নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভাষাতাত্ত্বিক ও সাহিত্য বিশারদ সুকুমার সেনের ১১৯তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

১৬ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:২৫


বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষক ও বিশেষজ্ঞ হিসেবে সুখ্যাত সুকুমার সেন। ভাষাতত্ত্ব ও বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস বিষয়ে ছিল তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য। বৈদিক ও ধ্রুপদি সংস্কৃত, পালি, প্রাকৃত, বাংলা, আবেস্তা ও প্রাচীন পারসিক ভাষায় তাঁর বিশেষ বুৎপত্তি ছিল। তুলনামূলক ভাষাতত্ত্ব ও পুরাণতত্ত্ব আলোচনাতেও তিনি তাঁর বৈদগ্ধের পরিচয় রেখেছিলেন।তিনি মিথ-আশ্রিত ভাষাতত্ত্ব বা পুরাণচর্চার পরিবর্তে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিটি অবলম্বন করতেন। জয়দেবের গীতগোবিন্দ কাব্যের প্রাচীন পুঁথিটি তাঁরই আবিষ্কার। সেকশুভোদয়া পুঁথিটিও তিনি সম্পাদনা করেছেন। তাঁর রচিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে চার খণ্ডে বিভক্ত ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস’, ‘বাঙ্গালা সাহিত্যে গদ্য’, ‘ইসলামী বাঙলা সাহিত্য’, ‘রামকথার প্রাক–ইতিহাস’, ‘ভারতীয় সাহিত্যের ইতিহাস’, ‘পরিজন পরিবেশে রবীন্দ্র–বিকাশ’, ‘চর্যাগীতি পদাবলী’ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ইংরেজি ভাষাতেও তিনি রচনা করেছেন বেশ কিছু গ্রন্থ। সকল রচনাই তথ্য–সমৃদ্ধ ও সত্যনিষ্ঠ। বিশেষ করে, চার খণ্ডে রচিত ‘বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস’ গ্রন্থখানি সাহিত্যমূল্য বিচারে অনন্য। ভাষাতত্ত্ব ও ধ্বনিতত্ত্বেও তাঁর প্রতিভা ও নৈপুণ্যের ছাপ সুম্পষ্ট। ‘কালিদাস তাঁর কালে’ এবং ‘যিনি সকল কাজের কাজী’ নামে দু খানা গোয়েন্দা গল্পও লিখেছেন সুকুমার। আাত্মজীবনী ‘দিনের পর দিন যে গেল’ সুখপাঠ্য একটি রচনা। আজ সাহিত্য বিশারদ সুকুমার সেনের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী। ১৯০০ সালের আজকের দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ভাষাতাত্ত্বিক ও সাহিত্য বিশারদ সুকুমার সেনের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

