নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব বান কি মুনের ৭৬তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা

১৩ ই জুন, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৫৯


বান কি মুনঃ জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব। দক্ষিণ কোরিয়ার অধিবাসীরূপে তিনিই দ্বিতীয় এশীয় নাগরিক যিনি জাতিসংঘের মহাসচিব হয়েছেন। তিনি ২০০৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন। ২০১১ সালের ৩১ ডিসেম্বর তাঁর প্রথম দফার মেয়াদকাল শেষ হলে পরবর্তীতে কোনরূপ বিরোধিতা না আসায় ২০১১ সালের ২১ জুন তিনি দ্বিতীয় মেয়াদে জাতিসংঘের বর্তমান মহাসচিবরূপে দায়িত্ব পালন করছেন। আজ বান কি মুনের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী। ১৯৪৪ সালের আজকের দিনে তিনি কোরিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব বান কি মুনের জন্মদিনে শুভেচ্ছা।

(বন শহরে স্বস্ত্রীক বান কি মুন)
বান কি মুন ১৯৪৪ সালের ১৩ জুন কোরিয়ার উত্তর জাংজিয়ং-এর ইয়ামসিয়ংয়ে জন্মগ্রহণ করেন৷ ১৯৭০ সালে সিউল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি থেকে বান কি মুন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন৷ তারপর হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন এফ কেনেডি স্কুল অফ গভর্নমেন্ট থেকে ১৯৮৫ সালে লোকপ্রশাসনে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন৷ কোরিয়ান ভাষার পাশাপাশি তিনি ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় পারঙ্গম৷ স্কুলে পড়ার সময় ১৯৬০ সালের প্রথমদিকে আমেরিকান রেডক্রস আয়োজিত একটি ইংরেজি ভাষা প্রতিযোগিতায় জিতেন বান কি মুন৷ সেই সুবাদে তৎকালীন আমেরিকার রাষ্ট্রপতি জন এফ কেনেডির সঙ্গে তার দেখা হয়৷ এই সাক্ষাতের পরই বান কূটনীতিক হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেন। ১৯৭০ সালে মে মাসে বান কি মুন পররাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ে যোগদান করেন ৷ বিদেশে তার প্রথম নিয়োগ হয় নয়াদিল্লীতে৷ তারপরই তিনি দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র দফতরে জাতিসংঘ বিভাগে কাজ করেন৷ পার্ক চুং হি (Park Chung Hee)-এর গুপ্তহত্যার পর বান কি মুন নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের দক্ষিণ কোরিয়ার স্থায়ী পর্যবেক্ষকের ফার্স্ট সেক্রেটারি পদে অধিষ্ঠিত হন৷ ১৯৯১ সালে ১৭ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ কোরিয়া জাতিসংঘের পূর্ণ সদস্য হয়৷ একই সময়ে বান কি মুন জাতিসংঘ বিভাগের পরিচালক পদে নিয়োগ পান৷ রিপাবলিক অফ কোরিয়ার ওয়াশিংটন ডিসির এমবাসিতে তিনি দু’বার নিয়োগ পান৷ ১৯৯০ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি যুক্তরাজ্য বিষয়ক মহাপরিচালক হিসেবে কাজ করেন৷ ১৯৯৫ সালে বান কি মুন পলিসি প্ল্যানিং অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশনের ডেপুটি মিনিস্টার পদে উন্নীত হন৷ তার পরের বছরই তিনি রাষ্ট্রপতির ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজর হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন৷এবছর তিনি বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া (বিএফএ) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

(একটি বিশেষ মুহূর্তে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুন)
বান কি মুন দুই কোরিয়ার আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়নে প্রত্যক্ষভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন৷ ১৯৯২ সালে তিনি সাউথ-নর্থ জয়েন্ট নিউক্লিয়ার কন্ট্রোল কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেন। ২০০৪ সালের জানুয়ারিতে বান কি মুন সাউথ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী হন৷ মন্ত্রীত্ব থাকাকালে ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে নর্থ কোরিয়ান নিউক্লিয়ার ইস্যু সমাধানে কূটনীতিক পদক্ষেপের ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা রাখেন৷এ সম্পর্কে বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত সিক্স-পার্টি আলোচনা অনুষ্ঠানেও বান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন৷ বান কি মুন ১ নভেম্বর ২০০৬ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন ৷২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোফি আন্নানের পর জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে বান কি মুন তার প্রার্থিতা ঘোষণা করেন ৷ জাতিসংঘের নতুন মহাসচিব নির্বাচনের জন্য ইউএন সেক্রেটারি কাউন্সিলের চারবার ভোটাভুটি হয়৷ ২৪ জুলাই, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২৮ সেপ্টেম্বর এবং ২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হওয়া প্রতিটি ভোটাভুটিতেই বান কি মুন ছিলেন শীর্ষে। ২ অক্টোবরের ভোটাভুটিতে বান কি মুন তার পক্ষে ১৪টি ভোট পান৷ ১৫তম সদস্য দেশ তার পক্ষে-বিপক্ষে কোনো মতামত জানায়নি৷ তার সম্পর্কে একমাত্র জাপানিজ ডেলিগেশনই পুরোপুরি একমত হয়নি৷ তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বানই একমাত্র প্রার্থী ছিলেন যাকে জাতিসংঘের স্থায়ী সদস্য দেশের ভেটোর মুখোমুখি হতে হয়নি৷ তিনি ছাড়া বাকি পাঁচজন প্রার্থীর প্রত্যেকেই কোন না কোন কাউন্সিলের স্থায়ী সদস্য দেশের ভেটো পেয়েছেন৷ ২ অক্টোবরের ভোটের পর শশি থারুর যিনি ভোটাভুটিতে দ্বিতীয় হন, প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন৷ জাতিসংঘের কাউন্সিলের স্থায়ী সদস্য দেশ চীনের প্রতিনিধি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে বান কি মুনের প্রার্থীতার ব্যাপারে বক্তব্য রাখেন৷ ৯ অক্টোবর নিরাপত্তা পরিষদ বানকে প্রার্থী হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে পছন্দ করে৷ তারপর ১৩ অক্টোবরে সাধারণ পরিষদের ১৯২ সদস্য রাষ্ট্রই বান কি মুনের মহাসচিব হিসেবে নিয়োগের বিষয়টি মেনে নেয়৷ ১৪ ডিসেম্বর ২০০৬ বান কি মুন জাতিসংঘের অষ্টম মহাসচিব হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন৷

(জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুনকে ‘ডক্টরস অব ল’ পদক দেন রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান)
গতবছর ২২ নভেম্বর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশ নেওয়ার জন্য ঢাকায় এসেছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন। এর আগে একই বছরের ৯ জুলাই গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন সম্মেলনে যোগ দিতে তিনি ঢাকায় এসেছিলেন। এছাড়া জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে ২০১১ সালের নভেম্বর মাসে বানকি মুন বাংলাদেশ সফর করেন, এ সময় জাতিসংঘের মহাসচিব হিসেবে বিশ্বশান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বান কি মুনকে ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি দেয়। রাষ্ট্রপতি সমাবর্তনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করার পর উপাচার্য বান কি মুনের জীবন ও কাজ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন। রাষ্ট্রপতি এরপর বান কি মুনের হাতে ডক্টর অব লজ ডিগ্রি তুলে দেন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে তাঁর বক্তব্যের শুরুর দিকে বান কি মুন বাংলায় গেয়ে ওঠেন ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি।’ এরপর তিনি বাংলাদেশ সফরের কয়েকটি স্মৃতি তুলে ধরেন। জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘আমি তিন বছর আগে ঢাকায় এসেছিলাম। তবে একটি সফর আমার মনে দাগ কেটেছে। ১৯৭০ সালে নয়াদিল্লিতে কর্মরত অবস্থায় ঢাকায় এসেছিলাম। তখন বিমানবন্দর থেকে একটি রিকশা নিয়ে আসতাম। ঢাকার রাস্তায় যানবাহন তখন অনেক কম ছিল।’ ১৯৭৩ সালে কোরিয়া ও বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের চুক্তির স্মৃতিও রোমন্থন করেন তিনি।

এশিয় নাগরিক বান কি মুনের ৭৬তম জন্মবার্ষিকী আজ। জন্মদিনে তাঁর প্রতি আমাদের আন্তরিক শুভেচ্ছা।
অনুসন্ধানী পাঠকদের জন্যঃ Bbiography of Mr. Ban Ki-moon

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:১০

কল্পদ্রুম বলেছেন: অতীতে জাতিসংঘের মহাসচিবদের মধ্যে মনে হয় ওনার সাথে আমাদের সম্পর্ক বেশি ভালো ছিলো।
শিরোনামে 'ফুলেল' শুভেচ্ছা বাদ পড়েছে।

১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৪৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমার মনে হয় খুবই ভদ্র ও নীতিপরায়ণ ছিলেন।
করোনা কালে ফুলটুল ছিড়তে ইচ্ছা হলোনা। তাই
শুধুই শুভেচ্ছা !! =p~

২| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৮:৩৩

শাহিন-৯৯ বলেছেন:


আমেরিকা যদি বলে এখানে দাঁড়িয়ে থাক, এই সব মহাসচিবরা সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। জাতিসংঘ কোন কামের বলে মনে হয় না, তারা না পারে কোন যুদ্ধ থামাতে, না পারে কোন জুলুমবাজ রাষ্ট্রের সমালোচনা করতে।

১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৪৪

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

জাল যার জলাতো তারই হবার কথা।
তারপরেও স্যুভেনিরের মতো থাকনা
একটা সংঘ!!

৩| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৪২

রাজীব নুর বলেছেন: শুভ জন্মদিন।
তার নামটা সুন্দর ''বান কি মুন।'' বাহ!

১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৪৫

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
সত্যিই সুন্দর নাম।
চাঁদের মিশেল দেওয়া।

৪| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ৯:৫০

কৃষিজীবী বলেছেন: জাতিসংঘ আর সংঘের মহাসচিবদের ব্যাপারে জানার আগ্রহ আছে তাই পড়লাব তবে তাদের প্রতি আমার মনে শ্রদ্ধা ভক্তি নাই।
এছাড়া জলবায়ু বিষয়ক সম্মেলনে যোগ দিতে এর পরে টাইপো

১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:০১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

ধন্যবাদ কৃষিজীবী
স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা নাই।
টাইপো সম্পর্কে আরও একটু জানতে চাই।

৫| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১০:২৭

বিজন রয় বলেছেন: মহাসচিব বান কি মুনের ৭৬তম জন্মদিনে শুভেচ্ছা.... ধন্যবাদ নূরু ভাই।

১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৩৮

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ বিজন দাদা
শুভেচ্ছা জানবেন। ভালো থাকবেন।

৬| ১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:২৪

কৃষিজীবী বলেছেন: স্বাধীন মত প্রকাশে বাধা নাই ধন্যবাদ। ২০১১ ভুলে ১৯১১ লিখছেন

১৩ ই জুন, ২০২০ রাত ১১:৩৯

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকেও ধন্যবাদ এত বড়
টাইপো ধরিয়ে দেবার জন্য।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.