নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

ইংল্যান্ডের রানী প্রথম এলিজাবেথের ৪১৭তম মৃ্ত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি

২৪ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৩৭


ইংল্যান্ডের টিউডর রাজবংশের পঞ্চম ও সর্বশেষ রানী প্রথম এলিজাবেথে। রানী প্রথম এলিজাবেথ ছিলেন অসম্ভব রাষ্ট্রক্ষমতার অধিকারিণী। ইংল্যান্ডকে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন সবার হৃদয়ে। মানব সভ্যতার বিকাশে পুরুষের পাশাপাশি সমানতালে কাজ করে গেছেন নারীরা। তাদের অবদান কোনো অংশেই কম ছিল না। যুগে যুগে তাদের কীর্তি লেখা হয়েছে ইতিহাসের পাতায়। তেমনি একজন মহীয়সী নারী ব্যক্তিত্ব রানী প্রথম এলিজাবেথ। ইংল্যান্ডের ইতিহাসে তার অবদান অপরিসীম। তার সময়েই ইংল্যান্ডের কাছে স্পেনের ‘দ্য ইনভিন্সিবল আর্মাডা’ পরাজিত হয়, ফলে সামরিক ক্ষেত্রেও ইউরোপে ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়। রানী প্রথম এলিজাবেথের কাহিনীতে মূলত তার সারা জীবন একা থাকাই বেশি গুরুত্ব পায় ইতিহাসে। ব্যক্তিগত জীবনে বিয়ে করেননি বলে তাকে কুমারী রানী বলা হতো। রানীর এত ক্ষমতা ছিল কিন্তু কাউকে ভালোবাসা আর তার হয়ে ওঠেনি। নারী হয়েও যে রাষ্ট্র শাসনের ভার সফলভাবে পালন করা যায়, সেটির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত পাওয়া যায় তার মাধ্যমেই। তার শাসনামলে দেশের উন্নতির প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকরা। ইতিহাসে তার স্থানটি রয়েছে তাই বিশেষ মর্যাদায়। রাষ্ট্র পরিচালনার দিক থেকে তার দক্ষতা নিয়ে কখনই প্রশ্ন ওঠেনি। রানী প্রথম এলিজাবেথ আনুমানিক ১৭ নভেম্বর ১৫৫৮ থেকে শুরু করে ২৪ মার্চ ১৬০৩ পর্যন্ত রাজত্ব করেন। তার রাজকীয় অভিষেক হয়েছিল ১৫ জানুয়ারি ১৫৫৯ সালে। তার পূর্বসূরি ছিলেন ইংল্যান্ডের রাজা অষ্টম হেনরি। তিনি ছোটবেলা থেকেই রাজবংশের রাজকীয় পরিবেশে বেড়ে ওঠেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি ইংল্যান্ডের রানী, ফ্রান্সের রানী ও আয়ারল্যান্ডের রানীও ছিলেন। রানী প্রথম এলিজাবেথ যে নারী নেতৃত্বের আধুনিক উপস্থাপনা রেখে গেছেন সে কারণেই যুগে যুগে আসা আধুনিক নারী নেতৃত্বেরও একজন সফল উদাহরণ তিনি। মৃত্যুর ২০ বছর পরও সোনালি যুগের শাসক হিসেবে সমাদৃত ছিলেন তিনি। কথিত আছেতার শাসনামলে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য এত বিশাল ছিল যে সেখানে কখনো সূর্য ডুবত না! তার শাসনকাল "এলিজাবেথান এরা" বা এলিজাবেথীয় যুগ নামে পরিচিত। শেকসপিয়রের নাটকে এলিজাবেথান এরা ঘুরেফিরে এসেছে।তাই রানী এলিজাবেথের বুদ্ধিমত্তার এখনো প্রশংসা করা হয়। আজ রানী প্রথম এলিজাবেথের ৪১৭তম মৃ্ত্যুবার্ষিকী। ১৬০৩ সালের আজকের দিনে তিনি ইংল্যান্ডের রিচমন্ড প্রাসাদে মৃত্যুবরণ করেন। ইংল্যান্ডের রানী প্রথম এলিজাবেথের মৃ্ত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

