নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বিংশ শতাব্দির জনপ্রিয় কবি রবার্ট ফ্রস্ট আমেরিকান কবি রবার্ট ফ্রস্ট। শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, বিশ্বজুড়ে কবিতাপ্রেমী মানুষের কাছে সমাদৃত একটি নাম কবি রবার্ট ফ্রস্ট। সাহিত্যের প্রতিটি শাখায় যার রয়েছে সৃষ্টির স্বাক্ষর। ছাত্রজীবন থেকেই রবার্ট ফ্রস্ট সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে সম্পৃক্ত হন। তবে কবিতার প্রতি ছিল তাঁর প্রবল ঝোঁক। ১৮৯৪ সালে প্রথম কবিতা ‘মাই বাটারফ্লাই’ ছাপা হয় নিউইয়র্ক ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায়। প্রথমে বিভিন্ন পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও স্মরণিকায় এবং পরবর্তী কালে বিখ্যাত পত্র-পত্রিকার সাহিত্যপাতায় তাঁর কবিতা ছাপা হতো। অচিরেই তিনি কাব্যজগতে পরিচিত ও খ্যাতিমান হয়ে ওঠেন। একজন কবিকে বিখ্যাত হতে হলে অনেক কবিতার দরকার হয় না। অসংখ্য কাব্য সম্ভারের মধ্যে দু’চারটি উল্লেখযোগ্য কবিতাই তাঁকে খ্যাতিমান করে তুলতে পারে। রবার্ট ফ্রস্টের ‘দ্য রোড নট টেকেন’সে রকম একটি কবিতা। রবার্ট ফ্রস্টের কবিতায় প্রেম আছে। বিরহকাতর ভালোবাসা আছে। অন্যায় ও অসংগতির বিরুদ্ধে আছে সোচ্চার প্রতিবাদ। সত্যনিষ্ঠ দেশাত্মবোধ আছে। কর্তব্য পরায়ণে দৃঢ়তা আছে। অদম্য সাহস, দ্রোহ এবং প্রবল উত্তাপ আছে। আরও আছে জীবনবোধের বৈচিত্র্যময় আনন্দ ক্ষেত্র বিনির্মাণের প্রবল স্পৃহা। এসব কারণেই সাহিত্য জগতে কবি রবার্ট ফ্রস্ট অনির্বাণ ও অমর হয়ে থাকবেন। কবি রবার্ট ফ্রস্ট ১৯৫০ সালের টাইম ম্যাগাজিনের সেরা ব্যক্তিত্বের সম্মানে ভূষিত হয়েছিলেন। এ ছাড়া লাইফ ম্যাগাজিনসহ বেশ কয়েকটি বিখ্যাত পত্রিকার কভার স্টোরি হয়েছিলেন তিনি। রবার্ট ফ্রস্ট এর ‘দি লেসন ফর টুডে’ নামক একটি বিখ্যাত কবিতার ‘আই হ্যাড এ লাভার্স কুরয়েল উইথ দ্যা ওয়ার্ল্ড’ বিখ্যাত লাইনটির কোড নিয়ে আমেরিকায় একটি সাড়া জাগানো মুভি হয়েছিল। এখনো তাঁর কবরের স্মৃতিফলকে লেখা রয়েছে—‘আই হ্যাড এ লাভার্স কুরয়েল উইথ দ্য ওয়ার্ল্ড।’ একাকীত্ব, বেদনাবোধ, সাংসারিক ও পারিবারিক জীবনের হতাশা যার মাঝে রোপন করেছিল কবিত্বের বীজ, আজীবন প্রকৃতির বিচিত্র নিসর্গে নিজ জীবনের অর্থ ফুটিয়ে তুলেছেন যে কবি, আরো স্পষ্ট করে যদি বলি, ইংরেজী সাহিত্যের সেরা ১০জন কবির তালিকা হলে যার নাম আধিপত্যের সাথে সামনের সাড়িতে থাকবে, তিনি কবি রবার্ট ফ্রস্ট । আজ এই জনপ্রিয় কবির ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দের আজকের দিনে ম্যাসাচুসেটসে পরলোকগমন করেন রবার্ট ফ্রস্ট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য ও জনপ্রিয় কবি রবার্ট ফ্রস্ট এর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
