নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ওবায়েদুল আকবর

ওবায়েদুল আকবর › বিস্তারিত পোস্টঃ

আসুন শাহবাগ আন্দোলনটাকে ফলপ্রসু করতে বাড়তি কিছু কাজ করি। কমিয়ে আনি গ্রাম-শহরের দুরুত্ব

০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৪৮

আমি এতদিন চুপচাপ শাহবাগ আন্দোলন পর্যবেক্ষণ করছিলাম। কিছুই বলিনি এই ব্যাপারে। তবে আন্দোলন এখন তার সবচেয়ে কঠিন সময় পার করছে। এটা এমন এক সময় যখন প্রধান বিরোধী দল সরাসরি অবস্থান নিয়েছে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে, নানা অপ অথবা কুযুক্তি প্রদর্শন করে যাচ্ছে আন্দোলনের বিপক্ষে। চেষ্টা করছে সরকারের নানা অপকীর্তি আর অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থার সুযোগ নিয়ে দেশের গরীব-দুঃখী এবং গ্রাম্য পশ্চাদপদ গোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে তাদেরকে নানাভাবে ভূল বুঝিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করতে এবং একইসাথে ক্ষমতায় আরোহণ করতে। স্বভাবতই বিএনপির কর্মীরাও বাধ্য হবে দলের হাইকমান্ডের আদেশমত পরিচালিত হতে। এটা আমরা হতে দিতে পারিনা। কোনভাবেই না। কস্মিনকালেও না। প্লীজ আন্দোলনকারীরা আপনাদের প্রতি আবেদন শুধু শাহবাগে কেন্দ্রীভূত না থেকে গ্রামগুলোতেও নজর দিন। ওখানকার মানুষগুলোকে বুঝান। এই গরীব, শিক্ষাবন্চিত মানুষগুলো যেন কারো ভূল বুঝাবুঝির শিকার না হতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন। খেয়াল করুন গত কয়েকদিনে জামাতের যেসব লোক মরেছে তারা কিন্তু এসব অন্চলের লোক। কিছু জিনিস খেয়াল রাখবেন:



১) এই মানুষগুলো যেহেতু দেশের মূলকেন্দ্র থেকে দূরে, এদের হাতে যেহেতু টিভি, খবরের কাগজ পৌছায়না, এদের শিক্ষার হার বা মান যেহেতু নিম্নমানের তাই এদের রাজনৈতিক সচেতনতাও সেভাবে গড়ে উঠেনি। তারা দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়েও সেভাবে মাথা ঘাটামায়না। এদের ম্যাক্সিমামের কাছেই দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পড়ে বেচে থাকাই মূখ্য ব্যাপার। এরা আসলে কাদামাটির মত। যেভাবেই ইচ্চা সেভাবেই এদেরকে আপনি একটা শেপ দিতে পারবেন। সুযোগটা আমাদেরই নিতে হবে। তাদেরকে বুঝান, তাদের মধ্যে রাজনৈতিক সচেতনতা সন্চার করুন। মনে করুন এটাই আপনার দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ।



২) গ্রাম বা মফস্বল শহরের মানুষগুলোকে যতটুকু পারুন সাহায্য করুন। কারো চাকরির জন্য অথবা পড়াশুনার জন্য যতটুকু সম্ভব আপনার পক্ষে ততটুকু করুন। শিবির এই কাজে আগ বাড়িয়ে সাহায্য করে অনেক কোমলমতি তরুণ বা তাদের অভিভাবকদের নিজেদের কব্জায় নিয়ে নেয়। সো প্লীজ এখন থেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিন।



৩) ধর্মীয় প্রোপাগান্ডায় গ্রামের মানুষেরা যেন খুব সহজেই বিভ্রান্ত না হয় সেজন্য গ্রামের সাথে শহরের নিরলস যোগাযোগ অপরিহার্য একটা ব্যাপার। তাই গ্রামে গেলে সম্ভব হলে ল্যাপটপ নিয়ে যান এবং যে কোন মোবাইল মোডেম নিয়ে যান। তাদেরকে ব্লগ, ফেসবুক সম্বন্ধে যথার্থ ধারনা দিন। তারা যেন সহজেই জামাতের ধর্মীয় প্রোপাগান্ডায় বিভ্রান্ত না পড়ে সেজন্য এটা এন্টিবায়োটিকের কাজ করবে এই ব্যাপারে আমি শিওর।



