নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নূর মোহাম্মদ নূরু (পেশাঃ সংবাদ কর্মী), জন্ম ২৯ সেপ্টেম্বর প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত বরিশালের উজিরপুর উপজেলাধীন সাপলা ফুলের স্বর্গ সাতলা গ্রামে

নূর মোহাম্মদ নূরু

দেখি শুনি স্মৃতিতে জমা রাখি আগামী প্রজন্মের জন্য, বিশ্বাস রাখি শুকনো ডালের ঘর্ষণে আগুন জ্বলবেই। ভবিষ্যৎকে জানার জন্য আমাদের অতীত জানা উচিতঃ জন ল্যাক হনঃ ইতিহাস আজীবন কথা বলে। ইতিহাস মানুষকে ভাবায়, তাড়িত করে। প্রতিদিনের উল্লেখযোগ্য ঘটনা কালক্রমে রূপ নেয় ইতিহাসে। সেসব ঘটনাই ইতিহাসে স্থান পায়, যা কিছু ভাল, যা কিছু প্রথম, যা কিছু মানবসভ্যতার অভিশাপ-আশীর্বাদ। তাই ইতিহাসের দিনপঞ্জি মানুষের কাছে সবসময় গুরুত্ব বহন করে। এই গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে সামুর পাঠকদের জন্য আমার নিয়মিত আয়োজন ‘ইতিহাসের এই দিনে’। জন্ম-মৃত্যু, বিশেষ দিন, সাথে বিশ্ব সেরা গুণীজন, এ্ই নিয়ে আমার ক্ষুদ্র আয়োজন

নূর মোহাম্মদ নূরু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পৃথিবীর সবচাইতে জনপ্রিয় ও সাহসী ছয় নারী গুপ্তচর

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:০৩


গুপ্তচর শব্দটিই ভীতিকর। এই বুঝি সবার অলক্ষ্যে ভয়ানক গোপন সংবাদটি গোপনে পাচার করে দিয়ে গোপনে চলে গেল গুপ্তচর। শোষণকেন্দ্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গেই মূলত গুপ্তচরদের সৃষ্টি। প্রথমদিকে প্রাসাদের অভ্যন্তরে রাজা-বাদশার শত্রুদের গোপনে হত্যার কাজ করতো তারা। পরবর্তী সময়ে নির্দিষ্ট রাষ্ট্র বা সংস্থার হয়ে গোপনীয়তা বজায় রেখে অন্যের গোপনীয়তা যারা নষ্ট করে দিতো গুপ্তচর। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শীতল যুদ্ধের সময় গুপ্তচরদের দৌরাত্ম দেখা যায় দেশে দেশে। আগে গুপ্তচররা শুধু তথ্য পাচারের কাজ করতো। কিন্তু শীতল যুদ্ধচলাকালীন সময়ে ইসরায়েল তার গুপ্তচরদের প্রথমবারের মতো ধ্বংসাত্মক কাজে ব্যবহার করতে শুরু করে। ১৯৭২ সালের অলিম্পিককেন্দ্রিক এক হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে পরবর্তী কুড়ি বছর ধারাবাহিক অসংখ্য গুপ্তহত্যা যার স্বাক্ষ্য বহন করে।নারীর কাজ কি কেবল সংসারের হাড়ি ঠেলা? উঁহু! নারীরা নানাক্ষেত্রে কাজ শুরু করেছে অনেক অনেক আগে থেকেই। তেমনই এক চ্যালেঞ্জিং পেশা হল গুপ্তচর হয়ে কাজ করা। আজ আলোচনায় আসবে পৃথিবীর সবচাইতে জনপ্রিয় ও সাহসী ছয় নারী গুপ্তচর!