রানী প্রথম এলিজাবেথ ১৫৩৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ইংল্যান্ডের গ্রিনিচ শহরের প্লাসেন্টিয়া প্রাসাদে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন রাজা অষ্টম হেনরি। এলিজাবেথের বয়স যখন মাত্র আড়াই বছর তখন তার মা অ্যান বোলিনকে শিরচ্ছেদ করে হত্যা করা হয় এবং এলিজাবেথকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এ অবস্থায় উত্তরাধিকার সংক্রান্ত জটিলতা কাটাতে ভাই ষষ্ঠ এডওয়ার্ড সিংহাসনের ভার অর্পণ করেন লেডি জেন গ্রে-এর উপর। ১৫৫৮ সালের ১৭ নভেম্বর এলিজাবেথ সেবান রানী প্রথম মেরির স্থলাভিষিক্ত হন। প্রোটেস্ট্যান্ট বিদ্রোহীদের সহযোগিতা দানের অভিযোগে এলিজাবেথ ক্যাথলিক অনুসারী মেরির শাসনকালে এক বছর অন্তরীণ ছিলেন। পরবর্তীকালে রানী হিসেবে এলিজাবেথের প্রথম পদক্ষেপ ছিল ইংলিশ প্রোটেস্ট্যান্ট চার্চ প্রতিষ্ঠা করা, যার সর্বোচ্চ গভর্নর ছিলেন তিনি নিজেই। এলিজাবেথ অবিবাহিতা ছিলেন। এজন্য বিতর্কও তার পিছু নিয়েছিল। স্বাভাবিকভাবেই কেন তিনি অবিবাহিত ছিলেন এই নিয়ে হয়েছে বিস্তর আলোচনা। যখন স্বামীর ঘর-সংসার করার কথা, যখন ছেলেমেয়ের স্নেহময়ী মা হওয়ার কথা তখন তার রাজ্যাভিষেক ঘটে। দিনটি ছিল ১৫৫৯ সালের ১৫ জানুয়ারি। মাত্র ২৬ বছর বয়সে এলিজাবেথের অভিষেক হয়। রানী হয়ে রাজ্য পরিচালনা শুরু করার পরই একটি প্রশ্ন সবার সামনে এসে দাঁড়ায় আর তা হলো- কে হবে রানীর স্বামী? টিউডর রাজবংশের শেষ উত্তরাধিকারিণী রাজত্বের প্রথম দিকেই এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল বিয়ে করা। কারণ তার বিয়ের মধ্য দিয়েই উত্তরাধিকার নির্বাচিত করা যেত সহজেই। যাতে তার মৃত্যুর পর রাজসিংহাসন নিয়ে গৃহযুদ্ধের সূচনা না হয়।

