নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বসন্তের আগমন মানেই তরুণ হৃদয়ে নতুন প্রাণের সঞ্চার আর তারুণ্যের সাহসী উচ্ছ্বাস

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:০২


ফুল ফুটুক না ফুটুক
আজ বসন্ত।

শান-বাঁধানো ফুটপাথে
পাথরে পা ডুবিয়ে এক কাঠখোট্টা গাছ
কচি কচি পাতায় পাঁজর ফাটিয়ে
হাসছে।


আজ পয়লা ফাল্গুন, বসন্তের প্রথম দিন। কোকিলের মায়াবী সুরে জেগে ওঠার দিন। মাঘের হালকা হাওয়ার বন্ধন থেকে জীর্ণতা সরিয়ে ফুলে ফুলে সেজে ওঠার মুহূর্ত। শীতের হাওয়ার বিদায়ের পথ ধরে সহাস্যে উঁকি দেয় ঋতুরাজ বসন্তের বাতাস। মাতাল হাওয়া। যে হাওয়ার ছোঁয়ায় প্রকৃতি নেচে ওঠে। দুলে ওঠে মানুষের মন। পাখ-পাখালির মনেও কি শিহরন জাগে? হয়তো জাগে। বসন্তে শত ফুলের রঙ, বাতাসে কচি পাতার কাঁপন গোটা প্রকৃতিকেই যে আলো ঝলমলে করে তোলে। প্রকৃতি আজ দক্ষিণা দুয়ার খুলে দিয়েছে। সে দুয়ারে বইছে ফাগুনের হাওয়া। এর সাথে সাথে আমাদের মাঝে শুকনো পাতায় ভর করে এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত। গাছে গাছে সবুজ পাতা আর নানা রঙ্গের ফুল। শিমুল বন আর কৃষ্ণচূড়ারা সেজেছে সূর্যের সাথে তাল মিলিয়ে রক্তিম রঙে। বসন্তের আগমনে কোকিল গাইছে গান। ভ্রমরও করছে খেলা। গাছে গাছে পলাশ আর শিমুলের মেলা। বসন্তের এই আগমনে প্রকৃতির সাথে তরুণ হৃদয়েও লেগেছে দোলা। সকল কুসংস্কারকে পেছনে ফেলে, বিভেদ ভুলে, নতুন কিছুর প্রত্যয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা নিয়ে বসন্তের উপস্থিতি। তাই কবির ভাষায়- ‘ফুল ফুটুক আর না-ই ফুটুক আজ বসন্ত’। ফুলেল বসন্ত, মধুময় বসন্ত, যৌবনের উদ্দামতা বয়ে আনার বসন্ত আর আনন্দ, উচ্ছ্বাস ও উদ্বেলতায় মন-প্রাণ কেড়ে নেওয়ার আজ প্রথম দিন। বসন্তের আগমন মানেই তরুণ হৃদয়ে নতুন প্রাণের সঞ্চারকরেছে উচাটন। বসন্তের আগমন মানেই তরুণ হৃদয়ে নতুন প্রাণের সঞ্চার

