নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কির্সতং পাহাড়ের অবস্থান বান্দরবানের চিম্বুক রেঞ্জে। এই পাহাড়ের উচ্চতা ২৯৫০ ফুট । কোথাও আবার লেখা আছে ২৯৮৯ ফুট । রুংরাং পাহাড়টার উচ্চতা কির্সতং থেকে ৩০০ ফুটের মত কম । কির্সতং শব্দটা মারমা শব্দ । কিরসা ও তং মিলে শব্দটা তৈরি হয়েছে । কিরসা শব্দটার অর্থ ছোট পাখি আর তং শব্দের অর্থ পাহাড় । এই পাখি পাহাড়ের চুড়ায় দেখা যায় এবং এখন তা প্রায় বিলুপ্ত প্রায় । এই গেল ইন্টানেটের তথ্য । এখন পাহাড় ভ্রমনের গল্প শুরু করা যাক !
গতবছর ঠিক এই সময়েই বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পর্তবে সামিট করেছিলাম । সেখান থেকে ফিরে এসে মনে হয়েছিলো যে এতো পরিশ্রমের সামিট আর করবো না । এরপরে আরও কয়েকটা ট্যুর দিয়েছি ঠিকই তবে সেগুলোতে এতো পরিশ্রম ছিল না । কিন্তু এই বছরে আবার ঠিক একই সময়ে এমনই একটা ট্রেকিং কপালে লেখা ছিল সেটা বুঝতে পারি নি ।
এবছরের শুরুটা হয়েছিলো সমুদ্র দিয়ে । এতো জলদি যে আবার পাহাড়ের দিকে দৌড় দিবো ভাবতে পারি নি । গত বৃহস্পতিবার রাতে আমাদের বাস ছিল ফকিরাপুল থেকে । এর আগে সব বান্দরবান ট্যুরে আমরা সরাসরি হাজির হয়েছি বান্দরবানে তবে এবার আমরা উঠলাম কক্সবাজারের বাসে । বাস থেকে আমরা নেমে পড়লাম চকরিয়াতে । সেখান থেকে আবারেও বাসে করে এলাম আলীকদমে । সকালের নাস্তা খেয়ে চাঁদের গাড়িতে করে আমরা থানচির দিকে রওয়া দিলাম । আলীকদম থেকে ২১ কিলো নামের একটা স্থানে এসে আমাদের চাঁদের গাড়ি থামলো । এখান থেকেই মূলত আমাদের ট্রেকিং শুরু হল । নিচের ইটের রাস্তা থেকেই আমাদের যাত্রা শুরু ।
একটু দুর যেতে রাস্তার পাশে এই রকম চমৎকার পাহাড় দেখা যাচ্ছিলো । পাহাড়ের এই দৃশ্যই আমার সব থেকে পছন্দ । যতই দেখি এই দৃশ্য কোন ভাবেই পুরানো হয় না ।
অন্যান্য সব ট্রেকিংয়ের চেয়ে এই ট্রেকিংটা একটু কষ্টের ছিল কারণ এখানে আমাদের খাবারের প্রয়োজনীয় সামগ্রী আমাদের নিজেদেরকে বহন করতে হয়েছিলো । এছাড়াও আরেকটা বড় সমস্যা হচ্ছে পানি । পুরো যাত্রা পথে কোথাও কোন পানির দেখা আমরা পাবো না । যা পানি আমাদের নিজেদের বহন করে নিতে হবে ! যখন আমরা হাটা শুরু করলাম তখন দুপুর বারোটা বাজে । কড়া রোডের মাঝে হাটা শুরু হল । আমার গন্তব্য খেমচং পাড়া নামের একটা পাড়া । সেখানে যেতে আমাদের পুরো দিন লেগে যাবে । সত্যিই তাই ।
আমরা হাটছি তো হাটছি । হাটা যেন আর আমাদের শেষ হয় না । কাধের ব্যাগটা যেন ভারী থেকে ভারী হচ্ছে । পা যেন আর চলে না । তবে আশে পাশের দৃশ্য আমাকে ঠিকই মুগ্ধ করছিলো । আমি প্রায়ই সবার থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছিলাম । একা নির্জনে হাটছিলাম আর চার পাশে তাকাচ্ছিলাম । মনে হচ্ছিলো যেন এখানে আমি হাটছি অনন্তকাল থেকে । আমাদের মোটামুটি ১০/১২টা পাহাড়ে উঠতে হয়েছিলো এবং নামতে হয়েছিলো । আর আগেই বলেছি যে এই ট্রেকিংয়ে আমাদের পানির কষ্ট ছিল । কারণ কোন ঝর্ণা কিংবা ঝিরি ছিল না রাস্তায় ! যাত্রা পথে কিছু পথের দৃশ্য দেখা যাক ! গাছ গুলো কত বড় বড় আর পুরানো !