১| মারিতা লরেঞ্জঃ লাতিন আমেরিকার দুই প্রবাদ পুরুষ কিউবার ফিদেল কাস্ত্রো এবং ভেনেজুয়েলার জেনারেলিসিমো মারকোস পেরেজ জিমেনেজের প্রেমিকা ছিলেন লরেঞ্জ। যাদের প্রত্যেকেই তার ঔরসে নিজ সন্তান জন্মের দাবি করেছেন। সিআইএ’র ব্ল্যাক অপারেশনে জড়ানোর অভিযোগ রয়েছে মারিতার বিরুদ্ধে। ব্যক্তিগত জীবনে তিনটি বিয়ের কথা শোনা যায়। এমনকি এক গ্যাংস্টারের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে আরেকটি শিশুর জন্মদানের গুজবও শুনতে পাওয়া যায় লরেঞ্জকে নিয়ে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কেনেডি হত্যাকান্ড উন্মোচনের মূল চাবিকাঠিও নাকি মারিতার হাতে ছিল। সেই শীতল গল্পের সত্যতা যাচাইয়ের কোনো উপায় নেই। মারিতা লরেঞ্জ নিজেই এক সাংবাদিকের সাথে সাক্ষাৎকারে বলেন, তাকে গুলি করা হয়েছে, বিষ প্রয়োগে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়েছে, অগ্নিদগ্ধ করার চেষ্টা চলেছে, মাদকের শিকার বানানো হয়েছে, তার উপর পিস্তলের আঘাত হানা হয়েছে, চাবুকপেটা করা হয়েছে। এমনকি আমাজনের রেইন ফরেস্টে মৃতপ্রায় অবস্থায় ফেলে আসা হয়েছে। কিন্তু লরেঞ্জ প্রতিবার হিমশীতল মৃত্যুকে হার মানিয়েছেন।
১৯৬০ সালের ৪ ডিসেম্বর, মারিতা কিউবাতে আসেন; লক্ষ্য ফিদেল কাস্ত্রোকে চিরদিনের মতো নিস্ক্রিয় করা, তথা হত্যা করা। সিআইএ মারিয়ার হাতে তুলে দিয়েছিলো বটুলিজম নামক দুটি বিষাক্ত ট্যাবলেট। মারিতার উপর নির্দেশ ছিলো বিষাক্ত ট্যাবলেট দুটি পানীয়তে মিশিয়ে কাস্ত্রোর হাতে তুলে দেবার, যা মাত্র ৩০ সেকেন্ডে নিশ্চিত করবে কাস্ত্রোর মৃত্যু। এমনকি এই কাজ সম্পন্ন করার আগে মারিতার হাতে গাটস পিল নামক দুটি ট্যাবলেট তুলে দেওয়া হয়েছিলো, যা খেলে মারিতার চিন্তাশক্তি একাগ্র হবে, হত্যাকান্ডে তিনি বিন্দুমাত্র প্রভাবিত হবেন না। মারিতা বিষাক্ত ট্যাবলেট দুটি প্রসাধনী ক্রিমের মাঝে লুকিয়ে কিউবায় নিয়ে আসেন। কিউবায় কিলিং মিশন হাতে পৌঁছান মারিতা লরেঞ্জ। সেই চিরপরিচিত হোটেল হাভানা হিলটন। স্যুইট নাম্বার ২৪০৮। এই কক্ষেই কত না রাত কাটিয়েছেন তিনি। আজ সেই কক্ষে দুরু দুরু বক্ষে তার প্রেমিক কাস্ত্রোকে হত্যা করতে হবে। বাইরে সিআইএ'র গুপ্তচর অপেক্ষমান। তারা একইসাথে সময় ও মারিতার উপর নজর রাখছেন, যেন কিলিং মিশন ব্যর্থ না হয়। অবশেষে ক্লান্ত-শ্রান্ত কাস্ত্রো তার কক্ষে ফিরে এলেন।
কাস্ত্রোকে দেখার পূর্বেই স্মৃতিকাতর মারিতা বুঝতে পেরেছিলেন তিনি তার ভালোবাসাকে হত্যা করতে পারবেন না। কাস্ত্রো মারিতাকে দেখেই প্রথম প্রশ্ন ছুঁড়েছিলেন, তুমি কি এখনো আমার বিরোধীদের সাথে মিয়ামিতে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছো? মারিতার উত্তর ছিল, হ্যাঁ। কাস্ত্রোর দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল, তুমি কি সিআইএ'র হয়ে কাজ করছো? মারিতার উত্তর ছিল, আমি শুধু নিজের হয়ে কাজ করি। কাস্ত্রোর পরবর্তী প্রশ্ন ছিল, তুমি কি আমায় হত্যা করতে ফিরে এসেছো? মারিতার উত্তর ছিল, হ্যাঁ। কিন্তু আমি তোমার সাথে দেখা করতে এসেছি। কাস্ত্রো প্রত্যুত্তরে খুশি হয়ে বলেছিলেন, ভালো, খুব ভালো। ইতোমধ্যে দুঃসাহসী কাস্ত্রো মারিতার হাতে নিজের লোডেড .৪৫ পিস্তলটি তুলে দিয়েছেন। মারিতা পিস্তলের চেম্বার চেক করে গুলিভরা পিস্তলটি কাস্ত্রোর দিকে তাক করেন। কাস্ত্রো একনজর মারিতার দিকে চেয়ে বলেন,
তুমি আমায় মারতে পারবে না, কেউ আমাকে হত্যা করতে পারবে না।
এই বলে কাস্ত্রো মারিতাকে জড়িয়ে ধরেন। পরদিন কাস্ত্রোকে ঘুমের মধ্যে রেখেই ব্যর্থ মারিতা লরেঞ্জ মিয়ামিতে ফিরে আসেন। এই একবারই মারিতা লরেঞ্জ তার মিশনে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি তার প্রথম ভালোবাসা ফিদেল কাস্ত্রোকে হত্যা করতে পারেননি। কিন্তু পরবর্তী বহু মিশন তিনি সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছেন, মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়েছেন।

