নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিপেনডিলের ব্লগ

কাঁচাপাকা রাস্তার ঠিক মাঝামাঝি, সাইকেলে বসে ছিল নৌকার মাঝি।

রিপেনডিল

ফেবু লিঙ্কঃ https://www.facebook.com/propen লেখকের অনুমতি ব্যতীত এই ব্লগের কোন লেখা অন্য কোথাও ব্যবহার করবেন না।

রিপেনডিল › বিস্তারিত পোস্টঃ

ঘর হইতে কয়েক পা ফেলিয়া- বাড়ির পাশে নবাব বাড়ি-পর্ব আহসান মঞ্জিল

১৭ ই মে, ২০১১ রাত ১:৪২

: দোস্ত চল ঘুরে আসি বান্দরবন/সুন্দরবন.।.।.।.।

: যাওয়ার তো খুব ইচ্ছা ছিল বন্ধু কিন্তু টাইম তো নাই। অফিসে কাজের যেই চাপ/ পড়াশুনার যে চাপ কেমনে যাই বল।

: দোস্ত সময় তো নাই ঘুরতে যাওয়ার, তাছাড়া এত কষ্ট করে এতদুর যেতে পারব না।

: যাইতে তো চাইছিলাম কিন্তুক আম্মা যাইতে দিব না :(

.................।



এইসব বাহানা বানায়ে যারা ঘরকুনো হয়ে গেছে, শহরে থেকে হয়ে গেছেন শহুরে কারাগারে বন্দী তাদের বলছি, এবার তোরা দাড়া, দুই পা সামনে বাড়া!



ঢাকায় যারা থাকেন, ব্যস্ততার জন্য ঘোরাঘুরি করতে পারেন না আপনারা চাইলে কিন্তু ঢাকাতেই ঘুরে আসতে পারেন ৪০০ বছর বয়সী ঢাকার কিছু ঐতিহাসিক স্পট। এবারের পর্ব আহসান মঞ্জিল।







ছবিটি উইকি কমন্স থেকে নেয়া, ২০০৫ সালে তোলা (বর্তমানে নতুন করে রঙ করা হয়েছে)



অবস্থানঃ

ঐতিহাসিক এই প্রাসাদটি পুরোনো ঢাকার ইসলামপুরে বুড়িগঙ্গার পাড়ে অবস্থিত।



একটু গল্পঃ

ফিরে যাই মুঘল আমলে। এখন যেখানে আহসান মঞ্জিল দেখা যায় সেখানে এলাকার বিশিষ্ট জমিদার শেখ এনায়েতউল্লাহর বাগানবাড়ী ছিল। ১৭৪০ সালে তার ছেলে শেখ মতিউল্লাহ ফরাসী ব্যবসায়ীদের হাতে বাড়িটি বিক্রি করে দেন। পরবর্তীতে খাজা আলিমুল্লাহ এই বাড়িটি ফরাসীদের কাছ থেকে কিনে নেন এবং নিজ পরিবার সহ বসবাস শুরু করেন। তার পুত্র নবাব আব্দুল গনি এই বাগানবাড়ীর পূর্বাংশে একটি বিরাট প্রাসাদ নির্মান করেন তার ছেলে নবাব খাজা আহসানুল্লাহর জন্য এবং নাম দেন আহসান মঞ্জিল।





নবাব স্যার সলিমুল্লাহ (খাজা আহসানুল্লাহর পুত্র) আহসান মঞ্জিলের সামনে তার পরিবারবর্গের সাথে। (এই ছবিটি ঢাকা নবাব পরিবারের ব্যক্তিগত ফটোগ্রাফার তোলেন, প্ররবর্তীতে জাগরন নামে একটি সুভেনির থেকে এই ছবিটি সংগ্রহ করা ২০০৫ সালে, বর্তমানে এটি উইকি কমন্স এ আছে।)



১৯৫২ সালে নবাবদের জমিদারী বিলুপ্ত হলে নবাব বংশের উত্তরসুরী রা এই মঞ্জিল ছেড়ে চলে যায়। মঞ্জিলের বিভিন্ন রুম সাধারন লোকদের কাছে ভাড়া দেয়া হয় এবং দ্রুত এই মঞ্জিলের জৌলুস নষ্ট হতে থাকে। অবশেষে ১৯৭৪ সালে নবাব পরিবার এই বাড়ীটি নিলামের ঘোষনা দেয়। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এই নিলাম বন্ধ ঘোষনা করে একে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের সম্পত্তি করে দেন এবং এর সংস্কার ও উন্নয়ন করে একে টুরিষ্ট স্পট ও মিউজিয়াম হিসেবে উন্মুক্ত করেন।







আহসান মঞ্জিলের বর্তমান ছবি। (উইকি কমন্স থেকে নেয়া)



