নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
খ্যাতিমান কিংবদন্তি ইংরেজ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন। শুধু হলিউড নয়, গোটা বিশ্বের কোটি কোটি দর্শকের হৃদয় কেড়ে নিয়েছিলেন অড্রে হেপবার্ন তাঁর রূপ এবং গুণ দিয়ে৷ দুর্দান্ত অভিনয় দিয়ে যেমন হলিউড মাত করে দিয়েছিলেন, পাশাপাশি বিশ্বের অন্যতম ফ্যাশন আইকন হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। ২০১০ সালের একটি জরিপে গত শতাব্দীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। হেপবার্ন ছিলেন একজন ফ্যাশন আইকন, যার ছবি ছিল 'ভোগ' এবং 'হারপার বাজার'-এর প্রচ্ছদের পরিচিত মুখ। যেমন ছিল তাঁর সরলতায় ভরা মায়াভরা মুখ, তেমনি ছিলো মমতায় ভরা একটি সুন্দর মন৷ তাইতো শরীরে ক্যান্সার নিয়েও তিনি ছুটে বেড়িয়েছিলেন আফ্রিকাৃর বিভিন্ন জনপদে৷ পরম মমতায় কোলে তুলে নিয়েছিলেন অনাথ ও আশ্রয়হীন শিশুদের৷ প্রয়াত এই মহান অভিনেত্রী ১৯৯৩ সালের আজকের দিনে ৬৩ বছর বয়সে সুইজারল্যান্ডের টলোচেনাজ ভডে মৃত্যুবরণ করেন। আজ তার ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। কিংবদন্তি ইংরেজ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের মৃত্যুদিনে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
অড্রে হেপবার্ন (Audrey Hepburn) ১৯২৯ সালের ৪ঠা মে বেলজিয়ামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম এডা ভ্যান হেমেস্ট্রা অড্রে ক্যাথলিন হেপবার্ন রাস্টন। হেপবার্ন এর পিতার নাম জোসেফ এন্থনি রাস্টন আর মার নাম ব্যারোনেস এলা। হেপবার্নের শৈশবের অধিকাংশ সময় কাটান বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড ও নেদারল্যান্ড এই তিন দেশে। তাঁর পিতার চাকরীর সুবাদে তিনি তিন দেশে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানদের দখলে থাকা নেদারল্যান্ডের আর্নহেম শহরেও তিনি অবস্থান করেছিলেন। আমস্টারডামে থাকাকালীন, তিনি সোনিয়া গাস্কেলের সাথে ব্যালে নিয়ে পড়াশুনা করতেন। তিনি কয়েকটি ভাষায় দক্ষ ছিলেন, এর মধ্যে ইংরেজি, ফরাসি, ডাচ, ইতালীয়, স্প্যানিশ ও জার্মান অন্তর্ভুক্ত। তিনি ইংরেজি, ডাচ , ফ্রেঞ্চ ইটালিয়ান ভাষায় কথা বলতে পারতেন। ১৯৪৪ সালের মাঝে তিনি দক্ষ ব্যালে ডান্সার হয়ে ওঠেন । একটি খারাপ অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে অড্রের মা বাবার বিচ্ছেদ হয়। ১৯৪৮ সালে তিনি লন্ডনে চলে আসেন ম্যারি রেমবার্টের সাথে ব্যালে প্রশিক্ষণ অব্যাহত রাখেতে এবং সমবেত সঙ্গীতদলের একজন হিসেবে ওয়েস্ট এন্ড মিউজিকাল প্রোডাকশনে কাজ করার সুযোগ পান। তার পর ১৯৬০ সালে রেড ক্রস এর মাধ্যমে ডাব্লিনে তিনি তাঁর বাবার দেখা পান এমং মারা যাওয়ার আগ অব্দি আর্থিক ভাবে সাহায্য করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুধের সময় অড্রের মা তাঁকে নিয়ে নেদারল্যান্ড এ চলে আসেন। সেই সময় তিনি এনিমিয়া এবং অপুষ্টির শিকার হন। বিশ্ব যুদ্ধ তাঁর মনে এত টাই প্রভাব ফেলে যে তিনি ইউনিসেফ এর সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করেন। তিনি ইউনিসেফ এর শুভেচ্ছা দূত হয়ে কিছুদিন কাজ করেন। ১৯৯০ সালে তিনি ভিয়েতনাম ভ্রমন করেন। তিনি ইথিওপিয়ার এক এতিম খানায় যান এবং খাবার এর ব্যবস্থা করেন ।
অর্ডে হেপবার্ন প্রথম অভিনেত্রী যিনি একই সিনেমায় (রোমান হলিডে, ১৯৫৩) অভিনয়ের জন্য অস্কার, গোল্ডেন গ্লোব ও বাফটা পুরস্কার অর্জন করেন (১৯৫৪)। বিখ্যাত রোমান হলিডে ছবিতে তিনি প্রিন্সেস অ্যান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন৷ রোমান হলিডের সাফল্যের পর তিনি ১৯৫৪ সালে Sabrina ছবিটি করেন এবং একি সাথে Academy Award for best Actress এবং Bafta Award এর জন্য মনোনীত হন। 