২| মাতা হারিঃ
সৌন্দর্য আর বুদ্ধির এমন দারুণ মিশেল খুব খুঁজলেও পাওয়া সম্ভব নয়। বলছিলাম ইতিহাসের দুর্ধর্ষ নারী স্পাই বা গুপ্তচর মাতা হারির কথা। মার্গারেটা গারট্রুড জেল্লে। ডাচ কন্যা মাতা হারির আসল নাম ছিল এটিই। ১৯০৫ সালে কাজ শুরু করেন এই নারী। আর নিজের সৌন্দর্যকে খোলামেলা ভাবে প্রকাশ করে জিতে যান অনেক বাজি। প্রচণ্ড ভালো নাচতে পারতেন মাতা হারি। বার্লিন, ভিয়েনাসহ নানাদেশে রাজনৈতিক ও সামরিক প্রচুর সঙ্গী জুটিয়ে নেন তিনি। ১৯১৪ সালে এই সঙ্গীদের সাহায্যেই সারা বিশ্বে ছুটে বেড়ান মাতা হারি। ১৯১৭ সালে ফ্রেঞ্চ প্রশাসন মাতা হারি জার্মানদের হয়ে কাজ করছেন- এমনটা অভিযোগ তোলেন। ডাবল এজেন্ট হয়ে দুই দেশের জন্য কাজ করার অভিযোগে ১৯১৭ সালে, ৪১ বছর বয়সে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় এই নারী গুপ্তচরকে। মাতা হারি কি আসলেই দুর্ধর্ষ স্পাই ছিল? নাকি সুখময়, আনন্দময় এক জীবনের স্বপ্ন দেখা উচ্চাকাঙ্খী এক নারী ছিল যাকে যুদ্ধের রাজনীতির মারপ্যাঁচের বলি হতে হয়? এ নিয়ে নানা বিতর্ক, মতভেদ আর গল্পের শেষ নেই। মাতা হারিকে নিয়ে লেখা হয়েছে অনেক বই, আর্টিকেল আর তৈরী হয়েছে চলচ্চিত্র। শারীরিক সৌন্দর্য, আবেদনময় নৃত্য, শৈল্পিক যৌনতার খ্যাতি বলুন আর কুখ্যাতিই বলুন এসবের সাথে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ নিয়ে মাতাহারি ইতিহাসে হয়ে আছে এক কিংবদন্তি!

