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময় মহাত্মা গান্ধীর ‘ভারত ছাড়’ আন্দোলনে অংশ নিয়ে স্কুল গেটে ১৬ দিন ধর্মঘট করার মাধ্যমে নির্মল সেনের রাজনৈতিক জীবন শুরু হয়। তিনি ১৯৪৪ সালে রেভ্যুলিউশনারি সোশ্যালিস্ট পার্টি (আরএসপি)-তে যোগদানের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলের সাথে যুক্ত হোন। দেশ বিভাগের সময়কালে নির্মল সেনের মা-বাবা এবং ভাইবোনসহ পরিবারের সব সদস্য বাংলাদেশ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) ত্যাগ করে কলকাতা চলে যান। কিন্তু মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসায় নির্মল সেন এ দেশে থেকে যান। বাবা-মা কলকাতায় চলে যাওয়ার পর তিনি চলে যান বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার কলসকাঠি গ্রামে তার পিসির বাসায়। নির্মল সেন বড় হয়েছেন ঝালকাঠি জেলার কলসকাঠি গ্রামে তার পিসির বাড়ীতে। সেখানে ১৯৪৪ সালে মাত্র ১৪ বছর বয়সে তিনি কলসকাঠি বিএম একাডেমি থেকে প্রবেশিকা/ম্যাট্রিক (এসএসসি) পাস করেন । এরপর বরিশালের বিএম কলেজ থেকে ১৯৪৬ সালে আইএসসি পাস করে বিএসসি-তে ভর্তি হন। এসময় তিনি রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার হয়ে জেলে গেলে সেখান থেকে বিএসসি পরীক্ষা দিলেও অকৃতকার্য হন। তবে, পরবর্তীতে ১৯৬১ সালে জেলখানা থেকেই বিএ পরীক্ষায় অংশ নেন এবং কৃতকার্য হন। তিনি ১৯৬৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী অর্জন করেন। শৈশব থেকেই নির্মল সেনের লেখালেখিতে হাতেখড়ি হয়। তিনি ৮ম শ্রেণীতে পড়ার সময় হাতে লিখে প্রকাশিত ‘কমরেড’ পত্রিকায় নিয়মিত লিখতেন। নির্মল সেন মূলত: কলাম লেখক ছিলেন। এছাড়াও তিনি প্রবন্ধ এবং ভ্রমণকাহিনী লিখেছেন বেশ কয়েকটি। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে এদেশের সমকালীন সংঘাতপূর্ণ রাজনীতির প্রক্ষিতে তৎকালীন দৈনিক বাংলায় লেখা 'স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই' নামক একটি উপ-সম্পাদকীয় তাঁকে লেখক হিসেবে প্রভূত খ্যাতি ও পরিচিতি দান করে। তাঁর রচিত উল্লেখযোগ্য কিছু গ্রন্থঃ ১। মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্র, ২। বার্লিন থেকে মস্কো, ৩। পূর্ব বঙ্গ পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ, ৪। মা জন্মভূমি, ৫। লেনিন থেকে গর্বাচেভ, ৬। আমার জবানবন্দী, ৭। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই, ৮। আমার জীবনে ’৭১-এর যুদ্ধ ইত্যাদি।

কৃষক-শ্রমিক সমাজবাদী দলের প্রধান এ মানুষটির সাংবাদিকতার জীবন শুরু হয় দৈনিক ইত্তেফাকে যোগদানের মধ্যমে। ১৯৬১ সালে দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক পদে যোগদানের মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেন। পরবর্তীতে ১৯৬২ সালে তিনি দৈনিক জেহাদ পত্রিকায় এবং ১৯৬৪ সালে দৈনিক পাকিস্তান পত্রিকায় কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীকালে প্রেস ট্রাস্টের অধীনস্থ দৈনিক বাংলা পত্রিকায় সহকারী সম্পাদক হিসেবে যোগ দেন এবং পত্রিকাটির প্রকাশনা বন্ধ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এতেই যুক্ত ছিলেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগে অতিথি শিক্ষক হিসেবেও যুক্ত ছিলেন। ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি ছিলেন চির কুমার। নির্মল সেন‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’ লিখেছিলেন দৈনিক বাংলায়, তিয়াত্তরের মার্চের ষোল তারিখে। মাত্র নয়দিন আগে হয়ে গেছে স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে অনুষ্ঠিত প্রথম সাধারণ নির্বাচন। হত্যা, গুম, খুন, গণপিটুনিতে মৃত্যু ছিল তখন নিত্যদিনের খবর। আজকের মতোই। অবাক কান্ড। রূপান্তরের রূপকারকে মৃত্যুর কিছুদিন আগেও সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যার বিচার চেয়ে বলতে হলো ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’। নির্মল সেনের কলাম পড়ে বিচলিত হতেন শাসকগোষ্ঠি। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী (শেখ মুজিবর রহমান) পড়তেন তাঁর লেখা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে। দেশের হালহকিকত, মানুষের ‘মুড’, রাজনীতির ‘পালস’ বুঝতে হলে নির্মল সেনের কলাম পড়া চাই। বিচক্ষণ প্রধানমন্ত্রী জানতেন এবং তাই করতেন। নির্মল সেনও জানতেন, তাই বিশেষ বিশেষ বিষয় বেছে নিতেন প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য। কিন্তু গোল বাধতো মাঝে মাঝে। কারণ নির্মল সেন শুধু দৃষ্টি আকর্ষণ করেই ক্ষান্ত হ’তেন না। তীক্ষ্ণ সমালোচনার আঘাতে জর্জরিত করতেন কর্তৃপক্ষকে। প্রধানমন্ত্রীই বলেছিলেন, ‘নির্মল সেনের লেখার শেষে হুল থাকে’। ক্ষিপ্ত হতেন তিনি। প্রায়শই ‘মেসেজ’-এর জন্য রাগটা গিয়ে পড়তো ‘ম্যাসেঞ্জার-এর ওপরে। কিন্তু, নির্মল সেন সরকারী নীতির সমালোচনা করতে পিছপা হ’ন নি কখনো। শেখ মুজিব জানতেন, সবাইকে বাগে আনতে পারলেও নির্মল সেনকে আনা যাবে না। নির্মল সেন যখন বঙ্গবন্ধুর মুখের ওপরে, বলে দিলেন তিনি বাকশালে যোগ দেবেন না, তখন শেখ মুজিবও সবাইকে পরামর্শ দিলেন নির্মল সেনকে যেন না ঘাঁটায়।