বাংলা পঞ্জিকা বর্ষের শেষ ঋতু বসন্তের প্রথম দিনকে বাঙালি পালন করে ‘পহেলা ফাল্গুন-বসন্ত উৎসব’ হিসেবে। বাঙালির নিজস্ব সার্বজনীন প্রাণের উৎসবে এ উৎসব এখন গোটা বাঙালির কাছে ব্যাপক সমাদৃত হয়েছে। বাংলায় বসন্ত উৎসব এখন প্রাণের উৎসবে পরিণত হলেও এর শুরুর একটা ঐতিহ্যময় ইতিহাস আছে, যা অনেকের অজানা। সারা পৃথিবীর ঋতু বিশ্লেষণ করলে দেখা যাবে এই বসন্ত ঋতু তথা ফাল্গুন মাসে দক্ষিণ এশীয় নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলের পাশাপাশি পৃথিবীর বিভিন্ন স্থানেই এ সময়টি আশীর্বাদ রূপে আসে। এ সময়টা বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে মৃদু মানের বর্ষা হয় যার ফলে সেসব স্থানে বৃক্ষরা পত্রপল্লবে নিজেদের জানান দেয়। অন্যদিকে হীমাচল প্রদেশসহ কাস্মীর অঞ্চলের তুষারপাত ক্রমে কমে আসে এবং মানুষ তাদের স্বাভাবিক কাজকর্মের ভরসা পেতে থাকে। পৃথিবী সূর্যের দিকে ঢলে পড়ে বলেই শীত তার ইতিটানতে বাধ্য হয়। এই সময়টাতে প্রাণিকুলের প্রজননের মোক্ষম সময়। পৃথিবীজুড়ে নুতন নুতন প্রাণের সঞ্চার হতে থাকে। তারা প্রকৃতির শ্রী বৃদ্ধির পাশাপাশি টিকিয়ে রাখে পরিবেশ ও প্রতিবেশ। বঙ্গাব্দ ১৪০১ সাল থেকে প্রথম ‘বসন্ত উৎসব’ উদযাপন করার রীতি চালু হয়। সেই থেকে জাতীয় বসন্ত উৎসব উদযাপন পরিষদ বসন্ত উৎসব আয়োজন করে আসছে। মোগল সম্রাট আকবর প্রথম বাংলা নববর্ষ গণনা শুরু করেন ১৫৮৫ সালে। নতুন বছরকে কেন্দ্র করে ১৪টি উৎসবের প্রবর্তন করেন তিনি। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে বসন্ত উৎসব। তখন অবশ্য ঋতুর নাম এবং উৎসবের ধরনটা এখনকার মতো ছিল না। তাই পহেলা ফাল্গুন বা বসন্ত উৎসব কেবল উৎসবে মেতে ওঠার সময় নয়। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার গৌরবময় ঐতিহ্য, বাঙালিসত্তা। সে ঐতিহ্যের ইতিহাসকে ধরে রাখতে পারলেই বসন্ত উৎসবের সঙ্গে সঙ্গে নতুন প্রজন্ম ছড়িয়ে দিতে পারবে বাঙালি চেতনাকে। বসন্ত শুধু অশোক-পলাশ-শিমুলেই উচ্ছ্বাসের রং ছড়ায় না, আমাদের ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহীদদের রক্ত রঙিন পুষ্পিত রক্তের স্মৃতির ওপরও রং ছড়ায়। ১৩৫৮ বঙ্গাব্দের ৮ ফাল্গুন ঘটেছিল মহান ভাষা আন্দোলন। যা আজ বিশ্বব্যাপী ২১ ফেব্রুয়ারির মোড়কে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালিত হচ্ছে। ১৯৫২ সালের আট ফাল্গুন বা একুশের পলাশরাঙা দিনের সঙ্গে তারুণ্যের সাহসী উচ্ছ্বাস আর বাঁধভাঙা আবেগের জোয়ার যেন মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে। এই ভাষা আন্দোলনের পূর্বাপর কাহিনীকে উপজীব্য করে জহির রায়হান রচনা করেছেন উপন্যাস ‘আরেক ফাল্গুন’।