৩। ন্যান্সি ওয়েকঃ
ন্যান্সি গ্রেস অগাস্টা ওয়েক একজন ব্রিটিশ এজেন্ট হিসেবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে কাজ করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি ফ্রান্স রেজিসটেন্সের গেরিলা বাহিনী মাকিস এর একজন নেতৃস্থানীয় এজেন্ট ছিলেন এবং যুদ্ধে একজন নিবেদিত প্রান সৈনিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ১৯৪০ সালে জার্মানি ফ্রান্স আক্রমণ করলে তিনি ফ্রান্স রেজিসটেন্সের বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করেন ও পরে ক্যাপ্টেন অইয়ান গ্যারোর নেতৃত্বাধীন গেরিলা বাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৪২ সালের পর গেস্টাপো বাহিনীর মোস্ট ওয়ান্টেড তালিকায় শীর্ষ ব্যক্তি ছিলেন ন্যান্সি ওয়েক এবং তখন তার মাথার দাম ঘোষণা করা হয় ৫ মিলিয়ন ফ্রাঙ্ক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ফ্রান্সের জন্য সাহসীভাবে কাজ করেন ন্যান্সি। তার মাথার দাম ৫ মিলিয়ন ফ্র্যাঙ্ক ধরা হয় সেসময়। আন্ডারকভার কাজ করার সময় একবার ৩০০ মাইল সাইকেল চালিয়ে জার্মানির বর্দারে যান ন্যান্সি শুধু একটি কোড বদল করার জন্য। সেখান থেকে ফিরে আসার পর তাকে স্পেশাল অপারেশনস এক্সিকিউটিভ পদে উন্নীত করা হয়। গেস্টাপোর কাছে হোয়াইট মাউস নামে পরিচিত এই নারী দূর্দান্ত কাজ করেন পুরটা সময়। তবে যুদ্ধ থেমে গেলে নিজের স্বামীকে মৃতাবস্থায় দেখতেপান ন্যান্সি। গেস্টাপো ন্যান্সির খোঁজ জানার জন্য তার স্বামীকে মেরে ফেলে।

৪। এথেল রোজেনবার্গঃ
১৯১৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেন এথেল রোজেনবার্গ। এর আগে ১৯১৮ সালে এথেলের ইহুদি বাবা-মা নিউইয়র্কে পাড়ি জমান। সেখানেই ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠেন এথেল। আমেরিকার বাসিন্দা হয়েও একটা সময় গুপ্তচরের কাজ শুরু করেন তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের হয়ে। ১৯৫৩ সালে এই দম্পতি আমেরিকার কাছ থেকে অ্যাটমিক বোমা বা পারমাণবিক বোমার গোপন খবর পাচার করেন সোভিয়েত ইউনিয়নে। এ সময় তারা সাহায্য নেন এথেলের ভাই-এর। ভাই তার স্ত্রী রুথকে বাঁচাতে গিয়ে রাজি হয়ে যান বোন এথেলের কথায়। কিন্তু একটা সময় সব খবর ফাঁস হয়ে যায়। পরে জুলিয়াস নিজের দোষ স্বীকার করে নিলেও এথেল কখনোই পারমাণবিক বোমার ব্যাপারে নিজের কোনোরকম সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেননি। তবে তার বিরুদ্ধে সব প্রমাণ এর ভিতরেই হাতে চলে আসে আমেরিকান সরকারের। ১৯৫৩ সালের ১৯ জুন ফাঁসি দেওয়া হয় এথেল ও তার স্বামীকে। তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নকে এটমিক বোমা বানানোর তথ্য সরবরাহ করার জন্য ১৯৫৩ সালে এথেল ও তার স্বামীকে সিং সিং কারেকশনাল ফ্যাসিলিটিতে ইলেক্ট্রিক চেয়ার ব্যবহারের মাধ্যমে মেরে ফেলা হয়। তবে নিজেদের কোন অপরাধ স্বীকার করেননি এই দম্পতি। শুধু তাই নয়, নিজেদের সাথে আর কেউ আছনে কিনা বা কারো সম্পর্কে কিছু জানেন কিনা সেটাও বলতে চাননি তারা।পুরো দেশ এই সময় কয়েকভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে। কেউ কেউ এথেল ও তার স্বামী বলির পাঠা হয়েছেন এমনটা মতামত দেন। অনেকে এটাকেই ঠিক বলে ভাবেন।

