নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

অবেলা অসময়

অবেলা অসময় › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবশেষে

২৯ শে জুন, ২০১৫ রাত ৯:৪৮

অবশেষে
-------------------

: প্লিজ প্লিজ আমাকে ছেড়ে যাবেন না
: ওকে ওকে আপনি কোন চিন্তা করবেন না,আমি আছি
: আমার খুব ভয় করছে আমাকে ফেলে যাবেন না, কথা দিন
: বললাম তো আমি ছেড়ে যাচ্ছি না, আমি থাকব,, এই যে আপনার হাত ধরে আছি
: না আপনি চলে যাবেন?  বলুন আপনি যাবেন না
: প্রমিজ আমি যাবনা, এবার আপনি শান্ত হোন, কিছু হয়নি সব ঠিক হয়ে যাবে,
: আমার মাকে ফোন জানাবেন আমার ফোনে নম্বার আছে বলে মেয়েটি জ্ঞান হারাল।।
****
নাইম,  গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছে প্রায় বছর খানেক হল। এখনো সে ভালো একটা চাকুরী যোগাড় করতে পারেনি। ছোট খাটো ২-৩টা টিউশনি করে কোন ভাবে বেচে থাকার চেষ্টা করছে। গ্রামে অসুস্ত বাবা, ছোট বোন এর লেখাপড়ার খরচ চালাতে তাকে আরো তিন চার হাজার টাকা ধার করতে হয়। মেসের ভাড়া পাওনা প্রায় সাত হাজার টাকায় ঠেকেছে। আজ না দিলে মেসে আর থাক্তে দিবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন মেস মালিক, তিন মাস আগে একটা এনজিও তে পার্ট টাইম একটা কাজ নিয়েছিল সে আজ তারা বিল পেমেন্ট করেছে। সর্বমোট বার হাজার টাকা, চার হাজার টাকা  আগে নিয়েছিল আজ বাকি আট হাজার টাকা নিতে এসেছিল। নিয়ে যখন ফিরছিল তখন হঠাত লক্ষ করল  একটা প্রাইভেট কার একটা মেয়েকে স্বজরে ধাক্কা দেয়। ছিটকে পড়ে মেয়েটি প্রচন্ড আঘাত প্রাপ্ত হয়েছে সে। দৌড়  এ মেয়েটির কাছে যায় সে। গিয়ে দেখে প্রচুর রক্ত ক্ষরণ হচ্ছে মেয়েটির। আশে পাশে এতক্ষনে কিছু মানুষ জড়ো হয়েছিল, নাইম তাদের সাহায্যে মেয়েটি কে নিয়ে মেডিকেলের পথে রওয়ানা হল। যেতে যেতে মেয়েটি তাকে না ছেড়ে যাবার জন্য অনুরুদ করেছিল ।
**
আবিদা, সদ্য অনার্স শেষ করে একটা প্রাইভেট প্রতিষ্টানে চাকরি নিয়েছে। বাবা মারা গেছেন প্রায় দশ বছর। বাবার কিছু জমানো টাকা আর মায়ের চাকরি তে ভালোই চলে যাচ্ছিল তাদের সংসার। আজ সে বের হতে অনেকটা দেরি করেছিল তাই তাড়াহুড়োয় রাস্তা পাড় হওয়ার জন্য একটু এগুতে কি হল আর মনে নেই তার , কিছুক্ষন পর সে বাস্তবে ফিরলে  বুঝতে পারল সে এক্সিডেন্ট করেছে। এবং একটি ছেলে তাকে নিয়ে বসে আছে, নিশ্চই মেডিকেলে নিয়ে যাচ্ছে। তার প্রচন্ড ভয় হল, তাই ছেলেটিকে অনুরুদ করছিল তাকে যেন ছেড়ে না যায়। অতপর তার আর কিছুই মনে নেই।
