![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন
বাংলার ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করে যে কজন মানুষের নাম আমরা জেনেছি তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়। মানবিক জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায়, বিশেষ করে ইতিহাস, সাহিত্য, ভাষা, সংস্কৃতি. চিত্রকলা এবং প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ে তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। ধারণা করা হয় তাঁর বিচক্ষণতায় প্রভাবিত হয়েই শরৎকুমার রায় বরেন্দ্র রিসার্চ সোসাইটি এবং বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি শুধু বাংলার ইতিহাস নিয়ে কাজ করেন নি বরং অনেক সত্য ঘটনাকে তিনি সামনে এনেছেন। মানুষের মনের ভুল ভেঙেছেন। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় একজন ইতিহাসবিদই ছিলেননা তিনি ছিলেন সমাজকর্মী এবং আইনজীবী। তিনি বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার তৎকালীন নেতৃস্থানীয় আইনজীবী ছিলেন। গবেষণা ও ইতিহাস চর্চার প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ ছিল এবং এর জন্য তিনি তাঁর সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি দীর্ঘকাল ধরে সাহিত্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক উভয়বিধ উৎস থেকে তথ্যাবলি সংগ্রহ করেন। তিনি বাংলার প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ইতিহাস, শিল্পকলা ও পটশিল্প সম্পর্কে গভীর ও প্রামাণিক জ্ঞান অর্জন করেন। তিনি ঐতিহাসিক চিত্র (১৮৯৯) শিরোনামে সিরাজউদ্দৌলা, মীর কাসিম, রানী ভবানী, সীতারাম, ফিরিঙ্গি বণিক প্রমুখ ব্যক্তিকে নিয়ে ইতিহাস বিষয়ক প্রথম বাংলা সাময়িক পত্রিকা প্রকাশ করেন। যুগপৎ তিনি বাংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস, ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন স্থান, শিল্পকলা ও পটশিল্প সম্পর্কে তথ্যমূলক নিবন্ধও প্রকাশ করেন। ১৯১২ সালে প্রকাশিত গৌড়লেখমালায় তিনি কয়েকটি পাল তাম্রশাসন ও শিলালিপি বাংলা অনুবাদসহ সম্পাদনা করেন। এতে করে বাংলা ভাষায় ঐতিহাসিক গবেষণার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হয়। আজ ইতিহাসবেত্তা ও সমাজকর্মী অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়র ৯০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৩০ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যুহয়। প্রখ্যাত বাঙালি ইতিহাসবেত্তা ও সমাজকর্মী অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়র মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় ১৮৬১ সালের ১ মার্চ পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার (বর্তমান কুষ্টিয়া জেলার) নওয়াপাড়া থানার শিমুলিয়া গ্রামে মায়ের মামার বাড়িতে তাঁর জন্ম। তার পৈত্রিক বাড়ি বাংলাদেশের নওগাঁ জেলার গৌরনাইয়ে। তার পিতা মথুরানাথ মৈত্রেয়। অক্ষয়কুমারের পড়াশোনায় হাতেখড়ি ঘটে হরিনাথ মজুমদারের কাছে। হরিনাথ মজুমদার কুমারখালীর একজন