নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেত্রীত্বদানকারী অন্যতম নেতা রাউফুন বসুনীয়ার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৪:৩২

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবি ছাত্র স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা রাউফুন বসুনীয়া। রাউফুন বসুনিয়া ছিল স্বৈরাচারের আতঙ্ক। রাউফুন বসুনিয়া গণতন্ত্র ও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে একনিষ্ঠ প্রতিবাদী হলেও এই ইতিহাস অনেকের কাছেই অজানা। আশির দশকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র রাউফুন বসুনিয়া। বাকশাল সমর্থিত জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন তিনি। ১৩ ফেব্রুয়ারী ১৯৮৫ রাত ১১ টার দিকে স্বৈরাচার বিরোধী এক মিছিলে নেতৃত্বদানের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ইউনিভার্সিটি ল্যাবোরেটারী স্কুলের সামনে তৎকালীন স্বৈরাচার সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের গুণ্ডাদের গুলিতে নিহত হন। ১৯৮৫ সালেই মাস্টার্স পরীক্ষার্থী ছিলেন।তার আত্মত্যাগ তাকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের ইতিহাসে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্তে পরিনত করে। তার এই আত্মত্যাগ স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনকে বেগবান করে। যার ফলশ্রুতিতে এরশাদ সরকারের পতন হয়। তার আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি আবক্ষ প্রতিকৃতি নির্মাণ করা হয়। আজ রাউফুন বসুনীয়ার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেত্রীত্বদানকারী অন্যতম নেতা রাউফুন বসুনীয়ার মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।
রাউফুন বসুনীয়া (জন্মসাল ও তারিখ অজ্ঞাত) কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলার পাইকপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম নজরুল ইসলাম। তিনি একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। মা ফিরোজা বেগম ছিলেন গৃহিণী। রাউফুন পাঙ্গারানী লক্ষীপ্রিয়া উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক ও কারমাইকেল কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা লাভ করেন। তারপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এর সমাজবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। স্নাতক শেষ করে একই বিভাগে স্নাতকোত্তরে ভর্তি হন। ১৯৮২ সালে সামরিক-জান্তা হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ যখন ক্ষমতা দখল করল তখনও দেশের মানুষ তা মেনে নেয় নি। সারা দেশে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে ওঠে। বরাবরের মত এতে মুখ্য ভুমিকা পালন করে ছাত্র সমাজ, বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। এই সময় রাউফুন বসুনীয়া ছিলেন "বাংলাদেশ ছাত্র লীগের" ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক। সামরিক-জান্তা সরকার অন্দোলন কে রুখতে "নতুন বাংলা ছাত্রসমাজ" নামে নতুন একটি দল গঠন করে। আসলে তারা ছিল সরকারের গুন্ডা বাহিনী। তাদের কাজ ছিল সহিংসভাবে আন্দলনকে প্রতিহত করা। এরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল গুলো দখল করে। তখন উপজেলা নির্বাচন ঘোষণা করেন এরশাদ। নির্বাচন ঘোষণার মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারের ভিত্তিটাকে তৃণমূল পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ১৯৮৩ সাল থেকে ছাত্রসমাজের আন্দোলন চলছিল। ছাত্রসমাজ এই বিষয়টা নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন ছিল। কিন্তু উপজেলা নির্বাচনকে প্রতিহত করার জন্য কোনো আন্দোলন দানা বাঁধছিল না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র নেতৃবৃন্দ তেমন আন্দোলন করতে পারছিলাম না। কারণ, মিছিল বের করতে গেলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো দিক থেকেই হামলা আসত। এমতাবস্থায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের তখনকার ছাত্রসমাজের নেতৃবৃন্দ শফী আহমেদ আওয়ামী লীগ নেতা, জাসদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, শহীদ মনিরুজ্জামান ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, মাসুদ রানা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধান্ত নিলেন যে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এরশাদের পেটোয়া বাহিনী নতুন বাংলা ছাত্রসমাজকে উচ্ছেদ করবেন।
১৯৮৫ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত এগারোটার দিকে নিত্তনৈমত্তিক প্রুস্তুতি হিসেবে একটি মিছিল সূর্যসেন হল, মহসীন হল হয়ে জহুরুল হক হল ও এফ রহমান হলের মধ্যবর্তী সড়কে ওঠার মূহুর্তেই এফ রহমান হল থেকে মিছিলে কাটা রাইফেলের গুলিবর্ষণ করে সরকার সমর্থক নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের সন্ত্রাসীরা । এসময় বাকশাল সমর্থিত জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাধারণ সম্পাদক রাউফুন বসুনিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের গুণ্ডাদের গুলিতে নিহত হন তিনি । কিন্তু আন্দোলন থেমে যায় নি বরং জোরদার হয় রাউফুন বসুনিয়া হত্যাকাণ্ডের জন্য সবাই সরকারি মদদপুষ্ট পেটোয়া বাহিনীকে দায়ী করেন , তবে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ;জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল; সরাসরি দায়ী করে নতুন বাংলা ছাত্র সমাজকে। রাউফুন বসুনীয় শহীদ হওয়ার পর থেকেই ক্যাম্পাস বিশেষ করে এফ রহমান হল থেকে বিতাড়িত হয় নতুন বাংলা । সরকার দলীয় নতুন বাংলার ছাত্র সমাজের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দখলের চেষ্টা ব্যর্থ হলে এরশাদ নতুন বাংলা ছাত্র সমাজের বিলুপ্ত ঘোষণা করে । রাউফুন বসুনিয়া নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মহানগরীতে অর্ধদিবস হরতাল আহ্বান করে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল । এখন কি এমন চিন্তা করা যায় ? মারা গেলেন বাকশাল সমর্থিত জাতীয় ছাত্রলীগ নেতা আর তার হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবী করে হরতাল আহ্বান করলো ছাত্রদল !! জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতারা সে দিন রাউফুন বসুনিয়ার লাশ পুলিশের কাছ থেকে উদ্ধার করে নিয়ে এসেছিল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কাম্পাসে এরশাদ বিরোধী আন্দোলনের সামনের কাতারের একজন সৈনিক হিসাবে । ফলশ্রুতি এরশাদ উপজেলা নির্বাচনকে স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এই রাউফুন বসুনিয়ার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এরশাদ একটা সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হলো। তার দূরভিসন্ধিমূলক সিদ্ধান্ত স্থগিত ঘোষণা।
১৯৮৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি রাউফুন বসুনিয়ার আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ বিশ্ববিদ্যালয় মুহসীন হল সংলগ্নে একটি আবক্ষ প্রতিকৃতি ও তোরণ স্থাপন করা হয়, যা বসুনিয়া তোরণ নামেই সমধিক পরিচিত। ১৯৮৭ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল মান্নান এই তোরণের উদ্বোধন করেন। শিক্ষা ও গণতন্ত্রের দাবিতে প্রাণ উৎসর্গকারী রাউফুন বসুনিয়ার অমর স্মৃতিতে এই তোরণ নির্মাণ করা হয়। নীলক্ষেত মোড় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে স্যার এ এফ রহমান হল ও হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের খেলার মাঠের মধ্যবর্তী স্থানে এই বসুনিয়া তোরণ। পাশেই রয়েছে ধূসর বর্ণের বসুনিয়ার প্রতিকৃতি। তোরণের পাশ ঘেঁষে মুহসীন হলে যাওয়ার রাস্তা। তোরণে লাল রঙের দেয়াল যে কারোরই দৃষ্টি কাড়বে। তবে অরক্ষিত হওয়ায় লাল দেয়ালে সাদা পোস্টার তোরণের দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য ম্লান করেছে। শিক্ষা ও গণতন্ত্রের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করা রাউফুন বসুনিয়ার স্মৃতিতে প্রতিকৃতি বা তোরণ নির্মাণ সম্মানের বিষয়। আগলে রাখার পরিবর্তে প্রতিকৃতির অযত্ন আর অবহেলা অসম্মানেরও। বিষয়টি প্রশাসন কিংবা বর্তমান ছাত্রলীগের দেখভাল করা উচিত। বসুনিয়া জীবন দিয়েছে গণতন্ত্রের জন্যে। রাউফুন বসুনিয়ার সময়ের সেই কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র এখনো কায়েম হয় নাই। বাংলাদেশের যিনি প্রধানমন্ত্রী আছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা তিনিই পারেন বাংলাদেশে প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে। তার কোনো বিকল্প নাই। তিনিই পারেন স্বৈরাচারী আন্দোলনে নূর হোসেন, জাফর জয়নাল, বসুনিয়া, মিলনসহ যারা শহীদ হয়েছেন তার সুষ্ঠু বিচার করতে। তিনি পারেন পরিপূর্ণ গণতন্ত্রের পথে যে অন্তরায় আছে যে গ্যাপ আছে তা পরিপূর্ণ করতে। আর এতেই শহীদ বসুনিয়াদের আত্মা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় শহীদ রাউফুন বসুনিয়ার অবদান ইতিহাসে অম্লান হয়ে থাকবে চিরকাল। আজ রাউফুন বসুনীয়ার ৩৫তম মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের নেত্রীত্বদানকারী অন্যতম নেতা রাউফুন বসুনীয়ার মৃত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল
ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ বিকাল ৫:১১