৫।অ্যানা চ্যাপম্যানঃ
যুক্তরাষ্ট্রে গ্রেপ্তার হওয়া রাশিয়ার একজন গুপ্তচর অ্যানা চ্যাপম্যান। যিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে বসবাস করতেন। ২৭ জুন, ২০১০ সালে নিউইয়র্ক সিটির ম্যানহাটান থেকে অন্য আরো নয়জনের সাথে তাকে গেফতার করা হয়, অবৈধভাবে রাশিয়ান ফেডারেসন’স এক্সটারনাল ইন্টেলিজেন্স এর হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুপ্তচরাবৃত্তি করার জন্য। বিচারে অ্যানাকে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করে প্রধান বিচারপতিকে না জানিয়ে বিদেশী সংস্থার হয়ে গুপ্তচরাবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। ২০১০ সালের ৮ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার বন্দি বিনিময় চুক্তির অওতায় যুক্তরাষ্ট্র অ্যানাসহ বাকী নয়জনকে রাশিয়ায় ফেরত পাঠায় এবং রাশিয়া তাদের হাতে বন্দি থাকা চার মার্কিন গোয়েন্দাকে যুক্তরাষ্ট্রে ফেরত পাঠায়। রাশিয়ার ‘আগুনচুলো সুন্দরী’ নামে বেশি পরিচিত অ্যানা চ্যাপম্যান। অবৈধ তথ্য সংগ্রহে ও সরবরাহের জন্য স্লিপিং সেল হিসেবে কাজ করছিলেন অ্যানা। মোট নয়জনের সাথে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। কেজিবি অফিসারের মেয়ে অ্যানার আইকিউ লেভেল ১৬২। ২০০১ সালে অ্যালেঙ্ক চ্যাপম্যান নামক এক ব্রিটিশকে বিয়ে করেন অ্যানা। কিছুদিন বাদেই অবশ্য ডিভোর্স নিয়ে ম্যানহাটনে চলে যান অ্যানা। সেখান থেকেই কাজ করতে থাকেন। ২০১০ সালে ভূয়া পাসপোর্ট সরবরাহ করার সময় অ্যানাকে গ্রেপ্তার কিরা হয়। গ্রেপ্তারের পর অ্যানাকে রাশিয়ায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তবে সেখানে থেকেও এখনো কাজ করে চলেছেন অ্যানা।

৬। জোসেফাইন বাকেরঃ
জোসেফিন বাকের ছিলেন আমেরিকান বংশদ্ভুত ফ্রেন্স নৃত্যশিল্পী, সঙ্গীত শিল্পী ও অভিনেত্রী। তার আসল নাম ফ্রেদা জোসেফিন ম্যাকডোনাল্ড। তিনি ১৯০৬ সালে মিসৌরির সেন্ট লুইসে জন্মগ্রহণ করেন ও ১৯৩৭ সালে ফ্রান্সের নাগরিকত্ব পান। ফ্র্যান্স ও ইংরেজি দুই ভাষাতেই অনর্গল কথা বলতে পারা বেকার আন্তর্জাতিক সংঙ্গীত ও রাজনৈতিক অঙ্গনে ছিলেন অন্যতম নারী। বিভিন্ন সময় তাকে কয়েকটি ডাকনাম প্রদান করা হয়েছিল। যেগুলোর মধ্যে “ব্রোঞ্জ ভেনাস”, “দ্য ব্ল্যাক পার্ল” ও “ক্রিউল দেবী”। শুধু গুপ্তচর হিসেবে নয়, জোসেফাইন বাকের পরিচিত গায়িকা, অভিনেতা, নাগরিক অধিকারকর্মী এবং নাচিয়ে হিসেবেও। ১৯২৫ সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্যারিসে চলে আসেন জোসেফাইন। সেখানে উদ্ভট নৃত্যের মাধ্যমে পরিচিতি কুড়ান। ১৯৩৯ সালে যুদ্ধ শুরু হয়ে গেলে ফ্রেঞ্চ মিলিটারি ইন্টেলিজেন্সে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। পুরো ইউরোপ জুড়ে হওয়া দূতাবাস ও অন্যান্য স্থানের পার্টিগুলোতে থেকে জার্মান সেনাদের গতিবিধি নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা এবং সেগুলো সরবরাহ করাই ছিল জোসেফাইনের কাজ। পরিচিতি থাকার কারণে নাজিরাও তাকে সন্দেহ করেনি। নিজের গানের পাতায় অদৃশ্য কালি দিয়ে তথ্য লিখতেন জোসেফাইন। যুদ্ধ শেষে আমেরিকা চলে আসেন এই নারী। নাগরিক অধিকার নিয়ে কাজ করতে থাকেন। এসময় ক্লু ক্লুক্স ক্ল্যান থেকে মৃত্যুর হুমকি পান জোসেফাইন।

নূর মোহাম্মদ নূরু
গণমাধ্যমকর্মী
নিউজ চ্যানেল :-& ফেসবুক
[email protected]

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:১৫

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: সুন্দর পোস্ট

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:৩১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ছবি আপু
লেখাটি পাঠঅন্তে উৎসাহ জাগানিয়া
মন্তব্য প্রদানের জন্য।

২| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:১৯

আফরোজ ন্যান্সি বলেছেন: দারুন তথ্যবহুল লেখা।

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:৩২

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমার ব্লগে আপনাকে স্বাগতম ন্যান্সি আপু
অনুপ্রাণিত করা মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

৩| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:২৬

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন:
কয়েকজনেরটা আগেই পড়েছি।+++++

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:৩৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আপনাকে ধন্যবাদ সরকার ভাই
সাথে থাকার জন্য। প্লাসের জন্য
শুভেচ্ছা জানবেন।

৪| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ বিকাল ৪:৫১

রাজীব নুর বলেছেন: মুরুব্বী আপনি কি নারীদের ভালোবাসেন? সম্মান করেন?

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:১৩

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

আমি আমার মা'কে শ্রদ্ধা করি,
ভালোবাসি তার অভাব বোধ করি।

৫| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:২০

উলডুমা কেরামত বলেছেন: আগে তথ্যের জন্য গোয়েন্দারা নীরবে কাজ করতো। এখন উল্টো। সব তথ্য আমরা ফেসবুকে দিয়ে দিই। ফেসবুক বিশ্লেষণ করে এখন যে কারো সম্পর্কে ধারণা করা সম্ভব।

এই যুগে ফেসবুক হচ্ছে সেরা গুপ্তচর।

১১ ই অক্টোবর, ২০২০ রাত ৯:০১

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:

এর কারণ নারীদের কাছে সহজেই পরাভূত হয়
সব পুরুষ। নারীদের এই বিশেষ ক্ষমতা্ দিয়েই
সৃষ্টি করা হয়েছে। নারীদের ষোল কলায় পরুষ
পরাজিত হতে বাধ্য। বড় বড় মুনী ঋষীরাও কুপেকাত
হতো তাদের ছলা কলায়।

৬| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৬:৪৯

কবিতা পড়ার প্রহর বলেছেন: গুপ্তচরেরা সুন্দরীও বটে।

৭| ১১ ই অক্টোবর, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৪৭

নুরুলইসলা০৬০৪ বলেছেন: পুরুষ যা যা পারে নারীও তাই পারে।বিজ্ঞানের বদৌলতে পুরুষ নারী হতে পারে,নারী পুরুষ হতে পারে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.