সেই সময়ে ইউরোপের সবচেয়ে কাক্সিক্ষত পাত্রী ছিলেন রানী প্রথম এলিজাবেথ। গোটা ইউরোপের বিভিন্ন রাজপরিবার থেকে শুরু করে ইংল্যান্ডের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিরা রানীকে বিয়ে করার জন্য মরিয়া হয়ে গিয়েছিলেন। যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন এলিজাবেথের সৎ বোন রানী মেরির স্বামী স্পেনের রাজা ফিলিপ, তৎকালীন সুইডেনের প্রিন্স এরিক, রোমান হলি এমপেরোর ফার্ডিনান্দের ছেলে আর্চডিউক চার্লস এবং এমন আরও অনেকেই। এদের মধ্যে একমাত্র স্পেনের রাজা ফিলিপকে এলিজাবেথ সরাসরি ‘না’ করেন। সিংহাসনে আসীন রানীর বিয়ে অনেকটাই জটিল একটা বিষয় তা ইতিহাস উপলব্ধি করে। কারণ ভুল কাউকে বিয়ে করা মানে পুরো রাজ্যের ওপর তার প্রভাব পড়া। তাই এই বিষয়ে অনেক সাবধানী হওয়া জরুরি ছিল। আবার রাজনৈতিক কারণগুলোও এ ক্ষেত্রে খুব স্পষ্ট। যেমন ভুলের কারণে রানীর অবস্থা তার সৎ বোন রানী মেরির মতো হওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা ছিল। এলিজাবেথকে এমন কাউকে স্বামী হিসেবে বেছে নিতে হবে যে ইউরোপের কোনো ক্ষমতাশালী রাজা হবে না, কিন্তু পদমর্যাদা খুব ভালো হবে এবং শুধু রানীর স্বামী হিসেবেই থাকবে। সব কিছু মিলিয়ে রানীর মন্ত্রীরা প্রাথমিকভাবে সুইডেনের প্রিন্স এরিককে রানীর স্বামী হিসেবে ভেবেছিলেন। কারণ, এরিক ছিলেন ইংল্যান্ডের জনগণের মাঝে তুমুল জনপ্রিয়। ধর্মমত দিয়েও দুজন একই ধর্মের অনুসারী। কিন্তু সুইডেনের রাজপরিবারের খুব বেশি সম্পত্তি না থাকায় এই বিয়ে নাকচ করা হয়। এরই মধ্যে রানীর জীবনে প্রেম চলে আসে। ফলে তার বিয়ের প্রক্রিয়াটা আরও বেশি জটিল করে তোলেন তিনি প্রেমে পড়ার মধ্য দিয়ে। বাল্যবন্ধু লর্ড রবার্ট ডুডলির প্রেমে পড়েছিলেন তিনি। অথচ রবার্ট ডুডলি বিবাহিত ছিলেন। কিন্তু বাধা হয়ে আসে ডুডলির মৃত বাবা ডিউক অব নর্থাম্বারল্যান্ড। ডিউক বিশ্বাসঘাতকতার জন্য রানী মেরির রাজত্বের সময় মৃত্যুবরণ করেন। আবার ডুডলির স্ত্রীও রহস্যজনকভাবে সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে মারা যাওয়ায় এলিজাবেথকে ডুডলিকে বিয়ে করা থেকে বিরত থাকতে হয়। যাতে এই রহস্যজনক মৃত্যুর সঙ্গে এলিজাবেথের কোনো সম্পৃক্ততা না থাকে। রবার্ট ডুডলির পর সবচেয়ে ভালো পাত্র ছিলেন ফ্রান্সের রাজার ভাই ডিউক অব এলেনকন, ফ্রান্সিস। ফ্রান্সিস ইংল্যান্ডে আসেন রানী এলিজাবেথকে বিয়ে করতে। রানীও তাকে পছন্দ করেন। কিন্তু আবারও ধর্ম এবং রাজনীতি বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এভাবেই মধ্যযুগে ইংল্যান্ডের সর্বশ্রেষ্ঠ রানীকেই আজীবন অবিবাহিত থাকতে হয়।

