নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

নব্বইয়ের দশকের সাড়া জাগানো চিত্রনায়িকা পারভিন সুলতানা দিতির ৫৫তম জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

৩১ শে মার্চ, ২০২০ বিকাল ৪:৫০


বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নব্বইয়ের দশকের সাড়া জাগানো চিত্রনায়িকা পারভিন সুলতানা দিতি। সে সময় যে কজন নায়িকা একের পর এক ব্যবসা সফল চলচ্চিত্র উপহার দিয়েছেন, দিতি ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো, সে কথা তুমি যদি জানতে – ‘উসিলা’ সিনেমায় চিরসবুজ নায়ক জাফর ইকবালের অত্যন্ত এই জনপ্রিয় গানে নবীন নায়িকার উদয় হল। তিনিই হলেন দিতি। মিষ্টি হাসি, আর গালে তিল – অল্প ক’দিনের মধ্যে এই স্বপ্নকন্যা ঠাই পেয়ে যান হাজারো ভক্তের হৃদয়ে। চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের দুরন্ত চিত্রনায়িকা দিতি তার মেধাদীপ্ত প্রাণবন্ত অভিনয়ের মধ্য দিয়ে জয় করেছেন অগণিত দর্শক-ভক্তদের। ৩১ বছরের অভিনয় জীবনে দুই শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন দিতি। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’। ১৯৮৭ সালে স্বামী স্ত্রী (১৯৮৭) ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পার্শ্ব অভিনেত্রী বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। তার অভিনীত অনেক জনপ্রিয় সিনেমা রয়েছে, যা এখনো এ প্রজন্মের দর্শকের কাছেও জনপ্রিয়। জনপ্রিয় অভিনেত্রী পারভীন সুলতানা দিতি হীরামতি, দুই জীবন, লেডি ইন্সপেক্টর, খুনের বদলা, আজকের হাঙ্গামা, চরম আঘাত, স্বামী-স্ত্রী, কালিয়া প্রভৃতি সিনেমায় অভিনয় করে একসময় দর্শক মাতিয়েছেন। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবির নাম ‘সুইটহার্ট’। ছবিটি পরিচালনা করেছেন ওয়াজেদ আলী সুমন। সিনেমার পাশাপাশি টিভি নাটকেও অভিনয় করেছেন দিতি। অভিনয়ের বাইরে মাঝেমধ্যে গান গাইতেও দেখা গেছে তাকে। প্রকাশিত হয়েছে তার একক গানের অ্যালবামও। বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেলও হন তিনি।প্রকাশিত হয়েছে তার একক গানের অ্যালবামও। বিজ্ঞাপনচিত্রে মডেলও হন তিনি। বিটিভিতে গান করার সুবাদে তিনি অভিনেতা আল মনসুরের নজরে আসেন এবং মনসুর তাকে লাইলি মজনু নাটকে অভিনয়ের সুযোগ দেন। এতে দিতির বিপরীতে অভিনয় করেন মানস বন্দ্যোপাধ্যায়। নাটকটি জনপ্রিয়তা লাভ করলেও দিতির পরিবার থেকে তাকে অভিনয় করতে বাধা দেওয়া হয়। কিছুদিন বিরতির পর তিনি ইমিটেশন নাটকে অভিনয় করেন। নাটক পরিচালনাও করেছেন দিতি। এ ছাড়া রান্নাবিষয়ক অনুষ্ঠানও উপস্থাপনা করেছেন। আজ নন্দিত এ চিত্রনায়িকার ৫৫তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৬৫ সালের আজকের দিনে তিনি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওযে জন্মগ্রহণ করেন। চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের চিত্রনায়িকা পারভিন সুলতানা দিতির জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা।