৪) রাজনৈতিক সচেতনতা, শিক্ষার অভাবের কারণে গ্রামের মানুষের মাঝে

জাতীয়তাবোধ, দেশাত্ববোধ, জাতিগত আত্মমর্যাদাবোধ, নাগরিক অধিকার, সামাজিক কর্তব্য সম্বন্ধে সচেতনা সেভাবে জাগ্রত হয়না। তাই তাদেরকে খুব সহজেই এমনকি একটা সিগারেটের বা এক কাপ চায়ের বিনিময়েও ভোটের সময়ে প্রভাবিত করা সম্ভব হয় যেটা আমার আপনার মত শহুরে মানুষের ক্ষেত্রে সম্ভব নয়। তাই বলছি তাদের মাঝে যত দ্রুত সম্ভব জাতীয়তাবোধ, দেশাত্ববোধ, জাতিগত আত্মমর্যাদাবোধ, নাগরিক অধিকার বা সামাজিক কর্তব্য সম্বন্ধে সঠিক ধারনা ছড়িয়ে দিন। এটাই মনে করুন আমাদের নতুন মুক্তিযুদ্ধ।



৫) গ্রামের মানুষের মাঝে শুধু একাত্তর বা পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণাই শুধু নয় আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী সম্বন্ধে গড়ে উঠা ইতিবাচক, নেতিবাচক নানা অলীক রূপকথামূলক যেসব ধারণা রয়ে গেছে সেগুলো দূরে সরিয়ে দিয়ে বাস্তব একটা ধারনা দিন। যেমন ভারতের কাছ থেকে কিরকম আচরণ প্রত্যাশা করি, কতটুকু সাহায্য পেয়েছি, কতটুকু পাওয়া উচিৎ ছিল, কতটুকু প্রাপ্য জিনিস আমাদের আদায় করে নিতে হবে সেব্যাপারে সুস্পষ্ট ধারণা দেয়ার চেষ্টা করুন। সময় স্বল্প থাকলে এ ব্যাপারে আপনার অবস্থান যে প্রো ইন্ডিয়ান বা এন্টি ইন্ডিয়ান নয় সেটা নিশ্চিত করুন। এ ব্যাপারে শহুরে ছাগলগুলোকেও বুঝাতে পারেন ওরাও এ ব্যাপারে ভূলের দুনিয়ায় বাস করে। ভারত ছাড়া আমরা বাচতে পারবনা, আমরা ভারতের দয়ায় বেচে থাকি, ভারতের কাছে কোন কিছু চাওয়া পাপ বা ভারত মালাউন দেশ, ভারতের ধ্বংস চাই বা আমাদের দেশের যে কোন দুর্ঘটনার পিছনেও ভারতের হাত খোজা এগুলো জাতি হিসেবে আমাদের জন্য কোন মঙ্গলজনক বার্তা নয়। ভারত সম্বন্ধে ক্লিয়ার একটা ধারনা থাকা আমাদের সবার জন্যই প্রয়োজন। একটা ব্যাপার খেয়াল রাখবেন ভারত নিয়ে নানা গুযোবের ফলে কিন্তু ৭৫-৮১ পর্যন্ত নানা কর্মকান্ড ঘটে গিয়েছিল ভারতের দৃশ্যমান উপস্থিতি ছাড়াই শুধুমাত্র ভারতকে উপলক্ষ্য করেই। সত্যি বলতেকি এর সুযোগ আমাদের রাজনীতিবিদরাই তৈরী করে দিয়ে গেছেন বারবার। আমাদের কর্তব্যই হল গ্রামের মানুষকে এই সর্বনাশা গহ্বর থেকে বের করে নিয়ে আসা। তাই বর্ডার অন্চলগুলোতে বর্ডার কিলিং, উত্তর-পশ্চিম বঙ্গ অংশে ফারাক্কার পানির হিস্যা, উত্তর ও উত্তর-পূর্ব অংশে নদীতে বাধ দেয়ার ব্যাপারে রাজনৈতিক সচেতনতা সৃষ্টি আমাদেরই তৈরী করে দেয়া উচিৎ। এরা যেন লীগ বা দল বা জামাতের কুরাজনীতির শিকার না হয় সে ব্যাপারে আমাদেরই সচেতন হতে হবে।



৬) যত হরতাল তত বেশী গরীব মানুষকে ব্যাবহার করা সুবিধা হয় অর্থনৈতিক দুর্বলতা তৈরী হওয়ার কারণে। এই ব্যাপারটাকে গ্রামের মানুষের কাছে ছড়িয়ে দিতে হবে। হরতাল হলেই এরপর থেকে তারা যেন কোন দলের নামে রাস্তায় নেমে পড়ার আগে দশবার ভাবে।



একটা জিনিস সবাইকে বুঝতে হবে কেন বিএনপি তরুণ সমাজের একটা জনপ্রিয় দাবীকে উপেক্ষা করছে। কারণ তারা মনে করছে এই তরুণ সমাজের চেয়ে অনেক বেশী মানুষ বা ভোটার গ্রামে আছে। এরা যোগাযোগ ব্যাবস্থার অনগ্রসরতার কারণে শহরের থেকে অনেক দূরেই থাকে। এদের এই পশ্চাদপদতা, অনগ্রসরতা আর যথার্থ শিক্ষার অভাবের কারণে এদেরকে খুব সহজেই মোটিভেট করা সম্ভব হবে। কাজেই শহরে ভীর করা প্রজন্ম চত্বরের তরুণ গুলোকে যারা বেশীরভাগই রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় নয় তাদেরকে একটা গোলযোগের মধ্যে ফেলে তাদের মূল ফোকাস থেকে তাদেরকে সরিয়ে দেয়া এবং এর ফলশ্রুতিতে পুনরায় ক্ষমতায় যাওয়া। আমাদের কোনমতেই সেটা হতে দেয়া যাবেনা কিন্তু ব্যাপারটা ঘটে যাবে যদি আমরা শুধু শহর গুলোতে কেন্দ্রীভূত থাকতে গিয়ে গ্রামকে অবজ্ঞা করি। আর একই সাথে বিএনপিকেও দূরে সরিয়ে রাখলে হবেনা। তাদেরকেও কাছে আনার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে। শাহবাগের অফিশিয়াল দাবী না করে শুধু মুখে হলেও তত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবীটাকে সমর্থন করা যায় কিন্তু। আমরা নিজেরা কেউই নিশ্চয়ই আমাদের রাজনৈতিক দলগুলোকে এতটা বিশ্বাস করি না। করি কি? আর আমাদের মূল প্রতিপক্ষ বিএনপি বা এর সমর্থকরা না আমাদের মূল প্রতিপক্ষ জামাত এবং এর অনুসারীরা। আমাদের লড়াইয়ের কারণ হচ্ছে আমাদের ইতিহাস এবং ঐতিহ্যকে কতিপয় পাকিস্তানপন্থীর অপমানের হাত থেকে রক্ষা করা। আমার মনে হয় বিএনপির লাখো তরুণ আমাদের সাথে এ ব্যাপারে একাত্ম হবে। হওয়ারই কথা। আসুন আমরা এক হই। কাপিয়ে দেই আমাদের শত্রুদের হৃদয়। হাত বাড়িয়ে দেই একজন আরেকজনের দিকে - শুধুই ধরে রাখার জন্য ফিরিয়ে দেবার জন্য নয়। আমরাই গড়ব নতুন বাংলাদেশ। আস তরুণ আস। দলে দলে আস। আওয়ামীলীগ, বিএনপি সব দল থেকেই আস। দেরী করনা প্লীজ।

মন্তব্য ৮ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ রাত ২:৫৮

ক্লান্তিহীন পথচারী বলেছেন: একমত।

২| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ দুপুর ১২:২৯

নিয়েল ( হিমু ) বলেছেন: সব কিছু সরকারি ইন্ধনে হৈতাছে । বি.জা.পি. খালি দুধ ভাত খায় আর খেলবনা খেলবনা করে ।
:D

৩| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:০২

অনিক আহসান বলেছেন: দক্ষিনবঙ্গের এক শহরের ভ্যানগাড়ি চালকের সাথে কথা হচ্ছিলো ৩ দিন আগে ...তার কথা হলো "বাবা নিজামি মুজাহিদ চিনি না সাইদি সাবের কিছু হলে সব কিছু বন্ধ করে দিবো".... "শাহাবাগে রাত বিরতে ছেলে মেয়ে একসাথে থাকে" এইসব প্রচারনা ব্যাপক ভাবে ছড়ায় পড়ছে অথচ এই ভুল ভাঙ্গানোর জন্য কারো কোন উদ্দ্যোগ নাই।

যে এলাকা যত দরিদ্র অনুন্নত সেই এলাকায় জামাতের প্রতিপত্তি তত বেশি এটা নিজের চোখে দেখা। গত ২৮ তারিখে গাইবান্ধা আর সাতক্ষীরায় সবচেয়ে বেশি মানুষ পুলিশের গুলিতে প্রান হারাইছে এবং ঐ দুই এলাকায়ই নিজের কাজের অভিজ্ঞতা থেকে জানি এরা অবহেলিত, উন্নয়ন আর শিক্ষার ছোয়া থেকে বহুদুরে।

৪| ০২ রা মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৬

বাংলার হাসান বলেছেন: আপনি যে বিষয় গুলো লিখেছেন গন জাগরন মঞ্চের সেলিব্রেটিরা কি তা করবে?

তাদের কানে কি আর এসব ঢুকবে?

৫| ০৩ রা মার্চ, ২০১৩ সকাল ১১:৪২

সাউন্ডবক্স বলেছেন: ব্লগার ইম্রানের জাগরণে দেখি মানুষ ই নাই। সাহাবাগ ফাকা।

আগেই বলছিলাম রাজনেইতিক দাবি না দিয়া গনমানুসের দাবি টাই প্রতিস্টা করেন।

যতসব আবাল পোলাপান এই টা রে শেষ কইরা দিল।

তবে আসবে গনজাগরন যেখানে থাকবে না কোনো রাজনেইতিক দলের স্লগান।

সদাবি থাকবে একটাই

** রাজনীতির এই বিধ্বংসী লীলাখেলা থেকে আমরা মুক্তি চাই, দেশ বাচান প্রধান ২ রাজনেইতিক দল এক হন**

ব্লগার ইম্রানের একপক্ষকে সাথে নিয়া আরেক পক্ষকে টারগেট করে উস্কানি মুলক কথা বার্তা অইখানে বলা হবে না।

০৩ রা মার্চ, ২০১৩ বিকাল ৩:৫১

ওবায়েদুল আকবর বলেছেন: আমি এই ব্লগে কমেন্ট করবনা বলেই মনস্থির করেছিলাম। কিন্তু আপনার এই নোংড়া কমেন্টের জবাব না দিলে সেটা অন্যায় হবে। আপনার উচিৎ মানসিক ডাক্তার দেখানো। তাড়াতাড়ি সেটা করান।

আজকে সকাল থেকে যেভাবে বগুড়াসহ সারাদেশে তান্ডব চালানো হচ্ছে সেগুলোকে যদি আপনার কাছে রংমহলে জলসা দেখার মত উপভোগ্য মনে হয় তাহলে আপনার সাথে কথা বলে কোন লাভ হবেনা কিন্তু মাথার মধ্যে যদি বিন্দুমাত্র বিবেচনাবোধও অবশিষ্ট্য থাকে বা নিজের বিবেক থেকে যদি সামান্যপরিমাণও সংশয় উৎসারিত হয় যে কি হচ্ছে এই বাংলাদেশে তাহলে আজকেই এইসব অরাজকতা বন্ধ করতে বলুন। বিশ্বজিতকে প্রকাশ্যে মেরেছে বলে আমরাও ৪৮ পরিবারকে আটকে রেখে আগুন দিয়ে দেশ উদ্ধার করব এই যুক্তি দ্বারা যদি আপনি চালিত হন প্লীজ আপনার দোহাই লাগে বাংলাদেশে ছেড়ে পাকিস্তান চলে যান।

৬| ০৬ ই মার্চ, ২০১৩ রাত ১২:৫৯

কোমলমতি বলেছেন: একমত

৭| ২৯ শে নভেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১:৫২

গোলাম দস্তগীর লিসানি বলেছেন: ভাই কেমন আছেন? কথা হয়না একদমই। সাম্প্রতিক পোস্টে কিন্তু আপনি বিষয় নন। আপনি কিন্তু বাজে ভাষায় গালাগালি করেননি। আশা করি কিছু মনে করেননি।

এই পোস্টটা দেখেছিলাম এবং আপ্লুত হয়েছিলাম। অতীতে কোন বিষয়ে কি কষ্ট দিয়েছি যে কারণে আপনি আর ইন্টারাক্ট করেন না?

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.