**
আজ প্রায় চার মাস হলো অনেকটা সুস্থ হয়েছে আবিদা। এখনো বাসা থেকে বের হয়নি সে। বাসায় বসে বসে শুধুই সে, সেই ছেলেটির কথা ভাবছে।  সেই ছেলে না থাকলে হয়তো এতদিনে মারা যাবার চার মাস পুর্ন হত। কিন্তু সে সেই ছেলেটিকে কোথায় পাবে, মাম্মির কাছে শুনেছিল সে ফোন করে মাম্মিকে জানিয়েছিল।ছেলেটার নাম নাইম। মাম্মি যাবার কিছুক্ষন পর বিধায় নিয়ে ছেলেটি চলে যায়। আর আসেনি। আর আসবে কি করে জ্ঞান ফিরার পর মাম্মি উন্নত চিকিৎসার জন্য বাবার পরিচিত এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে আসেন। এবং সেখানে ভর্তি করান। হয়তো ছেলেটি এসেছে কিন্তু পায়নি, সে সিদ্ধান্ত নিলো সে ছেলেটিকে খুজে বের করবেই।
******
নাইম মেয়েটি কে ইমার্জেন্সিতে ভর্তি করিয়েছিল। ডাক্তার জানালেন রক্ত লাগবে, তার সাথে রক্ত এর গ্রুপ মিল থাকায় সেই ডোনেট করেছে। অতপর মেয়েটির মোবাইলের ফোন বুকে মাম্মি লেখা দেখে ফোন দেয় সে। মেয়েটির মাই ধরেছিলেন। তাকে খবর ট জানায় সে, মায়ের কাছে জেনেছিল মেয়েটির নাম আবিদা। অতপর সে বিধায় নিয়ে চলে আসে। চলে আসার পর গ্রামের বাড়ি থেকে ফোন আসে তার বাবা মারা গেছেন। সে চলে যায় গ্রামের বাড়িতে। প্রায় মাস খানেক থাকার পর সে ঢাকায় চলে আসে। আসার পর সেই মেডিকেলে গিয়েছিল সে। কিন্তু গিয়ে সে পায়নি আবিদাদের । সে জেনে ছিল চার পাচ দিন পরই নাকি তারা ওখান থেকে চলে যায়।কিছুদিনের ভিতরে ভাল একটা  চাকরি পায় সে। ব্যস্থ হয়ে পড়ে জিবনের পথে। কিন্তু মনে মনে খুজে চলেছে সেই মায়াবী মুখ টিকে। কোথাও আবিদা নাম শুনলেই সে তাকায় যদি ঐ মেয়েটি তার সেই আবিদা হয়।
*******
সবে সন্ধ্যা হয়েছে। রিক্সায় করে বাসায় ফিরছিল আবিদা। হঠাত লক্ষ করল কিছু ছেলে একটা ছেলে কে অস্র ঠেকিয়ে হাইজ্যাক করার চেষ্টা করছে। সে চিৎকার করে উঠল হাইজ্যাকার-- হাইজ্যাকার বলে । তার চিৎকার  শুনে ছেলে গুলি পালিয়ে গেল। সে রিক্সা থেকে নেমে ছেলেটির কাছে আস্তেই উভয় উভয়ের দিকে থাকাতেই থমকে দাড়াল দুজন --
: আবিদা? হে
: নাইম? হে
: কেমন আছেন
: ভালো, তুমি সরি আপনি
: বলতেই কি হবে  তুমি বল্লে হয় না? 
: ওকে তুমি
আবিদাই বলল জানো তোমাকে কত জায়গায় খুজেছি। মেডিকেলে দেয়া তোমার ঠিকানায় গিয়ে খুজে পাইনি, ফেইসবুক সহ যত জায়গায় নাইম নাম দেখেছি ততখানে আমি ছোটে গেছি, কিন্তু পাইনি
কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলে তুমি।?
: আমি ওতো তোমাকে খুজেছি, পাই নি। আমি না হয় খুজে ছিলাম তোমাকে  দেখতে,  তুমি কেন খুজে ছিলে আমায়।
: কেন আবার যার রক্ত আমার শরীর ধারন করে আছে তাকে কি জীবনে চলার পথে পাবনা সেটা জানতে।
: এখন তো পেলে কি করবে --
: আপন করে নিতে চাই যদি আপত্তি না থাকে?
: অবশ্যই আছে
: কি?
: যদি কোন দিন ছেড়ে না যাও তবেই হাত ধরতে দিতে পারি বলে হাত বাড়িয়ে দিল নাইম... আবিদা হাত ধরল
হাতে হাত রেখে ছোটে চলল তারা আপন ঠিকানায়

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.