তবে একটা জিনিস খেয়াল করলাম যাত্রা পথে । পথে প্রচুর গাছ কাটছে কেউ । কিছু মানুষ এই বনের গাছ কেটে পাচার করছে । পথের পাশে গাছে আগুন ধরিয়ে দেওয়া রয়েছে কাটা অবস্থায় পড়ে আছে কত গাছ ! নিচের কয়েকটা ছবি দিলাম ।
এগুলো দেখার কেউ নেই ।
যাই হোক আস্তে আস্তে রাত নেমে আসছিলো । অন্ধকার নেমে আসতে পাহাড়ি পথে ।
আমরা যখন পাড়াতে পৌছালাম তখন সত্যিই অন্ধকার নেমে গেছে । আমাদের মোট ১৪ জনের দল ছিল । এর ভেতরে চারজন গ্রুপ এডমিনের কথা না শুনে একটু বেশি সামনে চলে গিয়েছিলো । একটা স্থানে ডান দিকে নিচে নেমে যেতে হত তারা সেখানে নেমে যায় নি । সত্যিই বলতে আমিও সেই পথটা না চিনে সামনে এগিয়ে গিয়েছিলাম । তবে বেশি দুর না গিয়ে আবার ফিরে এসেছিলাম । এই ব্যাগ রাখার স্থান থেকেই ডানে নামতে হত । তারা চলে গিয়েছিলো সামনে !
পাড়াতে গিয়ে আমরা যখন দেখলাম তারা আসে নি এডমিন আর গাইড সাথে পাড়ার আরও দুজন মিলে তাদের খুজতে বের হল । তবে ভাগ্য ভাল যে তাদের শেষ পর্যন্ত খুজে পাওয়া গেল !
আমরা সত্যি বেশ ভয় পেয়েছিলাম । যদি তাদের খুজে না পাওয়া যেত তাহলে কি যে হত তা আমরা নিজেও জানি না ।
এই পাড়ার নাম খেমচং। পাড়াটা অন্য পাহাড়ি পাড়ার মতই । মানে আমি আগে যে সব পাড়াতে রাতে থেকেছি এটাও সেই রকমই ! তবে এরা একটু কম পরিস্কার পরিছন্ন । তার মূল কারণ হচ্ছে এখানে পানির কোন উৎস নেই । পাড়ার দুই পাশে ছোট দুইটা ঝিরি আছে । ঝিরি বলতে পাথরের দুইটা গর্ত টাইপের । পাহাড় থেকে চুইয়ে চুইয়ে পানি পড়ে সেখানে জমা হয় এবং এই পানি দিয়েই পুরো পাড়ার পানির চাহিদা মিটে । এছাড়া আর কোন পানির উৎস এখানে নেই । আমরা অনেক কষ্টে সেই পানি দিয়ে হাত মুখ ধুলাম । তারপর ফিরে এলাম ঘরে । গাইডের রান্না তখন প্রায় শেষ । এই পাড়ার আরও একটা জঘন্য ব্যাপার হল এখানে টয়লেটের অবস্থা খুবই জঘন্য ! নিচ দিয়ে ফাঁকা । কেউ ওয়াশ রুমের দিকে হাটা দিলে দুই তিনটা শুকর সেই ওয়াশরুমের নিচে চলে যায় । ফাঁকা স্থান দিয়ে তাকিয়ে থাকে উপরে !
রাতে প্রচুর শীত ছিল । আমি রীতিমত কাঁপছিলাম । যেই ঘরে আমরা ছিলাম সেই ঘরে দরজার পাল্লা নেই । দেওয়ালেও ছিদ্র অনেক । সেখান থেক বাতাস আসছে নিয়মিত । রাতে খেয়ে আমরা দ্রুত শুয়ে পড়লাম । কাল আমাদের লম্বা হাটা । কালকে আমাদের উঠতে হবে কির্সতং এ ।
আজকের গল্প এখানেই শেষ । কালের শুরুটা হবে কালকে ....
একেবারে প্রথম ছবিটা বাদ দিয়ে আর অন্য সব ছবি আমার কম দামী মোবাইল ক্যামেরাতে তোলা !