একথা অনস্বীকার্য যে ব্রিটিশ রাজবংশ নাম শুনলেই এককালে বাঘে-মহিষে একঘাটে জল খেত। প্রতাপ-প্রতিপত্তি হুংকার-গর্জনে অদ্বিতীয় এ মসনদ ঘিরে প্রজাসাধারণের কৌতূহলের অন্ত ছিল না। তিনি কেন বিবাহ করেন নাই সেই প্রশ্না ঘুরে ফিরে আসেছে বারে বারে। রানী প্রথম এলিজাবেথের বিবাহ না করার অন্য একটি কারণ উড়িয়ে দিচ্ছেন না ইতিহাসবীদেরা। টিউডর বংশের যে রানি প্রথম এলিজাবেথকে এত দিন মহান সম্রাজ্ঞী হিসেবে চিনে, জেনে, মেনে এসেছেন ব্রিটেনবাসী, তিনি নাকি আসলে রানীবেশী ছদ্মনারী ছিলেন,আদতে পুরুষ। নিছক নিজেদের গাফিলতি ঢাকতেই এক সাদামাটা গ্রাম্য বালককে প্রথম এলিজাবেথ সাজিয়ে রাজা অষ্টম হেনরির সামনে হাজির করেছিলেন তার দুই সভাসদ। তাই পুরুষ হওয়ার কারণেই কখনও বিয়ে করেননি প্রথম এলিজাবেথ। সেই গ্রাম্য বালককেই এতদিন ধরে প্রথম এলিজাবেথ হিসেবে জেনে এসেছে ব্রিটেন। মার্কিন লেখক স্টিভ বেরি তার নতুন উপন্যাস নিউ ইয়র্কের ব্যালান্টাইন বুকস থেকে প্রকাশিত ‘দ্য কিংস ডিসেপশন’ এ এমনই দাবি করেছেন। ইতিহাস বলছে, ১৫৫৮ সালে সিংহাসনে বসার পর প্রথম এলিজাবেথ প্রতিজ্ঞা করেছিলেন বিয়ে করবেন না। স্পেনের তৎকালীন শাসক তার বড় ছেলের সঙ্গে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন এলিজাবেথকে। কিন্তু রানি প্রত্যাখ্যান করেন তা। এরপর স্পেনের সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন তিনি। স্টিভের বইয়ে প্রশ্ন করেন, বিবাহ সম্পর্ক তৈরি করে যে যুদ্ধ অনায়াসই এড়াতে পারতেন, তাতে কেন জড়িয়ে পড়লেন রানি? হয়তো তিনি চেয়েছিলেন নিজের আসল পরিচয় ঢাকতে। যে পরিচয় লুকিয়ে আছে দক্ষিণ-পশ্চিম ব্রিটেনের গ্লস্টারশায়ার কাউন্টির ছোট্ট গ্রাম কটসওল্ডে। স্টিভ লিখেছেন, ১৫৪৩ সালে বছর দশেকের ছোট্ট এলিজাবেথ তখন কটসওল্ডে। লন্ডনে প্লেগ ছড়িয়েছে। তাই মেয়েকে বাঁচাতে কটসওল্ডে পাঠিয়ে দিয়েছেন রাজা অষ্টম হেনরী। বেশ কিছুদিন পরে মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে এলেন তিনি। কিন্তু তার আগেই বিপর্যয়। রাজা আসার আগের দিন রাতে অসুস্থ হয়ে পড়লেন এলিজাবেথ। প্রথমে জ্বর, তারপর বমি, তড়কা। অসুস্থতা ক্রমেই বাড়ছে। পরদিন সকালে মারাই গেলেন এলিজাবেথ। অষ্টম হেনরির কটসওল্ড পৌঁছাতে তখন আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা বাকি। প্রমাদ গুণলেন এলিজাবেথের তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে থাকা লেডি ক্যাট অ্যাশলে এবং টমাস প্যারি। এখন কী হবে! মেয়ের মৃত্যু সংবাদ পেলে রাজা গর্দান তো নেবেনই, মারবেন তিলে তিলে। কারণ, এলিজাবেথকে রক্ষা করার ভার যে তাদের ওপরেই ছিল। প্রাণ বাঁচাতে তাই ফন্দি আঁটলেন ক্যাট এবং টমাস। রাজার সঙ্গে যে তার মেয়ের দেখা বিশেষ হতো না, সে খবর জানা ছিল তাদের। এলিজাবেথ ছিলেন অত্যন্ত লাজুক। তার মায়ের গর্দান নিয়েছিলেন যে বাবা তার সঙ্গে কথা বলতেও ভয়ে কাঁপতেন তিনি। তাই রাজার চোখে ধুলো দেয়া যাবে মনে করে প্রথমে এলিজাবেথের মতো দেখতে একটা মেয়ে জোগাড় করার চেষ্টা চালালেন ক্যাট ও টমাস। সম্ভবত খানিকটা সময় কিনতে। যাতে রাজা বুঝে ওঠার আগে তারা পালিয়ে যেতে পারেন।কিন্তু কপাল মন্দ। কটসওল্ডে বাসিন্দার সংখ্যা বেশি নয়। তেমন কোনো মেয়ে পাওয়া গেল না। তখন যা থাকে কপালে ভেবে গ্রামের এক সাদামাটা বালক, নাম নেভিল, তাকেই এলিজাবেথ সাজিয়ে হাজির করলেন হেনরির সামনে। ফলে আসল-নকলে কেউ ফারাক করতে পারবে না এমনটাই মনে হয়েছিল তাদের। নেভিলের বদলে একটা মেয়ে জোগাড় করার চেষ্টা অবশ্য চালিয়েছিলেন ক্যাট-টমাস। কিন্তু ব্যর্থ হয়ে ঠিক করলেন, নেভিলকে রাজকীয় আদবকায়দা শিখিয়ে দেয়াটাই নিজেদের পিঠ বাঁচানোর সব চেয়ে ভালো উপায়। স্টিভের তার বইয়ে দাবি করেছেন, কৌশলটা কাজে লেগে গিয়েছিল।খালি কটসওল্ডে গুজব আকারে গল্পটা ঘোরাফেরা করেছে। সেই গুজবের সূত্র ধরেই উপন্যাস লিখেছেন স্টিভ। যদিও তিনি দাবি করেছেন, এ নিছক গল্প নয়। এ হল রাজ ইতিহাসের প্রাচীনতম চক্রান্ত। দেড় বছর নানা তথ্য ঘেঁটে যে চক্রান্তের রোমহর্ষক বিবরণ লিখেছেন স্টিভ।এলিজাবেথ যে আসলে পুরুষ ছিলেন তা বোঝাতে বেশ কিছু পরোক্ষ প্রমাণও তুলে ধরেছেন স্টিভ ‘দ্য কিংস ডিসেপশন’ বইয়ে। কটসওল্ড থেকে লন্ডনে ফেরার পর যখন ফের লেখাপড়া শুরু করেন কিশোরী এলিজাবেথ, তখন তার স্বভাব, আচরণের পরিবর্তন দেখে প্রচণ্ড বিস্মিত হন তার গৃহশিক্ষক। এমনকি, নরম, পেলব এলিজাবেথের শারীরিক গড়ন পাল্টে পুরুষালি হতে থাকে। এলিজাবেথের আগের ও পরের ছবির মধ্যে সেই ফারাক স্পষ্ট। এই তথ্যের পক্ষে প্রমাণ জোগাড় করতে বইয়ে স্টিভ দাবি করেন, অবিলম্বে খোঁড়া হোক প্রথম এলিজাবেথের কবর। ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখা হোক, তা ছেলে না মেয়ের। চার শতকেরও পুরনো রাজ-ইতিহাস এখন অগ্নিপরীক্ষার মুখে।