(প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে নির্মল সেন)
ঙ্গবন্ধৃু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে ঘনিষ্ট সম্পর্ক ছিল নির্মল সেনের। পড়েছেন গোপালগঞ্জের স্কুলে। তাঁর কাকাদের শেখ মুজিব মামা বলে ডাকতেন। প্রাণখোলা প্রশংসা করেছেন তিনি মানুষ শেখ মুজিবের। তিনি লিখেছেন,"উল্লেখ করলে অন্যায় হবে না, এ একটি মানুষের আমলেই লিখে বা কথা বলে সাড়া পাওয়া যেত। পত্রিকায় প্রকাশিত আমাদের লেখা বা বক্তব্য মনে হয় তিনি খুটে খুটে পড়তেন। আমার অভিজ্ঞতা হচ্ছে শেখ মুজিবুর রহমানের আমলে আমার প্রতিটি লেখা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছিলো। সে লেখার ভিত্তিতে নির্দেশ গিয়েছে। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। একথা ঠিক, তার আমলের শেষের দিকে তিনিই নির্দেশ দিয়ে আমার লেখা বন্ধ করেছিলেন তবুও বলবো তার আমলে লেখায় সুখ ছিলো। লিখলে ফল হতো"। কিন্তু সে ফল বিস্বাদ ঠেকতো কারো কারো কাছে। নির্মল সেনের কলাম বন্ধ করা হয়েছিল শেখ সাহেবের নির্দেশে। চুয়াত্তরে জরুরী অবস্থা জারীর পরপর তাঁর লেখা বন্ধের নির্দেশ এসেছিলো। ‘দৈনিক বাংলার সম্পাদক তখন নূরুল ইসলাম পাটোয়ারী। তিনি তাঁকে ডেকে বললেন, প্রধানমন্ত্রী আপনার লেখা বন্ধ করেছেন। নির্দেশ দিয়েছেন অনিকেত ছদ্মনামে নির্মল সেনের উপসম্পাদকীয় আর দৈনিক বাংলায় ছাপা হবে না’। মাথা বিগড়ে গেল নির্মল সেনের। সরাসরি চলে গেলেন প্রধানমন্ত্রীর সাথে কথা বলতে গণভবনে। বঙ্গবন্ধুকে বললেন, ‘আপনি আমার লেখা বন্ধ করলেন কেন। আর সে কথা আমাকে না জানিয়ে সম্পাদক সাহেবকে জানালেন কেন। তারাতো আপনার সামনে ভয়েই কথা বলে না। তাদের কাছে এই কথা বলে লাভ আছে। তবে আপনার কথা আমি মানবো না। আমি আজকেই এই গণভবন থেকে ফোনে দৈনিক বাংলায় আমার লেখা দেবো’। ‘প্রধানমন্ত্রী খানিকটা গম্ভীর হলেন, ইংরেজিতে বললেননির্মল সেন, আপনাকে আমি জেলে পুরবো না। আপনি জনপ্রিয় হবেন। আপনার জন্য একটি সিসার গুলিই Sufficient (সাফিশিয়েন্ট),উত্তরে নির্মল সেন বললেন, প্রধানমন্ত্রী, "একই কথা আপনার জন্যও প্রযোজ্য। আপনার জন্যও একটি সিসার গুলিই Sufficient (সাফিশিয়েন্ট)।" শেষ পর্যন্ত হাস্যরসের মধ্য দিয়ে এই উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। নির্মল সেন সেদিন গণভবন থেকেই ফোনে দৈনিক বাংলার জন্য লেখা দিয়েছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় নি। বাকশাল গঠনের পর নির্মল সেনের লেখা আবার বন্ধ করা হয়। এ নিয়েও বাকবিতন্ডা হয় প্রেসিডেন্ট শেখ মুজিবের সাথে নির্মল সেনের। বাকশালের সময় সরকারী নিয়ন্ত্রণে মাত্র চারটি দৈনিক রেখে সব পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয়। এ নিয়ে প্রতিবাদ জানাতে সাংবাদিকদের নেতা নির্মল সেন গিয়েছিলেন শেখ মুজিবের কাছে। সেদিনও বাদানুবাদ হয় দুজনের মধ্যে প্রচন্ড। ‘you are going too far (ইউ আর গোয়িং টু ফার) নির্মল সেন!’ শেখ মুজিব ধমক দিয়েছিলেন। নির্মল সেন বলেছিলেন,‘ you are a liar (ইউ আর আ লায়্যার)’। ফেরার সময় শেখ সাহেব অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে নির্মল সেনকে বলেছিলেন, ‘নির্মল সেন, সত্যি সত্যি দেশটা গুন্ডার দেশ হয়ে গেছে। কিছু করতে পারলাম না। আপনি ঠিক বলেছেন, দেশটা হবে গুন্ডার দেশ’