অনেক তো গল্প বললাম, চলুন এবার নবাব বাড়িতে ঢুকে পড়ি।



কিভাবে যাবেনঃ

যারা পুরোনো ঢাকায় থাকেন তাদের কে ইসলামপুর কোথায় এটা বলার মনে হয় প্রয়োজন নেই। যারা অন্যত্র থাকেন তাদের বলছি, আপনারা নয়াবাজার মোড় পর্যন্ত আসবেন, (গুলিস্তান থেকে নর্থ সাউথ রোড ধরে কিছুদূর গেলেই পড়বে নয়াবাজার মোড়) এবার নয়াবাজার মোড় থেকে বাবুবাজারের দিকে যেতে থাকবেন, বাবুবাজার ব্রীজের বাম পাশে নিচ দিয়ে কিছুদূর গেলে আরেকটি মোড় পাবেন, এবার বামে গেলেই ইসলামপুর। যারা গাড়ী নিয়ে যাবার প্লান করছেন তাদের বলি গাড়ি নিয়ে ইসলামপুর ঢোকার কোন মানে হয় না। রিকশাও ঠিক্মত যেতে পারে না! সবচেয়ে ভাল হয় যদি বাবুবাজার ব্রীজের নিচ থেকে হেটে যান। ইসলামপুর ঢুকে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই আহসান মঞ্জিলের রাস্তা দেখিয়ে দেবে।



প্রবেশ মূল্যঃ

যেহেতু এটি একটি যাদুঘর তাই আপনাকে টিকেট কিনতে হবে। টিকেট মূল্য ২টাকা। বৃহস্পতিবার আহসান মঞ্জিল বন্ধ থাকে। আপনারা যদি ক্যামেরা আনেন তাহলে ক্যামেরা নিয়ে জাদুঘরে ঢুক্তে পারবেন না তবে মঞ্জিলের চারপাশে ঘুরতে এবং ছবি তুলতে পারবেন। ক্যামেরা জমা রেখে জাদুঘরে ঢোকা যাবে।





মঞ্জিলে ঢোকার রাস্তা







মঞ্জিলের কিছু ছবি





মূল বাড়ীর সাথে অন্দরমহলের সংযোগ পথ।







ছাদ থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা!





মূল বাড়ি।









বাড়ির পেছনের অংশ







ঝড় এলো, এলো ঝড়!





বৃষ্টিস্নাত নবাব বাড়ী।





অপেক্ষা।



অগ্নি নির্বাপন ব্যবস্থা, বালতি ভর্তি বালি।





কাকবাড়ি।





অতিথি



পিছনের বারান্দা।









প্রাঙ্গনের ফুল।









জাদুঘরে ছবি তোলা নিষিদ্ধ (গোপনে কয়েকটা ছবি তুলছিলাম!) তাই ছবি দেয়া গেল না। জাদুঘরে বেশ কিছু মজার ব্যাপার দেখতে পাবেন। একটি মজার তথ্য দেই। আহসান মঞ্জিলে কোন টয়লেট নেই! কারন নবাবদের ভ্রাম্যমান টয়লেট ছিল যেগুলো তার চাকররা নবাব যেখানে যেত সেখানেই বহন করে নিয়ে যেত!



বিশেষ আকর্ষনঃ

ইদানিং তো প্রায় প্রতিদিনই বৃষ্টি হচ্ছে। নবাব বাড়িতে বসে বৃষ্টি দেখার সৌন্দর্য অতুলনীয়। যারা দেখেন নি তাদের কাছে এই সৌন্দর্য বর্ননা করা সম্ভব নয়।



যাওয়ার সময়ঃ

আহসান মঞ্জিল প্রতি সপ্তাহে বৃহস্পতিবার বন্ধ থাকে এবং অন্যান্য দিন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এবং শুক্রবার বিকাল ৩টা ৩০ থেকে ৭টা ৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে।





তথ্যসূত্রঃ

http://en.wikipedia.org/wiki/Ahsan_Manzil

Click This Link



ছবিঃ

প্রথম তিনটি ছবি বাদে বাকি ছবিগুলো তুলেছেন আবিন সুর

গুগল ম্যাপ ভিউঃ

Click This Link



ভ্রমন বিষয়ে আমার অন্যান্য পোস্টগুলোঃ

ঘর হতে কয়েক পা ফেলিয়া (ছবিসহ বিস্তারিত) পর্ব-কুয়াকাটা, ফাতরার চর।



ঘর হতে কয়েক পা ফেলিয়া (ছবিসহ বিস্তারিত) পর্ব- শ্রীমঙ্গল,মাধবকুন্ড।

ঘর হতে কয়েক পা ফেলিয়া (ছবিসহ বিস্তারিত) পর্ব- নাফাখুম

ঘর হতে কয়েক পা ফেলিয়া (ছবিসহ বিস্তারিত) পর্ব- রাঙ্গামাটি

মন্তব্য ১৩ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৩) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মে, ২০১১ রাত ২:২৩

তাশফী বলেছেন: আগামী কিছু দিনের মধ্যে আহসান মঞ্জিল যাবার কথা ছিল, কিন্তু এর সর্ম্পকে কোন ধারণা ছিল না, অশেষ ধন্যবাদ তথ্যবহুল একটি ব্লগ দেবার জন্য, ছবি গুলোর জন্য আলাদা করে ধন্যবাদ , প্রিয়তে নিলাম। একটা কথা যানার ছিল, আমরা যাব বাংলা মোটর থেকে, সরাসরি কি বাস যায় ওখানে ?