রাজীব নুর বলেছেন: রাউফুন বসুনীয়া কে আজই প্রথম চিনলাম। জানলাম।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনি অনেককেই চিনেন না
এবং আমার লেখায় প্রথম চিনেন।
জানি আপনি ভালো পাঠক, অনেক বই
পড়েন! কি বই পড়েন ??

২| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:০৯

অজ্ঞ বালক বলেছেন: খুব ভাল একটা পোস্ট করছেন। এইসব শহীদদের কথা কেউ মনে রাখে না। আজকে অনেকক্ষণ শহীদ মিলনের ম্যুরালের সামনে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ভাবছিলাম।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সবাই মনে না রাখলেও কেই কেউ মনে করেন।
তবে গুনী মানুষ এবং দেশের তরে জীবন উৎসর্গকারী
শহীদদের স্মরণ করা কর্তব্য।

৩| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৬

নেওয়াজ আলি বলেছেন: আপনার লেখা বস্তুনিষ্ঠ । তাদের রক্তে কেনা গণতন্ত্র । শ্রদ্ধা এই বীরকে।

১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:০৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আলি ভাই
অনেক দিন পরে গোলাপের বদলে মন্তব্য!
ভালো থাকবেন।

৪| ১৩ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



ছেলেটা বেকুব ছিলো?

১৪ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ১২:১৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বেকুবরাই বড় বড় কাজ করে ফেলে
জ্ঞানীদের ভাবতে ভাবতে সময় শেষ
হয়ে যায়। রফিক জব্বার বেকুব ছিলো
জ্ঞানীরা বাহবা পাচ্ছে !

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.