নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বাংলাদেশে টেলিভিশনে রান্নার অনুষ্ঠানের পথিকৃৎ, জনপ্রিয় উপস্থাপক এবং পুষ্টিবিদ সিদ্দিকা কবির। বাংলাদেশে রান্নার বই লেখার প্রচলন এবং তা জনপ্রিয় করে তোলার প্রধান কৃতিত্ব সিদ্দিকা। তাঁর বই বাংলাদেশের রসনাবিলাসী মানুষের রান্নাঘরে অপরিহার্য হয়ে উঠে সেই সত্তরের দশক থেকে। রান্না করতে পছন্দ করেন অথচ সিদ্দিকা কবীরের বই নেড়ে চেড়ে দেখেননি এমন মানুষ বোধ হয় খুব একটা পাওয়া যাবে না বাংলাদেশে। বাংলাদেশের বুক শেলফ পেরিয়ে সিদ্দিকা কবীর পৌছে গেছেন সুদূর প্রবাসেও। বিদেশে পড়তে যাবার আগে রান্নায় অপটু ছাত্র-ছাত্রীরা স্যুটকেসে ভরে নিয়েছেন তাঁর বই। তার রচিত "রান্না-খাদ্য-পুষ্টি" সবচেয়ে বেশি বিক্রিত রান্নার বই। সিদ্দিকা কবীর তার ‘রান্না খাদ্য পুষ্টি’ বইটির জন্য ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। ১৯৮৪ সালে ইংরেজি ভাষায় একটি কারি রান্নার বই লিখেন। ১৯৮০ সালে লিখেন পাঠ্যবই খাদ্যপুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থা যা স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো হয়। এছাড়া তিনি ১৯৯৭ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে রসনা নামে কলাম লিখেন যা পরবর্তীতে খাবার দাবারের কড়চা নামে প্রকাশিত হয়।শুধু বই লেখাতেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না সিদ্দিকা কবীর। ১৯৬৫ সালে তখনকার পাকিস্তান টেলিভিশনে ‘ঘরে বাইরে’ নামে একটি রান্নার অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তার টিভি উপস্থাপনার শুরু। ‘‘সিদ্দিকা কবীর’স রেসিপি‘‘ নামে তাঁর একটি সাম্প্রতিক টেলিভিশন শো ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় বাংলাদেশের দর্শকদের কাছে। সেই অনুষ্ঠানে তার সাথে উপস্থাপনার কাজ করতেন শারমিন লাকি। সিদ্দিকা কবির দীর্ঘদিন ঢাকার গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানে উচ্চশিক্ষা নেন। ২০১২ সালের আজকের দিনে বার্ধক্যজনিত কারণে ঢাকার একটি হাসপাতালে মৃত্যুবারণ করেন সিদ্দিকা কবীর। আজ তার ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী। জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক এবং পুষ্টিবিদ সিদ্দিকা কবিরের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
সিদ্দিকা কবীরের ১৯৩৫ সালের ৭ মে পুরানো ঢাকার মকিম বাজারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মৌলভি আহমেদুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের বিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক ও পরবর্তীতে ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক ছিলেন। সিদ্দিকা কবীরের মাতা সৈয়দা হাসিনা খাতুন ছিলেন গৃহিনী। সিদ্দিকা কবীর পড়াশোনা করেন প্রথমে ইডেন কলেজে। সেখান থেকে তিনি বিজ্ঞান বিষয়ে প্রথম বিভাগে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে ভর্তি হন এবং সেখান থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এর পর তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশনের বৃত্তি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওকলাহোমা স্টেট ইউনিভার্সিটি হতে ১৯৬৩ সালে খাদ্য ও পুষ্টি বিজ্ঞানে মাস্টার্স ডিগ্রি পান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম বর্ষে পড়ার সময় সিদ্দিকা কবীর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধপূর্ব তৎকালীন পাকিস্তান রেডিওতে ঘোষক হিসাবে খণ্ডকালীন চাকরীতে যোগ দেন। স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পরে প্রথমে ভিকারুন্নিসা নুন স্কুলে শিক্ষিকা হিসাবে কাজ করেন। এর পর তিনি ইডেন কলেজে গণিতের প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন। যুক্তরাষ্ট্রে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভের পর দেশে ফিরে