১৭ ই মে, ২০১১ রাত ২:২৮

রিপেনডিল বলেছেন: বাসে আপনি গুলিস্তান পর্যন্ত আসতে পারেন অথবা বাবুবাজার ব্রীজ পর্যন্ত ও কিছু বাস আসে। বাংলা মোটর থেকে কোন বাসটি আসে সঠিক বলতে পারছি না। বাবুবাজার নেমে আপনাকে রিকশায় বা হেটে যেতে হবে। হেটে গেলে ১০ মিনিট লাগে আর রিকশায় প্রায় ৪০ মিনিট! (অনেক জ্যাম থাকে ইসলামপুরের রাস্তায়)

২| ১৭ ই মে, ২০১১ সকাল ১০:২৭

ওরাকল বলেছেন: হুম অনেক ধন্যবাদ, এই উইকেন্ডেই তা হলে একবার যেতে হয়।

১৭ ই মে, ২০১১ সকাল ১০:৪৬

রিপেনডিল বলেছেন: বৃষ্টিতে ভেজার প্রিপারেশন নিয়ে যেয়েন!

৩| ১৭ ই মে, ২০১১ সকাল ১১:০৬

আবিন সুর বলেছেন: আহসান মঞ্জিলে বৃষ্টি তে ভেজার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। লেখক আর আমি সত্যিকার অর্থে খুব পুরোনো বন্ধু আর দুজন একসাথেই গিয়েছিলাম। সত্যিই অসাধারণ।

তাশফী ভাই, আপনি বাংলামটর থেকে সরাসরি গুলিস্তানের বাস পাবেন। ওখান থেকে রিকশা নিয়ে যেতে হবে। অথবা গুলিস্তান থেকে মিনিবাসগুলো যায় কিনা এটা বলতে পারছিনা। তাই আপনি গুলিস্তান থেকে রিকশা নিয়ে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়ে যান।

১৭ ই মে, ২০১১ সকাল ১১:৩৯

রিপেনডিল বলেছেন: গুলিস্তান থেকে মিনিবাস বাবুবাজার ব্রীজ পর্যন্ত আসে। এরপর আবার রিকশা বা হেটে যেতে হবে।

৪| ১৭ ই মে, ২০১১ সন্ধ্যা ৭:১৭

জিসান শা ইকরাম বলেছেন: অনেক তথ্যবহুল পোস্ট।ছবি গুলোও চমত্‍কার।ভালো লাগলো খুব পোস্টটা।শুভ কামনা।

১৮ ই মে, ২০১১ রাত ১২:১২

রিপেনডিল বলেছেন: ধন্যবাদ জিসান ভাই, ভেবেছিলাম আর লিখব না, আপনাদের কমেন্ট পেলে ভরসা পাই।

৫| ১৮ ই মে, ২০১১ রাত ১:৩৭

হাম্বা বলেছেন: ছবি গুলো অনেক ভাল লাগল

১৮ ই মে, ২০১১ দুপুর ১২:৫৫

রিপেনডিল বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই।

৬| ১৮ ই মে, ২০১১ দুপুর ১২:৪৭

নাসির খান বলেছেন: ছবিগুলো ভালো হয়েছে।

বড় একটি ধন্যবাদ দেখায় উইকিপিডিয়ার কথা স্বীকার করায়। অধিকাংশ মানুষই মনে করে উইকিপিডিয়া থেকে লেখা ছবি নিজের ইচ্ছা মত ব্যবহার করা যায় এবং এর জন্য কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার প্রয়োজন নেই।

১৮ ই মে, ২০১১ দুপুর ১:০৮

রিপেনডিল বলেছেন: বেশ কিছুদিন বাংলা উইকিতে লেখা লেখি করেছিলাম, সেখান থেকে কপিরাইটের ব্যাপারগুলো সম্পর্কে ধারনা হয়। এখন চেষ্টা করি কোন ছবি ব্যবহার করলে কৃতজ্ঞতা স্বীকার করতে। সবারই এটা করা উচিত।

ধন্যবাদ আপনাকেও।

৭| ২২ শে জুলাই, ২০১২ সকাল ১১:৫৭

নাওেয়দ বলেছেন: ভাই, পুরান ঢাকা নিয়ে একটা প্রোগ্রাম অ্যারেঞ্জ করার চেষ্টা করছি আমরা কিছু এলাকাবাসি। আপনার লেখাটা পড়ে ভালো লাগলো। আমাদের সাথে যোগ দিলে খুব খুশি হতাম।

একটা মেসজ দিলেই হবে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.