রবার্ট ফ্রস্ট ১৮৭৪ খ্রিস্টাব্দের ২৬ মার্চ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সান ফ্রান্সিসকোতে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা সাংবাদিক উইলিয়াম প্রেসকট ফ্রস্ট জুনিয়র এবং মাতা ইসাবেলা মুডি। বাবা মা উভয়ই খুব খুশি হলেন ঐ চাদঁমুখো শিশুটিকে পেয়ে। তবে সমস্যাটা শুরু হয় ছেলের নাম রাখা নিয়ে। একদিকে সাহিত্যানুরাগী মা ইসাবেল মুডি চেয়েছিলেন ছেলের নাম হবে বিশ্বখ্যাত কবি রবার্ট বার্নসের নামানুসারে। অন্যদিকে মায়ের দেয়া এমন নাম মনঃপূত হলোনা বাবা উইলিয়ামের। তিনি চাইলেন জননন্দিত ব্যক্তিত্ব জেনারেল লি এর নামের অনুকরনেই রাখা হবে নবজাতকের নাম। সবশেষে, দুজনের নামের প্রতিই শ্রদ্ধা রেখে এই শিশুর নাম রাখা হয় রবার্ট লি ফ্রস্ট। অবশ্য, এ শিশুটিই পরবর্তীতে পৃথিবী জুড়ে পরিচিত হন রবার্ট ফ্রস্ট হিসেবে। ১৮৮৫ সালে ক্ষয়রোগে মৃত্যুবরণ করেন তার বাবা উইলিয়াম ফ্রস্ট। তখন রবার্ট ফ্রস্টর বয়স মাত্র ১১ বছর। এরপর কিছুদিন পর তার মা তাদের নিয়ে আসেন নিউ হ্যাম্পশায়ারে। তিনি সেখানে স্কুলশিক্ষকের চাকরি নিয়ে সংসারের হাল ধরেন। নিউ হ্যাম্পশায়ারে আসার পর ফ্রস্ট আবর্তিত হতে থাকেন ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে। আর্থিক টানাপোড়নেে একপর্যায়ে পুত্রকে নিয়ে ম্যাসাচুসেটসের শ্বশুর বাড়ি অর্থাৎ রবার্ট-এর দাদার বাড়িতে চলে যান। দাদা উইলিয়াম প্রেস্কট ফ্রস্ট তাঁর আদরের নাতিকে ভালো স্কুলে পড়াশোনা করবার সুযোগ করে দেন। রবার্ট ফ্রস্টের প্রথম দুটি কবিতা প্রকাশিত হয় ১৮৯০ সালে তার স্কুল বুলেটিনে। তার প্রথম কবিতার নাম ছিলো “লা নচে ট্রিস্ট” আর দ্বিতীয়টি “দ্যা সং অব দ্যা ওয়েভ”। পরের বছর ঐ স্কুল বুলেটিনের ইডিটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন ফ্রস্ট । ১৮৯২ সালে তিনি কৃতিত্বের সঙ্গে হাইস্কুল পাশ করেন। পরবর্তীতে গ্রামীণ জীবনের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠলেও তিনি বড় হয়েছিলেন শহরে, নাগরিক পরেবেশে। হাইস্কুলে পড়ার সময় কবিতা পড়া এবং কবিতা লেখার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেন। এ স্কুলের একটি সাময়িকীতে তাঁর প্রথম কবিতা প্রকাশিত হয়। হ্যানোভারের ডার্টমাউথ কলেজে তিনি কিছুদিন পড়াশোনা করেন। তারপর বাড়ি ফিরে আসেন। পড়াশুনার পাট চুকে যাওয়ার বিভিন্ন কাজ করে আয়-উপার্জ্জনের চেষ্টা করেছেন। বাবা মায়ের কোলে বেড়ে উঠা আদরের ছোট্ট ছেলেটি কখনো হয়েছেন দিনমজুর, কখনো জুতার দোকানের কর্মচারী কিংবা কখনো কারখানার শ্রমিক। আবার কখনো ঠেলেছেন পশমের ববিন বোঝাই গাড়ি। তবুও থেমে থাকেনি কবির সাহিত্য সাধনা। শেষাবধি জীবিকার জন্য তিনি শিক্ষকতাকে বেছে নেন। জীবনসংগ্রাম থেকে প্রাপ্ত তিক্ত অভিজ্ঞতা চিত্রায়িত করেছেন তার কবিতার অসামান্য লাইনগুলোতে । জীবনের প্রথম দিককার কবিতাগুলোয় ভেসে উঠেছে নিউ হ্যাম্পাশায়ারের পথ, ঘাট, প্রকৃতি। তার কবিতায় ফুটে উঠেছে শরতের পাতা ঝরা রঙ ঝলমলে দিন, গ্রীষ্মের আলোকিত লম্বা দুপুর। আর বসন্তের সন্ধিক্ষণে পরিযায়ী পাখিদের ফিরে আসার গল্প। ১৮৯৪ সালের মার্চে “দি ইনডিপেন্ডেন্ট” পত্রিকায় তার কবিতা “মাই বাটারফ্লাই” এবং “এ্যান এলিজি” প্রকাশিত হয় । বিনিময়ে তিনি ১৫ডলার সম্মানী পান । এ অর্জিত অর্থ দিয়ে তিনি “টোয়াইলাইট” বইয়ের দুটি কপি প্রকাশ করেন। তার একটি কপি তিনি প্রাণপ্রিয় এলিনরকে উপহার করেন । ভাগ্যের পরিহাস এমন হলো যে, এলিনর বইটি ছুড়ে ফেলে দেন । এঘটনার পর রবার্ট মানসিকভাবে এতটাই ভেঙে পরেন যে, তিনি সেই স্থান ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নেন ।