বসন্ত মানেই যৌবনের গান। মানুষের কথার ভেতরে কিছু কথা আছে, কথার অন্তরালে কিছু সূক্ষ্ম বার্তা আছে, প্রাত্যহিকের যাপিত গদ্যের ছায়ায় অদৃশ্য সুর ও গান আছে এবং সীমাবদ্ধ বাঁধনের তারে অসীমের তরঙ্গ স্পর্শ আছে। এই অদৃশ্য তরঙ্গের স্পন্দন, জীবনের দোলা, বাণী আর সুরের মূর্ছনায়-রূপে-রসে-মন-মননে ও প্রকৃতিতে জমে উঠে মায়ার খেলা- প্রাণের খেলা। যার হূদয় আছে সে টের পায় কেউ আসছে, কেউ জেগে উঠছে। কচি পাতায় আলোর নাচনের মতোই বাঙালির মনেও লাগে বসন্তের দোলা। উৎসবে মেতে ওঠে নগরবাসী। ফুলের মঞ্জরিতে মালা গাঁথার দিন বসন্ত শুধু প্রকৃতিকেই রঙিন করেনি, আবহমানকাল ধরে বাঙালি তরুণ-তরুণীর প্রাণও রঙিন করেছে। তাই আজ পহেলা ফাল্গ–নের সুরেলা এ দিনে তরুণীরা খোঁপায় গাঁদা-পলাশ ফুলের মালা গুঁজে বাসন্তি রঙ শাড়ি পরবে আর ছেলেরা পাঞ্জাবি-পাজামা কিংবা ফতুয়ায় খুঁজে নেবে শাশ্বত বাঙালিপনা। তরুণ-তরুণীরা বাংলা একাডেমি আয়োজিত একুশের বইমেলা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, শাহবাগ, চারুকলা চত্বর, পাবলিক লাইব্রেরি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ধানমন্ডি লেক, বলধা গার্ডেন মাতিয়ে রাখবে সারাদিন। আজ দিনভর চলবে তাদের বসন্তের উচ্ছ্বাস প্রকাশ। ফোন, ফেসবুক, টুইটারসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলবে বসন্তের শুভেচ্ছা বিনিময়। আজ নানা আয়োজনে বসন্তকে বরণ করবে বাঙালি। । বসন্ত মানেই নতুন দিনের আগমন বসন্ত মানেই জীবনের জয়গান । ইটপাথরের যান্ত্রিক এই নগরে বসন্তের ফুল পাওয়া একটু কঠিন । ব্যাস্ত এই নগরে ফাল্গুন খোজার বৃথা চেষ্টা । প্রিয়জনকে সাথে নিয়ে বসন্তের উৎসবে মাতুন । সবার জন্য শুভকামনা ।


নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: বসন্ত, নিউ ইয়ার, বৈশাখ এগুলো আপনাদের মতো ধনীদের জন্য।
আমাদের মতো দরিদ্র লোকজনদের জন্য আল্লাহর সব দিনই সমান।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৪৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমি ধনে ধনী না হলেও মনে অনেক বেশী ধনী
তাই আপনার মন্তব্য অযৌক্তিক নয়।
আল্লাহতে আপনার আস্থা দেখে প্রীত
হলাম।

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ৯:৪৫

নেওয়াজ আলি বলেছেন: শুভেচ্ছা সতত।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৪৭

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও বাসন্তী শুভেচ্ছা আলী ভাই

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:০৬

একাল-সেকাল বলেছেন:
আমি তো বুঝিনা ঠিক, কবে বরষা কবে বসন্ত দিন,
চোখে চোখ রেখে আমি দৃষ্টি বিহীন।
- শ্রীকান্ত আচার্য।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৪৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
শ্রীকান্ত আচার্য না বুঝুক ক্ষতি নাই
তবে আপনার বুঝতে হবে বৃষ্টি নামলে
বর্ষা আর কোকিল ডাকলে বসন্ত তাতে
ফুল ফুটুক আর নাই ফুটুক।

৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৪২

এম ডি মুসা বলেছেন: বাসন্তীর শুভেচ্ছা

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৪৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
মুসা ভাই আপনাকেও বাসন্তী শুভেচ্ছা।

৫| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:২২

গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: ফাগুনের শুভেচ্ছা নিন নুরু ভাই।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৪৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
লিটন ভাই আমিও নিলাম
আপনাকেও দিলাম ফগুনের
শুভেচ্ছা।

৬| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১:৫৫

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন:
আমি ধনে ধনী না হলেও মনে অনেক বেশী ধনী
তাই আপনার মন্তব্য অযৌক্তিক নয়।
আল্লাহতে আপনার আস্থা দেখে প্রীত
হলাম।

মনের দিক থেকে ধনী হলে সমস্যা। আপনি 'ধনী মন' নিয়ে দেশ আর সমাজের জন্য কিছু করতে পারবেন না।

৭| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৮

এমজেডএফ বলেছেন: বসন্তের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য মানুষের মনে যে আনন্দ-উচ্ছাসে রং ছড়ায় তা সাময়িক। বসন্তের এই আনন্দ-উচ্ছাসকে শতভাগ উপভোগ করতে হলে মনেও বসন্ত আসা দরকার। মনের বসন্ত ঋতুচক্রের মতো আসে না। এটি নিজের চরিত্র, কর্ম, আমল এবং পারিবারিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার সমন্বয়ে সৃষ্টি হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.