শেষ পর্ব
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:০৭
অপু তানভীর বলেছেন: ট্রেকিংয়ে কষ্ট আছে সত্য কিন্তু এর ভেতরে অন্য রকম এতো আনন্দ আছে যা অন্য কোন কিছুর ভেতরে পাওয়া যায় না । প্রতিবার ট্রেকিং ট্যুর দেওয়ার পরে আমি কানে ধরি যে আর যাবো না । এতো কষ্ট করার কোন মানে নেই কিন্তু কদিন পরে আবারও গিয়ে হাজির হই ।
মোটা চিকন কোন ব্যাপার না । আমাদের সাথেই কোন মানুষ গিয়ে হাজির হয় ! এবার ৫৫/৬০ বছরের একজন জয়েন্ট সেক্রেটারি ছিলেন আমাদের সাথে । বুঝেন তাহলে ! মনের ইচ্ছে থাকলেই হবে !
২| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪৪
শায়মা বলেছেন: ভ্রমনবিলাসী ভাইয়া।
এই বন ভ্রমনে আমি গেলে মনে হয় মাঝে মধ্যেই আমর চিৎকার পশুপাখি সব পালাতো।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৪৮
অপু তানভীর বলেছেন: আরে না না । পালাত না । আমরা কত চিৎকার চেঁচামিচি করেছিলাম । চিৎকার করে সামনের মানুষ পেছনের মানুষকে ডাক দিয়েছিলাম !
৩| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ৩:২২
আল আমিন হাসান সাদেক বলেছেন: মালদ্বীপ । পর্যটকদের স্বর্গরাজ্য । দুরবীন বাংলা । Maldives । DURBEEN BANGLA
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৫০
অপু তানভীর বলেছেন: এই ফৎরামির কাজ গুলো না করলে হয় না ! ঘোড়ার ডিমের ভিডিও লিংক কেন আপনি সবার পোস্টে গিয়ে দিয়ে আসছেন ?
এটা খুবই নিন্মরুচির কাজ! ব্লগারদের এই সব কাজ মানায় না !
৪| ২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৪০
শায়মা বলেছেন: ভাইয়ু তোমার চিৎকারে আর আমার চিৎকারে তফাৎ আছে।
ভয় পেলে আমি নাকি উদারা মুদারা তারায় এমন চিৎকার দেই যে মরা মানুষ বেঁচে উঠবে। আমার মা বলতো।
২৩ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১:৫১
অপু তানভীর বলেছেন: তাইলে তো এমন চিৎকার শুনতেই হয় ! একদিন দাওয়াত রইলো চিৎকার শোনানোর !
৫| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৪০
জুল ভার্ন বলেছেন: চমতকার ছবি ব্লগ! +
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৪২
অপু তানভীর বলেছেন: ছবি ব্লগের চেয়ে বাস্তবের ভ্রমন আরও চমৎকার ছিল ।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য
৬| ২৪ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ সকাল ১১:৪২
জুল ভার্ন বলেছেন: আল আমিন হাসান সাদেক নামক ফালতুটার বিরুদ্ধে আমি বারবার রিপোর্ট করছি- মডারেটর এখনও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি!
২৫ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ রাত ১২:৪৪
অপু তানভীর বলেছেন: এর আগেই এই পাব্লিক অন্য নামে নিক খুলে এই একই টাইপের কাজ করে গেছে । কদিনের ভেতরেই নিক ব্যান হবে ।
৭| ০৩ রা মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:১৪
একজন রোদঁশী বলেছেন: vabchilam jabo. kintu thak. ato hatahati ar prane shoy na
০৩ রা মার্চ, ২০২২ সকাল ১১:৫০
অপু তানভীর বলেছেন: বেশ ভাল পরিমান হাটা হাটি আছে ! অবশ্য কেবল প্রথম দিনের হাটাটা বেশি কষ্টের । পরের দিন গুলো এতো পরিশ্রমের না !
©somewhere in net ltd.
১| ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২২ দুপুর ১২:৩৮
মরুভূমির জলদস্যু বলেছেন: পাহাড় ট্রেকিং খুবই কষ্টের জিনিস। আমি সর্বপ্রথম ট্রাকেং ছাড়াই চিম্বুকে উঠি ২০০১ সালে। পরে ২০০২ সালে রুমা বাজার থেকে ঝিরিপথ ধরে বগালেক হয়ে কেওক্রাডং পর্যন্ত গিয়েছিলাম। সম্ভবতো ২০০৩-২০০৪ এর গিয়েছিলাম সীতাকুণ্ড ১৮০০ সিঁড়ি টপকে। ২০১৬তে গিয়েছিলাম মিরেরসরাই আর সীতাকুণ্ডে, ২ দিনে প্রায় ১০টি ঝর্ণা দেখেছিলাম। ২০২০ সালে গিয়েছিলাম রেমাক্রি। ট্রেকিং আমাকে দিয়ে হয় না। মেলা মোটা হয়ে গেছি এখন।