১৬০৩ সালের ২৪ মার্চ ইংল্যান্ডের রিচমন্ড প্রাসাদে পরলোক গমন করেন রানী প্রথম এলিজাবেথে। রানীর মৃত্যু নিয়ে অনেক রকম কথা প্রচলিত আছে। যেমন অনেকে বলেন, রানীর প্রসাধনীর সঙ্গে বিষ মিশানো ছিল যা রক্তের সঙ্গে মিশলে মৃত্যুবরণ করেন রানী। আবার অনেকে বলেন, তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। আজ রানী প্রথম এলিজাবেথের ৪১৭তম মৃ্ত্যুবার্ষিকী। ১৬০৩ সালের আজকের দিনে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ইংল্যান্ডের রানী প্রথম এলিজাবেথের মৃ্ত্যুবার্ষিকীতে শ্রদ্ধাঞ্জলি।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: ৪১০ বছর আগে মারা গেছেণ !!

২৪ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৫৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আমি লিখলাম ৪১৭ আপনি বলেন ৪১০ !!
৭ বছর কি করোনায় খাইছে?
যা হোক ধন্যবাদ প্রথম এলিজাবেথের
সম্পর্কে জানার জন্য

২| ২৪ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৪৩

গোধূলি বিকেল বলেছেন: ধন্যবাদ। তথ্য বহুল পোস্ট।

২৪ শে মার্চ, ২০২০ রাত ১১:৪৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও ধন্যবাদ গোধূলি বিকেল
শুৃভেচ্ছাও জানবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.