'সাবরিনা' কেবল তাকে খ্যাতির শীর্ষেই পেঁৗছে দেয়নি, তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে তার প্রিয় ডিজাইনার এবং তখনকার সফলতম ডিজাইনার ব্র্যান্ড 'গিভেঞ্চি'র কর্ণধার হিউবার্ট ডি গিভেঞ্চির সঙ্গেও। এর পর থেকে গিভেঞ্চি হেপবার্নের ব্যক্তিগত স্টাইলিস্ট হিসেবে কাজ করা শুরু করেন। তার পোশাক, অনুষঙ্গ সবকিছুর দায়িত্বেই ছিলেন গিভেঞ্চি। হলিউডের রূপালি পর্দার অন্যতম স্টাইল আইকন অড্রে হেপবার্ন কেবল একজন সফল অভিনেত্রীই নন, বরং শত পুরুষের স্বপ্নের নারীও বটে। শুধু তার অভিনয় বা পোশাকই নয়, তার হেয়ার স্টাইলও ছিল দারুণ আকর্ষণীয়। হোক তা কোনো ছবির দৃশ্যের হেপবার্ন অথবা সদ্য প্লেন থেকে নামা এক ক্লান্ত যাত্রী হেপবার্ন। তার চুলের স্টাইল সব সময়ই ফিটফাট, যাকে বলে 'পারফেক্ট'। কিউভিসি নামে সবচেয়ে বড় বিপণি চ্যানেলের এক জরিপে গত শতাব্দীর সবচেয়ে সুন্দরী নারী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন কিংবদন্তি অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্ন । দ্বিতীয় সেরা হয়েছেন চেরিল কোল। তিনি মেরিলিন মনরোকে পেছনে ফেলেছেন। মেরিলিন মনরো হয়েছেন তৃতীয়। জরিপে এ তিনজনের পরে সেরা সুন্দরীরা হলেনঃ অ্যানজেলিনা জোলি, গ্রেস কেলি, স্কারলেট জোহানসন, হেলি বেরি, প্রিন্সেস ডায়ানা, কেলি ব্রুক ও জেনিফার এনিস্টোন।
১৯৯৩ সালের ২০ জানুয়ারি এপেন্ডিক্স ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সুইজারল্যান্ডে নিজ বাসায় ৬৩ বছর বয়সে ঘুমের মাঝে মারা যান কিংবদন্তি এই অভিনেত্রী। তার মৃত্যুর খবর শুনে অভিনেতা গ্রেগ্রি পেক ক্যামেরার সামনে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। প্রসঙ্গতঃ মারা যাবার চার মাস আগে সোমালিয়া এবং বাংলাদেশ ভ্রমন করেন এই অভিনেত্রী। এম্পায়ার ম্যাগাজিনের তালিকা অনুযায়ী বিশ্বের 'টপ ১০০' তালিকায় থাকা এই ফ্যাশন আইকনের শারীরিক মৃত্যুহলেও বিশ্বজুড়ে তার নাম যুগ যুগ ধরে ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি, ফ্যাশনবোদ্ধা তথা ফ্যাশন সচেতনদের স্মরণে থাকবে নিঃসন্দেহে।
তোমারেই যেন ভালোবাসিয়াছি শত রূপে শত বার/
জনমে জনমে, যুগে যুগে অনিবার।/…. আমরা দুজনে ভাসিয়া এসেছি
যুগল প্রেমের স্রোতে/ অনাদিকালের হৃদয়-উৎস হতে।/আমরা দুজনে করিয়াছি খেলা/
কোটি প্রেমিকের মাঝে….
অড্রি হেপবার্নের প্রিয় কবিতা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ’অনন্ত প্রেম’কবিতাটি। আমাদের রবী ঠাকুর তার প্রিয় কবি। তার মৃত্যু পর অভিনেতা গ্রেগোরি পিক টিভি ক্যামেরার সামনে আসেন এবং তার পছন্দের কবিতা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ’অনন্ত প্রেম’ কবিতাটি আবৃত্তি করেন।হলিউডের কিংবদন্তী অভিনেত্রী অড্রি হেপবার্নের ২৭তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। খ্যাতিমান ইংরেজ অভিনেত্রী অড্রে হেপবার্নের ২৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]
২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:০৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কখন যেন আপনি বলে ফেলেন রাজীব খান কে?
আপনার এই প্রশ্নের জবাব আগে থেকে মুখস্ত করে রাখুন!
তার নাম রাজীব নূর খান। ভেবেছিলেন ব্যবসা করবেন।
তার ভালো লাগে পড়তে- লিখতে আর বুদ্ধিমান লোকদের
সাথে আড্ডা দিতে। কোনো কুসংস্কারে তিনি বিশ্বাস করেন না।
নিজের দেশটাকে অত্যাধিক ভালোবাসেন এবং সৎ ও পরিশ্রমী
মানুষদের শ্রদ্ধা করেন। চাঁদগাজি তার আদর্শ!!
২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৫৫
মিরোরডডল বলেছেন: One of my favourite actress
ভীষণ ভালো লাগে
রোমান হলিডে যে কতবার দেখেছি !
আরও কত মুভি
সুইট কিউট চঞ্চল অস্থির লাভেবল একটা চরিত্র
২১ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৫২
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মিরোরডডল
চমৎকার শব্দ চয়নে অড্রে হেপবার্নের
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদনের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জানুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৫৪
রাজীব নুর বলেছেন: অড্রে হেপবার্ন কে আজই প্রথম চিনলাম। জানলাম।