তিনি গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজ, আজিমপুর, ঢাকা এর সহকারী অধ্যাপক হিসাবে নিযুক্ত হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৯৩ সালে অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৬৫ সালে সরকারি প্রতিষ্ঠান হতে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে রান্না শেখা শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি তদানিন্তন পাকিস্তান টেলিভিশনে "ঘরে বাইরে" নামে রান্নার অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করা শুরু করেন। সিদ্দিকা কবীর তাঁর "রান্না খাদ্য পুষ্টি" বইটির জন্য ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। বাংলাদেশের সর্বাধিক বিক্রিত বইগুলির মধ্যে এখন পর্যন্ত বইটি অন্যতম। বইটি প্রথম প্রকাশের সময় মুক্তধারা, বাংলা একাডেমী সহ অন্যান্য প্রকাশনা সংস্থা এটি প্রকাশ করতে রাজী হয় নাই। পরে এটি নিজ খরচে প্রকাশ করা হয়। প্রকাশের পর এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৮৪ সালে ইংরেজি ভাষায় একটি কারি রান্নার বই লিখেন। ১৯৮০ সালে লিখেন পাঠ্যবই খাদ্যপুষ্টি ও খাদ্য ব্যবস্থা, যা স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো হয়। এছাড়া তিনি ১৯৯৭ সালে দৈনিক জনকণ্ঠে রসনা নামে কলাম লিখেন, যা পরবর্তীতে খাবার দাবারের কড়চা নামে প্রকাশিত হয়। প্রাইভেট টেলিভিশন এনটিভিতে তিনি সিদ্দিকা কবীরস্ রেসিপি নামের রান্নার অনুষ্ঠান নির্মানে জড়িত ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে ১৯৭২ সালের নভেম্বর মাসে সিদ্দিকা কবীর ব্যাংকার সৈয়দ আলী কবীরকে বিয়ে করেন।
অধ্যাপিকা সিদ্দিকা কবীর ২০১২ সালের ৩১ জানুয়ারি ঢাকার স্কয়্যার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর আগে তিনি হৃদরোগসহ বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুপূর্ব বেশ কিছুদিন সিআরপি-তে চিকিৎসারত থাকার পর, উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে স্কয়্যার হাসপাতালে স্থানান্তরের পর সেখানে চিকিৎসারত থাকাকালীন তিনি স্বাভাবিক মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। আজ তার ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী। জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক এবং পুষ্টিবিদ সিদ্দিকা কবিরের মৃত্যুবার্ষিকীতে আমাদের শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]
২| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৪৮
রুমী ইয়াসমীন বলেছেন: ওনার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করি। আল্লাহ মরহুমাকে জান্নাতবাসী করুন।
জনপ্রিয় এন টিভিতে প্রচারিত ওনার "সিদ্দিকা কবীর'স রেসিপি" অনুষ্ঠানটা কোনোদিন দেখতে ভুল করতাম না। খুবই প্রিয় একটা অনুষ্ঠান ছিল।
৩| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৪৮
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: জনপ্রিয় টেলিভিশন উপস্থাপক এবং পুষ্টিবিদ সিদ্দিকা কবিরের মৃত্যুবার্ষিকীতে
................................................................................................
আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধাঞ্জলি।
৪| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৫১
ঠাকুরমাহমুদ বলেছেন:
রান্না যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তা সাবলীল বাংলা ভাষায় টেলিভিশনে প্রচার করেছেন প্রিয় সিদ্দিকা কবীর আপা। সিদ্দিকা কবীর আপা বাংলাদেশের রান্নার জাদুকর ছিলেন। তিনি একজন আদর্শ রান্নাবিদ সহ একজন পুষ্টিবিদও ছিলেন। তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।
©somewhere in net ltd.
১| ৩১ শে জানুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:৩৬
রাজীব নুর বলেছেন: ৮ বছর হয়ে গেছে!!!
মনে হয় হয়তো সেদিন তিনি মারা গেলেন।