আমাদের সৌভাগ্য নির্মল সেন লিখে গেছেন তার স্মৃতিচারণমূলক রচনা, "আমার জবানবন্দী"। অনেক কথাই লিখেছেন তিনি আমার জবানবন্দীতে। কিংবদন্তীর মতো মনে হয় তাঁর বর্ণিত ঘটনাগুলোকে। ইতিহাস, স্মৃতিচারণ, আত্মকথা সবই আছে তাঁর জবানবন্দীতে। অবিশ্বাস্য মনে হয় মাঝে মাঝে। কিন্তু নির্মল সেন মানুষটাইতো ছিলেন 'অবিশ্বাস্য রূপান্তরের এক বিস্ময়কর রূপকার'। গুন্ডার দেশে বিরল এক ব্যাক্তিত্ব'।

রূপান্তরের রূপকার নির্মল সেন ২০০৩ সালে ব্রেইনস্ট্রোকে আক্রান্ত হন এবং চিকিৎসা পরবর্তী সময় গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার দীঘিরগ্রামে নিজ বাড়ীতেই থাকতেন। এখানেই তিনি ২০০১২ সালে ২৩ ডিসেম্বর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং ২৪ ডিসেম্বর তাকে ঢাকায় এনে ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর ফুসফুসে যে ইনফেকশন ছিল, তা রক্তের ভেতর দিয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ায় (সেপটিসেমিয়া) তাঁকে ২৬ ডিসেম্বর থেকে লাইফ সাপোর্ট দেয়া হচ্ছিলো। এই অবস্থায় তিনি ২০১৩ সালের ০৮ জানুয়ারি তারিখ সন্ধ্য ৬ টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।
নির্মল সেনের মতো সৎ, আদর্শবাদী, নির্ভীক রাজনীতিক বাংলাদেশের গৌরব। তিনি মানুষের জন্য নিজের জীবনকে এমনভাবে তিলে তিলে উৎসর্গ করেছেন – ভাবলে শ্রদ্ধায় মাথা নত হয়। প্রখ্যাত সাংবাদিক, মুক্তিযোদ্ধা ও সুসাহিত্যিক নির্মল সেন নির্মল কুমার সেন গুপ্তের আজ ৭ম মৃত্যুবার্ষিকী। কমরেড নির্মল সেনের ৭ম মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
[email protected]

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৩:৫৬

রমিত বলেছেন: খুব ভালো লিখেছেন।
আমি উনাকে ব্যাক্তিগতভাবেই চিনতাম।
উনার চিরবিদায়ের পরপরই স্মৃতিচারণ করে আমি একটি প্রবন্ধ লিখেছিলাম।

ধন্যবাদ আপনাকে।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
রমিত ভাই
আপনাকে ধন্যবাদ
সুন্দর স্মৃতিচারণ
করার জন্য।

২| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:২৯

সাইয়িদ রফিকুল হক বলেছেন: সাহসী লোক ছিলেন।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
যারা স
সৎ তারাই সাহসী হতে পারেন।
অসৎ লোক হয় দূর্বল চিত্তের ।

৩| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৫২

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি কাউকে ভুলে যান না। মহৎ মানুষদের স্মরন করতে কৃপণতা করেন না। এটা খুব ভালো।

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০০

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কাউকে ভুলিনা এ কথা ঠিক নয়।
হাজারো গুণী জনের মাঝে দু-একজনকে
নিয়ে স্মৃতিচারণ করি। এটা আমার কৃতিত্ব না।

৪| ০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৩৭

জুল ভার্ন বলেছেন: শ্রদ্ধেয় নির্মল সেন আমার অন্যতম প্রিয় কলামিস্ট ছিলেন। "স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই" ঐতিহাসিক কলাম!

০৮ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ জুল ভার্ন
মন্তব্য প্রদানের জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.