(কবি রবার্ট ফ্রস্টের বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ “নিউ হ্যাম্পাশায়ার”)
বিংশ শতাব্দির কবি রবার্ট ফ্রস্ট শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, বিশ্বজুড়ে কবিতাপ্রেমী মানুষের কাছে সমাদৃত একটি নাম। তাঁর কবিতা পরিহাস ও দ্ব্যর্থবোধক রহস্যময়তার নানা স্তরবিন্যাস সৃষ্টি করে কবিতানুরাগী মানুষের হৃদয়ে। অথচ কাব্য চর্চার প্রথম জীবনে রবার্টকে কেউ গোনায় ধরত না। অনেকে তাঁর কবিতা ছাপতে চায়নি। এ প্রসঙ্গে একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করা যায়। একবার দ্য আটলান্টিক মান্থলি নামে পত্রিকা কর্তৃপক্ষ রবার্টের কবিতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন (!) এই বলে যে, ‘মাসিক আটলান্টিক’-য়ে এসব কবিতার স্থান নেই। তখন রবার্ট খুব দুঃখ পেয়েছিলেন। কিন্তু মন খারাপ করে ঘরে বসে থাকেননি। কবিতা ও সাহিত্যচর্চায় আরও মনোযোগী হলেন এবং সফল হলেন। কাব্যখ্যাতির উচ্চ শিখরে ওঠার পর ওই পত্রিকা কর্তৃপক্ষ ভুল স্বীকার করে পুনরায় লেখা চেয়েছিল। কিন্তু তখন আর তিনি লেখা দেননি। পরবর্তী কালে ওই পত্রিকাটিও রবার্টকে নিয়ে কভার স্টোরি করেছিল। ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে তাঁর বয়েজ উইল এবং নর্থ অব বোস্টন প্রচ্ছদনামে দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। সারা দেশে তাঁর কবিখ্যাতি ছড়িয়ে পড়তে থাকে ইতোমধ্যে। ১৯২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে যুক্তরাস্ট্রের শীর্ষস্থানীয় খ্যাতিমান কবিদের একজন হয়ে ওঠেন রবার্ট ফ্রস্ট। ১৯২৩ সাল ছিলো রবার্টের সাফল্যের স্বীকৃতি পাওয়ার বছর । সে বছর তিনি ডারমণ্ড বিশ্ববিদ্যালয় হতে LHD পুরষ্কার লাভ করেন । এসময় রবার্ট পুনরায় তার পূর্বের কর্মস্থল আর্মহাস্ট কলেজে নিযুক্ত হন । সেখানে তার সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছিলেন, ১৯২৩ সালে কোয়ান্টাম মেথডের জন্য নোবেল প্রাপ্ত পদার্থবিজ্ঞানী নিলস বোর । সে বছরই তিনি প্রকাশ করেন তার বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ “নিউ হ্যাম্পাশায়ার” । যেটি ১৯২৪ সালে তাকে পুলিৎজার পুরষ্কার এনে দেয় । পুলিৎজার পাওয়ার পরপরই মিডিলবুরি কলেজ ও ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডি-লিট ডিগ্রী প্রদান করে । মিশিগান ইউনিভার্সিটি থেকে পান আমরণ ফেলোশিপ । ১৯২৮ সালে রবার্টের ছোট বোন জিনি মৃত্যুবরণ করলে, আবারও তিনি মানসিকভাবে প্রচণ্ড ভেঙ্গে পরেন । এর দুবছর পর ১৯৩০ সালে “কালেক্টেড পয়েমস” প্রকাশিত হয় । এ বইটির জন্য ১৯৩১ সালে পুনরায় পুলিৎজার পুরষ্কার লাভ করেন । এরপর ১৯৩৪সালে তার কণ্যা মার্জরি মৃত্যুবরণ করলে, দারুন শোকাহত হন রবার্ট । ১৯৩৬ সালে শোকাভূত কবি লিখে ফেললেন “এ ফার্দার রেন্জ” নামক একটি গ্রন্থ । যা পরের বছর তাকে ৩য় বারের মতো পুলিৎজার পুরষ্কার এনে দেয় । সাথে সাথে তাকে আমেরিকান ফিলোসফিকাল সোসাইটির সদস্য করা হয় । ১৯৩৯ সালে তিনি ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব আর্টস এন্ড লেটারস এর থেকে নিউইয়র্ক স্বর্ণপদক পান । এবছরই মে মাসে তিনি হাভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ” রালফ ওয়ালডো এমার্সন ফেলো” হিসেবে যোগদান করেন । ১৯৪২ সালে প্রকাশ করেন A winter age নামের একটি কাব্যগ্রন্থ । মাত্র দু মাসেই বইটি প্রায় দশ হাজার কপি বিক্রি হয় এবং বইটি তাকে ৪র্থ বারের মতো পুলিৎজার পুরষ্কারে ভূষিত করে । রবার্ট ফ্রস্টই একমাত্র কবি, যিনি পরপর চারবার পুলিৎজার পুরষ্কারে ভূষিত হন । এরপর নির্দিষ্ট বিরতিতে উনার বই প্রকাশিত হতে থাকে । “স্টিপল বুস”, “এ ম্যাক্স অব মারসি”, “এ কম্প্লিট ওয়ার্ক অব রবার্ট ফ্রস্ট” নামের গ্রন্থগুলো বেশ সমাধৃত হয় পাঠকমহলে ।
(Frost and his wife, Elinor, with their children, in 1915)
ব্যক্তিগত জীবনে ‘ইলিনর মিরিয়াম হোয়াইট’ নামে তারুণ্যময়ী এক স্কুল শিক্ষিকার প্রেমে পড়ে যান এবং ১৮৯৫ সালে তার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এসময় তিনি হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশুনা করছিলেন। ইলিনর মিরিয়াম হোয়াইট ফস্ট্রের কবি-জীবনে এক অনবদ্য প্রেরণা হয়ে আবর্ভুত হন। বাস্তব জীবনে তাদের ছিল ছয় সন্তান। ১৯৩৮ সালে রবার্ট ফ্রস্টের স্ত্রী মারা যান। এ সময় তাঁর জীবন চরম অসহনীয় হয়ে ওঠে। নিঃসঙ্গতার ব্যাধিতে নেমে আসে কঠিন ট্র্যাজেডি। স্ত্রীকে হারানোর বেদনা না কাটতেই রবার্ট তাঁর চার সন্তানকে হারান। তাদের মধ্যে দুই কন্যা চরম মানসিক রোগাক্রান্ত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। পুত্র ক্যারল টুকটাক কবিতাও লিখতেন। এক সময় সেই পুত্রটি আত্মহত্যা করেন। মা ও সন্তানের শোক কাটাতে না কাটাতেই পরের বছর তার দাদাও পাড়ি জমান পরপারে। এসব ঘটনা রবার্টের জীবনের স্বাভাবিক গতি একেবারেই মন্থর করে ফেলে । প্রাণপ্রিয় স্ত্রী, দাদা ও সন্তানদের হারিয়ে অনেক বেদনার মধ্যেও টলে যাননি ফ্রস্ট। জীবনকে গতিশীল রাখার জন্য ১৯৫৭ সালে রবার্ট ফ্রস্ট ইংল্যান্ড ও গ্রিস এবং ১৯৬১ সালে ইসরায়েল সফর করেন। একই বছর (১৯৬১) প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ইনাগ্রেসন অনুষ্ঠানে রবার্ট ফ্রস্ট তাঁর দু’টি বিখ্যাত কবিতা আবৃত্তি করেন। সকালের সূর্যকিরণ যখন হোয়াইট হাউসের প্রেসিডেন্ট প্যালেসের সুবিশাল সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সকলকে শিহরিত করছিল। তখন রবার্ট ফ্রস্ট কর্তৃক আবৃত্ত ‘দ্যা প্রিপেচ’ এবং ‘দ্যা গিফট আউট রাইট’ কবিতা দু’টি সবাইকে মুগ্ধ ও বিমোহিত করে। প্রেসিডেন্ট ‘জন এফ কেনেডি’ এবং অন্যান্য অনেক বিখ্যাত ব্যক্তিদের সাথে ছবিসহ পরদিন নিউইয়র্ক টাইমস এবং অনেক পত্রিকার কভার স্টোরি ছিল কবি রবার্ট ফ্রস্টের।
