নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
ষাটের দশকের অন্যতম খ্যাতিমান আধুনিক কবি ও সাংবাদিক ফজল শাহাবুদ্দীন। ফজল শাহাবুদ্দীন অন্তহীনতার কবি, অন্তরঙ্গতার কবি। তাঁর কবিতা যেমন জীবনকে ছুঁয়ে যায় তেমনি মৃত্যুকেও। তাঁর কবিতা যেমন স্পর্শ করে আততায়ী সূর্যাস্ত তেমনি তাঁর আকাক্ষায় ধ্বনিত হয় এক অদ্ভুত অসুন্দর। তাঁর কবিতা কখনও অন্তরীক্ষকে স্পর্শ করে, কখনও নক্ষত্রপুঞ্জকে ধারণ করে হয়ে যায় সঘন রাত্রির একান্ত কোরাস। তাঁর কবিতা কখনও নদীর সংগীত, কখনও অরণ্যমর্মর। অন্তর্গত হাহাকার বুকে এগিয়ে চলা কবি ফজল শাহাবুদ্দীন তৃষ্ণার অগ্নিতে পুড়েপুড়ে খাঁটি হওয়া এক কবিসত্ত্বা। তিনি রমণী, রমণীর শরীর কবিতার চৈতন্যে এমন এক আধ্যাত্মিক অবয়ব দান করেছেন যা বাংলা কাব্যে নতুন নির্মাণ। আধুনিক ধারার কবি হিসেবে ষাটের দশকে তিনি জনপ্রিয়তা পান। কর্মসূত্রে দীর্ঘকাল তিনি সাংবাদিকতা করেছেন। এক সময়ের সাড়া জাগানো সাপ্তাহিক ‘বিচিত্রা’র প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন ফজল শাহাবুদ্দীন। তার সম্পাদনায় প্রকাশিত হতো সাপ্তাহিক ‘সচিত্র সন্ধানী’। সাপ্তাহিক ‘চিত্রালী’ ও ‘দৈনিক বাংলা’তেও দীর্ঘদিন কাজ করেছেন তিনি। কবিতা পত্রিকা ‘কবিকণ্ঠ’ প্রকাশিত হতো তারই সম্পাদনায়। এছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশে সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রচলনে তিনি পথিকৃতের ভূমিকা রেখেছেন। তাঁর কর্মজীবনের অন্যতম স্বীকৃতির একুশে পদক। সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত এই কবি উনিশশ’ নব্বইয়ের দশকে এশীয় কবিতা উৎসব আয়োজনে নেতৃত্বস্থানীয় ভূমিকায় ছিলেন। বাংলা কবিতার রাজপুত্র কবি ফজল শাহাবুদ্দীনের ৮৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। ১৯৩৬ সালের আজকের দিনে তিনি কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করেন। বাংলা কবিতার নক্ষত্রপুরুষ ফজল শাহাবুদ্দীনের জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।
বরেণ্য এ কবি ১৯৩৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি কুমিল্লার ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলাধীন শাহপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা কাজী তাজিমউদ্দিন আহমদ। কুমিল্লায় জন্মগ্রহণ করলেও তিনি শৈশব থেকে ঢাকাতেই বসবাস করতেন। ফজল শাহাবুদ্দীন ১৯৬২ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। পুরনো ঢাকায় শৈশব ও কৈশোর কাটানো এ কবির বেড়ে ওঠা অনেকটা কবিতার মতোই। এই কবি আধুনিক বাংলা কবিতায় একটি পৃথক পৃথিবী ও একান্ত জগত রচনা করেছেন। পঞ্চাশের দশকের এই কবি দীর্ঘদিন থেকে যুক্ত আছেন বাংলা কবিতার সাথে। ফজল শাহাবুদ্দীন কবিতা লিখছেন প্রায় চল্লিশ বছর ধরে। তাঁর প্রথম কবিতার বই ‘তৃষ্ণার অগ্নিতে একা’ প্রকাশিত হয় ১৯৬৫ সালে। ১৯৮০ সালে প্রকাশিত ‘অন্তরীক্ষে অরণ্য’ ফজল শাহাবুদ্দীনের আরেকটি অন্যতম কাব্যগ্রন্থ। তার সর্বশেষ কবিতার বই 'একজন কবি একাকি' প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে। পৃথিবীর বেশ কয়েকটি ভাষায় তার কবিতা অনূদিত হয়েছে। এছাড়া স্বাধীন বাংলাদেশে সাপ্তাহিক পত্রিকার প্রচলনে তিনি পথিকৃতের ভূমিকা রেখেছেন। বাংলাদেশের পিরিওডিক্যাল পত্রিকার জনক ফজল শাহাবুদ্দীন সাপ্তাহিক বিচিত্রার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। কবি ফজল শাহাবুদ্দীন ছিলেন দৈনিক পাকিস্তান ও পরবর্তীতে দৈনিক বাংলার সাহিত্য সম্পাদক। সম্পাদনা করছেন বাংলাদেশের একটি প্রধান কবিতা পত্রিকা ‘কবিকণ্ঠ’। এছাড়াও তার সম্পাদনায় বিভিন্ন সময়ে প্রকাশিত হয়েছে 'বিচিত্রা', 'বিনোদন', 'নান্দনিক' 'সমারোহ' প্রভৃতি পত্রিকা।
ফজল শাহাবুদ্দীন তাঁর কবিতায় এক শরীরী ব্যঞ্জনার সাথে যুক্ত করেছেন এমন এক আধ্যাত্মিক চেতনা যা সাম্প্রতিক বাংলা কবিতায় একটি নতুন সুর সংযোজিত করতে পেরেছেন। তাঁর কবিতা পৃথিবীর বেশ কয়েকটি ভাষায অনূদিত হযছে। কবিতার জন্য অন্যতম স্বীকৃতি 'বাংলা একাডেমী' (১৯৭৩) পদক এবং সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা 'একুশে পদক' (১৯৮৮) অর্জনকারী ফজল শাহাবুদ্দীনের এ পর্যন্ত প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা ২৭। তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে- তৃষ্ণার অগ্নিতে একা (১৯৬৫); অকাঙ্ক্ষিত অসুন্দর (১৯৬৬); আততায়ী সূর্যাস্ত (১৯৭৫); অন্তরীক্ষে অরণ্য (১৯৮০); সান্নিধ্যের আর্তনাদ (১৯৮৩); আলোহীন অন্ধকারহীন (১৯৮৪); সনেটগুচ্ছ; অবনিশ্বর দরোজায়; আমার নির্বাচিত কবিতা; হেনীল সমুদ্র হে বৃক্ষ সবুজ; লংফেলোর নির্বাচিত কবিতা; দিকচিহ্নহীন; ছিন্নভিন্ন কয়েকজন; জখন জখম নাগমা; Selected Poems; Solitude; Towards the Earth; বাতাসের কাছে; ছায়া ক্রমাগত; নিসর্গের সংলাপ; পৃথিবী আমার পৃথিবী; ক্রন্দনধ্বনি; ক্রমাগত হাহাকার উল্লেখযোগ্য। তার সবশেষ কবিতার বই ‘একজন কবি একাকি’ প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে।
ষাটের দশকের অন্যতম কবি ও সাংবাদিক ফজল শাহাবুদ্দীন দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর ২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ১১/১ মধ্য বাসাবোর নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। মৃত্যুকালে তিনি তার স্ত্রী আজমেরী শাহাবুদ্দীন ২ পুত্র ফারহান শাহাবুদ্দীন ও ফারহাদ শাহাবুদ্দীন এবং একমাত্র কন্যা দীনা শাহাবুদ্দীনকে রেখে গেছেন। উল্লেখ্য তার স্ত্রী আজমেরী শাহাবুদ্দীন একজন লেখক ও শিক্ষাবিদ। কবি ফজল শাহাবুদ্দীন সারা জীবন কবি ছাড়া আর কিছু হতে চাননি। আধুনিক ধারার কবি ফজল শাহাবুদ্দীনের ৮৪তম জন্মবার্ষিকী আজ। জন্মদিনে তাঁকে যেন আমরা ভুলে না যাই। কবিতার রাজপুত্র ফজল শাহাবুদ্দীনের জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছা।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৫৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে ধন্যবাদ বাঙালী ভাই
ফজল শাহাবুদ্দীনের
জন্মবার্ষিকীতে
শুভেচ্ছা জানানোর জন্য।
২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৩১
রাজীব নুর বলেছেন: ফুলের শুভেচ্ছা জানাই।
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৪৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও ধন্যবাদ রাজীব ভাই
বাংলা কবিতার নক্ষত্রপুরুষ
ফজল শাহাবুদ্দীনের
জন্মবার্ষিকীতে
শুভেচ্ছা
জানানোর
জন্য।
৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪৩
চাঁদগাজী বলেছেন:
কবিরা সাংবাদিকতার চাকুরী পেতেন, নাকি সাংবাদিকতা করলে কবিতা লিখতে হয়?
০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ২:৫০
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
যে রাধে সে চুলও বাধে।
তবে কবিতা লিখলে্ই সাংবাদকি
হওয়া যাযনা, কিন্তু সাংবাদিক
চাইলে কবিতাও লিখতে পারেন।
৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:০৮
নেওয়াজ আলি বলেছেন: শুভেচ্ছা সতত ।
©somewhere in net ltd.
১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:০২
দেশ প্রেমিক বাঙালী বলেছেন: বাংলা কবিতার নক্ষত্রপুরুষ ফজল শাহাবুদ্দীনের ৮৪তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।