আদর্শ শিক্ষক হরিনাথ মজুমদার কাঙ্গাল হরিনাথ নামে সমধিক পরিচিত ছিলেন। দশ বছর বয়সে মৈত্রেয় রাজশাহীতে তার বাবার কাছে চলে যান। বাবা মথুরানাথ মৈত্রেয় রাজশাহীতে ওকালতি করতেন। মৈত্রেয় তৎকালীন বোয়ালিয়া ইংলিশ স্কুল (বর্তমানে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল) থকে ১৮৭৮ সালে এনট্রান্স পাশ করেন এবং ১৮৮০ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে এফএ পাশ করেন। ১৮৮৩ সালে কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বিএ এবং ১৮৮৬ সালে আবার রাজশাহী কলেজ থেকে বিএল পাশ করেন। একই বছর তিনি রাজশাহীতে আইন ব্যবসা শুরু করেন। গবেষণা ও প্রাচীন নিদর্শনাদি সম্বন্ধে অভিন্ন আগ্রহের ফলে বিশ শতকের প্রথম দশকে দিঘাপতিয়া রাজ পরিবারের কুমার শরৎকুমার রায়, অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় ও জনৈক স্কুল শিক্ষক রমাপ্রসাদ চন্দকে পরস্পরের কাছাকাছি নিয়ে আসে। অক্ষয়কুমার ১৮৯৭ সালে রাজশাহী রেশম-শিল্প বিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি ছিলেন একাধারে এই বিদ্যালয়ের সম্পাদক ও শিক্ষক। রাজশাহী পৌরসভার কমিশনার হিসেবে কাজ করার সময় তিনি রাজশাহী শহরের নাগরিক সুবিধাসংশ্লিষ্ট অবকাঠামো ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ত্বরান্বিত করেন। ডায়মন্ড জুবিলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুলের শুরুর দিকে তিনি স্কুলটিকে যথেষ্ট পৃষ্ঠপোষকতা দান করেন। এমনকি স্কুলের অবৈতনিক প্রশিক্ষক হিসেবে তিনি ছাত্রছাত্রীদের রেশম চাষ পদ্ধতি শিক্ষা দিতেন। বেশ কিছু সংস্কৃত নাটকের সঙ্গে তিনি জড়িত ছিলেন। একজন ভাল ক্রিকেট খেলোয়াড় ও আঁকিয়ে হিসেবেও তাঁর সুনাম ছিল। তিনি ঐতিহাসিক চিত্র (১৮৯৯) শিরোনামে সিরাজউদ্দৌলা, মীর কাসিম, রানী ভবানী, সীতারাম, ফিরিঙ্গি বণিক প্রমুখ ব্যক্তিকে নিয়ে ইতিহাস বিষয়ক প্রথম বাংলা সাময়িক পত্রিকা প্রকাশ করেন।
সামগ্রিকভাবে বাংলার এবং বিশেষত বরেন্দ্রবাসীদের গৌরবময় অতীত সম্পর্কে উচ্চতর শিক্ষা ও গবেষণাকে উৎসাহিত করার জন্য তাঁরা বরেন্দ্র রিসার্চ সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন।রাজশাহীর সন্নিহিত এলাকায় তাঁদের প্রথম সফল সফরকালে উদ্ধারকৃত প্রত্ননিদর্শনাদি সংরক্ষণ ও প্রদর্শনের লক্ষ্যে তাঁরা ১৯১০ সালের এপ্রিলে রাজশাহী জাদুঘরও (বর্তমান বরেন্দ্র রিসার্চ মিউজিয়াম) প্রতিষ্ঠা করেন। বরেন্দ্র রিসার্চ সোসাইটির তদারকিতেই জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হয়। কাজেই জাদুঘর বিষয়ে সোসাইটির ভূমিকা ছিল স্বত্বাধিকারী ও তত্ত্বাবধানকারীর। জাদুঘরটি বরেন্দ্র রিসার্চ সোসাইটির ব্যবস্থাপনা পরিষদের অধীনে ন্যস্ত ছিল।এ পরিষদের সভাপতি ছিলেন কুমার শরৎকুমার রায়, পরিচালক ছিলেন অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় এবং সচিব ছিলেন রমাপ্রসাদ চন্দ। অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় ছিলেন এ দুটি প্রতিষ্ঠানেরই প্রাণপুরুষ। সোসাইটির পরিচালক হিসেবে তিনি দীর্ঘ ৩০ বছর এর কার্যক্রম পরিচালনা করেন। তিনি প্রত্নতাত্ত্বিক ও বিভিন্ন নিদর্শন সংগ্রহের জন্য অনুসন্ধানমূলক সফরের আয়োজন ও তাতে অংশগ্রহণ করতেন এবং প্রচুর পরিমাণে প্রত্ননিদর্শন সংগ্রহ করেন। যুগপৎ তিনি বাংলার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাস, ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন স্থান, শিল্পকলা ও পটশিল্প সম্পর্কে তথ্যমূলক নিবন্ধও প্রকাশ করেন।