১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দের ২৯ জানুয়ারি ম্যাসাচুসেটসে পরলোকগমন করেন স্বনামধন্য ও জনপ্রিয় কবি কবি রবার্ট ফ্রস্ট। রবার্ট ফ্রস্ট কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েও জীবনকে বিচিত্রভাবে উপভোগ করেছেন। জীবন ও কমের্র কঠিনতম দিকগুলো তাঁকে আরও বেশি স্পষ্ট করে তোলে। রবার্ট ফ্রস্টের কবিতায় প্রেম আছে। বিরহকাতর ভালোবাসা আছে। অন্যায় ও অসংগতির বিরুদ্ধে আছে সোচ্চার প্রতিবাদ। সত্যনিষ্ঠ দেশাত্মবোধ আছে। কর্তব্য পরায়ণে দৃঢ়তা আছে। অদম্য সাহস, দ্রোহ এবং প্রবল উত্তাপ আছে। আরও আছে জীবনবোধের বৈচিত্র্যময় আনন্দ ক্ষেত্র বিনির্মাণের প্রবল স্পৃহা। এসব কারণেই সাহিত্য জগতে কবি রবার্ট ফ্রস্ট অনির্বাণ ও অমর হয়ে থাকবেন। আজ এই জনপ্রিয় কবির ৫৭তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৬৩ খ্রিস্টাব্দের আজকের দিনে ম্যাসাচুসেটসে পরলোকগমন করেন রবার্ট ফ্রস্ট। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য ও জনপ্রিয় কবি রবার্ট ফ্রস্ট এর মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:০৩
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে স্বপ্নের শঙ্খচিল
স্বনামধন্য ও জনপ্রিয় কবি রবার্ট ফ্রস্ট এর
মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।
২| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:১১
রাজীব নুর বলেছেন: এই পোষ্ট টি আমি আগে পড়েছি। বিশ্বাস করুন।
তবে ছবি গুলো নতুন যোগ করেছেন।
২৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:৫৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কবে পড়েছেন বলে আপনার ধারণা ?
রবার্ট ফ্রস্ট কত সালে ইসরায়েল ভ্রমন করেন?
৩| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ১১:৪৪
নিভৃতা বলেছেন: বিশ্বের সকল বিশিষ্টজনদের জন্ম ও মৃত্যুবার্ষিকীতে এভাবে স্মরণ করা মোটেই সহজ কাজ নয়। গুটি কয়েকজনেরটা স্মরণ করা যায়।
আপনি সেই অসাধ্য কাজটা প্রতিদিনই করে যাচ্ছেন। সত্যি আপনার কোন তুলনা নাই।
বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই মহান কবিকে।
৩০ শে জানুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:০৫
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
ধন্যবাদ আপনাকে নিভৃতা।
আপনার চমৎকার অনুপ্রেরনাদায়ী
মন্তব্য আমাকে আমার লেখার ক্ষেত্র
আরও উর্বর করবে।
ভালো থাকবেন
©somewhere in net ltd.
১| ২৯ শে জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:২৮
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য ও জনপ্রিয় কবি রবার্ট ফ্রস্ট এর মৃত্যুবার্ষিকীতে
.....................................................................................
আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি।