নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি আসলে একজন ভীষণ খারাপ মানুষ। তবে ভালো মানুষের মুখোশ পড়ে দুর্দান্ত অভিনয় করতে পারি বলে কেউ কিছু বুঝতে পারে না। সে হিসাবে আমি একজন তুখোড় অভিনেতাও বটে!!!

অজ্ঞ বালক

ভেঙ্গে যাওয়া স্বপ্নগুলো কুড়িয়ে এখানে নিয়ে এসে ছুঁড়ে ফেলা হয়!!!

অজ্ঞ বালক › বিস্তারিত পোস্টঃ

অভূতপূর্ব ০১

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:১৩

ঘটনাটা ঘটেছে আমার ভীষণ কাছের এক বন্ধুর পরিবারে। ঠিক ততটাই কাছের, যতটা হলে বন্ধুকে ভাই বলে স্বীকৃতি দেয়া যায়। তাই, এই ঘটনার আদ্যোপান্ত জানি আমি। আর সেই জানাটা আমার বিশ্বাসের জায়গায় বেশ সজোরে আঘাত করেছে।

পরিবারের বর্ণনা না দিলে অন্যায় হয়ে যায়। আমার বন্ধুর বাবা নেই। অনেক দিন আগেই মারা গিয়েছেন। মা আছেন, ঢাকার এক নামকরা কলেজের অধ্যক্ষ ছিলেন। অবসরে গিয়েছেন বছর দুই হল। আমার বন্ধু নিজে একটা ব্যাংকের ব্রাঞ্চ ম্যানেজার। তার স্ত্রী একটা মাল্টি ন্যাশনালে মধ্য-স্তরের কর্মকর্তা। এছাড়া আমার বন্ধুর বড় এক ভাই রয়েছেন। যিনি এই ঘটনার যাকে বলা যায় কেন্দ্রে আছেন। থাকেন অস্ট্রেলিয়ায়। আমার বন্ধুর বাবা মারা যাওয়ার তিন বছরের মাথায় এই ভাই সেখানে চলে যান। তখন আমার বন্ধু অনেক ছোট, এস এস সি দিবে। সেই সময় থেকেই এই পরিবার তার বড় ভাইয়ের উপর নির্ভরশীল। বড় ভাইও সেই দায়িত্ব নির্দ্বিধায় পালন করে গিয়েছেন। বন্ধুকে পড়াশোনা শেষ করতে সাহায্য করেছেন, মা-কে চাকরি থেকে অবসর নিতে বাধ্য করেছেন, ঢাকায় একটা ফ্ল্যাট কিনে সেখানে থিতু করেছেন পুরো পরিবারকে। আর তারপর সবার অমতে আগে বিয়ে করিয়েছেন নিজের ছোট ভাইকে, মানে আমার বন্ধুকে। তখন এটা নিয়ে বেশ হইচই হলেও, তার ব্যক্তিত্বের কারণে কথা বাড়াতে সাহস করে নি কেউ। বন্ধুর আপত্তিরও কারণ ছিল না। কারণ সে প্রেম করত। এই ফাঁকে বিয়েটা সেরে ফেলতে পেরে খুশীই হল সে। বিয়েতে ঝামেলাও হল কিছু। কোন এক অদ্ভুত কারণে মেয়ের পরিবার বিয়েতে মত দিল না। কাজেই একপক্ষীয় ভাবে বিয়ে হয়ে গেল। বউটা খুবই ভালো মেয়ে। এরকম একটা চাকরি করেও পরিবার ও মায়ের যত্ন নেয় দারুণভাবে। এরপর আরও বছর দুই চলে গেল। আমার বন্ধুর বড় ভাইয়ের মনে হল এইবার বিয়ে করা প্রয়োজন।

কাজেই পাত্রী দেখা শুরু হল। এই অবসরে জানা গেল বর্তমানে বিদেশী পাত্রদের প্রতি সাধারণ মানুষজনের মনোভাব খুব একটা ভালো নয়। আর সেই পাত্রের বয়স ত্রিশোর্ধ হলে এবং তার ছোট ভাইয়ের বিয়ে আগে হয়ে থাকলে সমস্যাটা আরও গুরুতর আকার ধারণ করে। এর মধ্যেও খোঁজ চলতে লাগল। সবচেয়ে সাহায্য করলো ফেসবুক। সেখানের একটা গ্রুপ থেকেই বায়োডাটার স্তূপ পাওয়া গেল। চলল যাচাই বাছাই। একটা শর্ট লিস্ট বানিয়ে মেয়ে দেখা হল। এবং শেষমেশ শুধু সৌন্দর্যের কারণে একটা মেয়েকে বেছে নেয়া হল। মেয়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নেয়া হল, গ্রামের বাড়িতে এবং ঢাকায় যে এলাকায় থাকে সেখানেও। সবজায়গা থেকে গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার পর লঙ ডিসট্যান্স এংগেজমেন্টটাও সেরে ফেলা হল ছোটখাটো একটা অনুষ্ঠান করে। ছেলে মেয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলা শুরু করল। এবং সমস্যা ঘনীভূত হতে থাকল। বিয়ের কেনাকাটা ও বিয়ে পরবর্তীকালে একসাথে থাকার বিষয় নিয়ে এসময় একটা বেশ ভালো রকম মন কষাকষি হয়ে গেল ঐ ভাই আর মেয়ের মধ্যে। দুই পরিবার একত্রিত হল ও বিষয়টা নিয়ে বেশ বচসা শেষে একটা সমঝোতায় আসল। দোষটা সম্পূর্ণ মেয়েটারই ছিল ও এই ধরনের সমস্যায় সাধারণত বিয়ে ভেঙে যায় কিন্তু অদ্ভুতভাবে বিয়েটা টিকে গেল। কারণ বড় ভাই মানুষটা অসাধারণ চরিত্রের। তিনি এইভাবে এংগেজমেন্ট শেষে বিয়ে ভেঙ্গে দিয়ে মেয়েটার জীবনে দাগ ফেলতে চাইলেন না। বরং ভাবলেন ভবিষ্যতে মেয়েটা শুধরে যাবে। হয়তো এখানেই ভুল করেছিলেন।

বিয়েটা হয়ে গেল। বড় ভাই একমাসের ছুটিতে দেশে আসলেন। বিয়ে করলেন, হানিমুন করলেন। আত্মীয়দের বাসায় দাওয়াত খাওয়া হল, সবশেষে আবার উড়াল। বউকে নিয়ে যেতে আরও বছর খানেক লাগবে। ততদিন এই ফ্ল্যাটেই থাকবে সে। এবং ঠিক বিশ দিনের মাথায় আকাশ ভেঙ্গে পড়লো পরিবারটার উপরে। প্রচণ্ড কলহের সৃষ্টি হল ভাই আর তার পরিবারের মধ্যে। ভাইয়ের কথা তার বউয়ের সাথে নিয়মিত খারাপ আচরণ করা হচ্ছে। তাকে আপন করে নেয়া হচ্ছে না। বন্ধুর স্ত্রীর উপর অনেক দোষারোপ করা হল। বন্ধু ও তার মার উপরও। ভীষণ নাটকীয়ভাবে এক দিনের মাথায় বাসা থেকে সকল জিনিসপত্র সহ মেয়েকে নিজের বাড়িতে পাঠিয়ে দিলেন ভাইয়া। ঘটনার চাকা ঝড়ের বেগে গড়াতে শুরু করল। পরিবারের সাথে এক অমোচনীয় দূরত্ব সৃষ্টি হয়ে গেল ঐ ভাইয়ের। আগে যেখানে দিনে তিনবার ফোন করে মায়ের খোঁজ নিতেন তিনি। এখন নিয়ম করে সপ্তাহে একবার, শুধুমাত্র রবিবার, ফোন করে খুব স্বল্প সময়ের জন্য কথা বলেন তিনি। প্রতিদিন কথা বলতেন আমার বন্ধুর সাথে, তার বউয়ের সাথে, একটা মেয়ে আছে ওদের দেড় বছর বয়স; পাগলের মত ভালোবাসতেন যাকে। তাদের সাথে কথা বলেন না মাস ছয়েক হল। পরিবারের খরচের দিকটা দেখতেন তিনি। বন্ধুকে কখনও একটা টাকাও দিতে হয় নি, আসলে দিতে দিতেন না কিছুতেই - ছয় মাস হল সেটাও বন্ধ। বউকে এই বাসায় আসতে নিষেধ করেছেন তিনি। নিয়ম রক্ষার্থে সেও সপ্তাহে একবার ফোন করে আমার বন্ধুর মা-কে। একটা সুখী পরিবার মুহূর্তে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হল। আমার বন্ধুর মা এই শোক সামলে নিতে পারছেন না, তার শরীর এখন এতটাই খারাপ যে বন্ধু আতংকিত কখন একটা দুর্ঘটনা ঘটে যায়। বন্ধুর বউ ব্যাপারটাতে নিজেকে দোষী ভাবে কারণ বিয়ের দেখভাল, ঘটকালী সব সেই করেছিল। তার এই নিজেকে দোষ দেয়া বন্ধুর পারিবারিক জীবনেও দুর্যোগ ডেকে আনছে।

কিন্তু, ঘটনা আসলে এখানে শেষ নয়। ঘটনার শুরু হল এখানে।

বিদ্রঃ এটা কোন গল্প নয়। সত্যিকার ঘটনা যার প্রভাব অনেক গুরুতর। একটানা লিখতে পারি না। মাত্র ডেঙ্গু থেকে উঠলাম। তাই ভেঙ্গে ভেঙ্গে লেখা।

মন্তব্য ২১ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (২১) মন্তব্য লিখুন

১| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:১৭

রাজীব নুর বলেছেন: আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আপনি ডেঙ্গু থেকে সেরে উঠেছেন।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৩০

অজ্ঞ বালক বলেছেন: আল্লাহয় নিজের হাতে ধইরা বাঁচাইসে রে ভাই। বউ ডাক্তার দেইখা হয়তো কানের পাশ দিয়া গুলি গেসে। দোয়া রাইখেন।

২| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:২২

মাহমুদুর রহমান সুজন বলেছেন: ঘটনাটা কোনখানে দেখা চাই। পরের পরে আরো পর্ব আসছে নিশ্চয়?

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ দুপুর ২:৩১

অজ্ঞ বালক বলেছেন: এর পরের বারে লেখা খতম কইরা দিমু। বেশি কথার কাম কি? আর ঘটনাটা আমার জন্য একটা ইউনিক অভিজ্ঞতা ছিল। মানুষের বিশ্বাস যে একটা আপেক্ষিক জিনিস সেইটা বুঝলাম আর কি।

৩| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৩:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:


বাংগালী মধ্যবিত্ত, রেমিট্যান্স পরিবারের ঘটনা, সম্পুর্ণভাবে পার্থিব।


হুশিয়ারে থাকুন, আবার যেন ডেংগু না হয়!

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:৫০

অজ্ঞ বালক বলেছেন: হুঁশিয়ার তো পরথম থেইকা আছিলাম। কিন্তু, কোন চিপা দিয়া আইসা মশা আমাকে পুঙ্গি মেরে ডেঙ্গু হাতে ধরিয়ে দিল টেরও পাই নাই। দোয়া রাইখেন।

৪| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:১৮

মাহের ইসলাম বলেছেন: শেষ করলেই কি ভালো হতো না?
এখন অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে !

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৪:৫২

অজ্ঞ বালক বলেছেন: অবশ্যই ভালো হইতো। কারন পর্ব আকারে লেখতে গেলেই আমার আর কিছু শেষ করা হয় না। কিন্তু, শরীর দুব্বল। কচি মুরগার স্যুপ খাইয়া এক পাতার বেশি লিখতে পারিনা। কাজেই এই পন্থা ধরলাম।

৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৩

ইসিয়াক বলেছেন: শেষ অংশের অপেক্ষাতে আছি ।
ধন্যবাদ

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৩

অজ্ঞ বালক বলেছেন: আশা করি আজকে রাতেই নামাইয়া ফেলুম লেখাটা। দেখা যাক।

৬| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ বিকাল ৫:৫৭

মোহাম্মদ সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন: আপনি সুস্থ হয়ে গেছেন জেনে খুবই ভালো লাগছে। ভালো থাকুন সব সময়। ‌

০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৬:৫৫

অজ্ঞ বালক বলেছেন: সুস্থ মানে জ্বর নাই। হাসপাতালে ছিলাম, রক্ত নিছিলাম। হাতে পায়ে কিছু র‍্যাশ উঠছিল, এক জায়গায় জমাট বাঁধছিল - যাইতাসে আস্তে আস্তে। এখনো দূর্বল। গিরায় গিরায় ব্যাথা রে ভাই। দোয়া কইরেন।

৭| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৬

জুনায়েদ বি রাহমান বলেছেন: খুবই কমন ঘটনা। এমন ঘটনা আশেপাশে ঘটছে। প্রবাসী নির্ভর পরিবারগুলাতে একটু বেশিই ঘটছে।
পরের গল্পটা শুনবার ইচ্ছে আছে।

ডেঙ্গু থেকে সাবধান থাকবেন। একবার ডেঙ্গু হলে আবার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। শুভকামনা।

৮| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ সন্ধ্যা ৭:০৯

আর্কিওপটেরিক্স বলেছেন: শেষের অপেক্ষায়..

ডেঙ্গু গ্যাছে জেনে ভালো লাগলো। আবার বাধায়েন না।

৯| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:১৭

বলেছেন: লেখক বলেছেন: হুঁশিয়ার তো পরথম থেইকা আছিলাম। কিন্তু, কোন চিপা দিয়া আইসা মশা আমাকে পুঙ্গি মেরে ডেঙ্গু হাতে ধরিয়ে দিল টেরও পাই নাই। ---------------------হা হা ,,, মজা পেলাম ..............।

দেহি ঘটনা কি হয় .............

১০| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:২৮

আনমোনা বলেছেন: ভালো থাকুন।
প্রবাসী স্বামীর সদ্যবিবাহিতা বধু, একা শশুরবাড়িতে, তার মত অসহায় প্রাণী আর নেই।

১১| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৮:৫৭

ভুয়া মফিজ বলেছেন: বউ জিনিসটা খারাপ না.....আর ডাক্তার হইলে তো কথাই নাই। :P

পারলে ব্লগে একটু নিয়মিত হয়েন। সপ্তায় ২/৩ দিন ব্লগে আহন এমন কোন কঠিন ব্যাপার না। আপনে তো বহুতদিনের জন্য হাওয়া হয়া যান গিয়া। অবশ্য ব্লগিং ভালা না পাইলে আলাগ বাত। =p~

ঘটনা এক্কেবারে ইউনিক না, তয় মেজাজ খারাপ হওনের মতো। অহন আর বেশী কিছু কমু না। পুরাটা আগে দেইখ্খা লই।

১২| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ৯:০৪

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আল্লাহয় নিজের হাতে ধইরা বাঁচাইসে রে ভাই। বউ ডাক্তার দেইখা হয়তো কানের পাশ দিয়া গুলি গেসে। দোয়া রাইখেন।

আত্মবিশ্বাস হারাবেন না। মনের জোর অনেক বড় ব্যাপার।

১৩| ০৯ ই আগস্ট, ২০১৯ রাত ১:১৭

শায়মা বলেছেন: তারপর কি হলো?

১৪| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ সকাল ১১:৩০

নীল আকাশ বলেছেন: একটা মেয়ে ইচ্ছা করলে অল্প কয়েকদিনেই একটা বেহেস্তখানা, সাক্ষাত জাহান্নাম বানাতে পারে। আবার জাহান্নাম ভেঙে জান্নাতও বানাতে পারে।
লেখার সাথে আমার জীবনে দেখা বেশ কিছু ঘটনার মিল খুজে পেয়েছে। লিখুন পরের পর্ব সাথেই আছি।

১৫| ০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ দুপুর ১২:৩১

অজ্ঞ বালক বলেছেন: সবাইর কাছে লজ্জিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। কুনুভাবে এই লেখাটা আমার বন্ধুর চোখে পড়ছে ও সে আমারে ফার্দার লেখতে নিষেধ কইরা দিসে, কাজেই লেখার সমাপ্তি এইখানেই। তবে দিনশেষে ঐ মাইয়াই জয়ী। ঐ ভাইয়ের লগে তার ফ্যামিলির এখন এবসুলুটলি কোন সম্পর্ক নাই। সো, দি এন্ড।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.