সুকুমার সেন ১৯০১ সালের ১৬ই জানুয়ারি ভারতের গোয়াবাগানের মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা হরেন্দ্রনাথ মিত্র ছিলেন বর্ধমান কোর্টের আইনজীবী এবং মা নলিনী দেবী। বর্ধমান জেলার গোতান গ্রামে ছিল তাঁদের পৈতৃক নিবাস। এখানেই সুকুমার সেনের পড়াশোনার শুরু। ১৯১৭ সালে বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল হাইস্কুল থেকে প্রথম বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষা এবং ১৯১৯ সালে বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে বাংলা, সংস্কৃত, লজিক ও অঙ্কে লেটার সহ প্রথম বিভাগে আই.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২১ সালে কলকাতার সংস্কৃত কলেজ থেকে সংস্কৃতে সাম্মানিক সহ প্রথম বিভাগে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে বি.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২৩ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তুলনামূলক ভাষাতত্ত্বে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে এম.এ. পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। ১৯২৫ সালে "সিনট্যাক্স অফ বৈদিক প্রোজ" নামে একটি থিসিস লিখে প্রেমচাঁদ-রায়চাঁদ বৃত্তি লাভ করেন। ১৯২৬ সালে তাঁর প্রথম গবেষণা প্রবন্ধ "নোটস অফ দি ইউজ অফ কেসেস ইন দ্য কথক সংহিতা" প্রকাশিত হয় এশিয়াটিক সোসাইটি জার্নালে। এরপর মধ্য ও আধুনিক (বাংলা) আর্যভাষার ঐতিহাসিক পদবিচারের উপর গবেষণা করে তিনি পি.এইচ.ডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তাঁর পিএইচ.ডি গবেষণার বিষয় ছিল ‘হিস্ট্রিক্যাল সিনট্যাক্স অব ইন্দো–আরিয়ান’। ভাষা, সাহিত্য, ধর্ম ও ইতিহাস বিষয়ে তিনি বহু জ্ঞানগর্ভ প্রবন্ধ রচনা করেছেন, লিখেছেন বেশ কিছু গ্রন্থ। তার উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলি হলঃ
১। ভাষার ইতিবৃত্ত (বাংলা ভাষাতত্ত্বের একটি পূর্ণাঙ্গ আলোচনা)
২। Women's Dialect in Bengali (বাংলা মেয়েলি ভাষা নিয়ে গবেষণামূলক রচনা)
৩। বাংলা স্থাননাম (বাংলা স্থাননাম নিয়ে ভাষাতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক বিশ্লেষণ)
৪। রামকথার প্রাক-ইতিহাস (রামায়ণ-সংক্রান্ত তুলনামূলক পুরাণতাত্ত্বিক আলোচনা)
৫। ভারত-কথার গ্রন্থিমোচন (মহাভারত-সংক্রান্ত তুলনামূলক পুরাণতাত্ত্বিক আলোচনা)
৬। A History of Brajabuli Literature (ব্রজবুলি সাহিত্যের ইতিহাস)
৭। বাঙ্গালা সাহিত্যের ইতিহাস (৫ট খণ্ডে, সুকুমার সেনের সবচেয়ে বিখ্যাত বই, বাংলা সাহিত্যের একটি পূর্ণাঙ্গ ও সামগ্রিক ইতিহাস)
৮। বঙ্গভূমিকা (বাংলার আদি-ইতিহাস সংক্রান্ত গ্রন্থ)
৯। বাংলা ইসলামি সাহিত্য
১০। বাঙ্গালা সাহিত্যের কথা
১১। বাঙ্গালা সাহিত্যে গদ্য
১২। দিনের পরে দিন যে গেল ( আত্মজীবনীমূলক রচনা )

ভাষাতত্ত্ব ও পুরাণ ছাড়া রবীন্দ্রসাহিত্যেও সুকুমার সেনের বিশেষ প্রজ্ঞা ছিল। তিনি ছিলেন রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য ব্যাখ্যাতা ও রসজ্ঞ। ১৯৬৪ সালে ভারতীয় আর্য সাহিত্যের ইতিহাস বইটির জন্য রবীন্দ্র পুরস্কার পান। এশিয়াটিক সোসাইটি তাঁকে 'যদুনাথ সরকার পদক' দিয়ে সম্মানিত করে। রবীন্দ্রচর্চা কেন্দ্র থেকে পান 'রবীন্দ্র তত্ত্বাচার্য' উপাধি। তিনি আনন্দ পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯২ সালের ৩রা মার্চ প্রয়াত হন ভাষাতাত্ত্বিক ও সাহিত্য বিশারদ সুকুমার সেন। আজ সাহিত্য বিশারদ সুকুমার সেনের ১১৯তম জন্মবার্ষিকী। ১৯০১ সালের আজকের দিনে কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ভাষাতাত্ত্বিক ও সাহিত্য বিশারদ সুকুমার সেনের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: শুভেচ্ছা জানাই।

১৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে দন্যবাদ
জানাই খান ভাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.