দিতি ১৯৬৫ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার দত্তপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ঢাকার লালমাটিয়া মহিলা কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। শৈশবে তার গায়িকা হওয়ার ইচ্ছা ছিল এবং তিনি গানের চর্চাও করতেন। জাতীয় শিশু একাডেমি থেকে আয়োজিত প্রতিযোগিতায় তিনি জাতীয় পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৮৪ সালে নতুন মুখের সন্ধানের মাধ্যমে দেশীয় চলচ্চিত্রে দিতির আগমন ঘটে। তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’। কিন্তু ছবিটি শেষ পর্যন্ত মুক্তির মুখ দেখতে পায়নি। দিতি অভিনীত মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘আমিই ওস্তাদ’। ছবিটি পরিচালনা করেছিলেন আজমল হুদা মিঠু। এরপর দিতি প্রায় দুই শতাধিক ছবিতে কাজ করেছেন। সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘স্বামী স্ত্রী’ ছবিতে দিতি আলমগীরের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করেন। এই ছবিতেই অভিনয় করে দিতি প্রথমবারের মতো জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে দিতি আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন ইলিয়াস কাঞ্চনের সঙ্গে জুটি গড়ার মধ্য দিয়ে। পাশাপাশি প্রয়াত চিত্রনায়ক মান্নার সাথে তার জুটি খুবই জনপ্রিয় হয়েছিল। দিতি অভিনীত জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ডাক দিয়ে যাই, আমিই ওস্তাদ, স্বামী-স্ত্রী (১৯৮৭), হীরামতি (১৯৮৮), দুই জীবন (১৯৮৮), বীরঙ্গনা সখিনা (১৯৮৯), আপন ঘর (১৯৯০), স্ত্রীর পাওনা (১৯৯১), চাকর (১৯৯২), পাপী শত্রু (১৯৯৫), দূর্জয় (১৯৯৬), স্নেহের প্রতিদান (১৯৯৯), চরম আঘাত, অপরাধী, কালিয়া, চার সতীনের ঘর (২০০৫), নয় নম্বর বিপদ সংকেত (২০০৭), আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা (২০০৮), মেঘের পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেম কাহিনী (২০১৩), জোনাকির আলো (২০১৪)। বড়পর্দার পাশাপাশি বেশকিছু টিভি নাটকেও অভিনয় করেন দিতি।

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে। সেই সংসারে সাফায়েত নামের এক ছেলে ও লামিয়া নামের এক মেয়ে রয়েছে দিতির। নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে দিতি ও সোহেল চৌধুরীর বিচ্ছেদ ঘটে। ১৯৯৮ সালের ১৮ ডিসেম্বর বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবের সামনে আততায়ীর গুলিতে নিহত হন সোহেল চৌধুরী। সোহেল চৌধুরী মারা যাওয়ার পর চলচ্চিত্র অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করেন। সে সংসার টেকেনি। কাঞ্চনের সাথেও তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। শেষ বয়সে দিতি একাই ছিলেন। সদা-হাস্যোজ্জ্বল-নায়িকার বিষাদময় জীবনে মস্তিষ্কে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ায় ২০১৫ সালের ২৫ জুলাই থেকে ভারতের চেন্নাইয়ের মাদ্রাজ ইনস্টিটিউট অব অর্থোপেডিকস অ্যান্ড ট্রমাটোলজি (এমআইওটি) হাসপাতালে নেয়া হয়। মাঝে কিছুটা সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসেন। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে সেই বছরের নভেম্বরে আবারও একই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে। বেশ কিছুদিন চিকিৎসাধীন থাকার পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় ৮ জানুয়ারি তাকে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়।

দেশে ফেরার পরপরই তাকে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের আইসিইউতে থাকাকালীন জনপ্রিয় এই অভিনেত্রী শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মস্তিষ্কের ক্যানসারের সঙ্গে যুদ্ধ করছিলেন। এর আগে দিতি ভারতের চেন্নাইয়ে একটি হাসপাতালেও বেশ কিছু দিন ভর্তি ছিলেন। ‘ভালোবাসা যত বড় জীবন তত বড় নয়, তোমায় নিয়ে হাজার বছর বাঁচতে বড় ইচ্ছে হয়’ – সত্যিই মানুষের জীবন অনেক ছোট, অকাল প্রয়ানে হারিয়ে যায় অনেক প্রাণ। নিজের সিনেমার এই গানের কথাগুলো যেন ফলে গিয়েছিল তাঁর বেলায়। জীবনের মায়া ত্যাগ করে তাড়াতাড়িই চলে গিয়েছিলেন পরপারে। বাংলা চলচ্চিত্রের অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা দিতি ২০১৬ সালের ২০ মার্চ মাত্র ৫১ বছর বয়সে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। চলচ্চিত্রে সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পদকপ্রাপ্ত বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী পারভিন সুলতানা দিতির ৫৫তম জন্মবার্ষিকী আজ। নব্বইয়ের দশকের সাড়া জাগানো চিত্রনায়িকা পারভিন সুলতানা দিতির জন্মবার্ষিকীতে ফুলেল শুভেচ্ছা

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক লিংক
[email protected]

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ৩১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:২৫

রাজীব নুর বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে। জন্ম আর মৃত্যু দিনে তাদের স্মরন করেন বলে।

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও ধন্যবাদ
আপনার জন্মদিনে আমিও
আপনাকে স্মরণ করিবো।

২| ৩১ শে মার্চ, ২০২০ রাত ৯:৪৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: দিতির অনেক ছবি দেখেছি। ভালোবাসা ও দোয়া ।

০১ লা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:২৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জমা
ভালো থাকবেন। নিরাপদে থাকবেন।

৩| ০৩ রা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:১১

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: কদিন আগেই লুটতরাজ ‍মুভিটা দেখলাম। দারুণ অভিনয় দিতির। ওপারে ভাল থাকুক।

০৪ ঠা এপ্রিল, ২০২০ রাত ১:৫৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ মাইদুল ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.