১৯১২ সালে প্রকাশিত গৌড়লেখমালায় তিনি কয়েকটি পাল তাম্রশাসন ও শিলালিপি বাংলা অনুবাদসহ সম্পাদনা করেন। এতে করে বাংলা ভাষায় ঐতিহাসিক গবেষণার নতুন ক্ষেত্র উন্মোচিত হয়। রাজশাহী পৌরসভার কমিশনার থাকাকালে অক্ষয়কুমার রাজশাহীর নাগরিক সুবিধাসংশ্লিষ্ট অবকাঠামো ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন কর্মকান্ড ত্বরান্বিত করেন। ডায়মন্ড জুবিলি ইন্ডাস্ট্রিয়াল স্কুলের সূচনালগ্নে তিনি এ প্রতিষ্ঠানকে যথেষ্ট পৃষ্ঠপোষকতা দান করেন। এমনকি স্কুলের অবৈতনিক প্রশিক্ষক হিসেবে তিনি ছাত্রছাত্রীদের রেশম চাষ পদ্ধতি শিক্ষা দিতেন। বেশ কিছুসংখ্যক সংস্কৃত নাটকের সঙ্গে তিনি সম্পৃক্ত ছিলেন। গবেষণা ও ইতিহাস চর্চার প্রতি তাঁর প্রবল আগ্রহ ছিল এবং এর জন্য তিনি তাঁর সমগ্র জীবন উৎসর্গ করেছেন। এ উদ্দেশ্যে তিনি দীর্ঘকাল ধরে সাহিত্য ও প্রত্নতাত্ত্বিক উভয়বিধ উৎস থেকে তথ্যাবলি সংগ্রহ করেন। তিনি বাংলার প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় ইতিহাস, শিল্পকলা ও পটশিল্প সম্পর্কে গভীর ও প্রামাণিক জ্ঞান অর্জন করেন। তার কাজের স্বীকৃতি স্বরুপ ১৯১৫ সালে"কায়সার-ই-হিন্দ" স্বর্ণপদক এবং ১৯২০ সালে সি আই ই (CIE, Companion of the Order of the Indian Empire) উপাধি লাভ করেন। আজ সমাজকর্মী অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়র ৯০তম মৃত্যুবার্ষিকী। ১৯৩০ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি তার মৃত্যু হয়। প্রখ্যাত বাঙালি ইতিহাসবেত্তা ও সমাজকর্মী অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়র মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৮:২৭
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
খান ভাই,
আফসোস কইরেন্ না!
কয়দিনেরই বা জীবন আপনার
সামনে অনেক দিন আছে, সাথে আমি আছি
যত দিন বাচি আপনাকে অনেকের সাথে পরিচয়
করিয়ে দেবো। শুধু আপনার গুরুর কথায় নাচবেন না।
২| ১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১০:২৭
রাজীব নুর বলেছেন: অপরিচিত বিখ্যাত মানুষের জানতে চিনতে ভালো লাগে। সাথে আফসোসও হয় কেন তাদের আগে চিনলাম না। জানলাম না।
গুরু কথায় আপনিও নাচতে শুরু করুন। আখেরে মঙ্গল হবে।
১১ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:২৯
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
কোন কিছুতে আফসোস করতে নেই।
আপনি যা নন তার জন্য আফসোস
আর আপনি যা তার জন্য হতাশা প্রকাশ
দুটোই মনকে ছোট করে। মনকে বড় করুন।
আপনার গুরুর কথায় আমি নাচি না, আপনার
গুরুকে আমি নাচাই !!
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:৩৭
রাজীব নুর বলেছেন: অক্ষয়কুমার মিত্র কে আজই প্রথম চিনলাম।